বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
দুই
গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেল। মাথা তুলতে পারছি না। ভারী হয়ে আছে। যার ফলে আন্দাজ করতে পারলাম, বেশিক্ষণ ঘুমাতে পারিনি। রাতের অনেকটা এখনও বাকি। তবে ঘুম ভাঙ্গল কেন? কারণ ছাড়া আমার গভীর ঘুম ভাঙ্গার কথা না। মনে হচ্ছে ঘুমের ঘোরে কোনো শব্দ পেয়েছি।
কোনো রকম আগাম আভাস ছাড়াই অচেনা এক ভয় আমাকে ঘিরে ফেলল। অপার্থিব একটা অনুভূতি হচ্ছে। কেবলই মনে হতে লাগল, রুমে আমি একা নই। কেউ একজন আমার খুব কাছেই রয়েছে, এবং সে আর যেই হোক আমার রুমমেট নয়। কারণ, আব্দুল মতিন আজ সন্ধ্যায় বাড়ি গেছে। বাসায় আমি একা, সম্পূর্ন একা!
শব্দটা শুনতে পেলাম ঠিক তখনই। এবার ঘুমের ঘোরে নয়। পূর্ণ সচেতনতায়।
ঘেউ! ঘেউ!
কুকুরের ডাক!
আমি ধড়মড় করে উঠে বসলাম বিছানায়। আমার রুমে কোনো ডিমলাইট নেই। স্ট্রীট লাইটের চিকন একটা রেখা প্রতি রাতে এসে পড়ে আমার রুমে। কাজ চলে যায় তাতেই। এইমাত্র লক্ষ্য করলাম, আজ সেটাও নেই। ডেঁপো ছোকরার দল ভেঙ্গে ফেলেছে ঢিল ছুড়ে। মশারি টানানো রয়েছে। গোলাপী রঙের জালের ফাঁক দিয়ে তিন জোড়া অঙ্গার চোখে পড়ল আমার। ঠিক পায়ের কাছেই। কয়লার আগুন যেমন ধিকি ধিকি জ্বলে, ঠিক সেভাবেই জ্বলছে। আরো অনেক বেশি ভীতিকর ঔজ্বলতায়। যেন তীব্র আক্রোশ ওগুলোর জ্বালানি।
আমার সারা শরীর আচমকাই কাঁপতে লাগল থরথর করে। কাঁপুনি শুরু হয়েছে বিশ্রী পঁচা গন্ধটা নাকে আসা মাত্রই। এইমাত্র কেউ কবর খুঁড়ে পঁচা মাংস খেয়ে সামনে দাঁড়ালেই শুধু এমন নারকীয় গন্ধ পাওয়া সম্ভব। গা গোলাচ্ছে আমার। তীব্র ভয় পেট উলটে বমি করা থেকে বাঁচিয়ে দিল।
গড়ড়ড়... আওয়াজ পাচ্ছি অন্ধকারের বুকে। শ্বাপদেরা ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে এভাবেই আওয়াজ করে। অজান্তেই আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
এভাবে কতক্ষণ ছিলাম বলতে পারব না। নাকে লেগে থাকা সেই গন্ধটা এক সময় বিলীন হতেই ভয়টা কমতে লাগল। চোখ মেললাম ধীরে ধীরে। তাকালাম সামনে। কোনো অঙ্গার জ্বলতে দেখলাম না। নেই কোনো পাশবিক আওয়াজও। খা খা করছে গোটা রুম। নিস্তব্ধতা ভীতির উতকৃষ্ট উৎস। কিন্তু এই নিস্তব্ধটা আমার ভাল লাগল। যেভাবে এসেছিল, ভয়টা ঠিক সেভাবেই মিলিয়ে গেল। মাথা তেমন একটা না ঘামিয়েও আমি পুরো ব্যাপারটা বুঝে ফেললাম।
দরজাটা রাতে ঘুমাবার আগে প্রতিদিন মতিনই লাগিয়ে দেয়। আজ ও না থাকায় দরজাটা নিশ্চয়ই খোলাই রয়ে গেছে। আমি লাগিয়েছি কিনা মনে করতে পারছি না। আর সেই সুযোগেই আমার পেছনে ঘুরঘুর করতে থাকা কুকুরগুলো বাসায় ঢুকে পড়েছে। আসার আগে ডাস্টবিন ঘেঁটেছে শয়তানগুলো। পঁচা গন্ধটা তাতেই ছড়িয়েছে। আর আমি ভেবেছি...হা হা হা!
আসলে গভীর রাতে চোখ খুলে তিনটা কুকুর দেখতে পেলে যতটা ভয় পাওয়া উচিৎ, আমি তার থেকে মোটেও বেশি পাইনি। অনেকে যে হার্টফেল-টেল করে বসত সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
আমি বিছানা ছাড়লাম। দরজা বন্ধ করতে হবে। কুকুর তিনটেকে বার কয়েক “কুত্তার বাচ্চা” বলে গালি দিয়ে অন্ধকারেই হাতড়ে হাতড়ে এগোলাম দরজার দিকে। দরজার কাছে পৌঁছে আন্দাজে হাত রাখলাম ছিটকিনিতে। সঙ্গে সঙ্গে শিরদাঁড়া বেয়ে বরফ নামল। বুকের খাঁচায় প্রবল ছটফটানি হৃৎপিণ্ডের। পুরনো ভয়টা ফিরে এল আগের চাইতেও তীব্র মাত্রা নিয়ে।
দরজাটা লাগানোই ছিল...।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now