বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

আমার স্বপ্ন

"শিক্ষণীয় গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Arfin Sayed(guest) (০ পয়েন্ট)

X আমার নাম রহিমা। আমার বয়স এখন ২০ বছর। আমার আমার মা একজন শারিরিক প্রতিবন্ধী। মায়ের মুখ থেকে শুনেছিলাম যে আমার বাবা আমার জন্মের আগেই মারা যায়। আমার দিকে চেয়ে আমার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মা আর বিয়ে করে নি। পরিবারে সদস্য বলতে আমি আর মা। আমাদের আত্মীয়দের মধ্যে এমন কেউ ছিল না যে আমাদের ভরণ পোষনের দায়িত্ব নিবে। আমার মা শারিরিক প্রতিবন্ধী হলেও খুড়িয়ে খুড়িয়ে সব কাজ করতে পারতো। আমি যখন একটু একটু বড় হচ্ছিলাম এবং বুঝতে শিখেছিলাম তখন দেখেছি মা এক বড় লোকের বাসাই কাজ করতো। সেখান থেকে যে অর্থ পেতো তা দিয়েই আমি আর মা কোনো রকমে চলে যেতাম।যখন আমার বয়স ৫ বছর তখন মা আমাকে একটা স্কুলে ভর্তি করে দেয়। আর আমি পড়তে থাকি। এভাবে আমাদের মা মেয়ের জীবন বেচিয়ে রাখার জন্য মা জীবন নিয়ে সংগ্রাম করতে থাকে। আমি যখন রাতে পড়তে বসতাম তখন মা আমার পাশে বসে বসে আমার দিকে থাকিয়ে থাকত আর আমার বইগুলো বারবার ধরতো দেখতো। মাঝে মাঝে আমার কাছ থেকে জানতে চাইতো, এইটা কি ওটা কি, তখন আমি আর মা মিলে একসাথে পড়তাম। আমাকে কেমন করে মানুষ করবে, কিভাবে মা মেয়ের মুখে দুমোটু ভাত জোগাড় করবে, এইসব নিয়ে মা সবসময় চিন্তা করতো। মায়ের এই চিন্তা আমার কাছে ভালো লাগতো না, আমি চাইতাম মা সবসময় হাসি খুসি থাকুক। আর মায়ের মুখে হাসি পিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমি নিজের মধ্যে স্বপনের জাল বুনতে থাকি। আমি যখন যখন দশম শ্রেণীতে পড়ি তখন মায়ের মুখে হাসি পুটানো আমার জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল। কারণ মা আর আগের মত কাজ কর্ম করতে পারে না। একদিন কাজ করলে দুদিন কাজ করতে পারতো না। একময় দেখা গেলো মা আর নাড়াছাড়াও করতে পারে না। তখন আমার জীবনে নেমে আসে ভয়ানক অন্ধকার। আমি কি করব কিছু বুঝতে পারছিলাম না। একদিকে আমার পড়াশুনা, অন্যদিকে খাওয়া দাওয়ার খরছ, তার সাথে যোগ হলো মায়ে চিকিৎসার খরছ। এইসব চিন্তা করতে করতে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমিও মানুষের বাসায় কাজ করব। ভাগ্য ভালো থাকায় খুব তাড়াতাড়ি কাজও পেয়ে গেলাম। আমি হয়তো এই সামান্য বয়সে কোনো পুন্নির কাজ করেছি যার প্রতিদান সৃস্টিকর্তা আমাকে দিয়েছেন। আমি এমন এক পরিবারে কাজ পেয়েছি যে পরিবারের মানুষ আমাকে এতটা সাহায্য করেছিল যা আমি কখনো কল্পনাও করতে পারি নি। আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি তাদের পরিবারে গৃহকর্মী হিসেবে আছি। তারা আমাকে আমার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য আমার পাশে দাড়িয়ে ছিল। আমার মায়ের চিকিৎসা খরচ, আমার পড়াশুনার খরচ সবকিছু তারাই বহন করছিল। তারা আমাকে আমার মজুরি প্রতিমাসের শুরুতেই দিয়ে দিত, এমন এমন দেখা গেছে তারা আমাকে আমার ন্যায্য মজুরি থেকেও বেশি দিতো। আমি তাদের কাজকর্ম, আমার পড়াশুনা, মায়ের চিকিৎসা ব্যয় করতে দেখে আমি অনেক অভাক হয়েছিলাম, তার চেয়ে বেশি অভাক হয়েছিলাম আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের চিন্তা করতে দেখে। আমি যাতে ভবিষ্যতে কিছু একটা করতে পারি, যাতে আমার ভবিষ্যত মজবুত হয়, তার জন্য আমার নামে একটা ব্যাংক একাউন্ট খুলে রেখেছে, যেখানে শুধু আমার ভবিষ্যতের সঞ্চয় হবে। এখন আমি অনার্স ১ম বর্ষে পড়ছি। আর আমার মা এখন অনেক সুস্থ। আমার একার পক্ষে কখনোই সম্ভব ছিলো না আমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে। তারা আমার আমার পাশে ছিলো, এবং আছে। এখন আমি তাদের পরিবারের একটা অংশ। তাদের প্রত্যেকটা কাজে আমাকে স্বরণ করে। মাঝে মাঝে আমার অনেক গর্ব হয় যে আমি এমন একটা পরিবারে কাজ পেয়েছি।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৪৭ জন


এ জাতীয় গল্প

→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি(শেষ পর্ব ১৩)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি(পর্ব১২)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি(পর্ব১১)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি(পর্ব১০)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি(পর্ব৯)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি (পর্ব৮)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি(পর্ব৭)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি (পর্ব৬)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি (পর্ব ৪)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি (পর্ব৫)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি (পর্ব৩)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি (পর্ব২)
→ আমার স্বপ্নের গল্পে তুমি(পর্ব১)
→ চাল চোর ও আমার স্বপ্ন
→ স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now