বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
গত সপ্তাহে এস এসসি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়েছে। পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে মেহেদী। রেজাল্ট জানার পর মেহেদীর সেকি আনন্দ। মাহদীদের বাড়িতে মিষ্টি খাওয়ায় ধুম পড়ে যায়। পাড়া প্রতিবেশী সবার মুখে শুধু মেহেদীর প্রশংসা ও গুণগান। তাদের কথা হচ্ছে- ভালো রেজাল্ট করবেই না বা কেন? এমন সোনার টুকরা ছেলে কি এলাকায় আর আছে? খুব শান্ত শিষ্ট। কোনো ঝগড়া ঝাটি মারামারিতে নাই। বাজে ছেলেদের সাথে কখনো আড্ডা দেয় না।নিয়মিত মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করে।স্কুল ফাঁকি দেয় না। পড়াশোনায় মনোযোগী। ইত্যাদি আরো কতো রকমের কথা!
প্রতিবেশীদের মুখে এমন প্রশংসা শুনে মাহদীর বাবা মায়ের বুকটা গর্বে ভরে যায়। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানায়। আর প্রাণভরে দোয়া করে, মেহেদী যেন একজন সত্যিকার আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে।
রেজাল্ট হওয়ার পর মেহেদীর বাবা মাহদীকে একটা মোবাইল সেট উপহার দেন।মোবাইল পেয়ে তো মাহদী বেজায় খুশি। অবশ্য মাহদীর আম্মা প্রথমে মাহদীকে মোবাইল কিনে দিতে রাজী ছিলেন না।তার যুক্তি ছিলো আজকাল ছেলে মেয়েরা মোবাইলে নানা চরিত্র বিধ্বংসী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। অর্থ আর সময়ের অপচয় তো হয়ই। কিন্তু মাহদীর বাবার কথা হচ্ছে -প্রত্যেক জিনিসের ভালো মন্দ দু'ই আছে।আর মাহদীর প্রতি তার এ বিশ্বাস রয়েছে যে ,সে মোবাইল মন্দ কাজে ব্যবহার করবে না। তারপরেও মোবাইল কিনে দেওয়ার সময় মাহদীকে এই কথাটা মনে করিয়ে দিতে ভুল করেননি তিনি।মাহদীও মোবাইল পেয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছে যে,মোবাইল দিয়ে অনর্থক বা বাজে কোনো কাজ করবে না।মোবাইল পাওয়ার পর প্রথমেই সে রিংটোন অপশন চেক করলো।দেখলো সেখানে বিভিন্ন ধরনের গানের বাজনা আছে। অথচ ইসলামে এগুলো পরিষ্কারভাবে নিষিদ্ধ। তাই সে তার মোবাইলে বেশ কিছু ইসলামী গজল রিংটোন হিসেবে ডাউনলোড করে নিলো।
তার এক বন্ধু অবশ্য তাকে পবিত্র কুরআনের কোনো সূরা বা আয়াত রিংটোন হিসেবে ডাউনলোড করার পরামর্শ দিয়েছিলো। কিন্তু সে পরামর্শ গ্রহণ করেনি।কারণ,সে আগেই জেনেছে যে, কুরআনের সূরা বা আয়াত রিংটোন বা ওয়েলকাম টিউন হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক না।কারণ, এতে করে কুরআনের অবমাননা হয়।
মাহদীর মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো, কিভাবে মোবাইল দিয়ে ভালো ভালো কাজ করা যায়। হঠাৎ একদিন পত্রিকায় দেখলো এক মোবাইল কোম্পানি ৩০০ এস এম এস ফ্রি দিচ্ছে।সে সুযোগটা হাতছাড়া করলো না। সাথে সাথে উক্ত কম্পানির একটা সীম কিনে ফেললো।
এবার সে, সালাত আদায়; কুরআন তেলাওয়াত করা; নেক আমল করা; খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা; এসব বিষয়ের ওপর বেশ কিছু কুরআনের আয়াত ও হাদীসের বাণী মেসেজ আকারে লিখলো।তারপর পরিচিত বিভিন্ন নাম্বারে মেসেজ গুলি পাঠাতে শুরু করলো। এছাড়াও কোথাও কোনো ইসলামী অনুষ্ঠান হলে তার দাওয়াত ও মেসেজের মাধ্যমে বন্ধু বান্ধবদের জানিয়ে দিতো।
মাহদী সাধারণত সালাত আদায় করতে যাওয়ার সময় বন্ধু বান্ধবদের বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিন্তু সময় স্বল্পতার জন্য সবার বাসায় যাওয়া সম্ভব হয় না।এ নিয়ে সে বেশ চিন্তিত ছিলো। এ সমস্যার একটা চমৎকার সমাধান বের করে ফেললো মেহেদী।সেটা হচ্ছে- মোবাইল এ 'মিস্ কল' এর মাধ্যমে।সে তার সব বন্ধুদের বলে দিলো যে, প্রত্যেক সালাতের সময় সে মোবাইলে মিস্ কল দিবে। মিস কল পেলেই তারা সালাতের জন্য মসজিদে চলে আসবে।
'সালাত মিসড্ কল এলার্ট' পদ্ধতিটি অল্প সময়েই বেশ ফলপ্রসূ প্রমানিত হলো। বিশেষ করে ফজরের সালাতের সময় সবাই মাহদীর মিস কল পেয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং ফজরের জামাতে হাজির হয়।
মোবাইল ফোন ব্যবহার করে মাহদীর এ অভিনব দাওয়াতী কার্যক্রম এলাকায় বেশ সাড়া পড়লো।সবাই মাহদীর বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ। এ নতুন ধরনের দাওয়াতী পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য চারদিকে থেকে অভিনন্দন বার্তা আসতে থাকলো মাহদীর কাছে।
মাহদী তার সফলতার জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালো।তার মনের একান্ত বাসনা হচ্ছে , আল্লাহ তায়ালা যেন তার এ দাওয়াতী প্রচেষ্টাকে নাজাতের উসিলা হিসেবে কবুল করে নেন।
লেখক: আবু সাঈদ আকন্দ
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now