বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ঘড়িতে সময় রাত ১০টা আমি নিলয় রাতের খাবার খেয়ে রুমে এসে ল্যাপটপে অফিসের গূরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করছিলাম।বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে।শ্রাবণ মাস সারাদিন অবিরাম ধারায় বৃষ্টি বয়ে চলছে।বৃষ্টির যেন থামার লক্ষণ নেই।তো এর মধ্যে ঘরের কিছু কাজ শেষ করে স্নেহা রুমে আসলো।
রুমে আসার পর......
স্নেহা:-এই তুমি এত রাতে ল্যাপটোপ নিয়ে কি করছো নিলয়?
আমি:-অফিসের কিছু কাজ করছিলাম।
স্নেহা:-সারাদিন তো অফিসেই থাকো।তাই বাসায় এসেও অফিসের কাজ করা লাগবে।
আমি:-একটু গূরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল তাই এখন করছি।
স্নেহা:-বাসাতে আমি ছাড়া আর অন্য কিছু তোমার কাছে গূরুত্বপূর্ণ হতে পারে না।এখন শুধু আমাকে সময় দিবে।
এই বলে স্নেহা আমার গায়ে চিমটি কাটতে লাগলো।বিরক্ত করতে লাগলো।আমি অফিসের কাজ করছি তাই স্নেহার এগুলা দুষ্টামি আমার কাছে বিরক্ত লাগছিল।মানা করছিলাম তাও শুনছে না আমার কথা।তো তারপর অনেকক্ষণ স্নেহার দূষ্টামি সহ্য করে আমি এবার অনেক রেগে গেলাম।
আমি:-এসব কি হচ্ছে স্নেহা।দেখছো তো অফিসের গূরুত্বপূর্ণ কাজ করছি।আর তুমি আমায় তখন থেকে বিরক্ত করেই যাচ্ছো শান্তিতে কি কাজ ও করতে দিবে না।
স্নেহা:-সরি।ভুল হয়ে গেছে আমার মাফ করে দিও।আর বিরক্ত করবো না তোমায়।
এই কথা বলে কান্না কান্না করতে করতে পাশের রুমে চলে গেলো স্নেহা।স্নেহা চলে যাওয়ার পর আমার অনেক খারাপ লাগলো।কাজের প্রতিও আর মনোযোগ পাচ্ছি না।স্নেহা কে কখনো বকা দেই নি আমি আর আজ কি না আমি বকা দিলাম স্নেহাকে।নিজের প্রতি নিজেরই রাগ হচ্ছে আমার এখন।স্নেহার ই বা দোষ কি।সারাদিন আমি অফিস করে রাতে বাসায় আসি স্নেহা সারাদিন একা বাসায় থাকে বাড়ির কাজ করে। তাই রাতের সময়টুকু সে স্বামির সাথে সময় কাটাতে চায় ভালোবাসা পেতে চায় আর আমি কি না স্নেহাকে ধমক দিলাম।স্নেহা খুব কষ্ট পেয়েছে আর অভিমান করেছে যাই স্নেহার রাগ দেখি ভাঙ্গাতে পারি কি না।তারপর পাশের রুমে গিয়ে দেখি স্নেহা বিছানায় শুয়ে শুয়ে কান্না করছে।
আমাক দেখা মাত্রই স্নেহা রেগে গেলো আর বললো
স্নেহা:-এই ঘরে কেনো এসেছো যাও অফিসের কাজ করো অফিসই তো তোমার সব আমি তো কেউ না।
আমি:-মাফ করে দাও স্নেহা।আমার ভূল হয়ে গেছে আর কখনো তোমায় বকা দিবো না।
স্নেহা:-চুপ কর তুমি।বাসা থেকে কত দূরে অচেনা এক শহরে বাসা ভাড়া করে থাকি আমরা।তুমি সারাদিন অফিসে থাকো আর আমাকে বাসায় একা থাকতে হয়।আমার একা থাকতে কতটা কষ্ট হয় তাহ কি তুমি বোঝো।তোমাকে রাতে একটু কাছে পাই আর তখনও তুমি অফিসের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকো।যাও অফিসের কাজ করো তুমি।
