বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

পুরনো_ভূত পর্ব_এক-দুই

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X #তিন_গোয়েন্দা #পুরনো_ভূত #পর্ব_এক প্রশান্ত মহাসাগরের ঢেউয়ে দোল খাচ্ছে ছোট্ট মোটরবোট। ছোট একটা দ্বীপের কাছে ভাসছে ওটা। দ্বীপের পশ্চিম ধারে ঠেলে বেরিয়ে থাকা বিশাল এক পাথুরে টিলার কাছে। 'দেখতে একেবারে রক অফ জিব্রালটার,' মন্তব্য করল রবিন। 'অনেকটা,' বলল কিশোর। 'তবে ছোট, তাইনা?' হ্যাঁ, 'অনেক, মুসা বললো। ওটা পাথরের চাংড় হলে এটা নুড়ি। রকি বীচের মাইল দশেক উত্তরে মাছ ধরতে এসেছে তিন গোয়েন্দা। সাগরের নিচে এখানটায় কেল্প-এর জঙ্গল, তার মধ্যে ঘুরোঘুরি করে প্রচুর ব্যাস ফিশ। লোভনীয় টোপ ফেলেছে শিকারীরা, তবে তাতে শিকারের কোনো আগ্রহ দেখতে পাচ্ছে না। অনেক চেষ্টায় গোটা তিনেক মাঝারি আকারের মাছ ধরতে পেরেছে। ' বলেছিলাম না জেনোয়া রীফে যেতে,' টোপ বদলাতে বদলাতে বিরক্ত কন্ঠে বললো মুসা। 'এখানকার ছবি কেন যে তুলতে বললেন আংকেল!' রবিনের বাবা মিস্টার মিলফোর্ড এর কথা বললো সে। ' আমিও বুঝলাম না,' টোপ টা ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে আবার পানিতে ফেলে বললো রবিন। 'বললো, মঙ্গলবারে, অর্থাৎ আজকে র‍্যাগনারসন রকে মাছ ধরতে এলে যেন সাথে করে ক্যামেরা নিই। ভালো ছবি তুলতে পারলে বেশি দামে কিনে নেবে। কিসের ছবি তুলতে হবে তা-ও বলেনি। জিজ্ঞেস করেছিলাম। হাসলো। বললো, দেখলেই নাকি বুঝতে পারব কিসের ছবি তুলতে হবে।' 'টাকাটাই হলো বড় কথা, মাছ নয়,' কিশোর বললো। ফান্ড একেবারে শূণ্য এখন আমাদের, টাকা দরকার। ছবি তুলে জোগাড় করতে না পারলে আবার গিয়ে ইয়ার্ড-এ কাজ করতে হবে। 'মেরীচাচীর কাজ!' গুঙিয়ে উঠলো মুসা। 'আর পারবো না।' কোমর এখন ও নড়াতে পারি না। তার চেয়ে ব্যাস ধরে বাজারে বিক্রি করা অনেক সহজ।' 'এই, দেখ দেখ!' চেঁচিয়ে উঠলো রবিন। মাইলখানেক লম্বা র‍্যাগনারসন রক দ্বীপের দিকে দেখালো। পুব পাশ ঘুরে বেরিয়ে আসছে একটা ভাইকিং শিপ। জাহাজটা পাশে ঝোলানো বর্মগুলোতে বিকেলের রোদ প্রতিফলিত হচ্ছে। সামনের গলুইয়ে খোদাই করা রয়েছে ভয়ংকর এক ড্রাগনের মাথা। বুনো চেহারার দাড়িওয়ালা যোদ্ধাদের মাথায় শিংওয়ালা হেলমেট। পরনে ভারি রোমশ জ্যাকেট। হাতে ঝকঝকে তলোয়ার আর খাটো কুড়াল। মাস্তুল আর উঁচু খুঁটিগুলোতে পতাকা উড়ছে। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে যোদ্ধারা, রণনিনাদ। ' এটাই!' তুড়ি বাজিয়ে বললো কিশোর। ক্যামেরা বের করে ফেলেছে রবিন। এগিয়ে আসছে ভাইকিং শিপ। আর ও কাছে এলে দেখা গেলো আসলে ওটা একটা মোটরবোট, ভাইকিং জাহাজের মতো করে সাজানো হয়েছে। ছয়-সাত জন যোদ্ধাও ভাইকিং জলদস্যুর সাজে সেজেছে। হাতের তলোয়ারগুলো রাংতা লাগানো কাঠের নকল তলোয়ার, নকল দাড়ি। গোয়েন্দাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় নকল অস্ত্র নেড়ে হাসলো ওড়া, হুল্লোড় করে উঠলো। দ্বীপের একটা খাঁড়ির দিকে চলে গেলো জাহাজটা। 'কি এসব?' অবাক হয়ে বললো মুসা। ' জানিনা, ' রবিন বললো। তবে কয়েকটা ভালো ছবি তুলেছি। 'আমার মনে হয়.....' কথাটা শেষ করতে পারলোনা কিশোর। দ্বীপের পাশ ঘিরে ছুটে এলো আর একটি বোট। 'ওটা আবার কি?' হাঁ করে তাকিয়ে আছে মুসা। এই নৌকাটা লম্বা, নিচু, দাঁড়টানা নৌকা আর ক্যানূর মিশ্রণ। বড় বড় তক্তা দিয়ে তৈরি। অস্বাভাবিক চেহারার এই নৌকার চালক ছয়জন মাল্লা। ইন্ডিয়ানদের পোশাক পরা। মাথায় চামড়ার ফেটি, হরিণের চামড়ার পোশাক। 'ওটা চুমাশ ক্যানূ কিশোর বললো।' চুমাশ ইন্ডিয়ানদের। সান্তা বারবারায় এখন বেশ একটা গ্রাম আছে ওদের। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। ওরকম নৌকা নিয়েই বেড়িয়ে পরে বার সাগরে। তিমি আর সীল ধরে। শান্ত স্বভাব। চ্যানেল আইল্যান্ডেও থাকে ওদের কেউ কেউ। জানি, মুসা বললো। তবে র‍্যাগনারসন রকে থাকে বলে জানতাম না। মাথা নাড়লো কিশোর। থাকে না। উপকূলের উজানে বড় বড় দ্বীপগুলোতে কিছু কিছু থাকে। যেখানে খুশি থাকুক। বিন্দু মাত্র মাথাব্যথা নেই আমার, রবিন বললো। নৌকাটা সোজা করো জলদি। ঠিক মতো তুলতে পারছি না। ক্যানূ আর ইন্ডিয়ানদের ছবি তুলতে লাগলো সে। বর্শা দুলিয়ে ওরাও গিয়ে নামলো সেই খাঁড়িটাতে, 'জলদস্যুরা' যেটাতে নেমেছে। বেধে গেলো কৃত্রিম লড়াই, দ্বীপ দখল নিয়েই বোধহয়। দুই দলের কোমরেই পতাকা গোঁজা। ভাইকিংদের সাদা, ইন্ডিয়ানদের লাল। টেনে টেনে সেগুলো খুলে নিয়ে দৌঁড় দিলো উঁচু চূড়াটার দিকে, বর্শার মাথায় বেঁধে বসিয়ে দেবে।যারা আগে বসাতে পারবে, তাদেরই জিত। সাংঘাতিক মজা পাচ্ছে তিন গোয়েন্দা। চেঁচিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে দুটো দলকেই। রবিন আর মুসা ইন্ডিয়ানদের পক্ষে, আর কিশোর ভাইকিংদের। একের পর এক ছবি তুলে যাচ্ছে রবিন। দ্বীপের পশ্চিমে বেধেছে লড়াই। আরও ছবি তোলার জন্যে ক্যামেরায় নতুন ফিল্ম ভরলো সে। আরেকটু আগাও, বললো সে। বুঝতে পেরেছি, কেন চেয়েছেন বাবা। পত্রিকায় ফিচার করবে। ভালো চলবে বুঝতে পারছি। সে-জন্যই বেশি দামে ছবি কিনতে চেয়েছেন। 