বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ডাইনি-০১

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X ডাইনি জোনার: হরর,থ্রিলার আজ আমার নতুন কটেজ কিনলাম। চাকরি পেয়ে যেন কপালটাই খুলে গেছে।পাঁচমাসের টাকা জমিয়ে কিনে ফেল্লাম বিশাল কটেজটা।অনেকটা পানির দামে কিনেছি মাত্র ৭০হাজার ইউরো তে। এটা আগে একটা গির্জা ছিল।পুরাতন অনেক বাড়িতেই গোপন ভূগর্ভস্থ কুঠরি থাকে।এ কটেজেও আছে। এক সারিতে পাঁচটা ঘর, সবগুলো ধাতব শিক দিয়ে ঘেরা।কেমন যেন একটা জেল খানা, জেল খানা ভাব।তার উপরের তলায় বিশাল লাইব্রেরি।লাইব্রেরির পুরাতন বই ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেলাম একটা অনেক পুরাতন বাইবেল।মনে হল বাইবেলটা যেন আমারর হাতকে টেনে তার দিকে নিয়ে গেল।পাতা উল্টাতেই একটা জিনিস দেখলাম। এক পৃষ্ঠায় ছাপা অপর পৃষ্ঠায়য় কাঠকয়লা দিয়ে মেয়ালী হাতের লেখা।ধর্মকর্মে আমর কোন আগ্রহ নেই।তাই মেয়েটার লেখা পড়তে লাগলাম। লেখার উপর শিরনাম ছিল ডাইনি। আমি এক হতভাগী।নাম এলেস ভন্টেজেইন। আমাকে ওরা ডাকিনীবিদ্যার চর্চার জন্য এখানে ধরে এনেছে।আমার বাবার একটা সারাইখানা ছিল, মা অনেক আগেই মারা গেছে।গত সাপ্তাহে বাবাও মারা যান,তার মৃত্যুতে আমি সারাইখানার মালিক হই।সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসছিল।কিন্তু দুইদিন আগের এক ঝড় আমার জীবনের সবকিছু বদলে দেয়।আমার সারাইখানায় এক লোক মারা যায়। আমার ধারনা আতিরিক্ত মদ্যপানের কারনেই লোকটা মারা যায়। কিন্তু আমার সারাইখানাটা দখল করার জন্য কারা যেন গুজব ছড়িয়ে দেয় আমি নাকি ডাকিনী,ডাকিনীবিদ্যার প্রোয়গ করে আমি আমার বাবা আর ঐ লোকটা কে খুন করেছি।তারপর গির্জা থেকে প্রিষ্টের আদেশে আমাকে বন্দীকরে এখানে নিয়ে আসা হলো। আমার পরিবারের একমাত্র সম্পত্তি সারাইখানাটাও দখল করে নেওয়া হলো।ডাকিনীবিদ্যার কিছুই জানিনা আমি।তবু আমাকে নির্মম ভাবে চাবুক মারা হলো। কতবার আমি তাদের বল্লাম আমি এলেস কোন ডাকিনী নই।তোমরা সবাই আমাকে চেন,আমি প্রতি রবিবার গির্জায় আসি।কেউ আমার কথা শুনলো না।তাদের আঘাতে আঘাতে একসময় সংগা হারালাম।যখন জেগে ওঠলাম তখন নিজেকে এ খানে আবিস্কার করলাম। জানি না আরো কত অত্যাচার করা হবে আমার উপর কিন্তু পন করেছি শত অত্যাচারেও ডাকিনীর অপবাদ স্বিকার করবো না।মশালের নিচ থেকে একটুকরা কয়লা নিয়ে, পবিত্র বাইবেলে ঈশ্বেরের নামে শপথ করে লিখছি আমি ডাকিনী নই। প্রথম পাতা পরার পর মনের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো।আমি জানতাম আগেকার যুগে মেয়েদের ডাইনী অপবাদ দিয়ে পুড়িয়ে মারা হত।কিন্তু কখনো ভাবিনি এরকম কোন ভিক্টিমের সাথে পরিচিত হব।বুঝতে পারলাম আমার কর্টেজটাই সে দিনের গির্জা ছিল।আর গোপন কুঠরির কোন একটিতে এলেসকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। পরের পৃষ্ঠা উল্টাতেই এলেসের লেখা পেলাম "আজ দু দিন হলো এখানে আছি।এর মাঝে তারা আমাকে এক ফোঁটা পানিও খেতে দেয় নি।খানিক আগে আবার সংগা হারালাম, স্বপ্নে মাকে দেখলাম।