কথাগুলো বলার সময় অঝোড় ধারায় চোঁখ দিয়ে পানি পড়ে যাচ্ছে স্নেহার।বাইরে শ্রাবণের বৃষ্টি আর আমার সামনে যেন স্নেহার চোখ দিয়ে চোঁখের কান্নার বৃষ্টি ঝড়ছে।যা দেখে আমার খুব খারাপ লাগছে।
আমি:-স্নেহা ভূল হয়ে গেছে তো বলছি।তোমার দুষ্টামি গুলো আমার কাছে বিরক্ত লাগছিল তাই ওসব রাগের মাথায় বলে ফেলছি।প্রমিজ করছি আজ থেকে আর কখনো বকা দিবো না তোমায়।আর তোমায় অনেক সময় দেয়ার চেষ্টা করবো।
এই দেখো কান ধরছি এবার তো ক্ষমা করো।
স্নেহা আমার কথা শুনে অন্যদিকে মুখ ঘুরালো।এখনও আমায় ক্ষমা করে নি।মেয়েটার বড্ড অভিমান।
আমি:-মাফ করবে না আমায় বুজি।আচ্ছা ঠিক আছে আমিও চলে যাচ্ছি যেখানে দুই চোঁখ যায় চলে যাবো।
এই কথা বলে যেমনি রুম থেকে চলে যেতে লেগেছি অমনি স্নেহা আমায় জড়িয়ে ধরলো।
স্নেহা:- আমায় ছেড়ে কোথাই যাচ্ছো।তুমি চলে গেলে আমার কি হবে।এসব কথা কোনোদিন বলবে না।জানো না আমি তোমায় কতটা ভালোবাসি।
আমিও এবার স্নেহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম।
আমি:-জানিতো আমার মিষ্টি বউটা আমায় কত ভালোবাসে।আমি তোমায় ছেড়ে কোথাও যাবো না।আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি স্নেহা।
তারপর দুজন দুজনাকে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকলাম।তো এবার আমি নিরবতা ভেঙ্গে বললাম.......
আমি:-স্নেহা যাও দুই কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে আসো।আজ দুজন বেলকুনিতে বসে কফি খাবো আর বৃষ্টি দেখবো।
স্নেহা:-আচ্ছা ঠিক আছে তুমি বসো আমি কফি বানিয়ে আনছি।
এই বলে স্নেহা কফি বানাতে চলে গেল।আমিও ঘরে বসে থাকলাম।কিছুক্ষণ পরে স্নেহা দুই কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে এলো।তারপর আমি আর স্নেহা বেলকুনিতে চলে গেলাম।বেলকুনিতে একটা দোলনা আছে দোলনায় দুজন বসে কফি খেতে লাগলাম আর বৃষ্টি দেখতে লাগলাম তার মাঝে মনের মধ্যে জমে থাকা সকল কথা আমরা একে অপরকে বলতে লাগলাম।
ঘুটঘুট অন্ধকার,শ্রাবণের অবিরাম ধারায় বৃষ্টি,হালকা ঠান্ডা হাওয়া তার মাঝে বেলকুনিতে বসে আছে নিলয় আর স্নেহা।একে অপরের হাতটা শক্ত করে ধরে বৃষ্টি পড়ার দিকে তাকিয়ে আছে তারা দুজন।সবকিছু যেন আজ থেমে গেছে তাদের কাছে।তারা যেন হারিয়ে গেছে তাদের দুনিয়ায় যেখানে শুধু আছে তার দুজন।তাইতো থাকুক তারা তাদের মতো আর ভালোবাসা দিয়ে গুছিয়ে নিক তাদের সুন্দর একটা জীবন।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now