বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্প (পর্ব - ৫)

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্প - পর্ব ৫ - সালেহ তিয়াস ১১ আমার অবস্থা দিন দিন টাইট হতে লাগল। অল্পদিনেই টেনশনে আর ঘুমের অভাবে শুকিয়ে গেলাম বেশ কিছুটা। ওজন কমে গেল কয়েক কেজি। প্রতিদিন সেই একই রুটিন। ভয় একটুও কমেনি। বরং বেড়েছে। আর ওদিকে ঘুম কমে পড়াশোনাটাও বেড়েছে। আমার অবস্থা দেখে বোধহয় মামী মামার কানে খুব করে লাগাল, কারণ তার পরদিনই মামার ঘরে ডাক পড়ল আমার। কি ব্যাপার? পড়াশোনা কেমন হচ্ছে? জি মামা, ভালো। আজকাল নাকি রাত জেগে পড়া হচ্ছে? জি। ঘুম নাকি একদমই হচ্ছে না? হচ্ছে। কখন? দিনের বেলায়? জি। কেন? সারারাত জেগে কি সাধনা করা হচ্ছে? আমি চুপ। পাঁঠা! কি পাঠাব? পাঁঠা! তুই একটা পাঁঠা! অ্যাঁ! ইয়ে... আস্ত একটা পাঁঠা। ...ম... এদিকে তাকা। ভয় পাস? জি পাই। কাকে ভয় পাস? আপনাকে। আরে গাধা, স্কেলিটনটা দেখে ভয় পাস? হুম... কেন ভয় পাস? মানে...মানে...মানে...ভয় লাগে... ভয়টা লাগে কেন? তোকে কি খেয়ে ফেলবে? নাকি অন্ধকারে ঘাড় মটকে দেবে? আমি চুপ। কি ব্যাপার? কথা বল!! না। তাহলে এত বড় ধাড়ি ছাগল, ভয়টা কিসের তোর? তোর শরীরে একটা স্কেলিটন আছে না? আছে। সারাদিন ওটা নিয়ে টই টই করে ঘুরিস, ওটাকে তো ভয় পাস না। ইয়ে মানে... চোপ!! আর যদি একদিন শুনি যে ভয় ভয় নাটক করছিস...যা এখন। চলেই যাচ্ছিলাম, মামা আবার ডাকল। এবার গলায় তুলনামূলকভাবে নরম সুর। অবিশ্বাস্য ব্যাপার! শোন, এই যে কঙ্কালটা ভয় পাচ্ছিস, এইটা কি একসময় মানুষের ছিল না? তখন তো সে তোরই মত পড়াশোনা করত, চাকরিবাকরি করত। যখন তার সময় শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন সে চলে গেছে। তাহলে তুই ভয়টা পাচ্ছিস কেন? ওর তো এখন আর হাত পা নাড়ানোর ক্ষমতা নেই, কিছু বোঝার ক্ষমতা নেই, তুই যদি ওকে থাপ্পড়ও মারিস তাহলেও কিছু বলবে না, আবার যদি চুমুও দিস তাহলেও কিছু বলবে না। এই বয়সে বাচ্চাদের মত ভয় পেলে কি চলবে? মামা এত নরম করে কথাগুলো বললেন যে আমি পুরো অভিভূত হয়ে গেলাম। ব্যাপার কি? হঠাৎ এই স্নেহের বৃষ্টি ঝরার কারণটা কি? যা, আর ওসব ভয় ভয় করিস না। মামার কাছে ডোজ খেয়ে আমি বেশ সাহস পেয়ে গেলাম। আসলেই তো, ভয় পাবার কি আছে? আর এই বয়সে ভয় পেলে অন্যরা কি বলবে? বেশ সাহস করেই রুমে ঢুকে পড়লাম। বিছানায় দাঁড়িয়ে কঙ্কালটার কাছাকাছি যাচ্ছি, হঠাৎ একটপশলা ঝড়ো বাতাস জানালা দিয়ে সুৎ করে রুমে ঢুকে পড়ল...আর কঙ্কালটা আমার দিকে মুখ করে অট্টহাসি হেসে উঠল খনখনে গলায়...