বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
নমুনা
এক
রাত তখন প্রায় সাড়ে ৩ টার মত বাজে।পৃথিবীর
বায়ুমন্ডলে একটি পিরামিড আকৃতির মহাকাশযান প্রবেশ
করল।মহাকাশ যানটির প্রধান স্ক্রীনে পৃথিবীর
গাঠনিক বৈশিষ্ট্য সহ বিভিন্ন বর্ণনা ভেসে উঠছে।
প্রধান স্ক্রীনের নিচে থাকা কন্ট্রোল
প্যানেলের উপর কিছু কর্ষিকার আন্দোলন লক্ষ্য
করা যাচ্ছে।এ কর্ষিকাগুলো আর কারো নয়
ম্যাক্রনাম গ্যালাক্সীর পেট্রান গ্রহের অধিবাসী
ক্রিটনের।কিছুক্ষনের মধ্যেই কর্ষিকা গুলো
দিয়ে প্যানেলে কি একটা স্পর্শ করতেই যানটি
ধীরে ধীরে পৃথিবীর মাটিতে নেমে এল।
কিউবিট্রন প্রসেসরে তৈরী কম্পিউটারের আওয়াজ
স্পীকারে ভেসে এল।
‘মহামান্য ক্রিটন...আমি এই মাত্র পরীক্ষা করে
দেখতে পেলাম এই গ্রহে অক্সিজেনের
পরিমান খুব বেশী।যেটা আমাদের চামড়ার পক্ষে
ক্ষতিকর হতে পারে!’
‘কোন অসুবিধা নেই...আমি নিজে যাচ্ছি
না...জেরোক-৩৬ কে পাঠাব...তুমি কোন
জীবিত প্রাণীকে কাছাকাছি সনাক্ত করতে
পেরেছ?’
‘এখনো নয় মহামান্য।’
‘তাড়াতাড়ি খুজে বের করো।’ কথাটা বলে
প্যানেল থেকে খানিকটা ঘুরে দাড়াল ক্রিটন।
পেট্রান গ্রহের অধিবাসীদের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য
বিশ্লেষন করতে গেলে সর্বপ্রথম যেটা
চোখে পড়বে সেটা হল ওদের উচ্চতা।
আকৃতিতে ওরা কেউই ৪ ফুটের বেশী নয়।
ক্রিটনের ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি।
দেহের নিম্নভাগে পদচাকতি সহ ৩টি সরু পা
রয়েছে।এছাড়া উদরগাত্র বলতে আমরা যা বুঝি তা
ওদের প্রায় নেই বললেই চলে।পায়ের উপর
থেকেই শুরু হয়েছে কর্ষিকার আবির্ভাব।এ
কর্ষিকার সংখ্যা অনির্দিষ্ট।কর্ষিকার উপরে যেখানে
মাথা থাকার কথা সেখানে রয়েছে ইংরেজী T এর
মত আকৃতির মাংসপিন্ড।T এর দুই বাহুতে আছে দুটি
আলোক সংবেদী চোখ।এই গ্রহের
অধিবাসীদের মুখের প্রয়োজন হয় না।কারন তারা
সরাসরি আলো থেকে শক্তি গ্রহন করে থাকে।
চোখের কিছুটা নিচে, চামড়ায় আছে কয়েকটা
ফুটো।এগুলো দিয়ে তারা যোগাযোগ স্থাপন
করে থাকে।পৃথিবী আক্রমনের পুর্ব-প্রস্তুতি
হিসেবে মূলত ক্রিটনকে পাঠানো হয়েছে।
তাকে মিশন দেয়া হয়েছে যে, পৃথিবী থেকে
পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রানীর নমুনা নিয়ে
যেতে হবে।সেই প্রানীর নমুনা
বিশ্লেষনপূর্বক অতঃপর পৃথিবীতে আক্রমন করা
হবে।ক্রিটন তাদের মিশনের সফলতার ব্যাপারে
১০০ ভাগ নিশ্চিত।প্যানেলের আরেকদিকে স্পর্শ
করতেই যানের ভিতরের আরেক পাশের দরজা
খুলে গেল।সেখান থেকে বেরিয়ে এল
পেট্রান গ্রহবাসীর উন্নত প্রযুক্তির চূড়ান্ত নমুনা-
জেরোক-৩৬।
আধুনিক যুদ্ধরোবটের ক্ষেত্রে এটা তাদের
সর্বশেষ সংস্করন।রোবটটির চলনাঙ্গ বলতে কিছুই
নেই।তার বদলে রয়েছে “নাট্রোনোম” আর
“সিভিকিউল” এর জ্বালানি মিশ্রন দ্বারা চালিত শক্তিশালী
ইঞ্জিন যা তাকে হাওয়ায় ভাসিয়ে রাখে।দেহের
মধ্যভাগ তৈরী হয়েছে “ডেবরণ” নামক ধাতু
দিয়ে।এই ধাতুর বৈশিষ্ট্য হল তড়িৎ কম্পাঙ্কের
পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে নিজের আকার
আকৃতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে।অর্থাৎ কোন
অস্ত্র সম্পর্কে সব তথ্য জেনে সে অনুযায়ী
কম্পাঙ্ক প্রদান করা হলে এই ধাতু সেই অস্ত্রের
আকৃতি লাভ করবে।জেরোক-৩৬ এর ডাটাবেসে
প্রায় শতাধিক অস্ত্রের তথ্য দেয়া আছে।
যন্ত্রদানবটির মাথার জায়গায় আছে একটা স্ক্রীন।
এই স্ক্রীন একই সাথে তথ্য প্রদর্শন এবং তাকে
দেখতে সাহায্য করে।সে ক্রিটনের সামনে
এসে তাকে সম্ভাষন জানায়।ক্রিটন তাকে উদ্দেশ্য
করে বলে,‘তোমাকে নিশ্চয়ই আর নতুন করে
কিছু বলার দরকার নেই।’
‘না মহামান্য ক্রিটন।’
‘ঠিক আছে...বেশ ।তবে যাই করবে অত্যন্ত
সাবধানের সাথে...যাতে কেউ আমাদের
উদ্দেশ্য টের না পায়।’
‘তাই হবে মহামান্য ক্রিটন।’
এমন সময় কম্পিউটারের শব্দ পাওয়া যায়।
‘মহামান্য ক্রিটন আমরা এখান থেকে ঠিক বেশ কিছু
দূরে একটি আবাসিক এলাকার সন্ধান পেয়েছি।আমার
সেন্সরের পাঠানো তথ্যানুযায়ী ওখানে
অনেকগুলো প্রানের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।’
ক্রিটন ও জেরোক-৩৬ এর মাঝে একটি
হলোগ্রাফিক ম্যাপ আবির্ভুত হল।সেখানে পরিষ্কার
ভাবে স্থানটি চিহ্নিত করা আছে।ক্রিটন বলে
ওঠে,‘তাহলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়
জেরোক-৩৬।পলিট্রন দ্বারা তৈরী ব্যাগগুলো
নিয়ে যাবে...এগুলো বেশ শক্ত।’
‘জ্বি...মহামান্য ক্রিটন আমি অনেক আগেই
সেগুলো নিয়ে রেখেছি।’
ক্রিটন কন্ট্রোল প্যানেলে ঘুরে একটা জায়গা
স্পর্শ করতেই মহাকাশযানের দরজা খুলে যাবার
শব্দ পাওয়া গেল।জেরোক-৩৬ সেই দরজার
দিকে এগিয়ে যায়।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now