বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ব্ল্যাক ঈগলের সন্ত্রাস
চ্যাপ্টার- ৫
বাকি অংশ
আহমদ মুসা বারান্দায় সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে আছে।
সাবাত সোলায়মানের লাশকে সে ইতিমধ্যেই নিচে সিঁড়ির পাশে রেখে এসেছে।
আহমদ মুসার একটু পেছনে দাঁড়িয়ে আছে আবদুল কাদের কামাল উদ্দিন।
সরদার জামাল উদ্দিন ও আয়েশা আলিয়া গিয়ে দাঁড়াল আবদুল কাদের কামাল উদ্দিনের পেছনে। তাদের সবার চোখে-মুখে উদ্বেগ।
আহমদ মুসা তার হাতের মোবাইল স্ক্রীনের দিকে তাকিয়েছিল। এই মোবাইলটাই পেয়েছিল সে সাবাত সোলায়মানের পকেট থেকে। আহমদ মুসার চোখে-মুখে নিশ্চিন্ত ভাব।
কিন্তু অস্থির হয়ে উঠেছে সরদার জামাল উদ্দিন ও অন্য সবাই।
সরদার জামাল উদ্দিন বলেই ফেলল, ‘ভাই আহমদ মুসা, এই মুক্ত জায়গায় আমাদের দাঁড়ানো ঠিক হচ্ছে না। ওদের চোখ এ দিকেই। ওদের কয়েকজনকে দেখা যাচ্ছে। ওরা ধীরে ধীরে এদিকে এগুচ্ছে।’
‘এদিকে চোখ আছে ঠিকই, কিন্তু ওরা এদিক দিয়ে আক্রমণ করবে না। চোখের সামনে এভাবে আসাই তার প্রমাণ।’
‘তার মানে?’ বলল সরদার জামাল উদ্দিন। তার কণ্ঠে বিস্ময়।
‘তার মানে ওরা আমাদের পেছন দিক দিয়ে আক্রমণ করবে।’ বলল আহমদ মুসা।
‘বুঝেছি। তাহলে চল ওদিকে দেখি।’ বলল সরদার জামাল উদ্দিন।
‘পেছনে কি দরজা আছে?’
‘আছে। ভেতর থেকে তালাবন্ধ।’
‘তালা আজ কোন বাধা নয়।’ বলেই আহমদ মুসা ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আপনারা এখানে দাঁড়ান। আমি ওদিকে দেখি।’
আহমদ মুসা ভেতরে যাবার জন্যে পা বাড়িয়েছিল। সরদার জামাল উদ্দিন জিজ্ঞেস করল, ‘শত্রু যদি পেছন থেকে আসে, তাহলে আমাদের এখানে থাকা কেন?’
থমকে দাঁড়াল আহমদ মুসা। মুখ ফিরিয়ে বলল, ‘ওরা যাতে বুঝতে পারে পেছনে আমাদের কোন সতর্কতা নেই, চোখ নেই। তাহলে ওরা নিশ্চিন্তে পেছন দিক থেকে আসতে পারে।’
‘আমরা বুঝেছি ধন্যবাদ স্যার।’ হাসি মুখে এক সাথে বলে উঠল, আবদুল কাদের কামাল উদ্দিন এবং আয়েশা আলিয়া।
‘আলহামদুলিল্লাহ।’ বলে আহমদ মুসা দ্রুত পায়ে ঢুকে গেল ভেতরে।
সাবাত সোলায়মানের সাথে কথা শেষ করেই দানিয়েল দানেশ মোবাইল পকেটে ফেলে বলল, ‘সাবাত সোলায়মান আহত। এখনি আমাদের মুভ করা দরকার।’
‘তাহলে তো সাবাত সোলায়মানের সন্দেহ ঠিক। লোকটি আহমদ মুসাই।’ বলল দানিয়েল দানেশের পাশে দাঁড়ানো মিকাইল মৈনাক।
দানিয়েল দানেশ এবং তার সহকারী মিকাইল মৈনাক আরও কয়েকজন আজই বেতাংগে এসে পৌছেছে। সাবাত সোলায়মানের পাঠানো ছবি দেখে লোকটি যে আহমদ মুসা তা নিশ্চিত করার পরই কাতান টেপাংগো থেকে এদের পাঠানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে আহমদ মুসাকে বন্দী করার জন্যে নয়, দেখা মাত্র হত্যা করার জন্যে।
সাবাত সোলায়মান আহমদ মুসাকে সব সময় চোখে চোখেই রেখেছিল। আহমদ মুসা যখন সরদার জামাল উদ্দিনের বাড়িতে প্রবেশ করে, তখন নিচে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল সাবাত সোলায়মান। এ সময়ই এসে পৌছে দানিয়েল দানেশরা। মোবাইলে যোগাযোগ হলে সাবাত সোলায়মান তাদেরকে লোকেশান জানিয়ে এখানেই ডেকে পাঠায়। দানিয়েল দানেশ ও মিকাইল মৈনাক আরও পাঁচজন সাথীসহ সেখানে এসে পৌছায়।
এসেই দানিয়েল দানেশ সাবাত সোলায়মানকে প্রশ্ন করে, ‘সরদার জামাল উদ্দিনরা তো আমাদের লোক। আহমদ মুসা সেখানে কেন?’
