বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
_____________
_____________
নিশি যেখানে ছিল সেখানে অনেক অন্ধকার। কিন্তু এতক্ষন চোখ সয়ে এসেছে বলে অন্ধকারে সে বেশ ভালই দেখতে পাচ্ছে। কেমন যেন পাথুরে একটা যায়গাতে সে আছে। চারপাশে খাড়া উঠে গেছে দেয়াল। দেয়াল ধরে ধরে সে হাটা শুরু করল। পায়ে পড়ানো আছে শিকল। বেশ ভারী সেটা। তাই নিজের শরীরের ওজন এর পর সেই শিকল পড়ে হাটতে বেশ কষ্ট হতে লাগল নিশির। তাই কিছুদুর হেঁটে যাবার পর হোঁচট খেয়ে পড়ল সে। কিছু একটা উঁচু হয়ে আছে। মাটি থেকে উঠে জিনিসটাকে ভাল মত দেখতে গিয়েই ভয় পেয়ে গেল নিশি। একটা মানুষের মাথার খুলি গেঁথে আছে মাটিতে। সেটাতে হোঁচট খেয়েছে নিশি। খুলিটাকে ফেলে রেখে উঠে দাঁড়াতেই নিশির সামনে ভেসে উঠল এরকম আরো অনেক গুলো খুলি। সংখ্যায় অগণিত সেগুলো।
এমন সময় হটাত করে চারপাশ আলোকিত হয়ে উঠল নিশির। নিশির উপর অনেক গুলো তীব্র আলোক রশ্মি এসে পড়ল একসাথে। নিকষ কালো অন্ধকার থেকে হটাত আলো এসে পড়াতে নিশির চোখ প্রায় অন্ধ হয়ে গেল কিছু ক্ষনের জন্য। কিছুই দেখতে পারছেনা নিশি। চোখ দুটো টন টন করে উঠল ওর। দুইহাত দিয়ে কোন রকমে চোখ ঢেকে তাকানোর চেষ্টা করল সে। কিন্তু কিছু দেখতে পাচ্ছেনা সে।
“ কি খবর নিশি মিয়া? কেমন আছিস?” একটা খনখনে কন্ঠের আওয়াজ শুনে মুহূর্তেই ভয়ে জমে গেল সে। এই আওয়াজ অনেক পরিচিত নিশির। এই আওয়াজের একজন কে সে কিছুদিন আগে শেষ করে দিয়েছে নিজের হাতে। কিন্তু সেই মানুষ কোন ভাবেই পরকাল থেকে ফেরত আস্তে পারবেনা। মানুষের পক্ষে পরকাল এর পর্দা সরিয়ে ফেরত আসা সম্ভব নয়। কিন্তু এ কিভাবে সম্ভব?
“ হা হা হা হা- কিরে কি ভাবছিস? হা হা হাহ আ হা- আমার গলা শুনে অবাক হয়েছিস?” আবার চিৎকার করে উঠল সেই খনখনে কন্ঠের অধিকারী। নিশি মিয়া কন্ঠের মালিক কে এখন ও দেখতে পারছেনা। কিন্তু আন্দাজ করছে এটা কার গলা। কিন্তু সেটা তো অসম্ভব। তাই কন্ঠের মালিক কে দেখার জন্য প্রশ্ন ছুড়ে দিল সে-
“ আমাকে এভাবে আলোর মাঝে নিয়ে এসে কষ্ট দেবার মানে কি?”
