বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

গল্প: দ্য ওয়ান লাস্ট গেম

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আলোর পরশ (০ পয়েন্ট)

X দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর বউয়ের দেখা পেলাম। হাসি হাসি মুখে বোকা মেয়েটা বলল, "আমি রেডি।" আমি বিরক্তিতে মুখ কুঁচকলাম। বোকা মানুষদের আমি দেখতে পারি না। বললাম, "চলো।" আমাদের আজকে মার্কেটে যেয়ে কেনাকাটা করার কথা। এই দিনটার জন্য আমার বউ সবসময় অপেক্ষা করে। কিন্তু আমিই তাকে সময় দিতে পারি না। সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকি। দীর্ঘ এক মাস পর মার্কেটে যাবার সুযোগ পেয়ে বউ তো আমার মহা খুশি। গাড়িতে উঠবো, এমন সময় থানা থেকে ল্যারি ফোন করল। "স্যার, পাখি খাঁচায়।" আমার সাড়া গেয়ে একটা শিহরণ ছড়িয়ে পড়ল। হার্টবিট মিস করলাম দুই একটা। "তাই? ওকে আটকে রাখো, আমি এখনই আসছি।" বউকে বললাম, "ডার্লিং, আমি সরি, আমাকে যেতে হবে।" "কেন?" "কাজ আছে। তুমি বুঝবে না।" ও কাঁদোকাঁদো স্বরে বলল, "এখন না গেলে হয় না?" আমি বললাম, "না। আমি সরি। তুমি যাও।" ও গাড়িতে উঠে চলে গেল। আমি একটা ট্যাক্সি ডেকে থানার দিকে রওনা দিলাম। পথে ট্যাক্সিচালক আমাকে জিজ্ঞেস করল, 'থানায় কি কাজ আপনার? জিডি করবেন?" আমি বললাম, "না। ডিউটি দেবার জন্য যাচ্ছি।" "ও আপনি দারোগা?" "না আমি থানার ও সি।" ট্যাক্সিচালকের মুখ ভয়ে বন্ধ হয়ে গেল। একটু পরেই আমরা থানায় পৌঁছলাম। থানার ভিতরে ঢুকতেই সেন্ট্রিরা আমাকে স্যালুট করল। আমি ল্যারির অফিসের দিকে যেতে লাগলাম। তিনতলায় অফিসের ভিতরে ঢুকে দেখি, একটা কমবয়সী ছেলেকে বেঁধে রাখা হয়েছে। ল্যারি তার উপর ঝুঁকে আছে। আমাকে দেখেই উঠে দাঁড়াল সে। "স্যার, এই যে মেইন কালপ্রিট।" আমি গিয়ে ছেলেটার সামনে দাঁড়ালাম। ছেলেটা অনেক কমবয়সী, কিন্তু তার চোখেমুখে কেমন একটা বুদ্ধির আভা ঝিলিক দিচ্ছে। এ আবার কোন ক্রাইমের সাথে জড়িত? আমি বললাম, "কি করেছে ও?" ল্যারি বলল, "স্যার ওরা পাঁচজন মিলে একটা ডাকাতির সাথে জড়িত ছিল। শহরের উপকণ্ঠে স্যার ম্যাকরিভার নামে এক ভদ্রলোক বাস করেন। তিনি আবার ভয়াবহ বড়লোক। ওনার প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য জিনিস সংগ্রহ করার একটা বাতিক ছিল। পুরনো আমলের অনেক দামি দামি অস্ত্র, মুদ্রা, ছবি ইত্যাদি আরও অনেক কিছু আছে ওনার সংগ্রহে। সেই লোকের বাসায় বিশ দিন আগে ডাকাতি করে ও সহ পাঁচজন। ম্যাকরিভারের কাছে দশম শতাব্দীর কিছু মহা দুষ্প্রাপ্য স্বর্ণমুদ্রার সেট ছিল। মুদ্রার সংখ্যা ছিল ঠিক একশটা। ওরা কেন যেন ডাকাতি করে শুধু ঐ স্বর্ণমুদ্রাগুলোই নিয়ে নেয়। অন্য কিছুর দিকে তারা আর হাত বাড়ায় নি। অবশ্য তাতেও লাভ কম হত না। প্রতিটি স্বর্ণমুদ্রার দাম বর্তমান বাজার দরে কমপক্ষে আশি হাজার পাউন্ড। স্বর্ণমুদ্রাগুলি হাত করার পরে ওরা একটা বিচিত্র নিয়মে মুদ্রাগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগ করে। পাঁচজনের মধ্যে লটারি করে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম নির্ধারণ করা হয়। প্রথমজন মুদ্রাগুলো সবার মধ্যে ভাগ করে দেবে। সেই বিভাজন পরের চারজনের মধ্যে যার যার পছন্দ হবে তারা হ্যাঁ বলবে। যার যার পছন্দ হবে না তারা না বলবে। যদি হ্যাঁ এর সংখ্যা না এর সমান বা বেশি হয়, তাহলে প্রথমজনের প্রস্তাব টিকে যাবে। এবং সেই অনুসারে মুদ্রাগুলো দিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু যদি না এর সংখ্যা হ্যাঁ এর চেয়ে বেশি হয়, তাহলে প্রথমজনের প্রস্তাব টিকবে না এবং তাকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। তারপর পালা আসবে দ্বিতীয়জনের। দ্বিতীয়জন নিজের সহ চারজনের মধ্যে মুদ্রা ভাগ করে দেবার প্রস্তাব দেবে। সেই প্রস্তাবে ভোট দেবে বাকি তিনজন। এই বিভাজনে কেউ রাজি থাকলে সে হ্যাঁ বলবে, আর রাজি না থাকলে না বলবে। হ্যাঁ এর সংখ্যা না এর সমান বা তার চেয়ে বেশি হলে প্রস্তাব টিকে যাবে, কিন্তু না এর সংখ্যা হ্যাঁ এর চেয়ে বেশি হলে প্রস্তাব টিকবে না। তখন দ্বিতীয়জনকেও গুলি করে মারা হবে। এবার পালা আসবে তৃতীয়জনের। সেও একটা প্রস্তাব দেবে। আর ভোট দেবে বাকি দুইজন। না এর সংখ্যা হ্যাঁ এর চেয়ে বেশি হলে তাকেও গুলি করে মারা হবে। আর তা না হলে তার প্রস্তাবই গৃহীত হবে। তৃতীয়জন মারা গেলে পালা আসবে চতুর্থজনের। তার ভোটদাতা হবে শুধু পঞ্চমজন। চতুর্থজনও মারা গেলে সব মুদ্রা পঞ্চমজনই পাবে। এই পাঁচজনই খুব লোভী, সবাই চায় যেন সে নিজে যত বেশি সম্ভব মুদ্রা পায়। সবাই চায় তাদের বেশি বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী গুলি খেয়ে মরুক। তারা এটাও চায় যে তারা কেউই যেন নিজে মারা না যায়। এবং প্রত্যেকেই অসম্ভব রকম বুদ্ধিমান। তো লটারিতে আমাদের সামনে বসা এই ছেলেটির সিরিয়াল ছিল এক। অর্থাৎ সে ছিল প্রথম মানুষ যে প্রস্তাব দেবে, এবং প্রস্তাব গৃহীত না হলে তাকে গুলি করে মারা হবে। ওরা যখন এভাবে ভাগাভাগি করছিল, তখন ম্যাকরিভারের বাসার একটা গোপন সিসি ক্যামেরায় তাদের দৃশ্য ধারণ করা হয়। আর সেখান থেকে চেহারা শনাক্ত করেই পরবর্তীতে একে ধরা সম্ভব হয়।" আমি বললাম, "শুধু একে কেন? অন্যরা কি নির্দোষ?" ল্যারি বলল, "অবশ্যই তারা দোষী। কিন্তু অধিকাংশ মুদ্রাই পেয়েছিল এই ছেলেটা। প্রায় সবকটা মুদ্রাই বাগিয়েছিল সে।" "তার মানে সে যেটা প্রস্তাব দিয়েছিল সেটায় কমপক্ষে দুজন হ্যাঁ বলেছিল? এবং তার প্রস্তাব টিকে গিয়েছিল?" "হ্যাঁ।" তার মুদ্রা ভাগাভাগির প্রস্তাবটা কেমন ছিল? পাঁচজনকেই বিশটা করে?" "না স্যার। এই ছেলেটা ভয়াবহ বুদ্ধিমান। ওর ভাগাভাগিটা শুনলে আপনি বিশ্বাস করতে চাইবেন না।" "কি সেটা?" "৯৬, ০, ০, ২, ২।" "মানে?" "মানে সে নিজে ৯৬ টা নিয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিছুই পায় নি, চতুর্থ ও পঞ্চম ২ টা করে পেয়েছে।" "অসম্ভব! তাহলে অন্যরা সেটা মেনে নিলো কেন?" "সেটাই তো হারামজাদাকে এতক্ষণ ধরে জিজ্ঞেস করছি, কিন্তু সে কিছু বলছে না।" "ওর কোন ব্যাকআপ আছে কি না জানো? কে আছে ওর পিছনে?" "গোমেজ। ও গোমেজের লোক।" "গোমেজ!" গোমেজ হচ্ছে গত দু বছরে এই এলাকার একটা মূর্তিমান ত্রাসের নাম। তাকে বলা হয় “দি ইনভিজিবল গডফাদার।” তাকে এখন পর্যন্ত কেউ দেখে নি, কোনদিন তাকে ধরা সম্ভব হয় নি। কিন্তু সবার নাকের ডগায় তার লোকেরা একের পর এক ক্রাইম ঘটিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে আছে ব্যাঙ্ক ডাকাতি, চুরি, হ্যাকিং, কিডন্যাপিং সহ আরও অনেক কিছু। গোমেজের লোকেরা নাকি অনেক বুদ্ধিমান, বলেছিল ল্যারি, গোমেজের দলে ঢোকার জন্য তাদের চরম বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে ঢুকতে হয়। কেউ যদি কোন অ্যাসাইনমেন্টের সময়ে বিন্দুমাত্র বুদ্ধিহীনতার পরিচয় দেয়, সাথে সাথে নাকি তাকে অন্ধ করে দেয়া হয়। কেউ যদি কখনও দলের কোন সত্য ফাঁস করে দেয় বা দেবার চেষ্টা করে, তাকে সাথে সাথে খুন করা হয়। এই পিচ্চি তাহলে সেই গোমেজের লোক! এইটুকু পিচ্চি! আমি ল্যারিকে বললাম, "ওর সাথে আমি একা একা একটু কথা বলতে চাই।" ল্যারি বলল, "ঠিক আছে। আমি বেরিয়ে যাচ্ছি।" ল্যারি চলে গেল। আমি দরজা বন্ধ করে দিলাম। ছেলেটার সামনে গিয়ে বসলাম আমি। সে মাথা তুলে তাকাল। আমি বললাম, "আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না।" সে কিছু বলল না। "তুমি শুধু বল নিজে ৯৬ টা নিয়ে তুমি কিভাবে বেঁচে গেলে?" সে নিশ্চুপ রইল। "বল অন্যরা কেন তোমার বিভাজন মেনে নিল? কেন? কি ভেবে তুমি এভাবে ভাগাভাগি করেছিলে?" সে মনে হল কিছু বলতে চায়। "বল। না বললে কিন্তু তোমাকে ভয়াবহ অত্যাচার করা হবে।" ছেলেটা হাসল। করুণ হাসি। "আমি বললাম, আমি জানি তুমি কি ভাবছ। তুমি ভাবছ আমাদের অত্যাচার আর কি, গোমেজের অত্যাচার তার চেয়েও ভয়ানক।" সে বলল, "আমি গোমেজকে চিনি না।" "তুমি গোমেজের লোক।" "আমি গোমেজকে চিনি না।" "গোমেজ কিভাবে জানবে যে তুমি এসব আমাদের কাছে বলেছ?" "আমি গোমেজকে চিনি না।" "আচ্ছা বুঝলাম তুমি গোমেজকে চেন না। কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর দাও তুমি। কেন ওরা তোমার কথা মেনে নিল? কেন?" সে নিশ্চুপ রইল। আমি বললাম, "তোমার কোন ভয় নেই। গোমেজ তোমাকে কখনই ধরতে পারবে না। তুমি শুধু আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।" সে হাল ছেড়ে দেবার মত একটা ভঙ্গি করল। তারপর বলল, "আপনি ভাবুন।" "আমি পারব না। আমি তোমার কাছেই শুনতে চাচ্ছি।" সে একটু অপেক্ষা করে বলল,"আপনি চতুর্থজনের কথা চিন্তা করুন। সে যেটাই বলবে পঞ্চমজন তাতেই না বলবে, এবং চতুর্থকে গুলি মেরে নিজে একশটা মুদ্রা পাবে, রাইট?" আমি একটু ভেবে বললাম, "রাইট।" "সুতরাং তৃতীয়জন যেটাই প্রস্তাব দেবে চতুর্থজন তাতেই রাজি হয়ে যাবে। তার হ্যাঁ ভোট এবং পঞ্চমজনের না ভোট মিলে তৃতীয়জনের প্রস্তাব টিকে যাবে। সেক্ষেত্রে চতুর্থজন কিছু না পেলেও বেঁচে যাবে, রাইট?" "হুম, রাইট।" "মানে তৃতীয়জনের