‘আমি দেখেছি বৃষ্টির তাড়া খেয়ে সে প্রথমে তাদের বাড়ি সামনে পেয়ে সেখানে উঠেছে। সরদার জামাল উদ্দিনের সাথে গত জুমার নামাযে তার পরিচয় হয়েছে, কিন্তু এ কয়দিন সে আসেনি এ বাড়িতে।’ বলেছিল সাবাত সোলায়মান।
‘আচ্ছা বুঝলাম। এখন বলুন, আপনি কিছু করণীয় চিন্তা করছেন কিনা।’ বলে দানিয়েল দানেশ।
‘হ্যাঁ, আমাদের এখনই ওখানে যাওয়া উচিত। কিন্তু এক সাথে যাওয়া যাবে না। আহমদ মুসা সন্দেহ করতে পারে। আমি..........।’
সাবাত সোলায়মানের কথার মাঝখানে কথা বলে ওঠে দানিয়েল দানেশ। থেমে যায় সাবাত সোলায়মান।
দানিয়েল দানেশ বলে, ‘ঠিক বলেছেন মি. সাবাত সোলায়মান। আহমদ মুসাকে সন্দেহ করতে দেয়া যাবে না। সে অত্যন্ত বিপজ্জনক। আগাম সন্দেহ করলে তাকে বাগে আনা যাবে না।’
‘হ্যাঁ, তাই আমি ভাবছি, আগে বাড়িটা ঘেরাও করে ফেলতে হবে, যাতে তার পালাবার পথ বন্ধ হয়। তারপর প্রথমে আমি একাই যাব মনে করছি। আমি ওদের সবার পরিচিত এবং এখানেই থাকি বলে কেউ কিছু ভাববে না। এই অবস্থায় অতর্কিতে গুলী করে হত্যা করা আমার পক্ষে সহজ হবে। প্রথম দর্শনে আমি এই চেষ্টাই করব। আমার চেষ্টা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে তোমাদের মোবাইল করব, তাও না পারলে ওয়াম বাটন প্রেস সিষ্টেমে আমি মিসকল দেব।’ বলেছিল সাবাত সোলায়মান।
এসব কথা সামনে এসে গিয়েছিল দানিয়েল দানেশের। মিকাইল মৈনাকের কথার জবাবে সে বলল, ‘হ্যাঁ, আহমদ মুসা না হলে গুলী করার দরকার নেই।’
কথা শেষ করেই দানিয়েল দানেশ মোবাইল তুলে একটা কল করল। বলল, ‘তোমরা তিন জন বাড়ির সামনে থাক। অস্ত্র বাগিয়ে খুব ধীরে ধীরে বাড়ির দিকে আগাও। যাতে তাদের সব মনোযোগ তোমাদের দিকে নিবদ্ধ থাকে। যে তরফেরই হোক গুলীর শব্দ শোনার পর তোমরা বাড়িতে প্রবেশ করবে।’
মোবাইল বন্ধ করে পকেটে রেখেই বলল দানিয়েল দানেশ, ‘চল আমরা পেছন দিক দিয়ে বাড়িতে ঢুকব।’
সরদার জামাল উদ্দিনের বাড়িটার পেছনের দিকটায় ফলের বাগান। ছোট-বড় অনেক গাছ। বড় গাছের বিভিন্ন ধরনের আগাছা।
গাছ-গাছড়ার আড়াল নিয়ে তারা বাড়ির পেছনের পাশে গিয়ে পৌছল। বাড়ির কোন পাশে বা পেছনে কোথাও চাকর-বাকরদের যাতায়াত ও মাল-পত্র আনা-নেয়ার জন্য একটা দরজা থাকবেই, এটা তারা ধরেই নিয়েছিল।