“ হা হা হা হা- তোকে একটু কষ্ট দিচ্ছি রে। তুই আমাকে যে কষ্ট দিয়েছিস এই কটা মাস। শরীর ছাড়া আমার নিজের আত্মা কে আমি কোন ভাবেই পৃথিবীর গণ্ডিতে রাখতে পারছিলাম না। কিন্তু তুই আমাকে যেভাবে মেরেছিলি তাতে আমার শরীরটা ও অকেজো হয়ে গিয়েছিল রে। তাই তোকে কবর দিয়েছিলাম জ্যান্ত। চেয়েছিলাম তুই মরন যন্ত্রনা ভোগ করে করে মর। কিন্তু সেখান থেকে তুই তো উঠে এসেছিস। এখন তোকে আমার ক্ষমতা দেখাচ্ছি। দেখ তুই আমাকে মারার পর আমার ক্ষমতা কত বেড়েছে। আমি এখন নেতার চাইতেও অনেক অনেক বেশি ক্ষমতা শালী- হা হা হা হা হা হা হা হা” বলেই বিকট শব্দে হেসে উঠল কন্ঠটা।
এবার নিশির চিনতে আর ভুল হলনা। এই কন্ঠ কিরনের কন্ঠ। সেই কিরন বালা-যাকে নিশি মিয়া নিজের হাতে দুই টুকরা করে ছিড়ে ফেলেছিল। মাথাটা থেকে ঝরে পড়া তাজা রক্ত খেয়েছিল। কিন্তু মরনের পর কেউ আবার ফিরে আসতে পারেনা। কিন্তু কিরন পেরেছে এবং তা সম্ভব হয়েছে খারুর অসম্ভব শক্তির ফলে।
নিশির মনে পড়ে গেল অনেক কথা। মনে পড়ে গেল নেতার উপদেশ। “শত্রুর সামনে কখনো নিজের ক্ষমতা হটাত করে দেখাবি না। দেখালে শত্রুর দুর্লভ ক্ষমতা দেখতে হবে। তাই চুপচাপ সুযোগের অপেক্ষায় থাকবি। সুযোগ পেলেই মারবি ছোবল”- কথা গুলো যেন নেতা দেবী তাকে আবার বলে দিল কানে কানে। সে পরিষ্কার শুনতে পেল নেতার আওয়াজ। আর শুনেই বুকে বল ফিরে পেল যেন সে। এতক্ষন মাথা উচু করে দেখতে চেষ্টা করছিল কিরন বালাকে। এখন মাথা নিচু করে সুযোগ এর অপেক্ষায় থাকল সে।
মাথার উপর আলোর তীব্রতা হটাত করে কমে গেল। সেখানে জ্বলে উঠল কিছু মোলায়েম আলো। নিশি এবার ভাল মত সামনে তাকাল। তার হাত বিশেক সামনে একটা কালো আলখাল্লা পড়ে দাঁড়িয়ে আছে এক মহিলা। মহিলার কন্ঠ ই এতক্ষন শুনেছে নিশি। কিন্তু নিশির বুঝল এই মহিলার দেহে এখন কিরনের আত্মা আছে। কিরনের মরে যাবার পর খারু কিরণকে দিয়েছে ২য় জীবন। প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে এই কাজ করে এতদিন টীকে থেকেছে নিশি। কিন্তু সে করত দেহ ঠিক রেখে নতুন আত্মা সেই দেহে প্রবেশ এর কাজ। এই কাজ যদিও খারাপ- কিন্তু এটা খুব একটা ক্ষতি করতো না। কিন্তু কিরন যা করেছে তা একেবারেই নিয়ম বিরুদ্ধ। শয়তান হলেও নিশির কিছু নিয়ম কানুন আছে। আছে অন্য সকল শয়তান পুজারীদের মাঝেও। কোন ভাবে আত্মাকে বিতারন করা যাবেনা শরীর থেকে। এই বিতারনের কাজটাই কিরনের ক্ষেত্রে হয়েছে।
হটাত পায়ের নিচে মাটি কেঁপে উঠল নিশির। সামনে দাঁড়ানো কিরন ঠাই দাঁড়িয়ে আছে মাটিতে। কিন্তু মাটির কাঁপুনিতে নিশি নিজের শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পেরে মাটিতে আঁছড়ে পড়ল। এমন সময় সামনে দেখতে পেল একটা বিকট ছায়া এসে দাঁড়াল। ছায়াকে অনুসরন করে দেখল বিকট দর্শন এক মূর্তি। নিশির সামনে দ্বিতীয় বারের মত হেঁটে হেঁটে এসে দাঁড়াল ছয় পা ওয়ালা খারু।