ভাগাভাগি হবে ১০০, ০, ০।" "রাইট?" "রাইট।" "এবার দ্বিতীয়ের কথা ভাবুন। তৃতীয় যেহেতু জানে যে নিজের পালা আসলে সে ১০০ টাই পেতে পারবে, তাই দ্বিতীয়ের যেকোনো প্রস্তাবেই সে না বলবে।" "সুতরাং, দ্বিতীয়জন চাইবে তৃতীয় বাদে বাকি দুজনের হ্যাঁ ভোট পেতে। সুতরাং, সে ভাগাভাগি করবে ৯৮, ০, ১, ১।" "তাতে কি হবে? চতুর্থ এবং পঞ্চম কেন তা মেনে নেবে?" "কারণ, দ্বিতীয়কে না বললে তৃতীয়র সময় তারা কিছু পাবে না। সুতরাং মাত্র ১টা পেলেও সেটা তাদের লাভ। তাই চতুর্থ ও পঞ্চম হ্যাঁ বলবে।" "দুইটা হ্যাঁ আর একটা না মিলে দ্বিতীয়ের প্রস্তাব টিকে যাবে। এবার আমার, মানে প্রথমজনের কথা চিন্তা করুন। আমার প্রস্তাব টিকতে মাত্র দুইটা ভোট লাগবে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় কখনই আমায় ভোট দেবে না, কারণ তারা এমনিতেই ৯৮ বা ১০০ টা করে পেতে পারে। কিন্তু আমি তো তাদের তা দেব না। আমি চতুর্থ এবং পঞ্চম, দুজনকেই একটা করে বাড়িয়ে দিলাম। তারা জানে আমার প্রস্তাব না টিকলে দ্বিতীয়জন তাদের ১ টা করে মুদ্রা দেবে। সেজন্য আমার দেয়া ২ টা করে মুদ্রা তাদের জন্য লাভজনক হবে। তারা আমাকে হ্যাঁ বলবে। সুতরাং আমার ভাগাভাগি হল, ৯৬, ০, ০, ২, ২; বুঝলেন?" আমি কিছুক্ষণ ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করলাম। ছেলেটা আসলেই বুদ্ধিমান। এরকম বুদ্ধি অন্য কারো মাথায় আসা খুবই কষ্টকর। আমি বললাম, "তুমি কি সত্যিই গোমেজের লোক?" "আমি আগেও বলেছি, আমি গোমেজকে চিনি না।" "উত্তর দাও। আমার কথার স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ আছে।" "আমি গোমেজকে চিনি না।" "গোমেজের একটা গ্রুপকে আমরা ধরেছি। তারা তোমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে।" "আমি গোমেজকে চিনি না।" "আচ্ছা ঠিক আছে তুমি গোমেজের লোক না," নাটকীয়ভাবে বললাম আমি, "কারণ গোমেজের লোকেরা কখনই বুদ্ধিহীনতার পরিচয় দেয় না।" ছেলেটা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল। চোখ দিয়ে প্রশ্ন করল, "কী বলতে চান আপনি?" "তুমি ৯৭ টা পেতে পারতে।" ছেলেটা মুখে অবাক বিস্ময়ের একটা ছাপ লক্ষ্য করলাম আমি। কিন্তু সে কোন কথা বলল না। "দ্বিতীয়জন তোমাকে অবশ্যই না বলত, বললাম আমি, তাকে নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু তৃতীয়ের কথা ভাবা উচিৎ ছিল তোমার।" ছেলেটার চোখে আরেকটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেখতে পেলাম আমি। "তৃতীয় জানত তোমার প্রস্তাব না টিকে দ্বিতীয়ের পালা আসলে সে একটাও পাবে না। সুতরাং তুমি যদি তাকে ১ টাও দিতে সেটাও তার লাভ ছিল। তার ভাগে ১টা দিলেও সে হ্যাঁ বলত।" আবার চতুর্থ জানত দ্বিতীয়ের পালা আসলে সে নিজে ১ টা পাবে। সুতরাং তুমি যদি তাকে ২ টা দিতে সেটাও তার লাভ। ২ টা দিলেই সে তোমাকে হ্যাঁ ভোট দিত। সুতরাং, তৃতীয় ও চতুর্থের হ্যাঁ ভোট পেয়ে যাচ্ছ তুমি। দুইটা হ্যাঁ ভোটের বিপরীতে বাকি দুজন না ভোট দিলেও তোমার প্রস্তাব