'তোলো, কিশোর বললো।' বেশি করে তোলো। সমস্ত লড়াইটাই ধরে রাখা চাই। ইস্ ভিডিও ক্যামেরা হলে ভালো হতো। এঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে বোটটাকে খাঁড়ির কাছে নিয়ে চললো মুসা। ছবি তুলেই চলেছে রবিন। ফিল্ম শেষ হলে আবার ভরে নিচ্ছে। অবশেষে শেষ হলো লড়াই। সাদা পতাকা বসিয়ে দিয়ে চূড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাইকিংরা। ইন্ডিয়ানদের পতাকাগুলো ছিনিয়ে নিয়ে দলামোচড়া করছে। হাসাহাসি করছে দুটো দলই, অন্যের পিঠ চাপড়াচ্ছে। শাটার টেপা বন্ধ করলো রবিন। দ্বীপের দিকে তাকিয়ে ওরাও হাসছে। পেছনে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলো কিশোর, 'সর্বনাশ! সরো, সরো!' ঝট করে পেছনে তাকালো অন্য দু'জনও। তৃতীয় আর একটা নৌকা আসছে ওদেরকে ধাক্কা দেয়ার জন্যে...। #তিন_গোয়েন্দা #পুরনো_ভূত #পর্ব_দুই আস্তে করে ধাক্কা দিলো ছোট মোটরবোটটা। খাঁড়ির অল্প ঢেউয়ে দুলছে। ধাক্কা দিলো আরেকবার। ভেসে এসেছে, মুসা বললো। এঞ্জিনও বন্ধ। লোকজন ও তো নেই কেউ, বললো রবিন। 'দেখ, নোঙরের দড়িটা ছেঁড়া।' দড়ির মাথাটা পরীক্ষা করে দেখলো মুসা। 'না, কেটে দেয়া হয়নি। পাথরে কিংবা জেটির কাঠে ঘষা লেগে ছিঁড়েছে।' কিশোর কিছু বলছে না। দ্রুত চোখে পরীক্ষা করছে শূণ্য বোটটাকে। আচমকা ঝটকা দিয়ে হাত তুলে দেখালো সেন্টার সীটের কাছের রেইল টা। 'দেখ, দেখ রো-লক আর সীটে কি লেগে আছে!' অন্য দু'জন ও দেখলো। কালচে দাগ লেগে রয়েছে ধূসর ধাতু আর সীটের কিনারে। রঙটা আসলে কালচে লাল, কিন্তু বিকেলের আলোয় শুধু কালো লাগছে। 'খা-খাইছে! তোতলাতে শুরু করলো মুসা, 'দে-দে-দেখতে... ' 'রক্ত!' বলে উঠলো রবিন। 'হ্যাঁ,' মাথা ঝাঁকালো কিশোর। হাত-টাত কেটে ফেলেছিলো বোধহয়। কিংবা উপুড় হয়ে পড়ে রো-লকে লেগে কপাল কেটে গিয়েছিলো। দড়ি ধরে টেনে নৌকাটাকে কাছে নিয়ে এলো মুসা। ভালো করে দেখার জন্যে। সেন্টার সীটের কাছে একটা ট্যাকল্ বক্স। এক বালতি পানিতে ভাসছে মরা আ্যানকোভিজ-মাছ ধরার টোপ। খোলা একটা লাঞ্চ বক্সে রয়ে গেছে কিছু স্যান্ডউইচ আর একটা আপেল। একটা বড় লাইফ জ্যাকেট পড়ে আছে, ওদের গায়েও ওরকম জ্যাকেট। 'সবই রয়েছে,' ধীরে ধীরে বললো কিশোর। 'শুধু বড়শিটা বাদে।' 'কিশোর,' রবিনের কন্ঠে অস্বস্তি। সীটের তলায় দেখ কি পড়ে আছে। হ্যাট? বোটের কিনার ধরে টেনে টেনে সীটটা কাছে নিয়ে এলো মুসা। হ্যাটটা বের করে আনলো। মাছ ধরতে বেরোলে ওরকম জিনিস মাথায় দেয় লোকে। হ্যাটের একপাশে একটা ফুটো, কালচে লাল দাগ লেগে রয়েছে। 'নিশ্চয়ই জখম হয়েছে,' ভারি গলায় বললো কিশোর। 