বিকট দর্শন খাড়ু এসে দাঁড়াতেই মাটির কাঁপুনি থেমে গেল নিমিষেই। খারু এসেই মাংসল হাত উচিয়ে নিশির দিকে তাক করল। আর নিমিষেই নিশি পালকের মত ভেসে উঠল মাটি থেকে। এক পায়ে শিকল থাকার কারনে অনেকটা ঘুড়ির মত বাতাসে ভাসতে লাগল সে। চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে গেল তার। নিজের ধ্বংস দেখতে পেল সে দিব্যচোখে। নিজের হাতে হত্যা করবে বলে তাকে মানুষের আইনে ফাঁসির সাজা থেকে বের করে এনেছিল খারু। এখন তার প্রতিশোধ নিচ্ছে নিশির উপর। সাথে সাথে নেতার সাথে অনেক দিনের শ্ত্রুতার ও একটা কুল কিনারা করতে খারু মরিয়া হয়ে উঠেছে।
নেতার সাথে খারুর শত্রুতা বেশি দিন আগের নয়। তবে সেটা নিশির জন্মের ও অনেক আগের কাহিনী। নেতা ছিল খারুর সমসাময়িক অপদেবতা। একই মাতৃ জঠর থেকে দুইজনের জন্ম। খারু দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। অপদেবতা দের মাঝে সবচাইতে খারাপ এবং সুন্দর চেহারা ছিল খারুর। এতে তার গর্বে পা পড়তো না। খারুর রুপের প্রেমে পড়েছিল নেতা। কিন্তু নেতাকে অগ্রাহ্য করে খারু নেতার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল অপদেবতাদের সর্বশ্রেষ্ট আসন। এতে নেতা তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে খারুর দুই হাত কে অকেজো করে দেয়। খারুর সুন্দর মুখে সৃষ্টি করে দুইটা বিষধর সাপ। বিকট দেহে যাদু মন্ত্রের জোড়ে তৈরি করে শতশত চোখ। কামরূপ থেকে খারূকে বিতারন করে নেতা। সেই থেকে নেতার সাথে খারুর শত্রুতা। এরপর অনেকদিন খারু জনমানুষের অজানা অবস্থায় ছিল। অনেকটা মৃতপ্রায় ছিল খারু। অনেক বছর পর কামরূপের এক পাহাড়ী গুহায় খারুর একটা মূর্তি নিয়ে আবার সাধনা শুরু করে কিরন। খারুই স্বপ্নে নেতাকে দেখিয়েছিল প্রচন্ড ক্ষমতার লোভ। আজীবন বেঁচে থাকার অমিত সম্ভাবনা। সেই লোভে কিরন জাগিয়ে তোলে খারুকে।আর অন্য দিকে অপদেবতা দের পরম পুজ্য হয়ে ওঠে নেতা। নিশি মিয়া হচ্ছে নেতার একনিষ্ট ভক্ত-যাকে নেতা দিয়েছে অমিত শক্তি। কিন্তু নেতার দুর্বলতা ছিল সে খারুর সামনে ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ত। সেই শক্তি কাজে লাগিয়ে নেতার সাথে যুদ্ধ করে এসেছিল খারু। খারুর অমিত শক্তি শুধু মাত্র তার হাতের বালা গুলোতেই সীমাবদ্ধ ছিল। সেই হাতের বালা প্রতিবারেই ছলনা করে খুলে নিয়েছিল নেতা। কোন বার নিজে- কোন বার অন্যকে দিয়ে। তাই আজকে নিশিকে হত্যা করে নেতার উপর অভিশাপ নিতে এগিয়ে আসল খারু। নেতার একনিষ্ট ভক্ত নিশি মিয়াকে খুন করে নেতার শক্তি পুজারীদের মাঝে সবচাইতে ক্ষমতা ধর মানুষটিকে সরিয়ে দেবে সে পৃথিবীর বুক থেকে। এই প্রত্যাশায় সে ডান হাতটা মোচড় দিল বাম দিকে।
ভেসে থাকতে থাকতে নিশি মিয়ার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সে প্রানপনে নেতার মূর্তি মনের মনিকোঠায় আনার চেষ্টা করছে। চাইছে একমনে নেতাকে স্মরণ করার জন্য। এতে তার শরীরে প্রবেশ করবে নেতার ক্ষমতা। এতে নিশি রক্ষা পাবে খারুর হাত থেকে।