টিকে যেত। তাই দ্বিতীয় ও পঞ্চমকে কিছু না দিলেও কোন সমস্যা ছিল না।" ছেলেটা অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। "মানে তোমার ভাগাভাগি হওয়া উচিৎ ছিল ৯৭, ০, ১, ২, ০; তুমি ৯৭ টা পেতে পারতে। এইটুকু বোকামি কেন করলে?" ছেলেটার বিস্ময় হঠাৎ রূপান্তরিত হল ভয়ে। আমি হাতা গুটাতে গুটাতে বললাম, "গোমেজ যদি জানে যে তুমি এরকম ভুল করেছ তাহলে সে তোমার কী করবে জানো?" হঠাৎ মৃত্যুভয়ে থর থর করে কাঁপতে লাগল ছেলেটা। "গোমেজ তোমাকে পেলে ভয়াবহ শাস্তি দেবে। ভয়াবহ শাস্তি।" ছেলেটার কাঁপুনি বাড়তে লাগল। "আমরা তোমাকে শেলটার দেব। গোমেজ তোমার নাগালও পাবে না। তোমার টিকিটিও ছুঁতে পারবে না সে।" ছেলেটা বলল, "আমাকে অন্ধ করে দেবে...অন্ধ করে দেবে...হঠাৎ প্রবল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল সে।" আমি বললাম, "এখন আমরা ছাড়া তোমার আর কোন বন্ধু নেই। বল গোমেজ কে। কোথায় থাকে। কারা আছে তাঁর দলে? তারা কিভাবে কাজ করে? বল। তাহলে আমরা তোমার পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। নাহলে..." ছেলেটা কাঁদতেই লাগল। আমার জেদ চেপে গেল। বললাম, "নাহলে কিন্তু আমরা তোমাকে আবার যেখান থেকে ধরেছি ওখানে রেখে আসব। এক ঘণ্টার মধ্যে গোমেজের লোকের কাছে ধরা পড়বে তুমি। তারপর...বুঝতেই পারছ।" ছেলেটা চোখ তুলল। বলল, 'আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি বলব। সব বলব। এখনই বলব। এখনই।" আমার চোখ চকচক করে উঠবো। আহ, অবশেষে। অবশেষে ধরা পড়তে যাচ্ছে “দি ইনভিজিবল গডফাদার”, গোমেজ। সেই গোমেজ। আমি ছেলেটাকে বললাম, "চল তোমাকে একটা জিনিস দেখাই।" "কি জিনিস?" আমি ছেলেটাকে দাঁড় করিয়ে জানালার কাছে নিয়ে গেলাম। তিনতলার জানালা, গ্রিল নেই। জানালার সামনে গিয়ে আমি আমার চশমাটা খুলে তাকে বললাম, "এই চশমাটায় কেন যেন একটু ঝাপসা দেখছি। তুমি একটু পরে দেখ তো।" বলেই ওকে চশমাটা পরিয়ে দিলাম আমি।চশমা পরে ওকে একটা বেকুবের মত দেখাতে লাগল। জানালার ধারে গিয়ে আমি বললাম, "আমার কপালের দিকে তাকাও তো। ভালোভাবে তাকাও। কোন ময়লা দেখা যাচ্ছে কি? ভালোভাবে তাকাও, চোখ সরাবে না।" ও খুব মনোযোগ দিয়ে আমার কপালের দিকে তাকিয়ে রইল। আমি সর্বশক্তি দিয়ে তার দুচোখের মাঝখানে একটা ঘুষি মারলাম। চশমার কাঁচ ভেঙ্গে চোখের ভিতর ঢুকে গেল তার। আর্তচিৎকার করে উঠল সে। আমি তার হালকা শরীরটা তুলে জানালা দিয়ে বাইরে নিক্ষেপ করলাম। একটু পরে কিছু একটা ভাঙ্গার শব্দ কানে এলো আমার। শব্দ শুনে ল্যারি অফিসে এসে ঢুকল। দেখল আমার হাতে রক্ত, মুখে রক্ত। আমি জানালার নিচে বসে হাফাচ্ছি। "কোথায় গেল শয়তানটা?" রিভলভার বের করল ল্যারি। আমি হাফাতে হাফাতে বললাম, "আমাকে লাথি মেরে জানালা দিয়ে পালিয়েছে। উহ, ব্যথা!" (সমাপ্তি)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৬৮ জন


এ জাতীয় গল্প

→ গল্প: দ্য ওয়ান লাস্ট গেম

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now