বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
কলেজ যাইতে ধরে নিশুর সাথে দেখা হয় আমার।নিশু আমার মামাতো বোন। খুবই দুষ্টু প্রকৃতির মেয়ে। সবসময় শুধু মজা করতে ভালোবাসে। সেটা যে কোনো বিষয়েই হোক না কেনো।
মজা ওকে করতে হবেই। কিন্তু মনের দিক থেকে খুবই নিষ্পাপ। কথা বেশি বলে কিন্তু অন্যের খারাপ কখনোই চায়না।
স্বভাবটাই ওর বাচ্চামেয়েদের মতো।
তো যাই হোক,,
আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, কিরে নিশু পাগলি, কেমন আছিস?
--- তোর মতো ( নিশু)
--- আমার মতো মানে কি,,?
--- তোর মাথা
--- হেহে সেটা তো আমার সাথেই আছে
--- হু সেটা তো আছেই কিন্তু মাথার বুদ্ধিটা বুঝি লোপ পেয়েছে।
--- তাহলে এখন কি করতে হবে বুদ্ধিগুলো আমার মাথায় ফিরিয়ে আনতে,,
--- সকাল বিকাল তিন চামুচ করে তেলাপোকার জুস খেতে হবে,, হিহিহি
--- ইয়াক থু,,,কিসব বলিস হু,,
--- হু ঠিকই বলেছি।
--- এই যা ভাগ আমার সামন থেকে,,, গা গুলোচ্ছে
--- ওকে ওকে যাচ্চি,, এখন মানুষকে ভালো বুদ্ধি দিতে নেই।
এরপর ও চলে গেলো কিন্তু পিছন ফিরে একটি বার ও তাকালোনা। নিশুকে আমি স্কুলজীবন থেকে পছন্দ করতাম। ও বেশি কথা বলে জন্য ওর সাথে সবাই মিশতে চাইতোনা। আমিই ওর বেষ্ট ফ্রেন্ড। ইদানীং আমার ভালোলাগাটা ভালোবাসায় রুপ নিয়েছে। কিন্তু ওকে বলার সাহস পাচ্ছিনা। কিভাবে যে বলি,,!!
বলার পর যদি ও না করে দেয় তাহলে তো আমাদের এই বন্ধুত্ব সম্পর্কটারও ইতি টানতে হবে। এর চেয়ে ভালো যেমন আছি তেমনি থাকি। সময় বুঝে একদিন ওকে বলে দিবো।
কলেজ শেষে বাসায় এলাম।
ওহ্ বলাই তো হয়নি, নিশু আমার ক্লাসমেট। আমরা একই কলেজে পড়ি। যদিওবা ও আমার দুবছরের ছোট।
বাসায় এসে শুনি নিশুকে দেখার জন্য নাকি লোকজন আসছে ওদের বাসায়। শুনে তো মেজাজ একশো এক এ উঠে গেলো।
সাথে সাথেই নিশুকে কল করি।
--- হ্যালো,,(নিশু)
--- কিরে পাগলি, তোর নাকি বিয়ে আজকে,,?
--- মনে হয়,,
--- ওই হারামি, তুই সত্যিই এ বিয়েতে মত দিয়েছিস নাকি,,?
--- না দিয়ে উপায় কি,,? আমার আম্মু আব্বুর ধারণা আমি নাকি পাগলি। এ জন্য আমার নাকি বিয়ে হবেনা।
আর এ জন্য কই থেকে যে এ মফিজ কে ধরে এনেছে কে জানে,,,
জানিস তার দাঁতগুলি কলাগাছের মতো লম্বা, মহিষের মতো কালো বিড়ালের মতো ছোট ছোট চোখ আর হাতির মতো মটু,,,আর সে হাটে কচ্ছপের মতো করে ধিরে ধিরে,,।
--- ওওও, এবার বুঝলাম, তোর পছন্দ হয়নি তাইনা।
--- সেটা আবার বলতে,,,,আমি দেখতে কত্তো সুন্দর, চোখ দুটি টানাটানা, মাশাল্লাহ কতো ফর্সা আমি। আর তুই তো বলেছিস আমার চাহনি আর ঠোঁটের নিচের কালো তিলটি আমার স্বপ্নের রাজপুত্রের ক্রাশ খাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
--- হু ঠিকই তো বলেছি। তাহলে এই মফিজের কি করবি,,?