তারা পেয়ে গেল দরজা। পুরু ষ্টিলশীটের বড় দরজা।
ডিজিটাল লক। ভেতর থেকে বন্ধ করা।
দানিয়েল দানেশ পকেট থেকে ল্যাসার বীম কাটার বের করে দরজার লক এরিয়া গোটাটাই কেটে ফেলল। খসে পড়ল কাটা অংশটা। তৈরি হলো টেনিস বল আয়তনের একটা ছিদ্র। দরজাও একটু নড়ে উঠে কিঞ্চিত পেছনে সরে গেল।
হঠাৎ একটা অব্যাহত যান্ত্রিক শব্দ কানে এল দানিয়েল দানেশের। দরজায় সৃষ্ট ফাঁক দিয়ে উঁকি দিল দানিয়েল দানেশ। শুনতে পেল অব্যাহত অ্যালার্ম বাজার শব্দ। দেখল ভেতরের ঘরটা আলোকিত। ঘরে কেউ নেই।
বুঝে নিয়েছিল দানিয়েল যে ডিজিটাল লকের সাথে এলার্ম সংযোগ ছিল। ডিজিটাল লকটা আনলক হলেও এলার্মের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।
দানিয়েল দানেশ তাড়াতাড়ি দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করল। দেখল কেটে ফেলা ডিজিটাল লকটি দরজার পাশের দেয়ালে একটা তারে ঝুলছে। তারটি ছিড়ে ফেলল সে।
থেমে গেল এলার্ম।
দানিয়েল দানেশের সংগে সংগে অন্য সবাই প্রবেশ করল ভেতরে।
ভেতরটা কোন ঘর নয়, আয়তাকার একটা প্যাসেজ।
এলার্ম থামলেও আতংক কাটেনি দানিয়েল দানেশের। এলার্ম বেজেছে তার অর্থই হলো প্রতিপক্ষের কাছে তাদের আগমনের কথা ঘোষণা হয়ে গেছে। অতএব শত্রুদের অলক্ষে পেছন দিক থেকে নিরাপদ আক্রমণের যে চিন্তা তারা করেছিল, তা ভন্ডুল হয়ে গেল।
প্যাসেজটির সামনে তিন ধাপের একটা সিঁড়ি। সিঁড়ির মাথায় একটা বড় খোলা দরজা। দরজার ওপারটাও আলোকিত।
কিছুক্ষণ স্থির দাঁড়িয়ে থাকার পর দানিয়েল দানেশ আস্তে আস্তে সিঁড়ির দিকে এগুতে শুরু করল। হঠাৎ সামনে থেকে পায়ের শব্দ শুনতে পেয়েই দানিয়েল দানেশ ছুটে গিয়ে সিঁড়ির পাশে দু’ফুট উঁচু দেয়াল সেঁটে হামাগুড়ি দেয়ার মত করে বসল। তার সাথের অন্যরাও এভাবে গিয়ে দেয়ালের আশ্রয় নিল।
এছাড়া তাদের লুকানোর কোন জায়গা ছিল না। লুকানোর জন্যে এটা মোটেও ভাল জায়গা না হলেও যে বা যারা আসছে প্রথমেই তাদের দৃষ্টিতে পড়া থেকে বেঁচে যাবে। তার উপর দেখার জন্যে তারা নিশ্চয় সিঁড়ি পর্যন্ত আসবে। আসলেই সে বা তারা তাদের হ্যান্ড মেশিনগানের আওতায় এসে যাবে।
পায়ের শব্দ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ভাবনা দানিয়েল দানেশের থেমে গেল।