'ব্যাপারটা যখন ঘটেছে, নৌকাটা তখন কোথায় ছিলো?' ভ্রূকুটি করলো মুসা। কোথায় ছিলো তাতে কি এসে যায়? রবিন বুঝতে পেরেছে। বললো অনেক কিছু এসে যায়। খোলা সাগরে থাকলে একরকম হবে, ডাঙায় বাঁধা থাকলে আরেক রকম। আর লোকটা তখন একা ছিলো কিনা সেটাও জানা দরকার, যোগ করলো কিশোর। কাছাকাছি অন্য নৌকা থাকলে লোকটাকে তুলে নিয়ে যেতে পারবে। নৌকাটা দড়ি ছিঁড়ে ভেসে এসেছে হয়তো। অথবা এমনও হতে পারে খোলা সাগরে মাথায় আঘাত পেয়ে পানিতে পড়ে গেছে লোকটা। চোখে শঙ্কা ফুটলো দুই সহকারী গোয়েন্দার। 'আর যদি নৌকায় অন্য কেউ থেকে থাকে...' 'খুন করেছে ভাবছো!' রক্ত সরে গেছে মুসার মুখ থেকে। এখনই কিছু ভেবে বসাটা ঠিক নয়। এক মুহূর্ত চুপ করে বোটটার দিকে তাকিয়ে রইলো তিনজনে। তারপর রবিন বললো, ভাইকিং কিংবা ইন্ডিয়ানদের কারো হতে পারে নৌকাটা। হাত-টাত কেটে ফেলেছে হয়তো। হতে পারে। সেটা জানা দরকার, কিশোর বললো। নোঙরের দড়িটা চেপে ধরলো সে আর রবিন। নিজেদের বোট স্টার্ট দিলো মুসা। ভেসে আসা নৌকাটাকে টেনে নিয়ে চললো তীরের কাছে। চূড়ার ওপরে দাঁড়িয়ে এখনও হৈ-চৈ করছে যোদ্ধারা। ছেলেদের আসতে দেখে হাত নাড়লো কেউ কেউ। চেঁচিয়ে বলতে লাগলো একেক জন একেক কথা: 'ছবি তোলো! ছবি তোলো!' 'ওপরে উঠে এসো! পোজ দিচ্ছি!' ' শুধু আমাদের ছবি তোলো! ইন্ডিয়ানদের!' 'না, না আমাদের! ভাইকিংদের! আমরা জিতেছি!' 'খেতে এসো আমাদের সঙ্গে!' হেসে মাথা নাড়লো তিন গোয়েন্দা। ' এই বোটটা কি আপনাদের কারো?' চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলো কিশোর। 'না!' জবাব দিলো ভাইকিঙ্গেরা। 'বোট-ফোট বাদ দাও!' ইন্ডিয়ানরা বললো। ছবি তোলো আমাদের! নানারকম পোজ দিয়ে দাঁড়ালো জলদস্যু আর ইন্ডিয়ানরা। কেউ বর্শা ঠেকালো শত্রুর বুকে। কারো কুড়াল শত্রুর পিঠে, তলোয়ার শত্রুর গলায় ধরা। হেসে ক্যামেরা তুলে আরও কয়েকবার শাটার টিপলো রবিন। খাঁড়ির কাছে সৈকতে তাঁবু খাটানো হয়েছে কয়েকটা। বড় একটা অগ্নিকুন্ড ঘিরে বসেছে কিছু মহিলা আর ছেলেমেয়ে। সাথে করে আনা খাবার বের করছে। পিকনিক করতে এসেছে ওরা। এপাশ থেকে ওপাশ ক্যামেরার চোখ ঘুরিয়ে আনলো রবিন, আরও কিছু ছবি তুললো গাছপালাহীন দ্বীপটার। 'হয়েছে, চলো।' তাড়া দিলো মুসা পশ্চিম দিকে তাকিয়ে। বেশি সময় নেই আর। মাছ ধরতে না পারলে ফান্ডে টাকা পড়বে না। 'চলো।' রবিন বললো। কিন্তু আগে এই নৌকাটার একটা ব্যবস্থা করা দরকার, কিশোর বললো। মারাত্মক কিছু ঘটে গেছে হয়তো মানুষটার। রেডিওতে পুলিশকে জানিয়ে দিলেই তো হয়, পরামর্শ দিলো মুসা। ওই যে, অনেক বোট ভেড়ানো রয়েছে দ্বীপে। কারও না কারও কাছে রেডিও আছেই। গুড আইডিয়া। যোদ্ধাদের দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল কিশোর, শুনছেন? ওই বোটগুলো আপনাদের? মাথা ঝাঁকালো কয়েকজন। 