বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

কালো রাজকুমারী-০১

"রূপকথা " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X কালো রাজকুমারী অসীম পিয়াস ১। অনেক দিন আগের কথা। অনেক দূরে একটা দেশ ছিলো। নাম রঙপুর। দেশের সবকিছুই রঙ্গিন। যেদিকেই চোখ যায় শুধুই রঙের বাহার। রঙপুরে আজ মস্ত উৎসবের আমেজ। চারপাশের রঙ আজ আরো বেশি ঝলমল করছে। কারণ রাণীর বাচ্চা হবে। সাতদিন আগে থেকেই চলছে প্রস্তুতি। রাজ্যের সেরা বাজিয়েরা বাদ্যযন্ত্র হাতে প্রস্তুত। বাজিকরদের দল প্রস্তুত খেলা দেখানোর জন্যে। প্রতি রাতে সুরের লহরীতে রাজ্যের সকলকে বিমোহিত করে রাখার জন্যে গাইয়ের দল গলা সাধছে বহুদিন থেকেই। রাস্তার মোড়ে মোড়ে তোরণ বানানো হয়েছে। শোভাযাত্রার জন্য একশ তাগড়া ঘোড়া প্রস্তুত। সারা রাজ্যে খুশি আর আনন্দ। রাণীমা আঁতুড়ঘরে ঢুকতেই সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলো উৎসব শুরুর। বাচ্চা ভুমিষ্ট হওয়ার পর রাজবদ্যি সঙ্কেত দেওয়া মাত্র বিউগল বেজে উঠবে। রাজ জ্যোতিষী বাচ্চার ঠিকুজি বিচার করে নাম ঘোষণা করবেন। তারপরেই শুরু হবে শোভাযাত্রা। রাজা নিজ হাতে হীরার কুচি বিলাবেন প্রজাদের মাঝে। প্রজারাও তাই উৎসুক হয়ে অপেক্ষা করছে। ঐ শোনা যায় বাচ্চার কান্নার আওয়াজ। বাজিয়েরা বুক টানটান করে দাঁড়াল বিউগলে ফুঁ দেওয়ার জন্যে। রাজবদ্যিকে দেখা গেলো। কিন্তু একি! তার মুখ কালো কেনো? সঙ্কেত দেওয়ার বদলে সে রাজদরবারের দিকে ছুটে যাচ্ছে। বাচ্চার কোনো সমস্যা? কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া গেলো না। অপেক্ষা করতে করতে বাদক দলের দম গেলো ফুরিয়ে। বাজিকরদের বাজি গেলো চুপসে। শোভাযাত্রার ঘোড়াগুলো পড়লো ঝিমিয়ে। সবার মুখেই ফিসফিসানি। কি হয়েছে? কি হয়েছে? ঘটনা জানা গেলো একটু পরেই। পরীরাজ্যের ইতিহাসে যা কখনো ঘটেনি তেমন একটা ঘটনা ঘটেছে। রাণীমার একটা কালো মেয়ে হয়েছে। কি সর্বনাশ! আগুনের বেগে কথাটা সারা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়লো। রাণীমার নিশ্চয়ই কোনো দোষ ছিলো। নইলে এমন হবে কেন? কালো এদেশে অস্পৃশ্য রঙ। এখানে রাতের আধার বাদে কালো আর কিছু নেই। আর এই রাতের আধারেই আসে সব অমঙ্গল। এই মেয়ে নিশ্চয়ই দেশের জন্যে অমঙ্গল। হায় হায়! এখন কি হবে? একে দেশ ছাড়া করতে হবে। রাজদরবারে সভা বসলো। রাজা চোখ লাল করে সভাসদদের কথা শুনলেন। সবাই মত দিলো মেয়েটাকে কতল করার জন্যে। বাচ্চা মেয়ে বলে রাজা বিরোধিতা করতে চাইলেন কিন্তু অমঙ্গল ছোট থেকেই থামানো উচিত বলে সবাই তাকে থামিয়ে দিলো। এদিকে রাণীমা কিন্তু কিছুই জানেন না। তার চোখে মেয়ের কোনো খুঁতই ধরা পড়ছে না। যতই দেখছেন ততই প্রাণ ভরে যাচ্ছে। সারাক্ষণ চুমোয় চুমোয় ভরিয়ে দিচ্ছেন ওকে। আর বাচ্চাটাও মাড়ি বের করে সারাক্ষণ হাসছে। কখন আবার নজর লেগে যায় তাই কাজলের টিপ পরিয়ে দেন কপালে। তারপর আদর করতে করতেই বাচ্চাটার সাথেই ঘুমিয়ে পড়েন অজান্তে। রাজার নির্দেশে বাইরে লোক প্রস্তুত ছিলো। রাণীমা ঘুমাতেই বাচ্চাটাকে সাবধানে তুলে নিলো। জল্লাদখানায় নিয়ে কতল করবে। কিন্তু বাচ্চাটার মায়াবী চেহারা দেখে জল্লাদের ও মন গলে গেলো। সে বাচ্চাটাকে মারতে পারলো না। তার বদলে দূরের এক জঙ্গলে রেখে এলো। কালো রাজকন্যার বিদায়ে রাজ্যের আকাশ কাদলো, বাতাস কাদলো, ফুলগুলো সব শুকিয়ে গেলো। খালি পাষাণ মনের মানুষগুলো কাদলো না।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৬০ জন


এ জাতীয় গল্প

→ কালো রাজকুমারী-০১

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now