নিমিষেই নিশির মনের কথা পড়ে ফেলল খারু- এবং সাথে সাথে মাটিতে আছরে ফেলল নিশিকে। হাত দশেক উপর থেকে আছরে পড়ে নিশি অজ্ঞানের মত হয়ে গেল যেন। চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে। মনে হচ্ছে সে মরে যাবে।
মাটিতে শুয়ে ছিল নিশি কয়েক সেকেন্ড। এই কয়েক সেকেন্ড নিশির কাছে মনে হল কয়েক বছর। হটাত কানের পাশে ফিস ফিস করে কে যেন কথা বলে উঠল নিশির। কে যেন কানে কানে বলল দুই হাত দুই পাশে রেখে বিশির মন্ত্র পাঠ করার জন্য। আর মুহূর্তেই হাত দুটো দুইপাশে নিয়ে গিয়ে পাঠ করল বিশির মন্ত্রের প্রথম শব্দ। আর সাথে সাথে নিশির শরীর একটা বিকট ঝাকুনি খেল। ঝাকুনি দিয়েই কেমন যেন বিকট ভাবে কেঁপে উঠল নিশির শরীর। গলা কেটে ফেললে পশু যেমন কেঁপে ওঠে ঠিক সেইরকম ভাবে নিশি কেঁপে উঠল। কেঁপে উঠেই থেমে গেল নিশির শরীর।
নিশিকে এত তাড়াতাড়ি নিস্তেজ হয়ে পড়তেই হো হো করে হেসে উঠল খারু। সাথে কিরনের হা হা হাসির দমক শোনা গেল চারপাশে। এই হাসি প্রতিধ্বনি হয়ে ভেসে আসল অনেক দূর থেকে। চারপাশে সব খাড়া খাড়া পাহাড়। সেই পাহাড়ে প্রতিধ্বনি হয়ে শব্দ টা অনেক জোড়ালো হয়ে গেছিল। আর সেই দমকা হাসিকে থামিয়ে দিয়ে হটাত করে উঠে বসল নিশি।
নিশিকে উঠে বসতে দেখেই থেমে গেল খারু আর কিরন। হটাত করে সারা শরীরের চোখ গুলো একসাথে কুঁচকে গেল খারুর। সে আবার হাত তুলে নিশিকে ভাসানোর জন্য বল প্রয়োগ করল। কিন্তু এবার নিশি মিয়া পড়ে আছে মাটিতে। নিশি মিয়ার কোন কিছু হচ্ছেনা দেখে খেপে গেল খাড়ু। পাশেই স্তুপ করা ছিল কিছু পাথর। সেখান থেকে এক হাতের ইশারায় কিছু পাথর কে নির্দেশ দিল নিশির উপর পড়ার জন্য।
দেখেই চট করে উঠে বসল নিশি। নিজের পায়ের শিকল টার গায়ে লাগানো তালা একহাতেই ফট ফট করে ভেঙ্গে ফেলল সে। নিশির উপর ভর করেছে নেতা। এতক্ষন বিশির মন্ত্রের জন্য নেতা প্রবেশ করতে পারছিলনা নিশির শরীরে প্রবেশ করাতে। নেতা কোন মানুষের শরীরে প্রবেশ করার জন্য নেতার আরাধনা করতে হয়। নেতা নিজে থেকে কারো শরীরে ভর করতে পারেনা। নিশি সেই সুযোগ করে দিতেই মুহূর্তেই নিশির শরীরের নিয়ন্ত্রন নিল নেতা।
নিশি মিয়া হাতে পেচিয়ে নিল এতক্ষন পায়ে পড়ানো শিকল টা। তারপর চাবুকের মত সপাং করে মেরে দিল খারুর দিকে। আর শিকল টা সোজা এসে খারূর হাতে পড়া একটা বালার সাথে আটকে গেল। নিশি এটাই চাইছিল। শিকল টা খারুর শরীরে আটকাতেই সে আচমকা এক্টান দিল শিকল টাতে। সাথে সাথে খারুর শরীর থেকে খুলে চলে আসল লোহার বালাটা। এইভাবে বেশ কয়েকবার চাবুকের মত সপাং সপাং করে খারুর শরীর থেকে খুলে আনল এক এক করে লোহার বালা। কয়েকটা বালা হারানোর পর খারু বেশ দুর্বল হয়ে গেল।
