বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

একটি মুর্দার আত্মকাহিনী

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Sayemus Suhan (০ পয়েন্ট)

X রাতের আকাশ দেখা অনেক বড় সৌভাগ্য সেই সৌভাগ্য আমার প্রতিদিন ই হয়। গত একবছর যাবৎ রাতে হাঁটাহাঁটি করি। আমার চেনাজানা একটা লোক এরকম রাতেহাঁটতো। লোকটা হাঁটতো অভ্যাস বসত কিন্ত আমি হাঁটি ভুলার জন্য সৃতি ভুলার জন্য। রাতে আরও অনেকেই হাঁটে চোর ডাকাত এমন কি পুলিশ ও হাঁটে। চোর ডাকাত দূর থেকেই চেনা যায় আমিও তাদের ক্ষতি করিনা তারাও আমার ক্ষতি করেনা, একটা বাস্তুসংস্থান রয়েছে আমাদের মাঝে। পুলিশ আর তাদের ও বাস্তুসংস্থান আছে। আমার পরিচিত আরোও একজন আছে যিনি এরকম রাতে হাঁটে। সে হলো হুমায়ূন আহম্মদ এর হিমু। হিমু আমার অনেক ফেভারিট একটা মহাপুরুষ যদিও ইচ্ছে ছিল হিমুর মতো না চলার। প্রকৃতি সবসময় আমাদের বিপক্ষে থাকে তাই হিমুর মতো নিশাচর হতে হচ্ছে। হিমুর বাদল নামে একটা ফুফাতো ভাই আছে তাই সে ইচ্ছে করলে বাদলদের বাসায় যেতে পারে কিন্ত আমার বাদল নামের কোন ফুফাতো ভাই নেই তাই তার বাসায় যাওয়া যাবে না। . রাত ১ টা . এখন আমার রাতের প্রথম ভাগ যদিও সবাই ঘুম গেছে বা প্রিপারেশন নিচ্ছে। নিতাও হয়তো প্রিপারেশন নিচ্ছে স্বামীর বুকে ঘুমানোর। আমার কোন স্বামী নেই কারণ ছেলেদের স্বামী থাকেনা থাকে স্ত্রী। আমার স্ত্রী থাকলে আমিও হয়তো ঘুমাতাম যেহেতু স্ত্রী নেই সেহেতু ঘুমানোর চিন্তা বাদ। অন্য কিছু করার দরকার এই যেমন মানুষকে ভয় দেখানো যায়। আমি একটা ছবিতে দেখেছি এই সময়ে কিভাবে ভয় দেখাতে হয় যদিও ছবিতে ছেলেটাই উল্টো ভয় পেয়েছিল। আমাকে ভয় পেলে চলবেনা মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার আলাদা মজা আছে সে মজা একেক সময়ে একেক রকম। একটা লোক এদিকেই আসছেদেখো বুঝতে পারছি লোকটি সচরাচর রাতে হাঁটেন না হয়তো কোন দরকারে রাতে যাচ্ছে আমার সেদিকে খেয়াল নেই আমার খেয়াল লোকটাকে ভয় দেখাবো তাই ঘাড় থেকে গামছা নিয়ে মুখ ঢেকে নিলাম সোডিয়াম লাইটের আলোতে আমাকে ভংগকর লাগছে কিনা বুঝতে পারছিনা কারণ নিজের ছবি নিজে দেখা যায় না দেখতে হলে আয়না লাগে। আমার কাছে আয়না নেই মফিজ ভাইয়ের কাছে আছে কিন্ত এখন যাওয়া যাবে না। লোকটার দিকে খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি কাছাকাছি এসেই পকেটে হাত ঢুকালাম এমন একটা ভাব নিলাম যেন আমার কাছে অস্ত্র আছে। লোকটা ভয় পেয়েছে তা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে কেউ অন্ধকার থেকে এলে বুঝবেনা কিন্ত আমি বুঝছি সে ভাবছে এগুবে না উল্টো দৌঁড়াবে আমিও দৌড়ানির প্রস্তুতি নিলাম স্কুলে দৌঁড়ের প্রতিযোগিতায় আমি সবসময় ফাস্ট হতাম। লোকটা বয়স্ক বয়স ৫০ উদ্ধ হবে সাদা পাঞ্জাবি দেখে আমিও ভয় পাচ্ছি। ভাবতেই মজা লাগছে সেও ভয় পাচ্ছে আমিও ভয় পাচ্ছি কিন্ত আমার ভয়ে আনন্দ আছে তার ভয়ে আতঙ্ক। সত্যিই লোকটি দৌঁড়াতে আরম্ভ করলো তার দৌড় দেখে হাঁসি পাচ্ছে আমিও দৌড় দিলাম লোকটাকে চিনতে পেরেছি উনি এ এলাকায় লোক দশ তলা লাল কালারের বাড়িটি উনার নাম মজিদ ভিলা আমার মতে ভিতু ভিলা দেয়া উচিৎ যেভাবে ভয় পেয়ে দৌঁড়াচ্ছে। লোকটি হাফিয়ে গেছে তাই রেস্ট নিচ্ছে আমিও এবার রেস্ট নিচ্ছি। মানুষ হাফিয়ে গেলে সব ভুলে যায় মজিদ সাহেব ও সব ভুলে গেছে এখন বিশ্রাম নিয়ে আবার দৌড়ানি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আমার প্রস্তুতি আগেই ছিল। লোকটি ভয় পেয়েছে ভয় পেলে মানুষ হাঁসতে পারে না কাঁদে মজিদ সাহেব কাঁদছেন ও না তার মানে তিনি ভয় এবং নির্ভয় এর মাঝামাঝি আছেন ইতোমধ্যে আমি প্রচুর মজা পেয়েছি আরও পাওয়ার ইচ্ছে আছে। লোকটি ঘুমিয়ে পড়েছে বয়স্ক মানুষ তার উপরে এই শরীর নিয়ে এতদূর দৌড়ানি ঠিক হয় নি। . রাত ২ টা . এখন একটু রাত হয়েছে রাস্তায় আলদা একটা মজা আছে মজা পেতে হলে অবশ্য মন থেকে প্রস্তুত থাকা লাগে। আমি প্রস্তুত গত একবছর ধরে প্রস্তুত আছি। দূরে ওয়া ওয়া ওয়া আওয়াজ হচ্ছে এটা এম্বুলেন্স এর আওয়াজ পুলিশের গাড়ির আওয়াজ ও হতে পারে তবে শিউর না। পুলিশ ওয়া ওয়া করে আসে যাতে চোর ডাকাত পালানোর সুযোগ পায়। চোর ডাকাত সব ধরে ফেললে আর দেশের পুলিশের কাজ কমে আর তাই তারা সতর্ক করে ওয়া ওয়া আওয়াজ দিয়ে। আর ডাকাতরা তো এত বোকা নয়যে ওয়া ওয়া করে আসলে তারা ধরা খাবে। পুলিশ সবসময় সবাইকে ভয় দেখায় কিন্ত পুলিশকে কেউ ভয় দেখায়না কারণ কিছু করলেই থানায় চালান করে দিবে। পুলিশকে ভয় দেখালে কেমন হয়! নিতার বাবা ও পুলিশ ছিলো। পুরো একটা ডামের মতো আমি অবশ্য ডামই ডাকতাম। অন্য নামেও ডাকা যায় কিন্ত আমি ডাম ডাকতাম এজন্য অবশ্য কয়েকবার মাইর খাইতে হইছিল এখন আর খাওয়া লাগে না। এত রাতেও কিছুকিছু মানুষ দোকান খোলা রাখে চা বেচে একটা বাতি নিয়ে এদের চা খেতে অনেক মজা আগে খেতাম এখন খাইনা এখন খাওয়া লাগে না। পুলিশ এর ওয়া ওয়া করা গাড়িটি থেমে আছে আর পুলিশ গুলো চা খাচ্ছে মনে হয় চায়ের দাম দিবেনা আবার দিতেও পারে। তবে দেয়া উচিৎ। পুলিশগুলো মনে হয় নতুন দেখে চিনাচিনা আগের টাকলা বাবুটা বোধহয় ট্রান্সফার হয়ে গেছে অথবা চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। নতুন পুলিশ নতুন মজা।পুলিশের সাথে কথা বলতে গেলাম পকেটে হাত চেহারা অগ্নিমূর্তি . --স্যার মোবাইলটা দেন কথা বলবো (আমি) ---এই আপনি কেডায়? --আমি খুব ভয়ঙ্কর আপনাদের পিছনের গাড়িতে বোম ফিট করা আছে ---কি বলেন এসব! কে বোম ফিট করেছে? এই একে এরেস্ট করো গাড়িতে উঠাও --বোম আমার শরীরেও ফীট করা চুইস চাপ দিব? . আহম্মক গুলা ভয় পাইছে বোধহয় বিশ্বাস ও করে ফেলেছে অথবা করেনি। পুলিশ নিজের নিরাপত্তা দিতে পারেনা মানুষের কি দিবে! এতক্ষণে পুলিশ তিনজনই জায়গা ত্যাগ করেছে দোকানদার কেও দেখা যাচ্ছে না। কেউ ভয় পেলে মজা লাগে আর তা যদি আমার জন্য হয় তাহলে তো মজার শেষ নেই। . শেষরাত . এখন পথিক আমি আর সাথে রাস্তার সোডিয়াম বাতিগুলো। দূরে কিছু মানুষ কারা তারা হয়তো ডাকাত হয়তো ভালোমানুষ। না ভালোমানুষ নয় এত রাতে ভালোমানুষ থাকেনা। পুলিশের গাড়ির ওয়া ওয়া আওয়াজ টা ভেসে আসছে দূর থেকে লোকগুলো ভাগছে আমি দেখছি। পুলিশ গুলো হয়তো নতুন ফোর্স নিয়ে এসেছে। . সকাল হয়ে আসছে এতসব কাজের মাঝেও নিতার সৃতি যেন ভুলা যাচ্ছে না হয়তো যাচ্ছে তবে তাকে খুব মনে পড়ছে হয়তো সে সুখী নয়তো সে দূঃখি। কিছুক্ষণ পর ভোরের সেই সূর্য উঠবে আর রাতের এসব দৃশ্য নিমেষেই হারিয়ে যাবে হারিয়ে যাবে প্রতিদিনের মতো। আমিও ফিরে যাচ্ছি আমার আগের জায়গায় যেখানে গত একবছর ধরে আছি। আমার কবরটি দেখা যাচ্ছে গলায় ফাঁস দেয়ার দাগটিও এখনো রয়ে গেছে হয়তো নেই। এই একবছর ধরে আমি মৃত তবুও ঘুরে দেখি এই শহর এখনো দেখার আছে অনেক কিছু। আচ্ছা নিতা কি আমায় ভুলে গেছে??


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৫৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ একটি মুর্দার আত্মকাহিনী

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now