'রেডিও আছে?' না, জবাব দিলো একজন ইন্ডিয়ান। আমারটা ভেঙে গেছে জবাব দিলো আরেক ভাইকিং। শেষ ছবিটা তুলে ক্যামেরা নামালো রবিন, 'ফিল্ম শেষ।' আর একটাও তোলা যাবে না। এই কিশোর, কি করবে? মাছ, নাকি তীরে ফেরা? ওসব কিছুই করবে না ও, তিক্ত কণ্ঠে বললো মুসা। নৌকাটা নিয়ে যাবে। তাইতো করা উচিত, দৃঢ়কণ্ঠে বললো কিশোর। কে জানে, 'সাহায্যের জন্যে অস্থির হয়ে আছে হয়তো মানুষটা!' নৌকার দড়িটা ওদের বোটের সঙ্গে বাঁধলো মুসা। টেনে নিয়ে ফিরে চললো মূল ভূখন্ডের দিকে। অনেক দূর চলে এসেছে। উদ্বিগ্ন ভঙ্গিতে বার বার ঘড়ি দেখছে কিশোর। নীল সাগরের বড় বড় ঢেউয়ে দোল খেতে খেতে ছুটছে বোট। আর কোনো কাজ না পেয়ে মরা ব্যাসগুলো পরিষ্কার করতে বসলো রবিন। আর কিছু না হোক, বললো সে। রাতের খাওয়াটা ভালোই জমবে। বিকেল চারটের পর রকি বীচ ম্যারিনাতে পৌঁছলো ওরা। এই দেখো, স্টীয়ারিং ধরে রেখেছে এখনো মুসা। 'ক্যাপ্টেন ফ্লেচার না?' রবিন আর কিশোর ফিরে তাকালো দেখার জন্যে। হ্যাঁ। সাথে আরও লোক রয়েছে, রবিন বললো। লম্বা পাবলিক ডকে যেখানে যেখানে বেশিরভাগ নৌকা বাঁধে লোকে, সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রকি বীচের পুলিশ চীফ ক্যাপ্টেন ইয়ান ফ্লেচার। ইউনিফর্ম পরা আরও তিনজন পুলিশ রয়েছে তাঁর সাথে। সবুজ পোশাক পরা একজন মহিলাকে ঘিরে রয়েছে চারজন। বিকেলের রোদে ঝলমল করছে মহিলার লাল চুল। চীফ কথা বলছেন তার সাথে। সাগরের দিকে তাকিয়ে চোখ মুছলেন তিনি। 'কে?' নিজেকেই যেন প্রশ্ন করলো মুসা। জানিনা, জবাব দিলো রবিন। আমাদের দিকেই তো নজর দেখছি। সাগরের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে ছেলেদের দিকে তাকিয়েই দৃষ্টি স্থির হয়ে গেছে মহিলার। বড় বড় হয়ে গেছে নীল চোখ। আমাদের দিকে নয়, বুঝলে, কিশোর বললো। তাকিয়ে রয়েছে খালি নৌকাটার দিকে। চিনতে পেরেছে মনে হয়। হ্যাটটাও চিনতে পারবে বোধহয়, অনুমান করলো মুসা। রক্ত মাখা হ্যাটটা টেনে বের করলো সে। দেখেই চিৎকার দিয়ে উঠলেন মহিলা, যেন ভূত দেখেছেন। জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়লেন চীফের বাহুতে। (চলবে...)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৭০ জন


এ জাতীয় গল্প

→ পুরনো_ভূত পর্ব_এক-দুই

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now