বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
সুপর্ণার সাথে সম্পর্কটা টিকে গেল
---মাহতাব হোসেন
সুপর্ণার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরেও সম্পর্কটা টিকে গেল।
বিষয়টা একটু খুলেই বলি।
আমি তো মালিবাগে থাকি। মালিবাগের শহীদ বাগের এক গলিতে আমার বাসা। ছোট একটা রুম ভাড়া নিয়ে আছি, তাও তো প্রায় ছয় বছর হয়ে গেল। সাথে থাকে পল্লব। একা থাকা সম্ভব নয়। দুজনেই মিলেই শেয়ার করি। ও আমার স্কুল জীবনের বন্ধু। জগন্নাথ থেকে এমবিএ করে বিসিএসের জন্য পড়ছি। বলছিলাম সুপর্ণার কথা, চলে এসেছি পল্লবে, সরি।
সুপর্ণার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ। বিয়ের বিচ্ছেদ না, প্রেমের বিচ্ছেদ। যদিও প্রেমের সম্পর্কে বিচ্ছেদের পরিবর্তে ব্রেক-আপ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আমার ক্ষেত্রে ব্রেক-আপ অপ্রযোজ্য। বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদে মিশে থাকে গভীর যন্ত্রণা। হয়তো আমার বুকের ভেতরেও রয়েছে সেরকম যন্ত্রণা। সুপর্ণা যখন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে সেকেন্ড ইয়ারে উঠলো তখন। সিএসইতে পড়তো। ইঞ্জিনিয়ার হবে কম্পিউটারের। তো আমার মতো টুথব্রাশ কম্পানিতে চাকরি করা ছেলেকে সে পাত্তাই বা দেবে কেন? কোনো রিজন ছাড়াই বিচ্ছেদ। আমিও মেনে নিলাম। কিন্তু মনকে তো আর মানানো যায় না। আমি সুপর্ণাকে কোনোভাবেই ভুলতে পারছিলাম না। পারার কথাও না। প্রথম স্পর্শ, প্রথম হৃদকম্পন... কেন যেন সবকিছুতেই, সবখানেই ইস্ট ওয়েস্ট খুঁজে বেড়াতাম। ইস্টওয়েস্ট শব্দটাই আমার ভেতরে ভূ-কম্পন তৈরি করে ফেলতো।
যা পেতাম তাই। ফেসবুকে ইস্ট ওয়েস্ট পেজ থেকে শুরু করে যত ক্লাব টেলাব যা সবকিছুতেই লাইক দিয়ে রাখতাম। কেন জানি সবকিছুতেই সুপর্ণার ফ্লেভার পেতাম।
পরশুদিন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি 'টু লেট' গ্রুপের একটা নোটিশ পেয়ে চমকে গেলাম। এই গ্রুপে ওই ভার্সিটির ছেলেমেয়েরা বনশ্রী-আফতাব নগর এলাকার বাসা ভাড়া, কিংবা রুমমেট প্রয়োজন হলে বিজ্ঞাপন দেয়। নিজেদের পুরানা জিনিস বেচা বিক্রির বিজ্ঞাপনও হয়তো দেয়।
পরশুদিন সুপর্ণার একটা পোস্ট দেখে চমকে গেলাম। একটা আলমিরা ও খাট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছে সুপর্ণা। খুব অল্প দাম। মাস দেড়েক আগে ওর বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেও বিসিএস ক্যাডার। সুশান্ত পাল না হলেও ওর কাছাকাছি টাইপ। ওর সব খুঁটিনাটি বিষয়ে খোঁজ রাখার চেষ্টা করি। ব্রাশ বিক্রির বাইরে আমার কোনো কাজ নেই যেহেতু।
সুপর্ণার এমএসও শেষ। সম্ভবত ভার্সিটির কাছে নেওয়া বাসাটা ছেড়ে দিচ্ছিল। যেহেতু স্বামীর সাথে মনিপুরী পাড়ার ওদিকে ভালো ফ্ল্যাটে থাকে সে। আর পড়ে থাকা জিনিসগুলোও বেচে দেয়ার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। আমি সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। পল্লবকে বললাম, দোস্ত ফোন দে, বল তুই কিনবি। দাম বেশি না। ৬ হাজার টাকা। দরদাম করতে নিষেধ করলাম। ও ফোন দিল। আমি জানি না কি অবস্থা। তারপরেও দরদাম করে ৫ হাজারে নামিয়ে খাট আলমিরা রিকশা ভ্যানে করে বাসায় নিয়ে এলো পল্লব। ভাবতেই পারছিলাম না, সৃষ্টিকর্তার অপার করুণার জন্য আমি কৃতার্থ না হয়ে পারি না।
পুরো ভার্সিটি লাইফে সুপর্ণার ঘুমানোর খাটে শুয়ে আমি এখন ফূর্তিটাইপ লেখালেখির চেষ্টা করছি.... পাশে আলমিরা... সবখানেই সুপর্ণার ছোঁয়া, চোখ বন্ধ করলে অনুভব করা যায়। সবখানেই সুপর্ণা লেগে আছে।
আপাতত সুপর্ণার সাথে সম্পর্কটা টিকে গেল.....
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now