বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মধ্য রাতের চিত্‍কার

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান জাকারিয়া আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X একটি নদী যখন মরা নদী হয়, তখন সেই নদী জেগে ওঠে মাঝরাতে। একটি বাড়ি যখন পোড়া বাড়ি হয়, তখন সেই বাড়িটি জেগে ওঠে মাঝরাতে। অতৃপ্ত কোন কিছুর জেগে ওঠার সময় হলো মধ্যরাত। সময়টা ছিলো শীতের শুরুর দিকে। আমাদের বন্ধুমহলে সবাই ঘুরতে পছন্দ করে। এমনি এক সময় আমাদের এক বন্ধু রনিদের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার দাওয়াত পড়ে। অথ্যাৎ আমি সহ আরো ২ বন্ধু মিলে বন্ধু রনিদের বাড়িতে বেড়াতে যাই। রনি আমাদের স্টেশনে আনতে যায়। আসার পথেই চায়ের দোকানে বসে এক পাক আড্ডা দিচ্ছিলাম। ওই আড্ডায় রনি বলে, আমাদের সাথে নাকি তার একটা কথা শেয়ার করার আছে। সে বলে, প্রায় রাতে তার কোন একটা শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু সে এটা বুঝতে পারে না যে কিসের শব্দে তার ঘুম ভাঙে। প্রায় সময় সে কিছু অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পায়। তার নাম ধরে কেউ একজনের ডাকার শব্দ শুনতে পায়। দরজায় তার নাম ধরে টোকা দেওয়ার আওয়াজ শুনতে পায়, কিন্তু দরজা খুলে কাউকে পায় না। সে প্রায় রাতে একটা স্বপ্ন দেখে, গভির রাতে সে তাদের বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে থাকে, চারদিকে ভয়ংঙ্কর আওয়াজ শুনতে পায়, চারদিকে বাচার আত্মচিৎকার শুনতে পায়, খুবই করুন গলায় সাহায্যের চিৎকার শুনতে পায়, কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। যখন তার ঘুম ভাঙে তখন তার চোখে পানি আর মনে ভয় দুটোই থাকে। এই স্বপ্নের কোন উৎসই সে আজ পর্যন্ত পায় নি। আমরা সব বন্ধুরা একটু অবাকই হই। কেন না আমাদের বন্ধুর সাথে এমন জিনিস ঘটে, অথচ আমরা কিছুই জানতাম না। আড্ডা শেষে সবাই বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। সাধারনত শীতকালে খুব দ্রুত সন্ধ্যা নামে। আমরা একত্রেই হাটছিলাম। সবারই রনির ঘটনা শুনে মনে ভয় ঢুকে যায়। পথমধ্যেই মাগরিবের আযান শুনতে পাই। ভয়ে ভয়ে সবাই কোন মতে রনিদের বাসা পর্যন্ত যাই। আন্টি আমাদের দেখে খুব খুশি হন। রনিরা ছিলো বংশগত ভাবেই সম্পদশালী। আর রনিই ছিলো তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। আমাদের ঘরে নিয়ে আন্টি নাস্তার ব্যবস্থা করলেন। আন্টির কাছে জানতে পারলাম আর দুইদিন পর রনির ২১তম জন্মদিন। তখনই বন্ধুরা সবাই মিলে পরিকল্পনা করলাম বড় করে একটা অনুষ্ঠান করবো। বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিতে দিতে কখন যে ১১ টা বেজে যায় বুঝতেই পারি নি। সবাই খাওয়া দাওয়া করে রুমে চলে আসলাম। চিন্তা করলাম আজ সারা রাত গল্প করে কাটাবো। কেউ ঘুমাবো না। . যেই ভাবা সেই কাজ। কিছুক্ষন গল্প করার পর রনি বললো ওর খুব ঘুম পাচ্ছে। বালিশের সাথে মাথা লাগানোর সাথে রনি ঘুমিয়ে যায়। আমরা বাকিরা আড্ডা দিতে থাকি। আমাদের আড্ডার মাঝখানে এক বন্ধু খেয়াল করলো রনির চোখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। ৩ জনই খুব ভয় পেয়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম রনি আমাদের যেই স্বপ্নের কথা বলছিলো এখন ওই স্বপ্নই দেখতেছে। এক বন্ধু দ্রুত রনিকে ডেকে ঘুম থেকে তুলে ফেলে। রনির ঘুম ভাঙার পর ও খুব জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। হঠ্যাৎই কারেন্ট চলে যায়। রুমের মধ্যে প্রচন্ড গরম বাতাস বইতে শুরু করে। চারদিক শুধু অন্ধকার ছিলো। এক বন্ধু মোবাইলে বাতি দিলো। আমরা ৩ জনই ঠিক আছি, কিন্তু রনি রুমে নেই। পুরো রুম ভালো করে খুজলাম, কিন্তু কোথাও পেলাম না। তখনই ওর সেই স্বপ্নের কথা আমার মনে পড়ে গেলো। ঘর থেকে একটা চার্জার লাইট নিয়ে ৩ জনই উঠানে বেরিয়ে পড়ি। কেননা ও বলেছিলো স্বপ্নে ও ওদের উঠানের মাঝখানে দাড়িয়ে থাকে, চারদিকে নানান ধরনের আওয়াজ শুনতে পায়। তাই দেরি না করে দ্রুতই উঠানে বেরিয়ে পড়ি। সময় তখন রাত ৩ টার কাছাকাছি। পুরো উঠান ভালো করে খুজে দেখলাম, কোথাও রনিকে পেলাম না। হঠ্যাং এক বন্ধু দেখতে পেলো উঠানের মাঝখানে বেলগাছ টার মাঝামাঝি জায়গায় রনি হাওয়ায় ভাসছে। এই দৃশ্য দেখে ৩ জনই খুব ভয় পেয়ে যাই। হঠ্যাৎ করেই ধপাস করে মাটিতে আছড়ে পড়লো। পড়ার শব্দ শুনে ভয়ে ৩ জনই ভিতরের দিকে দৌড় দেই। খেয়াল করে দেখি ওটা রনি। ওকে ধরাধরি করে রুমে নিয়ে যাই। আমাদের আওয়াজ শুনে আন্টির ঘুম ভেঙে যায়। উনি দৌড়ে রুমে এসে রনির এই অবস্থা দেখে কাঁদতে শুরু করেন। কোন রকমে আন্টিকে শান্ত করে রাতটা পার করলাম। সকালে রনির জ্ঞান ফেরে। ওকে সব জিজ্ঞেস করার পর ও সেই স্বপ্নের কথাই বলে। বলে ও ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সেই স্বপ্নটা দেখে, এবং স্বাভাবিক ভাবেই নাকি সকালে ওর ঘুম ভাঙে। বুঝতে পারলাম গত রাতের ব্যাপারে ও কিছুই জানে না। তাই ওকে আর কিছুই বললাম না। এই ব্যাপারে আন্টি আমাদের জিজ্ঞেস করলে ওনাকে সব খুলে বলি। এরপর আন্টি মুখে কাপড় গুজে কাঁদতে শুরু করেন। আন্টি বলেন, ওনিও এরকম প্রায় দিন ফজরের ওযু করতে বাহিরে গিয়ে দেখে রনি উঠানে পড়ে আছে। রনিকে জিজ্ঞেস করলে সেই স্বপ্নের কথাই আন্টিকে বলে। অথ্যাৎ রাতের ব্যাপারে ও কিচ্ছু জানে না। তাই আন্টিও আগ বাড়িয়ে রাতের ব্যাপারটা ওকে বলে না। বুঝতে পারলাম না রনির সাথে এসব কি হচ্ছে। আন্টি নিজেও এখনো এর ব্যাখ্যা খুজে পান নি। . চলবে................


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৫৬ জন


এ জাতীয় গল্প

→ মধ্য রাতের চিত্‍কার

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now