বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

শেষ বিকেলের মেয়ে-১২

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X অল্পক্ষণের জন্যে চুপ করে গেলো সালমা। কাসেদের জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারে নি। সে। এক চুমুক চা খেয়ে গলাটা পরিষ্কার করে নিয়ে সালমা আবার বললো, সব মানুষই জীবনে সুখী হতে চায়। আমিও চেয়েছি। যাকে ভালবাসলাম তাকে পেলাম না। যাকে বিয়ে করতে হলো তাকে ঠিক মনের মতোটি করে পেতে চাইলাম। কিন্তু– বলতে গিয়ে সহসা থেমে পড়লো সালমা। মাথার ওপরে ফ্যানটা ঘুরছে জোরে। এলোমেলো চুলগুলো উড়ছে বাতাসে। মুখ খুলে কাসেদের দিকে তাকালো সালমা। আস্তে করে বললো, সে চাইলো আমি তার মতো হই। পাতলা সিফনের শাড়ি পরে ঠোঁটে আর মুখে রঙ মেখে ওর সঙ্গে ক্লাবে যাই। ওর বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিই, গল্প-গুজব করি। দুই মন, দুই মেরুতে বসে। মিল যেখানে নেই সেখানে সুখের তালাশ করা পাগলামো, তাই না? কাসেদ কি বলবে ভেবে পেলো না। সালমা নীরব। কাসেদের কাছ থেকে উত্তরের অপেক্ষায় আছে সে। কাসেদ বললো, এ নিয়ে চিন্তা করে কি হবে সালমা? এ চিন্তার কি কোন শেষ আছে? সালমা উত্তরে বললো, বিপাশাকে যদি তোমার কাছে দিয়ে যাই তুমি রাখবে? কাসেদ অবাক হয়ে তাকালো ওর দিকে, কেন বলতো? সালমা কি যেন ভাবলো। ভেবে বললো, ওকে তোমার কাছে রেখে আমি কোথাও চলে যাবো। এ পাগলামাের কোন মানে হয় না, কাসেদ হাসতে চেষ্টা করলো। বললো, জীবনের পথ যত কঠিন আর যত দুৰ্যোগময় হােক না কেন, তার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোন অর্থ হয় না। ওটা কাপুরুষতার লক্ষণ। তাই নাকি? অপূর্ব হাসলো সালমা। টেনে টেনে বললো, কাপুরুষ আমি না তুমি? কাসেদ ইতস্তত করে বললো, তার মানে? মানে, তুমি কি বলতে চাও, তুমি একজন বীর-পুরুষ? কাসেদ হেসে দিয়ে বললো, বীর-পুরুষ হয়তো নই, তবে কাপুরুষও নই। কাপুরুষ নও? সালমা শব্দ করে হাসলো, তাহলে একটা কথা বলি? বলো। সালমা নীরবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো ওর দিকে। ওর ঠোঁটের কোণে মৃদু মৃদু হাসি। তারপর টেনে টেনে বললো, আজ এখান থেকে বেরিয়ে, তুমি আমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারবে দূরে বহু দূরে কোথাও? কাসেদ চমকে উঠলো। সহসা সে বুঝতে পারলো না কি বলবে। কি বলা যেতে পারে। সালমা আবার লাল হলো। মুখখানা সরিয়ে নিলো অন্যদিকে। কিছুক্ষণ দু’জনে একেবারে চুপ। একটু পরে সালমা আবার বললো, কি, চুপ করে রইলে যে, বীর-পুরুষের সাহসে কুলোচ্ছে না বুঝি? কাসেদ গম্ভীর গলায় বললো, একটা অসম্ভব প্রস্তাব করে বসলে তো আর চলে না। অসম্ভব? টেবিলের উপর ঝুঁকে এলো সালমা, তীক্ষা গলায় বললো, সাহসে কুলোচ্ছে না। তাই বলো। কেন মিছামিছি বাজে অজুহাত দেখাচ্ছে! সালমা নড়েচড়ে বসলো। বেয়ারাকে ডাকো। বিলটা চুকিয়ে দিই। কাসেদ বললো, কিন্তু কি দরকারী কথা আছে বলেছিলে, তাতো বললে না। সালমা বললো, থাক তার প্রয়োজন আর নেই। যে গাছে প্ৰাণ নেই তার গোড়ায় পানি ঢেলে কি হবে? খুব তো বড়াই করছিলে কাপুরুষ নই, কাপুরুষ নই। সহসা কান্নায় গলাটা ধরে এলো তার। কাসেদ বললো, অকারণে কেন একটা সহজ সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে বলো তো? তুমি কি চাও আমার কাছ থেকে? কিছু না। কিছু না। কিছু না। এতক্ষণে সত্যিকার কান্না নেমে এলো তার দু’চোখ বেয়ে। কাপড়ের আচলে অশ্রুবিন্দু মুছে নিতে নিতে সে আবার বললো, কিছুই চাই না, আমি। চাই শুধু ঝগড়া করতে। সারাটা জীবন তাইতো করে এসেছি। এতক্ষণে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো কাসেদ। বললো, ওটা বোধ হয় আমাদের কপালে লেখা ছিলো সালমা। নইলে যখনই তোমার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, আমরা ঝগড়া করেছি। করি। কেন করি? তুমি আমাকে আঘাত দিয়ে আনন্দ পাও, তাই। কাউকে আঘাত দিয়ে কেউ আনন্দ পায় না সালমা। সালমা কোন জবাব দিলো না। পরনের শাড়িটা গুছিয়ে নিতে নিতে উঠে দাঁড়ালো সে। ওকি, চললে নাকি? চিরকাল বসে থাকবো বলে এখানে আসি নি নিশ্চয়। সালমার গলার স্বরটা অদ্ভুত শোনালো। কিছু বলতে গিয়ে চুপ করে গেলো কাসেদ। সালমা ততক্ষণে কেবিনের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কেবিন ছেড়ে কাসেদও বেরিয়ে এলো সঙ্গে সঙ্গে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫৯০ জন


এ জাতীয় গল্প

→ শেষ বিকেলের মেয়ে-১২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now