বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

পর্দা: নারীর দুর্গ ও রক্ষাকারী ঢাল

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সাঈদ বিন দুলাল (০ পয়েন্ট)

X পর্দা একটি ইবাদত,সালাত যেমন ইবাদত। এটি আল্লাহর নির্দেশ। বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণএবং সময়োপযোগী। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে মাজীদে বলেন, “হে নবী, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের স্ত্রীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়েদেয়। তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেওয়া হবে না।আর আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়াময়।” [সূরাআল-আহযাব, আয়াত: ৫৯] বেপর্দা আর নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা সমাজে কেমন বিরূপপরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এবং নারীকে কীভাবে ভোগ্য-পণ্যের বস্তুতে পরিণত করেছে তাআমরা আমাদের চারদিকে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই। পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অশান্তি, দাম্পত্য-কলহ ও পারস্পরিক অবিশ্বাস, বিবাহ-বিচ্ছেদ, নারী-নির্যাতন ইত্যাদিসবকিছুর পেছনেই একটি প্রধান কারণ হলো পর্দাহীনতা এবং নর-নারীর অবাধ মেলা-মেশা। তথাকথিত নারী-স্বাধীনতার নামে নারীকে আজ যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছেবিজ্ঞাপন-সামগ্রী এবং পর্নোগ্রাফীতে। পণ্যের বিজ্ঞাপনে নারী যেন আজ একটি অপরিহার্যবিষয়। সম্প্রতি দি ওয়াশিংটন পোষ্ট পত্রিকার বরাত দিয়ে আমাদের ঢাকার দৈনিক জনকন্ঠেপ্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “আমেরিকার মেয়েরা যৌন-আবেদনময়ী হওয়ার পরিবেশেই বড় হচ্ছে। তাঁদের সামনে যেসব পণ্যও ছবি তুলে ধরা হচ্ছে তাতে তাঁরা যৌনতার দিকেই আকৃষ্ট হচ্ছে। মার্কিন সংস্কৃতি, বিশেষ করে প্রধান প্রধান প্রচার-মাধ্যমে মহিলা ও তরুনীদের যৌন-ভোগ্য-পণ্য হিসেবেদেখানো হচ্ছে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশন (এপিএ) টাষ্ক ফোর্স অন দ্যাসেক্সুয়ালাইজেশন অব গার্লস-এর সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে একথা বলা হয়।রিপোর্টের প্রণেতাগণ বলেন, টিভি-শো থেকে ম্যাগাজিন এবং মিউজিক-ভিডিও থেকে ইণ্টারনেটপর্যন্ত প্রতিটি প্রচার-মাধ্যমেই এই চিত্রই দেখা যায়। …………. প্রণেতাদেরমতে, যৌনরূপদান তরুনী ও মহিলাদের তিনটি অতি সাধারণ মানসিকস্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গেসম্পর্কযুক্ত।এগুলো হলো পেটের গোলযোগ, আত্মসম্মানহানিবোধ এবং মনমরা ভাব। …………….. লিজ গুয়া নামের একজন মহিলা বলেন, তিনি তাঁর ৮ (আট) বছরের মেয়েতানিয়ার উপযোগী পোশাক খুঁজে পেতে অসুবিধায় রয়েছেন। প্রায়ই সেগুলো খুবই আঁটসাঁট, নয়তো খুবই খাটো। যৌন-আবেদন ফুটিয়ে তোলার জন্যই এ ধরনের পোশাক তৈরি করা হয়।” (দৈনিক জনকন্ঠ, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০০৭) এতক্ষণ পর্যন্ত তথাকথিত নারী-স্বাধীনতার নামে পশ্চিমা-জগতের ঘুনেধরা সমাজের একটিভয়ঙ্কর চিত্র আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাস্তবচিত্র তার চাইতেও আরোঅনেক বেশি ভয়াবহ। অর্থনৈতিক চাকচিক্য আর প্রযুক্তিগত উন্নতির আড়ালে তথাকথিত ‘আধুনিক’ বিশ্বের সমাজ ও পারিবারিক ব্যবস্থায় আজ ধ্বস নেমেছে। নারী-স্বাধীনতা ওব্যক্তি-স্বাধীনতার নামে নারী আজ পদে পদে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছে, ব্যবহৃত হচ্ছে’ ভোগের সামগ্রী হিসাবে। এথেকে মুক্তির একমাত্র উপায় ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ওজীবন-নির্ধারণের সঠিক ও পূর্ণ অনুসরণ। আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে পবিত্র কুরআন মজিদের সূরা আল-আহযাবের যে আয়াতটিউল্লেখ করেছি সেখানে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ্‌ তা‘আলা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএবং মুমিনগণকে এ নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁদের স্ত্রী এবং কন্যাগণ যেন চাদরদ্বারা নিজেদের শরীর ঢেকে রাখে। যার মধ্যে তাঁদের জন্য রয়েছেস্বাচ্ছন্দ্য এবং প্রশান্তি। আমি শুরুতেই উল্লেখ করেছি যে, অনেকে ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থাকে সঠিকভাবে নাবুঝার কারণে একে নানাভাবে সমালোচনা করে থাকেন। তাঁরা মনে করেন, এ-ব্যবস্থারমাধ্যমে মুসলিম-সমাজে নারীদের উপরে একপ্রকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যার ফলে, তাঁরা মানবীয় কার্যাদিতে ইচ্ছামত অংশগ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়।