বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
*
সেই একই রকম খুন।
রাজু হলো এগারো নাম্বার শিকার। তার আগে আরো দশটা ছেলেকে একই সিস্টেমে খুন করা হয়েছে।
গলার নিছে একটু ছিদ্র। ঠিক দাঁত বসিয়ে দিয়েছে বলে মনে হয় না, আমরা দাঁত দিয়ে যেভাবে সুতা কাটি, সেভেবে গলায় একটু ছিদ্র করেছে। ডাক্তারের একই রিপোর্ট- কেউ রক্ত চোষে খেয়েছে।
রক্ত চোষে খাবে! কিন্তু কে???
রাক্ষস নাকি ভূত????
দুটাই অবাস্তব।
কারন বর্তমান যুগে কোনো শিক্ষিত মানুষই ভূত বা রাক্ষসে বিশ্বাস করে না। তাও আবার শহরের মধ্যে!
রিতা অসম্ভব সুন্দরী!
চকলেট আর চুইনগাম ওর প্রিয় খাবার। মুখে চুইনগাম চিবুতে চিবুতেই ও মার্ডারের নিউজটা পড়ছে। বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পেপার আর ফেসবুকে অলরেডি নিউজটা ছড়িয়ে পড়েছে।
রিতার আম্মু ওর কাছে এসে বলল- শুনেছিস, আজ আবারো একটা ছেলে খুন হলো?
রিতা মোবাইলের দিকে তাকিয়েই বলল: হুম!
মা: দেশটাই কি যে হলো!
প্রতি ফ্রাইডে একটা খুন।
ছেলেকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো নায়িকার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল। কি সেজে স্মার্ট হয়ে গিয়েছে। সুন্দর করে পার্কে লাশটা পড়ে আছে। দেখে মনে হয় কিছু হয়নি। শুধু গলার নিচে একটু দাগ।
রিতা: হুম।
মা: তোকে কতো বলি ফ্রাইডে সাবধানে থাকতে!
আমার কিছু হবে না, মা।
আমি ছেলেও না, পার্কেও যাই না। বাইরে গেলেতো জাস্ট বোকরা পড়ে কলেজ-প্রাইভেট আর টুম্পার বাসায় যাই। এটা বলেই রিতা মায়ের সামনে থেকে চলে গেলো।
*
*
রাজুর খুনটা নিয়ে বেশি ভাবছে ওর বন্ধু রাসেল। বিশ্বাসই করতে পারছে না যে, রাজু মারা গেছে।
রাজু আসলেই একটা পরীর সাথে দেখা করতে পার্কে গিয়েছিলো। লাল পরী।
কোনো রাতের পরী না। এটা ফেসবুকের পরী। বাস্তবে কেউ পরী না দেখলেও বেসবুকে এলে পরীর অভাব পাবেন না।
লালপরী, নীল পরী, হলুদ পরী, ডানাকাটা পরী, আরো যে কতো পরী! ঠিক তেমনই এক লালপরী দেখা দিয়েছিল রাজুকে!
রাসেল ভাবছে আর ভয়ে স্তব্ধ হয়ে আছে।
তবে কি এটা কোনো মানুষ পরী না হয়ে সত্যিকারের কোনো পরী????
তবে কি রাজুকে মারার জন্যই পরীটা এতো দিন প্রেম করেছে???
হাসপাতালে বন্ধুদের সাথে রাজুর লাশটা দেখছে আর ঘামছে। ভয়ে বন্ধুদের কাছে ঘেষে দাঁড়ালো।
পুলিশ ওকে জিজ্ঞাসা করল- রাজু তো আপনাদের সাথেই মেসে থাকতো, তাই না?
রাসেল ভয়ে ভয়ে বলল- হুম!
-ওর মৃত্যু সম্পর্কে আপনারা কিছু জানেন???
- ওতো প্রতি দিনের মতো স্বাভাবিক ছিলো। আজ বিকেলে নতুন জামাকাপড় পড়ে বাসা থেকে বের হল!
