বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

আমার ভ্যালেন্টাইন

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Sayemus Suhan (০ পয়েন্ট)

X দুপুরে অফিস থেকে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । মোবাইলের রিং বাজতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল । ওপাশ থেকে অনিকার কন্ঠস্বর । তুমি ঠিক পাঁচদিন পর বাড়ি আসবে । কথা শেষ না করেই কল কেটে দিল অনিকা । এপাশ থেকে কল করলাম । রিং বাজছে কিন্তু রিসিভ করছেনা । বুঝতে বাকী রইলোনা ষোড়শী বউ আমার জন্য উদগ্রীব হয়ে গেছে । কিন্তু পাঁচদিন পরে কেন ? নিশ্চয় বিশেষ কিছু । অনিকা আমার জীবনে নতুন । দেড় মাস হল আমার জীবনে তার আবির্ভাব । এই প্রথম তার আবদার আমার কাছে । যে কোন মূল্যেই হোক আমাকে তা রক্ষা করতে হবে । সে খুব অভিমানী, আবেগ প্রবন । যেদিন আমি ওকে রেখে ঢাকায় চলে এলাম, সেদিন আমাকে জড়িয়ে ধরে আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিল । আমার বুকে মূখ লুকিয়ে ও কেবলই ক্ষীন স্বরে বলেছিল, তোমাকে ছেড়ে আমি থাকতে পারবোনা । ওর তপ্ত দীর্ঘশ্বাস আমার বুকে আছড়ে পড়েছিল । আমিও বাকরুদ্ধ হয়েছিলাম । নিজের অজান্তেই দু ফোটা অশ্রু ঝরে পড়েছিল আমার চোখ থেকে । ওকে শেষ স্বান্তনা টুকু দিয়েছিলাম এইতো কিছুদিন পর ওখানে বাসা পেলে তোমাকে নিয়ে যাবো । চলে আসার সময় একবার পিছনে ফিরে চেয়েছিলাম । অনিকা দাড়িয়ে আছে শ্বেত পাথরের মূর্তির মত । সকালের সূর্যের আলোয় ওর অশ্রু ভেজা মুখ খানা চিকচিক করতেছে । তারপর চলে এলাম ঢাকায় । বিয়ের পর মাত্র পাঁচদিন ওর সঙ্গ পেয়েছিলাম । চাকরি জীবনের বাধ্য বাধকতায় সবকিছু ছেড়ে চলে আসতে হল কর্মস্থলে । শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনের ফাকে বার বার মনে অনিকার কথা । কিন্তু কর্তব্যের ভেড়াজালে বন্দি আমি । বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পাইনা । শেষে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি । বহু চেষ্টায় কাঠ-খড় পুড়িয়ে দশ দিনের ছুটি পেলাম । এর মধ্যে বাড়ি যাওয়ার দিনটা ঘনিয়ে এল । অনিকার মোবাইলে দিলাম । রিসিভ করার সাথে সাথে তার একটি প্রশ্ন, ছুটি হয়েছে ? আমি উচ্ছসিত । বললাম আজ রাত তিনটা চারটায় তোমায় জাগাবো । ঠিকঠাক এসো বলে কলটা কেটে দিল । রাত সাড়ে দশটার বাস ধরলাম । বাস যেন শামুক গতিতে এগিয়ে চলছে । আর বাসের আগে ছুটে চলছে আমার মন । মহিপাল নেমে যখন বাড়ির কাছাকাছি পৌছালাম তখন ঘড়িতে রাত সাড়ে তিনটা । বাড়ির দিকে চোখ পড়তেই দোতলায় অনিকার ঘরে আলো দেখতে পেলাম । আমি নিশ্চিত ও এখনো ঘুমায়নি । রিক্সা থেকে নেমে বাসায় উঠতেই দেখি অনিকা আমার জন্য দাড়িয়ে আছে দরজায় । আমাকে দেখে একটা মুচকি হাসি দিল সে । সত্যি অতুলনীয় সে হাসি । ড্রেস চেন্জ করে হাত মূখ ধুয়ে বেরিয়ে আসতেই আচল পেতে দিল আমার সামনে । এই প্রথম আমার চোখে চোখে তাকাল ও । মুগ্ধ হয়ে গেলাম আমি । নির্ঘুম রাত যাপন ওর চঞ্চলা দৃষ্টিতে