পর্দা এবং নারী-পুরুষের পৃথকীকরণের ইসলামী ধারণাকে বুঝতে হলে তা বুঝতে হবেনারীদের সতীত্বের পবিত্রতা রক্ষার্থে এবং সমাজে নারীদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখারস্বার্থে গৃহীত ব্যবস্থাদির প্রেক্ষাপটে, যার মাধ্যমে ঐসব উদ্দেশ্য লঙ্ঘনের আশঙ্কাতিরোহিত হয়। পবিত্র কুরআনে সূরা নূরের ৩১ ও ৩২ নং আয়াতে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, “(হে নবী আপনি) মুমিন পুরুষদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। এটিই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩০] তিনি আরো বলেন, “আর “(হে নবী আপনি) মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে (ক্রিতদাস-ক্রিতদাসী), অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১] সুতারাং উক্ত আয়াতদ্বয় দ্বারা বুঝা যায় আসলে মাহরাম আর গাইরে মাহরাম ব্যক্তিকে। আর কোরআনে এ মর্মে বলা হয়েছে তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করনা নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। আর ইসলামে নতুন কিছু প্রবেশ করানোর কোনই বিধান নেই। বানানো সম্পর্ক বলতে একমাত্র বিবাহকেই বোঝায়। তাছারা অন্যকোন বানানো সম্পর্ক ইসলাম সমর্থন করেনা। আর বানানো সম্পর্ক যায়েজ বললে রাসুল (সাঃ) এর নামে মিথ্যারোপ করা হবে। আর মিথ্যারোপকারিদের ভয়াবহ আযাব রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ আমি যা বলিনি সে কথা যে আমার নামে বলবে তার আবাসস্থল হবে জাহান্নাম। (বুখারীঃ সালামাহ ইবন আকওয়া বর্ণিত। একই/কাছাকাছি অর্থবোধক হাদীস ১০০ এর বেশী সংখ্যক সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, যা এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ।) নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা এবং নর-নারীর মধ্যে চুপিসারে সংঘটিত সব অনৈতিকক্রিয়াকলাপের পরিণাম কি ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা আমি ইতোপূর্বে আপনাদের সম্মুখেউপস্থাপন করেছি। আমরা দেখেছি যে, আপাত দৃষ্টে নারী-পুরুষ উভয়ের সম্মতিতে সংঘটিতঅপরাধের ফল নারীকেই এককভাবে ভুগতে হয়েছে বেশি। তাই, ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়কে শুধুপরস্পরের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি দিতেই বারণ করেনি, অধিকন্তু সকল প্রকারের দৈহিকসংস্পর্শ থেকেও বিরত থাকতে নির্দেশ প্রদান করেছে, যাতে করে অদম্য তাড়নার উদ্রেকঘটতে না পারে। ইসলাম মনে করে”Prevention is better than the cure”অর্থাৎ, দুর্ঘটনা ঘটার আগে তার পথগুলো বন্ধ করাই শ্রেয়তর। একজন নারী, যিনি তাঁর পোশাক ও চলা-ফেরায় পর্দার নিয়মাবলী বা ‘হিজাব’পালন করেথাকেন, তিনি সাধারণত অন্য পুরুষ দ্বারা অসম্মানিত ও লাঞ্ছিত হন না। এভাবেএকজনমুসলিম নারী ‘হিজাব’বা পর্দা-পালনের মাধ্যমে অনেক সমস্যা থেকে নিজেকে মুক্তরাখতে পারেন, যা আজ পশ্চিমা জগতের নারীরা অহরহ মোকাবিলা করছেন। ইসলাম নিঃসন্দেহে পর্দার মাধ্যমে নারী জাতিকে মর্যাদা ও সম্মানের আসনেঅধিষ্ঠিত করেছে এবং তাকে এমন এক নিরাপত্তা দান করেছে, যার ফলে একজন নারী অধিকতরস্বাচ্ছন্দে তাঁর কাজকর্মসমূহ সমাধা করতে পারে। পর্দা মুসলিম নারীকে প্রশান্তি দানকরেছে। আমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবো যে, পর্দা বা হিজাব পালনকারী একজন নারীঅধিকতর নিরুদ্বেগ ও স্বাচ্ছন্দপূর্ণ জীবন যাপন করে থাকেন। এটা এ কারণে যে, আত্ম-মর্যাদাশীল নারী হওয়ার জন্য ইসলাম দৈহিক অবয়বের গুরুত্বকে কমিয়ে দিয়েছে। আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে বুঝে, সে অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুক। আমীন।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২১০১২ জন


এ জাতীয় গল্প

→ পর্দা: নারীর দুর্গ ও রক্ষাকারী ঢাল

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now