বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

পাখির ছোট্ট আকাশ

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X পাখির ছোট্ট আকাশ লিখেছেন- মাহী ফ্লোরা ভরসন্ধ্যেবেলা আমি আর ইমু ছাদে হাঁটছিলাম। মা জানলে খুব বকবে। দু দিন হল নানুর অসুখ। খবর পাঠিয়েছিল। মাকে দেখতে চায়। আমার রীক্ষা চলছে। তাই ইমুকেও সাথে নিতে পারেনি মা। হঠাৎ ইমু বলে, লাফ দিবি আপা? চল লাফ দি। আরে কি বলিস? কেমন যেন ঘোর ঘোর চোখে তাকিয়ে আছে ইমু। ওর দিকে তাকাতেই আমার বুকের মধ্যে কেমন যেন করে উঠলো। ইমু বড় হয়ে যাচ্ছে। ক্লাস টেনে উঠলো এবার। ফুল কুঁড়ির মত গায়ের রঙ। ঘোলা চোখে প্রবল মায়া। উস্কো চুল দেখলেই বোঝা যায় বড় অযত্নে বড় হচ্ছে ইমুর চুলগুলো। হাত ধরে নিচে টেনে নামাতে ইচ্ছে করে। কেন যেন খুব ইচ্ছে করে বুকের মধ্যে নিয়ে বলি আয় ইমু তোর চুল বেঁধে দি। বলা হয়না। ইমু বলতে থাকে। জানিস আপা একদিন দক্ষিন দিকটায় দিব্যদের বাড়ি করার সময় বালি ফেললো না? আমি লাফ দিয়েছিলাম। আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকি।কেমন অচেনা লাগে ইমুকে। চারপাশে একটা একটা করে ঘরের আলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে লোকে। অথচ এই ছাদটা কি গভীর অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। ইমুকে আবছা লাগে। বুকের তলে একটা জ্যোতিরিঙ্গন যেন জ্বলছে আর নিভছে। খুব রাগ হয়ে যায় আমার। অথবা আমার ঠিক কি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা উচিত বুঝতে না পেরেই হয়ত আমি বেখাপ্পা একটু বেশিই রাগ দেখিয়ে ফেলি। ইমু কেমন ব্যাথা ব্যাথা কন্ঠে বলে, আমার কিছু ভাল লাগেনা জানিস আপা? খুব দুখী লাগে ইমুকে। কি হয়েছে তোর? আমাকে বলবি? ভীষন মায়া লাগে আমার। মনে হয় একটা সমুদ্র কেমন ব্যাথায় ছটফট করছে। ঢেউ এর তীরে আছড়ে পড়ার সাথে নিশ্চয় ব্যাথার সম্পর্ক আছে। ইমু এখনো খু্ব ছোট্ট একটা পাখি। হয়ত কেবল উড়তে শিখছে। একটা ছোট্ট আকাশ আছে তার। কি জানি কি এমন বেদনা নিয়ে সে আকাশ মেঘে ঢেকে আছে! আমার কাছে আয় ইমু। হঠাৎ করে বুকের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইমু ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে থাকে। আমি হতভম্ব হয়ে যাই। ইমু বলে, শ্যামল দাদা ভাল না আপা একটুও ভাল না। তুই ওকে আর ভালবাসিস না আপা। সেমন্তিকে কি কুৎসিত কথাই না লিখেছে শ্যামলদা। দেখলে তোর কষ্ট হবে। সেদিন বিশ্রী করে আমার হাত ধরেছিল। তুই ওকে বিয়ে করিস না আপা। আমার ভেতর শক্ত হতে থাকে। সেমন্তি ইমুর বান্ধবি। যদিও এক ক্লাস উপরে পড়ে। পাশেই বাড়ি হওয়ায় খুব ভাব দুজনের। ভেতরটা ঘৃণায় রি রি করতে থাকে। যে শ্যামলের কথা ভাবলেই আমার পৃথিবী অন্যরকম হয়ে যেত,দূর্বাঘাসের মত কোমল হয়ে যেত মন। সে শ্যামল এভাবে ঠকাচ্ছে আমায়! হঠাৎ করেই মনে হলো ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়ছে আকাশের গায়ে ঝুলিয়ে রাখা শক্ত শক্ত তারা রা। আমি কোন কথা বলতে পারিনা। শুধু জাপটে ধরে থাকি। আমার দুহাতের মধ্যে কেঁপে কেঁপে উঠতে থাকে ইমুর বেতসলতার মত শরীর টা। পরদিন বিকেলে থমথমে মুখ করে ইমু ঘরে ঢুকেই বললো শ্যামলদা এসেছে আপা। তোকে ডাকছে। আমার চোখের দিকে তাকালোনা পর্যন্ত। চলে যাচ্ছিলো। আমি ডাকলাম। রাতে লিখে রাখা একটি চিঠি বাড়িয়ে দিয়ে বললাম শ্যামল কে দিয়ে দে। বল আমার খুব মাথা ব্যাথা। ইমু বাইরে বেরিয়ে এসেই চিঠিটা খোলে। মাত্র কয়েকটা লাইন লেখা---- ''তোমার আশ্চর্য্য মিথ্যেগুলো ঘুঙুর হয়ে নৃত্যে বাজছে আর বাজছে.... সাত পুরুষের ভাগ্যজোড়া আমি নর্তকীর পায়ে; তোমার মিথ্যে গলছে এখন চুমুক দেয়া চায়ে ! দুপুর গড়াক শীতের রোদে মিথ্যেটুকুর নাচ পায়ে পায়ে রক্ত জড়ায় তোমার ভাঙা কাঁচ... পারলে আমাকে মুক্তি দিও।'' ইমু চিঠিটা ছিঁড়ে ফেলে ঘরে ঢুকে হাসতে হাসতে বলে, ''লুডু খেলবেন শ্যামল দা? লুডু নিয়ে আসি?''


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৫৬ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now