বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
তোমার কাছে ১০০ টাকা হবে?
মাথা নিচু করে করে এ কথা বললেন বাবা। মুখে লজ্জা পাওয়ার ছাপ ভেসে উঠেছে। টাকা চেয়ে মনে হয় মস্ত বড় অপরাধ করে ফেলেছেন। তাই একটু ইতস্তভাবেই হাজুর মাজুর করে আস্ত করে বললেন " না থাকলে বাদ দাও"।
বাবা এখন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি স্কুল শিক্ষক। রিটায়ার্ড এর যে কটা টাকা পেয়েছিল সেটা দিয়ে আমাদের এই থাকার জায়গাটাকে স্থায়ী করেছেন এবং আমাদের সাংসারিক খরচ পাতি চালিয়েছেন।
ছোট বেলায় যখন ইস্কুলে যেতাম তখন বাবার কাছ থেকে ২ টাকা খুজে নিতাম কারন তখন এক টাকায় চারটে লজেন্স পাওয়া যেত, আজো সেই স্মৃতিপট মনে পড়ে। বাবার কাছে যখন সব সময় টাকা থাকত না তখন তিনি ধার-কর্জা করে হলেও আমাদের চাহিদা মিটাতেন।
আজ অনেক বড় হয়েছি, চাকরি করছি। এখনো বিয়ে করি নি। তবে সাংসারিক দায়িত্ব কিছুটা নিজের উপর করে নিয়েছি। মাস শেষে যা পাই তা নিজের খরচার টাকা রেখে বাকিটা সংসারের কাজে অনায়াসেই হয়ে যায়।
-- তোমার কাছে ১০০ টাকা হবে?
-- ১০০ টাকা কেন বাবা?( বাবার দিকে তাকিয়ে কেন যেন মন খারাপ হয়ে গেল নিজের। আজ বাবার টাকা চেয়ে কেন যেন মনের মাঝে একটু কষ্টের পিঞ্জরটা নড়ে উঠলো। মনে পড়ে গেল ছোট বেলায় বাবার কাছে টাকা নেয়ার মুহুর্ত গুলো।)
অফিসে যাবো এমন সময় বাবা আমার কাছে টাকা চাইলেন। বৃদ্ধবাবার এ লজ্জা পাওয়া দেখে মানি ব্যাগ থেকে সব টাকা দিয়ে দিলাম, শুধু নিজের গাড়ি ভাড়া ৭০ টাকা রেখে বাকিটা বাবাকে দিয়ে এলাম।
-- না না বাবা আমার এত লাগবে না। আমি বুড়ো মানুষ শুধু পারার দোকানে বসে দু এক কাপ চায়ের বিল হলেই চলে যায়। (বাবা)
জোর করে সব টাকা দিয়ে চলে আসলাম অফিসে। বাবার সকালে টাকা চাওয়াটা যেন মন যাচ্ছিলই না।কারন ইনকামের পথে আসা পর্যন্ত বাবা মাস শুরুতে আমাকে হাত খরচের টাকা দিয়ে দিতেন। কারন বড় হয়েছি বলে আমার কিছু খরচাপাতি থাকতেই পারে,কত কিছু ভাবত আমার জন্য বাবা। কিন্তু আজ যখন বাবার এমন ভাবে টাকা চাইতে হলো তখন নিজের কাছেই অপরাধী মনে হলো।
তাই আজ মন স্থির করলাম প্রতি মাসে বাবার হাত খরচটা নিজ হাতে বাবাকে দিবো।
.
বি:দ্র:- পৃথিবীর সব বাবারাই না খেয়ে থাকতে পারে তবে ছেলের হাত ফাঁকা দেখতে পারে না। তাই নিজের স্বাচ্ছন্দ্য, বিলাসিতা কে ত্যাগ করে সন্তানদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করেন।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now