বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
পারিবারিক আলোচনার মাধ্যমে আমার সাথে রাজের বিয়েটা হয়েছিল। রাজ দেখতে যেমন হ্যান্ডসাম, তেমনি ব্যাক্তিত্বও আকর্ষণীয়। তার মধ্যে অদ্ভুত একটি ব্যাপার ছিল। সে এমনভাবে মেয়েলি কন্ঠে কথা বলতে পারতো যে দূর থেকে শুনলে অথবা ফোনে কথা বললে যে কেউ বোকা হয়ে যেত। রাজের লেখালেখির হাত খুবই ভালো। প্রায়ই বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিনে তার লেখা ছাপা হতো। লেখার সংে থাকতো মোবাইল নাম্বার। যার ফলে লেখা পড়ে পাঠক-পাঠিকারা ফোনে বিভিন্ন প্রশংসাসূচক কথা, লেখার ব্যাপারে আলোচনা করতো। যেই ফোন করতো সবার সাথেই সে একটা সম্পর্ক স্থাপন করে ফেলতো। পুরুষ কলার হলে মেয়ে কন্ঠে, আর মেয়ে হলে পুরুষ কন্ঠে কথা বলতো। আর লেখার ক্ষেত্রে এমন নাম ব্যবহার করতো যে, কেউ বুঝতে পারতো না ও ছেলে না মেয়ে। বোকা হত সহজেই।
প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম এটা জাস্ট ফান। কিন্তু পরে খেয়াল করলাম সম্পর্কগুলো পরবর্তীতে প্রেমে রুপান্তরিত হচ্ছে। তাকে জিজ্ঞেস করলে বলতো, ফোনে তো শুধু কথা বলি আর তো কিছু নয়। তবুও মনটা খচখচ করতো। বিবাহিত সে, স্ত্রী থাকতে অন্য মেয়েদের সাথে এতো কথা বলবে কেন? তারপর ধীরে ধীরে কানে আসতে লাগলো, তার অফিসের সহকর্মীদের সংে তার প্রেমের কল্পকথা। আত্নীয়-স্বজনদের মধ্যে বহু মেয়ের সাথেও সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া বাইরের অন্যান্য মেয়ে, মহিলারা তো ছিলই।
তার এই ধরণের প্রতিভা দেখে আমার দিশেহারা অবস্থা। অথচ বিয়ের বয়স তখন সবেমাত্র তিন কি চার মাস। লজ্জায় আর মান-সন্মানের ভয়ে কাউকে কিছু বলতেও পারছিলাম না। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত তার সাথে তুমুল ঝগড়া হতো। কিন্তু তারপরেও সে তার প্রেমের গাড়ী চালিয়েই যাচ্ছিল। একদিন তার গোপন ড্রয়ার থেকে কলিগের সাথে উঠানো কিছু ছবি পেলাম। মহিলার সাথে আমার পরিচয় আগেই হয়েছে। তাদের এই কীর্তির কথা জেনে মাথায় রক্ত উঠে গেল।
সেদিন বাসায় আসার পরেই তার বীর বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। দুজনে মারামারি করে আধমরা হলাম শুধু কিন্তু ফলাফল জিরো। অন্য মেয়েদের নিয়ে তার কীর্তিকলাপ আর সহ্যই হচ্ছিলনা। এক্ষেত্রে তার যুক্তি ছিল, আসলে ভালোবাসি শুধুমাত্র তোমাকেই আর বাকি সবটাই মজা। এটা ঠিক যে সে আমাকে প্রচন্ড ভালোবাসত কিন্তু কোনো স্ত্রীই তার স্বামীর পরকীয়া মেনে নিতে পারবে না। স্কুল-কলেজ লাইফে আমিও প্রচুর প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছি কিন্তু বিয়ের পর স্বামীকে মন প্রাণ উজার করে ভালোবাসব বলে কারো ডাকে সাড়া দেইনি। কিন্তু আমার কপালটাই খারাপ। শুধু ভাবতাম তাকে কিভাবে জব্দ করা যায়।
ভাবতে ভাবতে একটা আইডিয়া এলো। জেদ চেপে গেল। বিয়ের আগে প্রেম করিনি বটে, এখন তো করতেই পারি। পাশের ফ্ল্যাটের ইউনিভার্সিটি পড়া ছেলেটা আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতো। প্রথমে তাকে দিয়ে শুরু করলাম। তার সাথে একদিন সিড়িতে বাসায় যাওনা কেন, হেনতেন নানান মিষ্টি কথা বলে তার মাথা ঘুরিতে দিলাম।
মোটে তো একজন হলো। কিন্তু আমার তো রাজের যতগুলি প্রেমিকা তার দ্বিগুণ প্রেমিক চাই। তাই বড় মামাকে বলে কয়ে একটি মোবাইল কোম্পানিতে চাকরী নিলাম। অত্যন্ত সুকৌশলে বিভিন্ন অফিসারদের সংে সম্পর্ক পাতিয়ে ফেললাম।
রাজও এই ব্যাপারে বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু সে নিজেই যেহেতু পুরনো খেলোয়াড় তাই কিছুই বলতে পারছিল না। তবুও পুরুষমানুষ তো শেষমেশ আর সহ্য করতে না পেরে একদিন জিজ্ঞেস করেই ফেললো, "আচ্ছা বলতো কী ব্যাপার, তোমার সংে অনেকের সম্পর্ক আছে নাকি?" ভেবেছিল শুনে ভয় পেয়ে যাবো। কিন্তু আমি উল্টো জবাব দিলাম, তুমি যা কিছু শুনেছ, যা কিছু জেনেছো একশ ভাগ সত্যি, এর মধ্যে কোনো ভুল নেই। আমার কথা শুনে সে কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে রইল।
পরক্ষনে জিনিসপত্র ভাংচুর শুরু করলো। হয়ত ভেবেছিল আমি তাকে বাধা দেব, কিন্তু আমি সেটা না করে তুমুল উৎসাহে শোকেস থেকে খুজে খুজে বেশী দামি জিনিস বের করে ভাংতে লাগলাম। সে ভেবেছিল তার ভাংচুর দেখে আমি ভয় পাবো। কিন্তু আমি যে তার চেয়েও বেশী ভাংচুর শুরু করব ঘুনাক্ষরেও তার মাথায় আসেনি। সে তার ভাংচুর করা বাদ দিয়ে হতভম্ব হয়ে আমার কাজ দেখতে লাগলো।
বেচারা অধিক শোকে পাথর হয়ে সেই রাতে না ঘুমিয়ে কাটিয়েছিল।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now