শিকল টা নিশি আবার ছুড়ে দিতেই বাম হাতে ধরে ফেলল সেটা খারু। এদিকে খারুর অসহায় অবস্থা দেখে নিশিকে আক্রমন করল কিরন। নেতার শক্তির সামনে খারু অসহায় হয়ে যেতেই কিরন ও হারিয়ে ফেলল তার ক্ষমতা। সে গিয়ে নিশিকে কিল চড় মারতে শুরু করল। অন্য কেউ হলে এগুলো সহ্যই করতে পারতো না। কারন কিরন যে মহিলার শরীরে ভর করেছে তার শরীর বিশাল। কিন্তু শেষ পযন্ত না পেরে নিশির পায়ে কামড় বসাল কিরন। আর নিশি এক হাতে শিকল ধরে অন্য হাতে কিরনের পিঠের মেরুদন্ড ধরল। আর সেই মেরুদন্ডের উপর চাপ দিয়ে শরীর থেকে সোজা খুলে নিয়ে আসল মেরু রজ্জু সহকারে মহিলার মাথা। তারপর খারুর দিকে সেই মহিলার মাথা মেরুদন্ড সহ ছুড়ে দিল নিশি। আর সাথে সাথে দুইহাত চেপে ধরে মাটিতে বসে পড়ল খারু। নিজের শক্তিতে শক্তিময় কারোর মাথা খারুর দিকে নিক্ষেপ করলেই খারু একেবারেই শক্তি হীন হয়ে পড়ে। এভাবেই কামরূপ থেকে তাড়িয়েছিল নেতা। সেই একই পদ্ধতিতে নেতা নিশিকে দিয়ে খারুর শক্তিকে নিয়ন্ত্রন করল যেন।
আর খারু মাটিতে বসে পড়ল ছয় পা ছড়িয়ে। আর পড়ার সাথে সাথে এক পৈশাচিক চিৎকার দিয়ে খারু মাটির ভেতর ঢুকে পড়ল। নিশি এক দলা মাটি কুড়িয়ে নিয়ে খারুর দিকে ছুড়ে দিয়েছিল মরু মন্ত্র। একমাত্র মরু মন্ত্র ছাড়া কোন অপদেবতাকেই মেরে ফেলা যায় না। খারু সেটা বুঝতে পেরেই অদৃশ্য হল মাটিতে নিজের মৃত্যু ঘটার আগেই। আর খারু অদৃশ্য হতেই নিশি ধপ করে মাটিতে পড়ে গেল –এবং যথারীতি জ্ঞান হারাল সে।
...........................................................................
পানির পিপাসায় নিশির বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে। প্রচন্ড আগুনে তাপের ভেতর দিয়ে হেঁটে হেঁটে পার হয়ে যাচ্ছে একেরপর এক মরুভুমি। কিন্তু শুধু মাত্র মন্ত্রের শক্তি দিয়ে বেশিক্ষন বেঁচে থাকা যায় না।
দুই দিন পর জ্ঞান ফিরে পেয়েছিল নিশি। নিজেকে আবিষ্কার করেছিল একটা বিকট খাঁড়ির ভেতরে। আশে পাশে সব খাড়া খাড়া পাহাড়। সেই সব পাহাড় অনেক কষ্টে পার হয়ে দেখল সে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল মরুভুমির মাঝে। সেই থেকে হাটা শুরু করেছে নিশি- থামার নাম গন্ধ নেই। কিন্তু বিশির মন্ত্র পাঠ করে পানির পিপাসা আর মেটাতে পারল না নিশি। সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। আর কিছুক্ষন পর আশ পাশ থেকে অনেক বালি এসে আস্তে আস্তে ঢেকে দিল নিশির দেহ।
...........................................................................
কিছুক্ষন আগে নিশি নিজেকে একটা ঘরে আবিষ্কার করেছে। গরমের ভেতর হাটতে হাটতে শরীরে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল নিশির। কিন্তু এখন বেশ আরাম লাগছে তার। কিছুক্ষন আগে এক বয়স্ক মহিলা এসে নিশিকে পানি পান করতে দিয়ে গেছে। নিশি এক দৃষ্টে তাকিয়ে ছিল মহিলার দিকে। সাদা কাপড় পরিহিত মহিলার চেহারা দেখে কার চেহারার সাথে যেন মিল পেল নিশি। কিন্তু কার চেহারা সেটা মনে করতে পারলনা। অনেক ক্ষন পর হটাত করে মনে হল- কিরনের চেহারার সাথে মহিলার চেহারার অনেক মিল। সেই কিরন বালা ওরফে ঘেন্নি বালা-যাকে নিশি পর পর দুইবার হত্যা করেছে কিছু দিনের ব্যাবধানে.............
কেমন লাগল জানাবেন?
সংগৃহীত
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now