বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
পরিশিষ্টঃ
সালাম সাহেবের মন মেজাজ খুব একটা ভাল নেই। আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে তিনি ভয় পাচ্ছেন। তিনদিন আগে তার অফিসের কলিগ আবু তাহেরের লাশ দেখে আসার পরই এই অবস্থা। পুরো অফিসটাই থমথমে হয়ে আছে। তিনি অবশ্য লাশ দেখার পর আর অফিসে যাবার মত মানসিক জোর অর্জন করে উঠতে পারেননি। সেই যে ঘরে সেঁধিয়েছেন!
আবু তাহেরকে বীভৎসভাবে খুন করেছে কেউ। চোখ খুবলে নিয়েছে। হৃৎপিন্ডের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। গায়ের আঁচড়ের চিহ্ন দেখে কারো মনেই আততায়ীর পরিচয় নিয়ে দ্বিধা ছিল না।
সালাম সাহেব আবু তাহেরকে নিয়ে মশকরা করায় এখন যতটা না লজ্জিত তার চাইতেও অনেক বেশি ভীত। তবুও তিনি ঠিক করেছেন আজ বাইরে গিয়ে খানিক হাঁটাহাঁটি করে আসবেন। ভয়টা কাটানো দরকার। ঘরে বসে থাকলে আরো বেশি করে জাঁকিয়ে বসবে।
সালাম সাহেব গায়ে পাঞ্জাবী চড়িয়ে বের হলেন। মোড়ের চায়ের দোকান থেকে চা খাবেন। বাসার কিছু টুকটাক বাজার করার কথাও কাল থেকে বলছে স্ত্রী আয়েশা বেগম।
সেলিম সাহেব বাসা থেকে বের হয়েই এদিক ওদিক চাইলেন। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আলো আঁধারির মাঝে কোনো কুকুর-টুকুর নজরে এল না তার। পা চালালেন বড় ডিপান্টমেন্টাল স্টোরের দিকে। কয়েক পা এগিয়েছেন ঠিক তখনই কে যেন ডেকে উঠল পেছন থেকে।
'সালাম ভাই!'
থমকে দাঁড়িয়ে ঘুরে তাকালেন সালাম সাহেব। পেছন থেকে হন্তদন্ত হয়ে হেঁটে আসছেন প্রতিবেশী নজরুল সাহেব। দেখে মনে হতে পারে ভদ্রলোক রাজ্য ওল্টানো খবর নিয়ে আসছেন। কিন্তু সালাম সাহেব জানেন ভদ্রলোক ডায়বেটিস এর রোগী। প্রতি সন্ধ্যায় এভাবেই পাড়া কাঁপিয়ে হেঁটে বেড়ান।
'কী বিষয়, নজরুল ভাই?'
'ভাই একটা জিনিস চাইতাম আপনার কাছে?
'কী জিনিস।'
'আমাকে একটা কুকুর দিতে হবে।'
'কুত্তা!' সালাম সাহেবের বুক ঢিবঢিব করতে লাগল।
'জী, আপনি তো অনেকগুলো কুকুর পালছেন ইদানীং। আপনার বাসার সামনে দেখি। আমাকে একটা দিয়ে দেন। যা দিনকাল এল! কুকুরের উপরে কোনো দারোয়ান নাই।'
সালাম সাহেবের হাঁটুজোড়া থেকে তাকে দাঁড় করিয়ে রাখবার শক্তি চলে গিয়েছে। কুলকুল করে ঘামছেন। অনেক কষ্টে নিজেকে খাড়া রাখলেন।
'ওই তো, এখনো আপনার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে।' হাত তুললেন নজরুল সাহেব।
সালাম সাহেব তাকালেন নজরুল সাহেবের ইশারা লক্ষ্য করে।
একটু আগেও ছিল না, এখন ভোজবাজির মত আভির্ভূত হয়েছে কুকুরগুলো। অন্ধকারে দেহের আকৃতি স্পষ্ট নয়। স্পষ্ট শুধু চোখগুলো। জ্বলছে গনগনে ভাটার উত্তাপ নিয়ে।
সালাম সাহেব গুণলেন,এক, দুই,তিন,চার...চারটা কুকুর!
(সমাপ্ত)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now