আমার জন্য রুটি আর গোশত নিয়ে এসেছে।প্রচন্ড ক্ষুধা আর তৃষ্ণায় আমার সুন্দর স্বপ্নটাও ভেঙ্গে গেল। হে ঈশ্বর কোন অপরাধের শাস্তি দিচ্ছ আমায়?? জেগে ওঠে দেখি একটা ইঁদুর চলে গেল আমার পায়ের উপর দিয়ে।ওর গলায় ধাঁত ফুটিয়ে দিলাম। তিন চার দিন অনহারে থাকার পর ইঁদুরের রক্তটা যেন অমৃতসম লাগছিল। আমাকে দেখে ওরা চিৎকার করে বলে ওঠলো আমি নাকি ইঁদুর খেয়ে এটা প্রমান করেছি আমি ডাইনি! আরো কয়েকজন পাহারাদার এসেও যোগ দিল। আমি তাদের বল্লাম আমি ক্ষুধার্ত হয়েই এটা খেয়েছি।ওরা শুনল না, একজন শিকের ফাঁক দিয়ে হাত গলিয়ে আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দিল। আমার সেলে ঢুকে ইঁদুরটাকে নিয়ে গেল।প্রিস্টকে আমার ডাকিনি হওয়ার প্রমান দেখাবেন বলে।কিন্তু ঈশ্বর তো জানেন আমি ডাকিনী নই আমি তার একনিষ্ঠ সেবক।দ্বিতীয় পৃষ্ঠা পরার পর আমি ডুকরে কেঁদে ওঠলাম। একটি মেয়ে হয়ে অপর একটি মেয়ের উপর অমানুষিক অত্যাচারের কথা পড়ে নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না। ফোঁপাতে ফোঁপাতে মায়ের কাছে ফোন দিলাম। তিনি আমার কন্না জরানো কন্ঠ শুনে আতঁকে ওঠলেন।আমি তাকে এলেসের বিষয় বল্লাম না। শুধু বল্লাম ----আম্মু তোমাকে খুব মিস করছি ---পাগলি মেয়ে, চিন্তা করিস না।আগামি উইকেন্ডে আমি তোর নতুন বাসায় বেড়াতে আসবো। আম্মুর সাথে কথা বলেই মনটা ভাল হয়ে গেল। সেদিন আর এলেসের ডায়রি পরি নি,যদি মনটা আবারও খারাপ হয়ে যায়।একটা কমেডি মুভি দেখে রাতের খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম। কাল আবার অফিসে যেতে হবে।রাতে একটা অদ্ভুদ স্বপ্ন দেখলাম।আমার কর্টেজের পিছনে কুয়ার কাছে মাঝারি আকারের ক্যাম্প ফায়ার জ্বলছে, জ্বলতে জ্বলতে তা থেকে একটা ভয়ংকর নারী মূর্তি বের হয়ে আসলো,আর কি কর্কশ চিৎকার। রাতটা অনেক অতংক নিয়ে কাটালাম। বিকালে একেবারে ক্লান্ত হয়ে অফিস থেকে ফিরলাম।আমার মাসিক শুরু হয়ে ছিল তাই আরো বেশী ক্লান্ত লাগছিল।মাঝরাতে একটা করুন কন্ঠের কান্না শুনে ঘুমটাই নষ্ট হয়ে গেল।কান্নার শব্দটা লাইব্রেরি থেকেই আসছে।সাবধানে রুমের আলো না জ্বালিয়ে ডেজার্ট ঈগল পিস্তলটা সাথে নিলাম। ভাবলাম হয়তোবা কোন নেকড়ে ঢুকেছে। তাই ঝুঁকি নিতে চাই না।লাইব্রেরিতে ডুকতেই সবকিছু কেমন জানি শান্ত হয়ে গেল। অবাক হলাম গতকালের বাইবেলটা যাতে এলেসের কথা লেখা ছিল, তা ডেস্কে খোলা পরে আছে।কাছে গিয়ে আরো বেশী অবাক হলাম, যে দুই পাতা আমি পড়েছিলাম তার পরবর্তী পাতা বেরিয়ে আছে, যেন আমার পরার অপেক্ষায়।কিন্তু আামর স্পস্ট মনে আছে গতরাতে আমি বাইবেলটাকে নিজ হাতে বুক সেলফে রেখেছিলাম। বিষয়টা আমার কাছে মোটেও স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল না। কিন্তু এ সব অদ্ভুদ ঘটনা আমকে এলেস সম্পর্কে আরো আগ্রহী করে তুলছে। (চলবে....)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৬৬ জন


এ জাতীয় গল্প

→ ডাইনি-০১

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now