সে সতর্ক হয়ে উঠল। তাহলে ওরা নিশ্চয় খোলা দরজা দেখতে পেয়েছে। আমরা ভেতরে প্রবেশ করেছি, এটাও নিশ্চয় তারা সন্দেহ করেছে।
এই চিন্তা শেষ হবার আগেই অনেকগুলো পায়ের শব্দ ভেসে এল দানিয়েল দানেশের কানে। পায়ের শব্দগুলো দরজার কাছাকাছি আসতেই একটা শক্ত চাপা কণ্ঠ চিৎকার করে উঠল, ‘সামনে এক পাও নয়, দাঁড়ান আপনারা।’
ঘটনাটা বুঝতে দানিয়েল দানেশের মুহূর্তও দেরি হলো না। আগে যার পায়ের শব্দ শুনেছিল, সে নিশ্চয়ই তাদের আগমন টের পেয়ে দরজার আড়ালে লুকিয়ে অপেক্ষা করছিল। এই সময় বাড়ির অন্যরা এসে পৌছেছে। প্রথম লোকটি আহমদ মুসা হবার সম্ভাবনাই বেশি।
এসব কথা দানিয়েল দানেশের মাথায় বিদ্যুতের মত মুহূর্তেই খেলে গেল। এখন তার কি করা দরকার তাও মাথায় এসে গিয়েছিল। তাদের কথা বলা ও দাঁড়ানোর সুযোগটাকে গ্রহণ করতে হবে। দানিয়েল দানেশ রিভলবার বাগিয়ে আড়াল থেকে লাফিয়ে বের হয়ে এসে দাঁড়িয়েই রিভলবারের টার্গেট ঠিক করতে গেল।
কিন্তু দেখল আহমদ মুসার বাম হাত যখন দু’জনকে ঠেলে মেঝেয় ফেলে দিচ্ছে, তখন তার ডান হাতের মেশিন রিভলবার তার লক্ষে আগেই উঠে এসেছে।
দানিয়েল দানেশের টার্গেটে স্থির হবার আগেই আহমদ মুসার রিভলবারের পর পর দু’টি গুলী এসে তার মাথা ও বুককে বিদ্ধ করল।
দানিয়েল দানেশের পেছনে অন্যরাও তার সাথেই বেরিয়ে এসেছিল। তারাও আহমদ মুসার গুলী বৃষ্টির মুখে গিয়ে পড়ল। ডান দিকে শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়ানো একজনই শুধু গুলী করার সুযোগ পেল। কিন্তু তার ডান হাতের মেশিন রিভলবারের গুলী দরজার সাথে তার কৌণিক অবস্থানের কারণে অধিকাংশই দরজায় গিয়ে বিদ্ধ হলো। দরজাকে পাশ কাটিয়ে কয়েকটি গুলীই শুধু আহমদ মুসার দিকে ছুটে যেতে পারল। তার একটি গিয়ে আহমদ মুসার বাম বাহু বিদ্ধ করল। কিন্তু লোকটি টার্গেট এডজাষ্ট করার দ্বিতীয় সুযোগ পেল না। তার আগেই আহমদ মুসার বৃষ্টির মত ছুটে আসা গুলীর শিকার হলো।
আহমদ মুসা কয়েক ধাপ এগিয়ে এসে দরজার দু’পাশে তাকিয়ে দেখল আর কেউ নেই।
মেঝের উপর পড়ে যাওয়া সরদার জামাল উদ্দিন ও আবদুল কাদের কামাল উদ্দিন উঠে বসেছে। আয়েশা আলিয়াও ছুটে ঘরে প্রবেশ করেছিল। আহমদ মুসার বাহু থেকে রক্ত ঝরতে দেখে সে আতংকিত হয়ে ছুটে এসে বাহু ধরে বলল, ‘স্যার আপনি আহত। আর কোথাও গুলী লাগেনি তো?’
