বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

নীল কান্না

"জীবনের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Tanjila hasan (০ পয়েন্ট)

X আবির:হ্যালো,ফারাবি তুই কোথায়? ফারাবি:আমি তো হসপিটালে। আবির:তুই হসপিটালে কি করছিস? ফারাবি:কেনো তুই জানস না আজ অহনার অপারেশন। আবির:কি?জানতাম না তো।তুই থাক আমি আসতেছি। ফারাবি:আচ্ছা আয়। আবির সাথে সাথেই ছুটছে হসপিটালে। গাড়িতে বসে বসে ভাবছে অহনার কথা। . অহনা বর্তমানে অনার্স ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত।খুব হাসি-খুসি,শান্ত স্বভাবের একটি মেয়ে। ছোটবেলায় বাবা-মা কে হারিয়েছে।অহনার চাচা তাকে লালন পালনের দ্বায়িত্ব নেয়। কিন্তু তার চাচী তাকে মেনে নিতে পারে নি।সবসময় অহনাকে কস্ট দিতো।ছোট থাকা স্বত্বেও বাড়ির সব কাজ তাকেই করতে হতো। একসময় চাচীর অত্যাচারের সীমা ছারিয়ে যায়।অহনা সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে নেয়। এভাবেই চলছিলো তার দিন।আর সহ্য করতে না পেরে তার চাচা তাকে একটি ছাত্রী হোস্টেলে দিয়ে আসে।প্রত্যেক মাসে তার জন্য খরচ পাঠাতো কিন্তু তা ছিলো খুব ঈ সামান্য।তাই অহনা সিদ্বান্ত নিলো টিউশনি করবে।সে হোস্টেল সুপার কে বলতেই সে একটি টিউশনি ঠিক করে দেয়। . অহনা প্রথম টিউশনি তে গেলো।খুব ভালোভাবেই চলতে থাকলো তার।টিউশনির টাকা দিয়ে সহজেই তার খরচ বহন করতে পারলো।সাথে আরেকটি টিউশনি পেলো। একদিন অহনা টিউশনি করাতে যাওয়ার সময় আবির তাকে দেখে।দেখেই অহনাকে ভালো লেগে যায়।পরে জানতে পারে অহনা তার ছোট বোনকেই পড়ায়।আবির অহনার চেয়ে ১ বছরের সিনিয়র।আবির একদিন অহনার পিছু নিয়েছে অহনার বাসা কোথায় সেটা জানতে। আবির দেখলো অহনা একটি হোস্টেলে গেলো। আবির অনেকটা অবাক হয়েছিলো।সে হোস্টেল সুপার এর কাছ থেকে অহনার পরিচয় জানতে পারে।খোজ-খবর নিয়ে জানতে পারলো অহনা ফারাবির এলাকার মেয়ে। ফারাবি আবিরের বন্ধু।ফারাবি কে অহনার কথা বললো।ফারাবি অহনার সব কথা আবির কে খুলে বললো।আবির সব শোনে হতবাক হয়ে গেলো আর ভাবলো একটা মেয়ে কিভাবে এত কস্টে থাকার পরেও হাসি-খুসি থাকে।আবির ভাবলো অহনাকে এখন কিছু বলবে না।অহনাকে সব সময় চোখে চোখে রাখলো। . দেখতে দেখতে অহনা এই,এচ,সি পাস করলো। আবির ভাবলো অহনাকে তার মনের কথা বলবে। যেই ভাবা সেই কাজ।আবির অহনার পিছু নিয়েছে।কিন্তু হঠাৎ আবির থমকে গেলো। দেখলো অহনা একটি ছেলের হাত ধরে হাঠছে। আবির আর কিছু না বলে চলে আসলো। ফারাবির কাছে জানতে পারলো অই ছেলের নাম ফয়সাল।ফয়সালের চাচা এলাকার প্রভাবশালী নেতা।ফয়সাল তার চাচার মাধ্যমে অহনাকে বিভিন্ন সাহায্য পাইয়ে দিয়েছে।অহনা বেশ সাচ্ছন্দ্যেই আছে।আবির ভাবলো অহনা বেশ ভালোই আছে আমি কেনো তার পথে বাধা হবো।আমি না হয় ওকে দুর থেকেই ভালোবাসবো। . হঠাৎ ড্রাইভার এর ডাকে আবিরের হুশ হলো। ড্রাইভার বলছে ভাই হসপিটাল এসে পরেছি। আবির নেমে ভাড়া মিটিয়ে হসপিটালের দিকে হাঠতে লাগলো।আবার আগের চিন্তায় মগ্ন হলো। . এভাবেই দিন কাটছিলো তাদের।আবির রোজ অহনাকে দুর থেকে দেখতো।ফারাবি ছারা আবিরের কথা আর কেউ জানতো না।একদিন বিকেলে আবির ঘুমাচ্ছিলো এই সময় ফারাবি ফোন দিলো ফারাবি:আবির তুই তারাতারি অহনার হোস্টেলের সামনে আয়। আবির:কেনো? ফারাবি:দরকার আছে।