বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

কালো রাজকুমারী-০২

"রূপকথা " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X ২। জল্লাদ রাজকন্যাকে যেখানে রেখে এসেছে সেই গাছে থাকতো এক হীরামন টিয়া পাখি। অন্যান্য পাখিদের মাধ্যমে সে আগেই রঙপুরের ঘটনা জানতো। মেয়েটাকে দেখে তার ও খুব মায়া হলো। এভাবে থাকলে তো বাচ্চাটা মারা পড়বে। কাছেই কাঠ কাটছিলো এক কাঠুরে। হীরামন তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বাচ্চাটার কাছে নিয়ে এলো। এই ঘন জঙ্গলে বাচ্চা দেখে কাঠুরে তো ভীষণ অবাক। আকাশ থেকে যেন চাঁদ নেমে এসেছে। একে এখানে ফেলে গেলো কে? আশে পাশে খুজে দ্যাখে কেউ নেই। কিন্তু বাচ্চাটা খিদেয় কাঁদছে। কি করবে বুঝেপায়না কাঠুরে। কাথুরেকে দোনোমনা করতে দেঝে গাছ থেকে হীরামন বলে উঠলো, ‘নিয়ে যাও কাঠুরে। ভিনদেশি রাজার মেয়ে এ। তোমার ভাগ্য ফিরাবে গো।’ কথা বলা পাখি দেখেতো কাঠুরে আরো অবাক। তবে তার আগে একে বাচাতে হবে। তাই সে দ্রুত বাচ্চাটাকে বাড়ি নিয়ে এলো। সাথে এলো হীরামন টিয়া। কাঠুরের কোনো মেয়ে নেই। চার ছেলে। কাঠুরে পরিবার তাই বাচ্চাটাকে পেয়ে খুব খুশি হলো। ওরা বাচ্চাটার নাম রাখলো কনকলতা। দিন যায়, বড় হয় কনকলতা। কাঠুরের ভাগ্যও ফিরে গেছে। হীরামন টিয়ার বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে সে কাঠের ব্যবসা খুলেছে। নিজের আর বনে কাঠ কাটতে যেতে হয় না। দেখতে দেখতে কনকলতা আঠারো বছরে পা দিলো। মেয়ে হলে কি হবে ভয়ানক দস্যি হয়েছে সে। বাবা আর ভাইদের প্রশ্রয়ে কোনো কিছুতেই না নেই তার। ভাইদের সাথে পাল্লা দিয়ে কুস্তি খ্যালে, তরবারী লড়ে। গাছের মগডালে উঠে ফল পেড়ে আনে। নির্ভয়ে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। আর রাত হলে হীরামন পাখির কাছে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে। এই রাজ্যের নাম রূপনগর। রাজার একটি মাত্র ছেলে। নাম অরুণকুমার। কিন্তু ছেলেটি পাথর। বয়স বিশ হলো এবার। পাথর হলেও মানুষের মতই ছেলেটার শরীর বড় হচ্ছে। দেখলেই বোঝা যায় বিশ বছরের এক তাগড়া জোয়ানের মুর্তি। দেখলেই প্রাণ জুড়ায়। রাজা প্রতিদিন ছেলের মুর্তি ধরে অশ্রুপাত করেন। ছেলের এমন দশার জন্যে নিজেকেই দায়ী মনে হয় তার। এক ডাইনীর অভিশাপে এমনটা হয়েছে। ডাইনীটা রাজ্যের ধারে এক জঙ্গলে থাকতো। মানুষ না মারলেও গোয়ালের গরু ছাগল মেরে মেরে খেয়ে ফেলতো নিয়মিত। প্রজারা অতিষ্ট হয়ে রাজার কাছে নালিশ করলো। ডাইনী বললো তাকে প্রতিদিন একটা করে খাসী আর সপ্তা শেষে একটা গরু দিতে হবে। তাহলে সে আর প্রজাদের জিনিস খাবে না। কিন্তু রাজা সেটা না করে ডাইনীকে মারতে গেলেন। তাতে ডাইনী রাজ্য ছেড়ে গেলো ঠিক কিন্তু যাওয়ার আগে ছড়া কেটে গেলো বান মারলাম রাজকুমাররে, হইবে পাথর রাজা-রাণী, প্রজা হইবে দুঃখে কাতর পাথর দশার যদি অবসান চাও দুই সুর্য ওঠে যেথা, সেই দেশে যাও পানির রাজকুমার আনো সেথা হতে ধরে রঙধনুর সাত রঙে রাঙ্গাও তাহারে মুখোমুখি রাখো দুই রাজার দুহিত রবির দিকেতে রাখো পানিপুত্রের পিঠ আঙ্গুল কাটিয়া কোনো নিপুন কুমারী তিলক পরাইয়া দেবে কপালেতে তারি। প্রভাতের প্রথম রশ্মি ছুইবে যখন রাজপুত্র নিজবেশে ফিরিবে তখন। ব্যস রাজপুত্র পাথর হয়ে গেলো। সেই থেকে এই অবস্থাতেই আছে। রাজা অবশ্য দশদিকে লোক পাঠিয়েছেন। দুই সুর্যের দেশ, পানির রাজকুমার, আর রংধনুর রঙের খোজে। কিন্তু তারা সেই যে গেছে আর খবর নেই। ডাইনীটাকেও খোজা হয়েছে অনেক। কিন্তু তাকেও আর খুজে পাওয়া যায়নি। রাজ্যের সব মানুষের ছড়াটা মুখস্ত। হবেনা কেনো? রাজা যে বলে রেখেছেন, এই ছড়ার মানে ভেঙ্গে রাজপুত্রকে সুস্থ করে দিতে পারলে রাজ্যের অর্ধেক তাকে দিয়ে দেবেন। এই কথা শুনে কতজনই চেষ্টা করলো। কত যন্ত্র তন্ত্র মন্ত্র। কিন্তু কিছুই হল না। ইনামের লোভে যারাই ঘর ছেড়েছে তাদের কেউই আর ফেরেনি। ফলে রাজকুমার পাথর হয়েই পড়ে থাকলো। রাজ্যের মানুষের মনে তাই অনেক দুঃখ। গত দশ বছর রাজ্যে কোনো উৎসব হয় না। সবাই মনমরা হয়ে থাকে। শুধু জন্মদিনের দিন মুর্তিটাকে প্রাসাদের বাইরে আনা হয় প্রজাদেরকে দেখানোর জন্যে। সবাই এসে দ্যাখে আর চোখের পানি ফেলে। কাঠুরে বাবার সাথে কনকলতাও এবার রাজপুত্রকে দেখতে গেলো। ইশ, কি সুন্দর! দেখেই কনকলতা রাজপুত্র অরুণকুমারের প্রেমে পড়ে গেলো। সে রাজকুমারী হলে এই রাজপুত্রকে ছাড়া আর কাউকেই বিয়ে করতো না। রাজপুত্রের জন্যে তার খুব মন খারাপ হলো। সেদিন রাতে হীরামন টিয়াকে ডেকে বললো, ‘ও হীরামন, তোমার তো অনেক বুদ্ধি। দাওনা একটা বুদ্ধি যাতে রাজপুত্র ভালো হয়ে যায়। দাওনা এনে দুই সূর্যের দেশের খবর।’ কনকলতার মন খারাপ থাকলে হীরামনের ও খুব খারাপ লাগে। সে বলল, ‘ঠিক আছে। আজই আমি খোজ করছি।’ বলেই সে ফুড়ুৎ করে উড়ে গেলো।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৫৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ কালো রাজকুমারী-০২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now