আর আমি বাবাগো মাগো বলে এক ছুটে বাসার বাইরে! ১২ বেশ ভালোই কোচিং টোচিং করছি। রেজাল্টও ভালো হচ্ছে। কিন্তু ব্যাচটা কম্বাইন্ড। অচিরেই ট্র্যাপে পড়ে গেলাম। একদিন বাসায় ফিরেছি, ড্রয়িংরুমে ব্যাগ খুলে বইপত্র বের করতে গিয়েই একটা নীল খামের চিঠি পড়ল মেঝেতে। আর এমন কপাল, তখন মামী সামনেই! ব্যস, মামী চিলের মত ছোঁ মেরে চিঠিটা তুলে নিল। আমি ওটা উদ্ধার করার জন্য বুফন স্টাইলে একটা ডাইভ দিলাম, কিন্তু শেষ মুহূর্তে মামী সরে গেল, আর আমি হুমড়ি খেয়ে পড়লাম মেঝেতে। কিছুক্ষণ দৌড়ঝাঁপ করে কোন লাভ হল না। মামীই জিতল। আমি বিজিত বসে বসে হাঁপাতে লাগলাম। মামী বলল, তলে তলে তাহলে এগুলো করা হচ্ছে, না? তা কাকে গাথালে তোমার বড়শিতে, শুনি? মামী, আমি জানি না। জানো না! তাহলে চিঠি দেবে কে? এটাও জানি না। না বাপু চাপা কম মার। এই বয়সে কি যে কি হয় কিছুই বলা যায় না...বলে মামী চিঠিটা খুলতে লাগলেন। খুলে উনি প্রথমে ভ্রূ কুঁচকে কিছুদূর পড়লেন। আমি এই ফাঁকে একটু উঁকিঝুঁকি মারার চেষ্টা করছিলাম, মামী বলে কি, দাঁড়াও, আগে আমি পড়ে নিই। মামী যখন নানা মুখভঙ্গি করে পড়ছিল, তখন আমি ভাবছিলাম, কোন সেই গাধী যে আমাকে চিঠি দেবে? তাও নীল খামে? নাকি কোন গাধা? আমি ভাই সাধু বাবা কলা খাই, কারও সাতে পাঁচে নাই। আমার সাথে কারও অন্তত নীল খাম চিঠির সম্পর্ক নেই। চিঠি শেষ করে মামী হো হো করে হাসতে লাগলেন। কি হল? অমন বিশ্রী হাসি হাসছ কেন? আরে দেখই না কি লিখেছে তোমার ড্যাশ, বলে মামী আবৃত্তি করে চিঠিটা পড়া শুরু করলেন... প্রিয়তম তোমাকে দেখিবার পর থেকে আমার চোখে আর ঘুম নাই। ঘুম অচিন দেশে পলায়ন করিয়াছে। আর আমি সারারাত নির্ঘুম। প্রতি মুহূর্তে তোমার কথা ভাবিতেছি। তোমাকে নিয়ে রঙ বেরঙের স্বপ্নের জাল বুনিতেছি। কিন্তু স্বপ্নের জালটা মাকড়সার জালের মত হইয়া যাইতেছে। যেখানে আমি মাকড়সা, আর তুমি পোকা। এই পোকা, তুমি কি আমার জালে আটকাইতে রাজি আছ? থাকিলে কালকে নীল শার্ট পড়িয়া কোচিঙে আসিবে। তাহলেই বুঝিব তুমি আমার প্রাণনাথ হইতে প্রস্তুত। কথা দিচ্ছি, সুখে রাখব। বিঃ দ্রঃ ফুচকা খাওয়ার জন্য কিছু টাকা অবশ্যই আনিবে। তারপর মামীর আবার হো হো হাসি। গা দুলিয়ে দুলিয়ে। আমি তো পুরা টাশকি। হায় হায়। কোন মাইয়া কি সব লিখেছে। আবোলতাবোল। মাথামুণ্ডু নাই। নিচে নামও তো লেখে নাই। নাহ, মাইয়া জাতটা পুরাই স্ক্রু-ঢিলা।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৭১ জন


এ জাতীয় গল্প

→ একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্পঃ পর্ব ১১
→ একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্প (পর্ব - ৫)
→ একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্প (পর্ব - ৪)
→ একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্প (পর্ব - ৩)
→ একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্প (পর্ব - ২)
→ একটি অসমাপ্ত দৌড়ের গল্প (পর্ব - ১)

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now