বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ব্রেক-আপের পরের গল্প

"জীবনের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মোঃ ছহিনুর রহমান বিন মনির (০ পয়েন্ট)

X . . নীলুর সাথে ব্রেকআপ হয়েছে ১ বছর হলো! যাওয়ার সময় শেষ কথা টা বলেছিলো, "নীল ভালো থাকবে না জানি তবুও ভালো থাকার চেষ্টা করো! আর পারলে রিলেশনে জড়িও না! একা থাকার চেষ্টা করিও! জানি আমার মত কাউকে পাবে না তাই..... নীল শোন চলে যাচ্ছি! হয় তো আর দেখা হবে না! একটা কথা রাখবে? আগের জীবনে আবার ফিরে যেও না প্লিজ! নীল শোন আমি তো চলেই যাচ্ছি একটা গান শুনাবা? আর তো গান শুনতে পারবো না প্লিজ একটা গান শুনাও আর কখনো বলবো না শুনাতে!" আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম! মেয়েটা অনেক কান্না করছে! গাল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছিলো! থাকতেই পারবে না তবুও কেন ব্রেকআপ করছে? সেইদিন উওরটা খুজে পাই নি! কোন প্রশ্নও করি নি সেই দিন! নিরবেই ওর কথা শুনে গেছি! কোন কথা বলছি না দেখে নীলু বলেছিলো, "আচ্ছা নীল থাকো " বলেই হাটা শুরু করছিলো! মাথা নিচু করেই গানটা ধরেছিলাম, "আদরের পিন্জিরার পোষা পাখি রে আমারে কান্দাইয়া পাও কি সুখ!" আমার গান শুনে নীলু থেমে গেছিলো! আস্তে আস্তে আমার পাশে এসে বসেছিলো! গান শেষ হতেই আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেদেছিলো! তখনও আমি নিরব ছিলাম! আমি নিরব তবে আমার চোখ কথা বলছিলো, কান্নার ছলে! নীলু চলে গেলো! বসে ছিলাম অনেকক্ষন! ওর চলে যাওয়া দেখতে পারি নি! আবার দেখা হয়েছিলো ২ মাস পর। সেইদিনও কিছু বলি নি শুধু তাকিয়ে ছিলাম ওর দিকে! নীলু কিছু বলতে চেয়েও বলে নি সেই দিন! আবার দেখা হলো আজকে বিকালে। মামার টংয়ের দোকান থেকে সিগারেটটা ধরাতেই দেখি নীলু সামনে! ওকে দেখা মাএই সিগারেটটা ফেলে দিলাম! আমার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলো! অবশেষে পথ চলা শুরু করলো। আমি আজকেও ওর চলে যাওয়া দেখতে পারি নি। তবে একটা জিনিস দেখেছি ওর চোখের পানি! নীলু হাজার চেষ্টা করছিলো ওর চোখের পানিটা লুকাতে কিন্তু পারে নি আমার চোখে ঠিকই ধরা পড়েছে! না আর রিলেশনে জড়াই নি! নীলু বলেছো ওর মত কাউকে পাবাে না ঠিকই ওর মত কাউকে পাবো না! কারন মানুষ নিজের গুনে নিজে গুনানিত্ব! কারও মত কেউ হয় না! নীলুর মতও কেউ হবে না! হয় তো ওর থেকে আরও ভালো হতে পারতো তবে ওর মত না! একদম ছোট বাচ্চা ছিলো! বয়সের দিক থেকে না মনের দিক থেকে! বড্ড ভালোবাসতো জানি এখনো বাসে। ওর বাসার পাশের মেসটাই তেই থাকতাম! বাবা মা গ্রামে! পারিবারিক অবস্থা সচ্ছল থাকায় একমাএ ছেলেকে শহুরের কলেজে পড়ানোর উদ্দেশ্য পাঠানো হয়েছিলো সেই ৩ বছর আগে। মেছের ছাদে আসতাম বিকালে কাধে শখের গিটারটা। ঠোটে সিগারেট থাকতো সাথে গিটারের সুর। পাশের ছাদ থেকে একটা মেয়ে হঠাৎ করেই বলেছিলো, "আচ্ছা সিগারেটটা না খেলে কি এমন ক্ষতি? " মেয়ে কণ্ঠে আওয়াজটা পেয়েই পাশের ছাদে তাকাইছিলাম! দেখলাম একটা মেয়ে দাড়িয়ে। কোন কথা বলি নি সেই দিন চুপ চুপ সিগারেটটা শেষ করে নিচে নেমে আসলাম। পরের দুই দিন ছাদে যাওয়া হলো না! রাতে প্রচন্ড জ্বর আসলো! দুই দিন পর ঠিক সময়ে ছাদে গেলাম আজকে আর কাধে গিটার নেই! তবে ঠোটে সিগারেটটা আছে। "এই যে গিটারিষ্ট আজকে আবার গিটার নেই কেন? আর ঠোটে কি ছাইপাস? " তাকিয়ে দেখলাম সেইদিনের সেই মেয়েটা। চুপ টি করে চলে আসলাম রুমে। ফেবুতে লগ ইন করে একটা গ্রুপের পোষ্ট চোখ আটকে গেলো। "আমার গিটারিস্ট দা তবে সিগারিষ্টও বলা যায়। " নিচে পিক দেওয়া পিকটা আমারই তবে মুখ দেখা যাচ্ছে না পিছন থেকে তোলা কাধে গিটার! আইডিটার নাম কেমন জানি অদ্ভুদ! আইডিটা চেক করতেই দেখলাম কোন ঠিকানা নেই শুধু মাএ একটা পোষ্ট "সেইটাও প্রো-পিক! একটা গিটারের পিক! নিক নেম টা দেখে হাসলাম "গিটারিস্ট পাগলি " মনে মনে রাগ হলো! আমার পিক কেন দিতে হলো? আজাইরা মেয়ে। পরের দিন জগড়া করলাম অনেক! মেয়েটা কথা বললো না! দুর থেকে বুঝলাম চোখে পানি! চলে আসলাম নিচে! ছাদে যাওয়ার সময়টি বদল করলাম বিকালের বদলে রাতে! মাঝে মাঝে বিকালে পাশের ছাদে উকি দিতাম! দেখতাম মেয়েটা দাড়িয়ে আছে আর মাঝে মাঝেই আমাদের মেসের ছাদে উকি দিচ্ছে। রাতের খোলা আকাশে সিগারেটটা ধরিয়ে আপন মনে টানছি! "আমি কি আপনাকে বিরক্ত করি? আপনি চাইলে আর আপনার গিটারের সুর শুনতে আসবো না " কথাটা শুনেই পাশের ছাদে তাকালাম! দেখলাম সেই মেয়েটা। কোন কথা না বলেই রুমে আসলাম গিটারটা নিয়ে ছাদে গেলাম! দেখলাম মেয়েটা চলে যাচ্ছে! সাথে সাথেউ গিটারের তারে অাঘাত করলাম! মেয়েটা পিছনে তাকালো। আমি পিছনে তাকিয়ে দেখলাম মেয়েটা ছাদের এক কোনে বসে পড়লো আমি যেন না দেখি তাই! কিন্তু চোখ ফাকি দিতে পারলো না! গিটারের বাজ থামালাম! "আচ্ছা একটু শুনালে কি হয়? " কণ্ঠটা কাপা কাপা! হয়ে গেলো প্রেম! ছাড়তে হলো সিগারেট নিজের অনিচ্ছা সত্বেও! মাঝে মাঝে লুকিয়ে খেতাম! তারপর বাদ দিয়ে দিলাম! মাঝ রাতে ফোন দিয়ে বলতো "কি করছো? " - ঘুমাই - চোখে পানি দিয়ে আসো! - কেন? - কথা বলবো! চোখে পানি দিয়ে আসতাম ঘুমটা কাটানোর জন্য! মাঝে মাঝে ওর কথা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তাম! - ওই ঘুমাচ্ছো কেন হুমমম ওঠো! লাফ দিয়ে উঠলাম! - এই শোন না ছাদে আসো তো! - এতো রাতে? - হুমমমম আসো না আমি একটা মেয়ে হয়ে বসে আছি আর তুমি আসতে পারবে না? - মানে কি তুমি ছাদে কি করো? - কিছু না মাএ আসলাম তুমি আসবে তাই! - আমি যদি না যাই? - আসবে আমি জানি! কোন কথা না বলেই ফোনটা কেটে দিতাম আর ছাদে গিয়ে দেখতাম নীলু বসে আছে। লাফ দিয়ে ওদেন ছাদে যেতাম প্রতিদিনের মত জড়িয়ে ধরে কান্না করতো আর বলতো "আমাকে ছেড়ে যেও না " আমি ওর কথা শুনে চুপ থাকতাম। একটু পর বুঝতাম আমার চোখেও পানি! ওর অজানাতেই মুছে নিতাম! শেষ কথা গুলো বড্ড বেশিই মনে পড়ে। "রিলেশনে জড়িও না আমার মত কাউকে পাবে না " ব্রেকআপের পর মেসটা ছেড়ে দিলাম! কয়েক বাসা পরের মেসেটা নিলাম! ওকে আর কখনো বাইরে দেখি নি! শুনেছি বিয়ের প্রস্তাব এলেই ফিরিয়ে দেয়! কারন টা অজানা! আজকে দেখা হলো যখন ওর চোখের নিচে কালিটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো! নীলু চলে যাওয়ার পর আবার একটা সিগারেট ধরালাম! আগের নাম্বারটাই রেখেছি অনেক বার বদল করতে চাইছি তার পর মনে হয় হয়তো নীলু কোনদিন ফোন দিবে! কিন্তু দেয় নি! আজকে রাতে একটা মেসেজ এসেছে ওর নাম্বার থেকে, "সিগারেটটা না খেলে হয় না? " কোন রিপ্লে দিই নি! কল এলার্টের মেসেজে দেখলাম ফোন বন্ধ করার পর ২টা কল!! নীলুর নাম্বার থেকেই! সিমটা খুলে বাইরের জানালা দিয়ে ফেলে দিলাম! জানি এতে লাভ হবে না! তবুও অাংশিক লাভ তো হবেই! রাতে ছাদে আবারও সেই আগের মত "কাধে গিটার ঠোটে সিগারেটের নল টা " নীলুর শেষ কথা রাখতে পারি নি! কারন সেটা তার শেষ কথা না! সেইদিনের পর আবারও বলেছিলো " "শেষ একটা কথা রাখবে? " পারি নি ওর কথা রাখতে! আবারও সেই আগের জীবনে....... "কাধে গিটার ঠোটে নিকোটিনে পূর্ণ করা সিগারেট "


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৮৩ জন


এ জাতীয় গল্প

→ ব্রেক-আপের পরের গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now