আয়। আবির:আসতেছি দাড়া। আবির হোস্টেলে গিয়ে যা শুনলো তার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলো না।অইদিন সকালে ফয়সাল নামের নরপিশাচ টা অহনাকে ধর্ষন করে হোস্টেলে ফেলে দিয়ে যায়।অহনাকে কাছের ক্লিনিকে নেয়া হয়েছে।আর ফয়সাল কে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও এক দিনের বেশি রাখতে পারে নি।তার চাচা ক্ষমতা বলে ফয়সাল কে ছারিয়ে আনে।৩ দিন পর অহনা একটু সুস্থ হয়।অহনা কারো সাথে মিশে না। কারন আজ সে সমাজের কাছে ধর্ষিতা।কিন্তু যার কারনে তার এই অবস্থা সেই ফয়সাল দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে।কেউ তার দিকে কিছু বলার ও সাহস পাচ্ছে না।আবির অহনার পাশে এসে দাড়ালো।কারন সে অহনাকে ভালোবাসে তার শরীর কে না।কিন্তু আমাদের তথাকথিত সমাজ তাকে অপবাদ দিয়েই যাচ্ছে। অহনা অপবাদ সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়েছে।হোস্টেল সুপার তাকে উদ্ধার করে হসপিটালে এনেছে। . ফারাবির ডাকে আবির বাস্তবে ফিরলো। ফারাবি:অই আবির কি ভাবছিস।একটু হলেই তো সিড়ি থেকে পরে যাতি। আবির:অহনা কোথায়? ফারাবি:বেডে আছে।একটু পরে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবে। আবির অহনার বেডের পাশে দারিয়ে আছে। আর অহনার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে। আর ভাবছে শুধু ফয়সালের লালসার জন্য অহনার এই পরিনতি।আবিরের চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে।হঠাৎ ফারাবি আবিরের কাধে হাত রাখলো দুজনের চোখেই জল। দুজনেই ভাবছে আজ শুধু ক্ষমতার বলে ফয়সালের মতো মানুষেরা অহনার সাথে এই কাজ করেও রেহাই পেয়ে গেলো।কারন তারা ক্ষমতাশীল।তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই।আবির অহনার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে।আর ভাবছে অহনা তুমি এখনো আমার।আমি তোমাকে এখনো ভালোবাসি অহনা তুমি ফিরে এসো অহনা তুমি ফিরে এসো। . অহনা কে অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে স্ট্রেচার এ করে।আবির এক মনে অহনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে আর চোখের পানি ফেলছে। . আজ অহনার প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী।হ্যা,অই দিন অহনাকে বাচানো যায় নি।অপারেশন টেবিলেই মারা গেছে সে।আবির আজ সকাল থেকেই অহনার কবরের সামনে বসে আছে আর অঝোরে কাদছে।চিৎকার করে বলছে অহনা তুমি এখনো আমার।আজীবন আমার থাকবে। ফারাবি দুর থেকে দারিয়ে আবির কে দেখছে আর ভাবছে কি দোষ ছিলো অহনার?কেনো তাকে এই শাস্তি পেতে হলো?হয়তো এর উত্তর কারো জানা নেই। . আজ ৩ বছর হলো আবির জেলে। কারন,অই দিন বাসায় ফেরার সময় আবির দেখে ফয়সাল একটি মেয়েকে নিয়ে হোটেলের দিকে যাচ্ছে।তখন অহনার কথা আবিরের চোখের সামনে ভেসে উঠে।আবির পিছন থেকে কয়েক ঘা ছুরি মেরে দেয় ফয়সাল কে। সাথে সাথেই ফয়সাল মারা যায়।আবির জানতে পারে তার ফাসির আদেশ হয়েছে। আবির তবুও অনেক খুশি কারন সে নরপিচাশ কে নিজ হাতে শাস্তি দিয়েছে।আবির চিৎকার করে বলে অহনা আমি তোমার কাছে আসছি।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৬৩০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now