পুলিশ কথাটা খেয়াল করলেন- নতুন ড্রেস!
রাসেল: হুম!
: আপনাদের বলে নি কোথায় যাচ্ছে???
রাসেল এবার চুপ হয়ে গেলো। ও ভাবছে, ও অনেক কিছু জানে। বাট পুলিশকে বলাটা হয়তো ঠিক হবে না। তাহলে পুলিশ ওকে হাজারটা প্রশ্ন করবে এমন কি সন্দেহ ও করতে পারে।
তাই ও বলল- বলেছিলো, বাইরে একটু ঘুরতে যাচ্ছি। একটু পর চলে আসব।
পুলিশ: আর কিছু বলে নি???
রাসেল: ফ্রইডে তো সবাই এখানে সেখানে বেড়াতে যায়। তাই আর বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করিনি।
রাজুর অন্য রোমমেটরা বলল- তারা কিছুই জানে না। জানলে রাসেলই জানতো। কারন ওরা দুজন একই বিছানায় ঘুমাতো।
পুলিশ রাসেলকে ভালো করে দেখে বলল: হুম! রাসেল সাহেব! আপনাকে আমার লাগবে! অনেক কিছু জানার আছে!
রাসেল ভয় পেয়ে গেলো।
বলল- জ্বী! না, মানে, আমি কিছু জানি না!
এবার ইন্সপেক্টর বলল- আপনারা কেউ শহর ছেড়ে বাড়ি যাবেন না। কাউকে যদি আমি খুঁজে না পাই, সে কিন্তু আমার সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দু হবেন। আমাকে আগে বুঝতে হবে- খুনগুলো কোনো মানুষ করছে নাকি কোনো অপশক্তি। যদিও আমি কুসংস্কারে বিশ্বাস করি না।
রাসেল ভয় পেয়ে ভাবলো- ও কোনো বিপদে পরতে পারে। তাহলে কি যা জানে, সব বলে দিবে??? পরীটার কথা শেয়ার করবে???,
না। ভাবলো; আগে রাজুর ফোন দেখবে। পরীর সাথে কি চ্যাট করেছে, সেগুলো দেখবে।
তারপর পুলিশকে জানাবে।
রাজুর ফোনটা ওর কাছে। ও কিভাবে রাজুর ফোন সেটটা পেলো???
*
*
রিতা খুব আরামে ঘুমাচ্ছে। ওসব খুনটুন নিয়ে ও মাথা ঘামায় না। ওরা এই শহরে এসেছে এক মাস ও হবে না। আসা মাত্রই তিনটা খুন।
তাই ওর মা খুব ভয়ে আছে।
বাবার চাকরিসূত্রে ইচ্ছে না থাকলেও ঠিকানা পাল্টাটে হয়।
রিতা এতো বেশি সুন্দরী যে, ওর মায়ের টেনশনের কারন। ইদানিং ওর কি হলো, এত্ত বেশী চকলেট আর চুইনগাম খায়, যা ওর মাকে চিন্তিতো করে তুলছে।
*
*
সে দিন রাতে বাসায় গিয়ে রাসেল রাজুর ফোনটা বের করলো।
আগে দরজাটা ভালো করে লাগালো। খুব ভয় হচ্ছে। চোখের সামনে বার বার রাজুর লাশ ভেসে ওঠছে। মনে হচ্ছে, রাজুর লাশটা এসে ওর গলায় কামর দিয়ে রক্ত চুষে খাবে!
হাত পা কাঁপছে। তবু খুনের রহস্যটা জানতে হবে। ওই রাক্ষস পরীর সাথে কি চ্যাট হয়েছে, তা দেখার জন্য রাজুর ফোনটা অন করলো।
ফেসবুকে ঢুকে লাল পরীর চ্যাটএ ঢুকলো।
রাসেলের সমস্ত শরীর ভয়ে কর থর করছে। ওর মনে হচ্ছে, মাথা ঘুরে পরে যাচ্ছে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now