কোন ছায়া ফেলতে পারেনি । মায়াভরা নিশ্পাপ মূখচ্ছবিতে তারুন্য আর যৌবনের প্রাচুর্য ছড়াচ্ছে । দুজনের মূখে কোন কথা নেই । শুধু চেয়ে আছি একজন আরেক জনের দিকে । একসময় নীরবতা কাটিয়ে অনিকা বলল রাত জেগে এসেছ, তুমি ক্লান্ত । এখন বিশ্রাম নাও । -আমি ক্লান্ত নই অনিকা । আমি সতেজ, আমি উদ্দিপ্ত । আমার ভীষন ঘুম পাচ্ছে বলে উঠল অনিকা । কিছুক্ষন প র দেখি ও সত্যি সত্যি ঘুমিয়ে গেছে । ওর সাথে আমিও কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম বুঝতে পারলাম না । ঘুম ভাঙলো সকাল দশটায় । অনিকাকে হাতড়িয়ে খুজে পেলাম না । তাই চোখ বন্ধ করে আবার শুয়ে আছি । হ্ঠাৎ নরম স্পর্শ পেলাম আমার শরীরে । চেয়ে দেখি অনিকা আলতো করে জড়িয়ে ধরে আমার কপালে চুমু খাচ্ছে । ওর শরীরের পরিচিত মিষ্টি গন্ধটা আমাকে আবেশিত করে ফেলেছে ঐ মুহুর্তে । ওর স্পর্শ পেয়ে আমি আবার চোখ বন্ধ করে ফেললাম । সে এবার আমার বন্ধ চোখের দুষ্টুমি বুঝতে পেরে আঙ্গুল দিয়ে চোখ মেলে ধরলো । দেখি দুষ্টু মেয়েটা এবার মিষ্টি মিষ্টি হাসছে । চট করে ওর হাত ধরে বুকে টেনে নিলাম । এ সময় ও লজ্জা পেয়ে গেল । বলল উঠ, চা-নাস্তা রেডি । তাড়াতাড়ি নাস্তা করে নাও । অনেক দিন পর মা, ছোট বোন, অনিকাকে নিয়ে নাস্তা করলাম । নাস্তা সেরে রুমে গিয়ে শার্ট গায়ে দিচ্ছি এমন সময় অনিকা একটু চমকে গিয়ে বলল, কোথায় যাচ্ছ ? আজ তুমি এক মুহুর্তের জন্যও কোথাও যেতে পারবেনা । আজকের দিনটা শুধু আমার । আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি । বিস্মিত হলাম আমি । এমন দিনটির কেন আমার একবার ও মনে হলোনা । এতক্ষনে আমার কাছে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে গেল । ঠিক ঠিক পাঁচ দিনের পরের দিনটিই ১৪ ফেব্রুয়ারি । আর এই বিশেষ দিনটির জ ন্য অনিকার এত্তসব আয়োজন । আমি তখন ভাবছি এমন দিনে তাকে কি উপহার দিবো । ব্যাগ থেকে নীল শাড়িটা বের করে বললাম, আজকের দিনে তোমার জন্য আমার ছোট্ট উপহার । অনিকা তখন দারুন উচ্ছাসে তা লুপে নিয়ে বলল, তুমি বের হও । আমি এখনই এটা পরে আসছি । আমার মনে তখন কিশোর সুলভ চপলতা । পতির সামনে নীল ভূষনা হতে লজ্জা কিসের বলে ওর চোখের দিক তাকালাম । অনিকা তখন আমার দিকে চেয়ে একটা লাজুক হাসি দিল । তার সেই হৃদয় নিংডানো ভূবন ভোলানো হাসিটা আমাকে সম্মোহিত করে দিল । একটু ইতস্তত করে ও ছেড়ে দিল সকালের শাড়িটা । ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম আমি তার কাছে । জড়িয়ে ধরলাম পেছন থেকে । অজানা এক সুখানুভুতি যেন আবিষ্ট করে ফেলল আমাকে । সুখের অতল গভীরে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে ওকে নিয়ে । ওর শরীরের কোমল স্পর্শ আমাকে পাগল করে দিচ্ছে বারবার । এমন ১৪ ফেব্রুয়ারি ফিরে আসুক সবার জীবনে । সবার দাম্পত্য জীবন হোক সুন্দর ও মধুময় ।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৫৩ জন


এ জাতীয় গল্প

→ আমার ভ্যালেন্টাইন

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now