বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
মহান জ্যোতিষী বাবা
আসিফ মেহদী
*********************************
তিন বন্ধু গদগদ ভঙ্গিতে জ্যোতিষীর সামনে বসল। মহান জ্যোতিষী। চোখ-মুখ-নাক দেখে অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত বলে দিতে পারেন। বিদ্ঘুটে সব ডিগ্রি তাঁর কালেকশনে। পরনে জাদুকরের পোশাক। চাহনিতে চৌম্বকত্ব। ড্যাবড্যাব করে তাকাচ্ছেন
জিতু, টিটু আর মিন্টুর দিকে। কে জানে, এতক্ষণে হয়তো জেনে গেছেন, এই তিন ছোকরা তাঁকে আড়ালে নাক-কান-গলা (ইএনটি) বিশেষজ্ঞ বলে হাসাহাসি করে!
তিন বন্ধু কাপড়ের দোকান দিয়েছে। ব্যবসার ভবিষ্যৎ জানতেই জ্যোতিষী বাবার শরণাপন্ন হওয়া। বাবা জিতুর দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘তোর যাত্রা শুভ। তবে ...’
‘তবে?’ জিতু ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল।
‘যাত্রার আগে ঘরে তালা দিতে ভুলিস না।’
‘বাবা, আমি তো মেসে থাকি। ঘরে তালা দিয়ে গেলে অন্যরা ঢুকবে কেমন করে?’
‘খামোশ!’ জিতু গুটিসুটি মেরে বসল।
জ্যোতিষী তাকালেন টিটুর দিকে। লাজুক হাসি হেসে মৃদুস্বরে বললেন, ‘তোর ভাগ্যে প্রেমের যোগ আছে। রোমান্স শুভ।’
‘প্রেমট্রেম আমাকে দিয়ে হবে না, বাবা। ওগুলো মিন্টুর জন্য। ওর প্রেমিকা আছে। আমাদের নাই। আফসোস!’
‘হতাশ হবি না। তবে ... ’
‘তবে?’ টিটু কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করল।
‘কথা কমাতে হবে। তুই বেশি কথা বলিস। প্রেমিক বাচাল হলে প্রেমিকা উড়ে চলে যায়। কথা যত কম বলবি, প্রেম তত টেকসই হবে। কথা কম, কাজ বেশি।’
‘কিন্তু আমি তো কথা কমই বলি। মিন্টু অনেক কথা বলে। সারারাত কথা বলে। তবুও ওর প্রেমিকা বিরক্ত হয় না।’
‘খামোশ!’ টিটু যেন খোলসের মধ্যে লুকাতে পারলে বাঁচে।
জ্যোতিষী বাবা তাকালেন মিন্টুর দিকে। একগাল হেসে বললেন, ‘তোর ব্যবসাভাগ্য ভালো। তবে ...’
‘তবে?’ মিন্টু বিনীতভাবে জিজ্ঞেস করল।
‘তবে শেয়ারবাজারে টাকা ইনভেস্ট করবি না।’
‘বাবা, আমাকে কী আপনার এতটাই বোকা মনে হচ্ছে?’
‘খামোশ!’ মিন্টু যেন দৌড়ে পালাতে পারলে বাঁচে।
তিন মাস পর। মিন্টু হাঁপাতে হাঁপাতে ঢুকলো জ্যোতিষী বাবার চেম্বারে। মহান জ্যোতিষী চোখ বন্ধ করে জাগ্রত! মিন্টু হাউমাউ করে বলল, ‘বাবা, আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে!’
‘কী হয়েছে?’
‘জিতু দোকানের সব টাকা-পয়সা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। ওকে ফোন করতেই কল কেটে দিয়ে মেসেজ দিল। আপনি বলেছিলেন, ওর যাত্রা শুভ। তাই ও অজানার পথে যাত্রা করেছে!’
‘গুড বয়। অন্যটার খবর কী?’
‘টিটু তো একটা (গালি)! ব্যাটা আমার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ভেগেছে। ওর ফোনে ফোন করতেই ও বলল, “আমার কী দোষ? বাবাই তো বলেছেন আমার রোমান্স শুভ। বাবা আমাকে বেশি কথা বলতে মানা করেছেন। রাখছি।” ও কল কেটে দিল। আমি আবার কল করলাম। ধরল আমার গার্লফ্রেন্ড। ফোনে আমাকে যে থ্রেট দিল, তাতে আর কল করার সাহস পাচ্ছি না।’
‘আই লাইকড্ ইট!’
‘ইংরেজি বলবেন না, বাবা। ইংরেজি শুনতে ভালো লাগে না।’
‘শোন, তোর দুই ধান্দাবাজ বন্ধুই কেটে পড়েছে। এখন তুই নিশ্চিন্ত মনে ব্যবসা কর। বলেছিলাম না তোর ব্যবসাভাগ্য ভালো?’
জ্যোতিষী বাবার কথা শুনে আনন্দে মিন্টুর চোখ চকচক করে উঠল। পরক্ষণেই আফসোসের সুরে বলল, ‘কিন্তু বাবা, জিতু তো অর্ধেক টাকা নিয়ে পালিয়েছে!’
‘এক কাজ কর। তোর বাকি টাকা-পয়সা নিয়ে আমার এখানে চলে আয়। আমিও ত্রিশ বছর আগে এমন একটা ঘটনার পর এখানে চলে এসেছিলাম।’
এখন জ্যোতিষী বাবা আর তাঁর অ্যাসিসট্যান্ট মিন্টুর চেম্বারে অনেক ক্লায়েন্টের যাতায়াত। চাইলে আপনিও একবার ঘুরে আসতে পারেন।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now