--- কি যে করি,,, কিছু তো একটা করতেই হবে। হালা কেল্টু কলাগাছ এসেছে আমাকে বিয়ে করতে,,, ওর বিয়ে করার স্বাদ মিটিয়ে দিতে হবে।
এই সোম শোন,,,
--- ওই আমি সোম না সোহম।
--- আচ্ছা ঠিক আছে স্যার,, আপনি যেই হোন না কেনো, সোম কিংবা সোহম,,,
আপনাকে আমার একটা কাজ করে দিতে হবে।
--- হু, কি কাজ বল,,
--- তুই দশটা চুইংগাম আর দশটা ললিপপ তাড়াতাড়ি এনে দে আমাকে।
--- সেগুলো দিয়ে কি হবে,,?
--- বিয়ে ভাঙবো। তুই আনবি কিনা বল
--- আনবো না মানে,,,,কত্তোজোড়ে আনতেছি তুই দেখ,,,,
--- দইন্ন্যিবাদ ফকু,,
--- কি বললি, ফকু,,,,,!! সেইটা আবার কে,,?
--- কে আবার,, তুই,,,আমার জন্য এসব আনবি সে জন্য তোকে আদর করে নাম দিলাম ফকু,,, হিহিহি নামটা কিন্তু দারুন। তাইনা,,
--- ওই ওই, এসব আদরের নামের দরকার নেই আমার,, এমনিতেই আম্মু ডাকে পিকলু করে, সেটাই হজম করতে আমার অনেক সমস্যা হয়,,আবার তুইইই,,,,
এই নাম এক্ষুনি ফিরিয়ে নে, নইলে তোর এসব আনবোনা।
--- আচ্ছা ফকু,,ডাকবোনা আর
ফকু বলে তুই তো সোম,,আরে আবারো ভুল হয়ে গেলো মিঃ সোহম,,হিহিহি
--- নিশুউউউউ
--- ওকে বাই,,টুট টুট টুট
এই যাহ্ ফোনটা কেটে দিলো।
এরপর আমি আম্মুকে বললাম আমিও যাবো। মামাতো বোনের বিয়ে বলে কথা,,,
যাওয়ার সময় পঞ্চাশ টাকা দিয়ে নিশুর ওইসব ছাইপাঁশ নিলাম।
মামার বাসায় এসে দেখি উনারা ড্রয়িংরুমে বসে পায়ের উপর পা রেখে রসের আলাপ পারছে।
মাঝখানে লম্বামতো হাতিকারের লোকটাকে দেখে মনে হলো ওই হালা বর সাজতে চায়। একটু হ্যাবাগোবা টাইপের। আমাকে দেখে একটা হাসি দিলো। এই সুযোগে উনার কলাগাছের মতো লম্বা দাঁত দেখে নিলুম।
উনার হাসির রিপ্লাই হাসিতে দিলাম। আর মনে মনে ভাবলাম হালা সয়তান আমার বউকে বিয়ে করতে এসেছিস,,,অপেক্ষা কর বাছা, তোর বিয়ে করার স্বাদ মিটিয়ে দিচ্ছি।
ভিতরে এসে দেখি মিশু ভুত সেজেছে।
ওকে বললাম কিরে, এতো সাজুগুজু কিসের জন্য?
--- ও বললো, বরকে ইমপ্রেস করার জন্য।
যেসব আনতে বলেছিলাম সেসব এনেছিস কি,,?
--- হু এনেছি ( আমি)
এরপর ও এসব নিয়ে কিচেনে গেলো। আমিও কৌতুহলবসত ওর পিছুপিছু গেলাম।
মামি ওকে বললো, নিশু তোর রান্না হয়েছে কি,,
নিশু বললো আর পাঁচ মিনিট, এরমধ্যেই হয়ে যাবে।
এরপর ও কয়েকটা ছোট আকারের আলু ছিলে নিয়ে মাঝখানে ললিপপ আকারে গর্ত করে নিলো। তারপর সেগুলো লবন মরিচ দিয়ে সিদ্ধ করে নিয়ে তেলে ভাজলো। এরপর ওগুলো ঠান্ডা করে ওগুলোর ভিতর ললিপপ ঠুকিয়ে দিলো।
হাহাহা ওর এসব পাগলামি দেখে হাসি থামাতে পারছিনা। উনারা মুড়মুড়ে ভেবে যেই কামর বসাবে তখন শক্ত ললিপপটা বাধা হয়ে দাঁড়াবে। হয়তো দাঁত ভেংগেও যেতে পারে।
আমাকে কয়েকটা চুইংগাম দিলো চিবুতে,,কখনো এসব খাইনি আমি। আজ নিশুর জন্য এসবও খাইতে হচ্ছে। না জানি ওকে পাওয়ার জন্য আরো কতো কি করতে হবে কে জানে,,,,
তারপর,,,
-- শাখি--
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now