আহমদ মুসার নজর তখন বাইরের দিকে। তিনজন ছুটে আসছে ঘরের দিকে। আহমদ মুসা আয়েশা আলিয়াকে জোরে পাশের দিকে ঠেলে দিয়ে লাফ দিয়ে ঘরের পূর্ব প্রান্তে মেঝের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েই গুলী শুরু করল ঐ তিনজনকে লক্ষ্য কলে।
ওরা তিনজন প্রথমে আহমদ মুসাকে দেখতে পায়নি। যখন দেখতে পেয়েছে, তখন আহমদ মুসার গুলী বর্ষণ শুরু হয়ে গেছে। আক্রমণ কিংবা আত্মরক্ষার জন্যে ওরা কোন কিছুর আড়াল নেবার সুযোগ পেল না।
ওরা তিনজনই অসহায়ভাবে মৃত্যুকে আলিংগণ করল।
আর কাউকে না দেখে আহমদ মুসা পেছন ফিরল। আয়েশা আলিয়া ও সরদার জামাল উদ্দিনদের লক্ষ্য করে বলল, ‘স্যরি আপনাদের ধাক্কা দিতে হয়েছে। আঘাত পাননি তো!’
‘আপনি নিজে গুলীবিদ্ধ হয়ে এই কথা বলছেন, আপনি ঐ ধাক্কাটুকু না দিলে তো ওরা না মরে আমরাই তাদের আগে মরতাম।’ বলল আয়েশা আলিয়া।
সরদার জামাল উদ্দিন ও আবদুল কাদেরও আহমদ মুসার পাশে দাঁড়াল। সরদার জামাল উদ্দিন বলল, ‘আল্লাহর শোকর আহমদ মুসা, ঠিক সময়ে তুমি এসে পড়ে সাক্ষাত মৃত্যু থেকে আমাদের বাঁচিয়েছ।’
‘আপনাদের ওখানে রেখে এসেছিলাম। আপনারা এভাবে এসে ঠিক করেননি।’ বলল আহমদ মুসা।
‘বিপদ এলার্ম শুনে আমরা সব ভুলে গিয়েছিলাম। তুমি বিপদে পড়েছ কিনা এ ভয়ও আমাদের পেয়ে বসে। কিন্তু তুমি দরজার আড়ালে কি করছিলে?’ বলল সরদার জামাল উদ্দিন।
‘এলার্ম শুনেই আমি দ্রুত এদিকে আসি। তার আগেই ওরা ভেতরে প্রবেশ করেছে। আমি বাইরের দরজা খোলা দেখি। আমি দরজার আড়ালে যাই লুকানো স্থান থেকে ওদের আরও ভেতরে এগিয়ে আনার জন্যে যাতে ওরা আমাকে দেখতে পাওয়ার আগেই আমার গুলীর আওতায় আসে।’
‘আমরা দুঃখিত আহমদ মুসা। এভাবে আসাটা আমাদেরকে বিপদে ফেলেছিল। তোমাকেও বিপদে ফেলেছিল।’ বলল জামাল উদ্দিন।
‘এখন কোন কথা নয় দাদা। উনি আহত। চলুন ভেতরে। ওকে হাসপাতালেও নিতে হতে পারে। আসুন, আমি ডাক্তারকে টেলিফোন করতে যাচ্ছি।’ বলল আয়েশা আলিয়া।
বলেই ছুট দিয়েছিল আয়েশা আলিয়া।
‘থাম আয়েশা। আগেই ডাক্তার নয়। দেখি আহত স্থানটা। গুলী ভেতরে নাও থাকতে পারে। ছোট-খাট আঘাতের ব্যবস্থা আমিই করতে পারব।’ বলল আহমদ মুসা।
‘আমারও নার্সিং ট্রেনিং আছে স্যার।’ বলল আয়েশা আলিয়া।
‘আমিও ভাল ফাষ্ট এইড জানি।’ বলল আবদুল কাদের কামাল উদ্দিন।
‘আমিও জানি।’ হাসতে হাসতে বলল আহমদ মুসা।
আহমদ মুসার হাসি ও রসিকতাপূর্ণ কথায় সবাই বিস্মিত হয়ে তাকাল আহমদ মুসার দিকে। বলল আয়েশা আলিয়া, ‘স্যার মনে হচ্ছে আপনার কিছুই হয়নি। হাসি-রসিকতা দূরে থাক, আমরা হলে আতংক-আর্তনাদেই ডুবে থাকতাম।’
আহমদ মুসা একটু হাসল। কিছুই বলল না।
আবদুল কাদের কামাল উদ্দিন কিছু বলতে যাচ্ছিল। তাকে বাধা দিয়ে সরদার জামাল উদ্দিন বলল, আর কোন কথা নয়, চল।
সবাই চলতে শুরু করল।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now