বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
দ্বিতীয় বিয়ে !
=========
-শুনো, আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাই!
-কেন! আমি কি দেখতে যথেষ্ট খারাপ!
আমি কি যথেষ্ট ভালো নই?
-ব্যাপারটি তা নয়। যাকে বিয়ে করতে
চাচ্ছি সে সদ্যতালাকপ্রাপ্তা দুই
সন্তানের মা। খুব দু:খ-কষ্টে নাকি দিন
কাটছে তাদের। তাদের অবস্থা এতোটাই
শোচনীয় যে দুপুর হলে তার বাচ্চাদের
জন্য কোথা থেকে খাবার আসবে সেটাও
নাকি তার জানা নেই। আমি বললাম,
-কেন? ওদের বাবা কোথায়? সে কি
নিজের বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে
পারছে না?
-তাদের তালাক মানে ছাড়াছাড়ি হয়ে
গেছে।
-তাহলে বিয়ে করতে হবে কেন? নিশ্চয়ই
উনাকে সাহায্য করার আরও অনেক উপায়
আছে। তুমি চাইলে তাকে আর্থিকভাবে
সাহায্য করতে পারৌো।
.
বহুবিবাহ মেনে নেওয়ার ব্যাপারটা
আমি কল্পনাও করতে পারি না! আমার
স্বামীকে আরেকজন নারীর সাথে
ভাগাভাগি করতে হবে। তার
ভালোবাসা, হাসি, রসিকতা এগুলো
আমি ছাড়াও আরেকজন নারী উপভোগ
করবে? সে আমাকে ছাড়াও আরেকজন
নারীকে স্পর্শ করবে, আর তাকে
ভালোবাসার কথা শোনাবে! অসম্ভব!
.
এটা মেনে নেওয়া যায় না। চরম ক্ষোভ,
দুঃখ আর অপমানের জ্বালায় আমি
নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। আমি ওর
জন্যে কী না হইনি? একজন স্ত্রী,
প্রেমিকা, মা, গৃহিণী কত কিছু। কীভাবে
পারল ও আমাকে এতোটা অপমান করতে?
মনে হচ্ছিল আমি হয়তো বেশি ভালো না
বা বেশি সুন্দরী না কিংবা অল্পবয়সী
না। কিংবা শুধু আমি যেন ওর জন্য
যথেষ্টই না! এজন্যই দ্বিতীয় বিয়ের কথা
বলছে!
.
নাহ্ এটা মেনে নেওয়া যায় না। তখনই
ওকে আমার সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে
জানিয়ে দিলাম। তীব্র কণ্ঠে বলে
উঠলাম,
-যদি কোন দ্বিতীয় স্ত্রী এই বাড়িতে
ঢুকে তাহলে আমি বেরিয়ে যাব।
২য় অংশ:
-------
নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে। সে
দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে আর কোন কথা
বলেনি। আমার অনঢ় অবস্থান আর
হুমকিতে সে পরাজিত হয়েছে। আমি
জানিনা সেই মহিলা ও তার
বাচ্চাগুলোর শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিলো।
বোধ হয় ওরা সবাই অন্য কোন এক শহরে
চলে যায়। তার জন্য একটু কষ্ট ও মায়া
হয়েছিলো বৈকি।
.
এরপর আমার স্বামী আর কখনোই দ্বিতীয়
বিয়ে কথাটি উচ্চারণ করেননি যার
কারণে আমিও খুব খুশি। নিজের
স্বামীকে ধরে রাখতে পেরেছি সেই
আনন্দে আত্মহারা! কিন্তু তখনও জানতাম
না আমাদের সময় খুব শীঘ্রই ফুরিয়ে
আসছে..।
.
একদিন মাগরীব সালাতের পর তিনি
বললেন - তাঁর খুব মাথা ধরেছে, ইশার
সালাত পর্যন্ত নাকি শুয়ে থাকবেন। উনি
শুয়ে রইলেন।
কিন্তু হায়! ওর আর সে রাতে ইশার
সালাহ আদায় করা হয়নি। কারণ তাঁর সে
ঘুম আর ভাঙেনি। সে রাতেই উনি মারা
যান।
তাঁর আচমকা মৃত্যুতে আমি পুরো হতবিহ্বল
হয়ে পড়ি! যে মানুষটার সাথে আমি
আমার সারাটা জীবন কাটিয়েছি সে
হঠাৎ করেই পরপারে চলে গেল। এরপর
কতকাল ধরে যে তাঁর জন্য কেঁদেছি তা
কেউ জানেনা, হয়তো বা এক মহাকাল
জুড়ে!
৩য় অংশ
-------------
সে সময় কোনকিছু দেখাশোনা করে
রাখার মতো অবস্থা আমার ছিল না।
অযত্নে অবহেলাতে একে একে সব
হারাতে শুরু করলাম। প্রথমে আমাদের
গাড়ি, এরপর দোকান, এরপর বাড়ি।
.
শেষমেষ দুই সন্তান সহ আমি আমার
ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠলাম। হঠাৎ
এতোগুলো মানুষের উপস্থিতিতে ওদের
বাড়িটা গিজগিজ করত। আমার ভাবীও
দিনে দিনে অতীষ্ট হয়ে উঠছিলেন। খুব
ইচ্ছে হতো ঐ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই।
সে সময় আমার দরকার ছিল একটি
চাকরি। কিন্তু আমার কোন দক্ষতা ছিল
না।
.
কিন্তু মানুষের দয়ায় এভাবে কতদিন
মাথা গুঁজে পড়ে থাকা যায়? নিজেদের
জন্য একটি আলাদা বাসার প্রয়োজন খুব
বেশি করে অনুভব করছিলাম।
.
যখন আমার স্বামী বেঁচে ছিলেন, আমরা
কত আরামে ছিলাম। ঘরের বাইরে যেয়ে
কাজ করার প্রয়োজনই ছিলনা। কিন্তু
উনি চলে যাওয়ার পরে জীবন এত কঠিন
হয়ে গিয়েছিল। আমি প্রতিটা দিন উনার
অভাব বোধ করতাম। হৃদয়ের প্রতিটা অংশ
দিয়ে উনাকে খুঁজে ফিরতাম। কী করে
মানুষের জীবন এতো ভয়ানকভাবে
পাল্টে যায় তা ভুক্ত ভোগী ছাড়া কেউ
জানে না!
.
হঠাৎ একদিন আমার ভাই আমাকে ডেকে
তার পরিচিত এক ভাইয়ের কথা বললেন।
সেই ভাই নাকি বিয়ের জন্য পাত্রী
খুঁজছেন। ভালো মানুষ, চমৎকার আচার
ব্যবহার, আর অনেক দীনদার। উনি চান
আমি উনার দ্বিতীয় স্ত্রী হই। আমার
জীবনে দ্বিতীয় বারের মতো দ্বিতীয়
স্ত্রী কথাটি শুনলাম। কিন্তু এবারে
পরিস্থিতি কত ভিন্ন!
.
একদিন আমাদের দেখাদেখির ব্যবস্থা
হল। অবিশ্বাস্যভাবে আমার উনাকে খুব
পছন্দ হয়ে গেল। উনার প্রতিটা ব্যাপারই
খুব ভালো লাগছিল। উনি আমাকে
বললেন, ‘তার প্রথম স্ত্রী জানে যে তিনি
দ্বিতীয় বিয়েতে আগ্রহী, তবে সে এর
বিপক্ষে।’ তিনি এটাও বললেন যে,
দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে একজনকে খুঁজে
পেয়েছেন জানলে উনার স্ত্রীর
প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে সেটা তার
জানা নেই; তবে উনার স্ত্রীর বহুবিবাহ
মেনে নেওয়ার ওপরই এখন উনার চূড়ান্ত
জবাব নির্ভর করছে।
.
সে রাতে আমি ইস্তিখারা সালাত
আদায় করলাম। আমি পাগলের মতো
চাচ্ছিলাম যেন বিয়েটা ঠিকঠাক হয়ে
যায়। আমার মনে পড়লবআরেকজন নারীর
জীবনও ঠিক এরকম করেই আমার
সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছিল। মনে
পড়ে গেল আমি কী সিদ্ধান্ত
নিয়েছিলাম। হঠাৎ করে অনুতাপে পুড়ে
যাওয়ার মতো একটা উপলব্ধি হল। আমার
মনে হচ্ছিল আমি আমার জীবনে
আরেকজন নারীকে স্থান দেইনি, তাহলে
আল্লাহ কেন আমাকে আরেকজন নারীর
জীবনে স্থান নেওয়ার সুযোগ দেবেন?
নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাকে শাস্তি দেবেন।
.
আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে
থাকলাম। অবাক লাগছিল! জীবনে
একবারও আমার মনে হলনা যে, আমি যে
কাজটি করছি তা কতটা ভুল? আমি সবসময়
ভেবে এসেছি যে এমন করাটাই সঠিক
কাজ ছিল। এখন যখন আমার অবস্থান
পাল্টে গেছে, প্রয়োজনটা যখন এবার
আমার, তখন আমি বুঝতে পারলাম কতোটা
ভুল-ই না আমি ছিলাম! আমি আরেকজন
নারীর স্বামী পাবার অধিকারকে
অস্বীকার করছিলাম।
.
আমি দু’আ করতে থাকলাম যেন উনার
স্ত্রী আমাকে মেনে নেন..।
.
কয়েকদিন পর উনি আমাকে ফোন করলেন।
বললেন যে উনার স্ত্রীর এটা মেনে
নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছে তবুও তিনি আমার
সাথে দেখা করতে আগ্রহী।
৪র্থ অংশ
--------
আজ উনার স্ত্রীর সাথে আমার সাক্ষাৎ
হবে। আমি তার বাসায় ড্রইং রুমে বসে
আছি। ভাবছি দ্বিতীয় বিয়ে বিষয়টা
কেমন! কয়েক বছর আগের কথা মনে পড়ে
গেলে। আমার স্বামীর সাথে আমার বলা
কথাগুলো বার বার মনে হচ্ছিল, “কেন
তুমি ২য় বিবাহ করবে? কেন? আমি কি
খারাপ? আমি কি যথেষ্ট ভালো নই? না,
না,না! আমি কখনোই দ্বিতীয় একজন
স্ত্রীকে মেনে নিতে পারিনা। যদি তুমি
আরেকজন মহিলাকে বিয়ে করতে চাও,
তো করো; কিন্তু মনে রেখো ফিরে এসে
তুমি আমাকে আর এখানে দেখতে
পাবেনা।”
.
বসে বসে বোর ফিল করছিলাম। খুব
দু:শ্চিন্তা হচ্ছিল। আল্লাহর কাছে অনেক
দু’আ করছিলাম,
-হে আল্লাহ, আমাকে সাহায্য করো, তার
স্ত্রীর দীলে তুমি রহম পয়দা করো, সহীহ
বুঝ দান করো, ইত্যাদি..।
.
তিনি রুমে এলেন। তাকে দেখলাম আমার
মতোই একজন নারী ও স্ত্রী যে তার
স্বামীকে খুব ভালোবাসে। যে তার
স্বামীকে হারাতে ভয় পায়! তার
চোখগুলোয় ছলছল করছিল। সে আমার হাত
দুটো ধরে বলল,
-বোন আমার! আপনি যতই অসহায় হউন না
কেন আমার জন্য এটা মেনে নেওয়া কী
যে কঠিন! তারপরও দু’আ করি যেন আমরা
দুইজন আপন বোনের মতো থাকতে পারি।
.
আমি হুহু করে কেঁদে দিলাম। আমার এই
কঠিন সময়ে শুধু এটুকুই লাগত -একটি
সখ্যতার হাত যে আমাকে বুকে টেনে
নেবে। আমাকে আশা দেবে। বেঁচে
থাকার ইচ্ছাটা ফিরিয়ে আনবে। উনার
স্ত্রীর জন্য সেটুকু পেলাম।
.
উনার স্ত্রী আমার জীবনে এমন একজন
নারীর দৃষ্টান্ত, যেমন নারী আমি নিজে
কখনো হতে পারিনি। আমি উনার প্রতি
চিরকৃতজ্ঞ থাকব। একসময় ভাবতাম কেউ
কারো স্বামীকে নিশ্চয়ই আমার মতো
করে এতো বেশি ভালোবাসতে পারেনি।
কিন্তু উনার স্ত্রীকে দেখে ধারণাটি
বদলে গেল। এই মানুষটির কাছ থেকেই
শিখতে পারলাম নিঃস্বার্থ
ভালোবাসার আসল পরিচয়।
-
____________________________
[ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত একটি
ইংরেজি লেখার অনুবাদ]
অনুবাদক: রাজোয়ানুল ইসলাম আলিফ।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
এমরান সিদ্দিকী
User ৭ বছর, ২ মাস পুর্বেমানসূর আহমাদ
Golpobuzz ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেAsa
Guest ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেAsa
Guest ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেমানসূর আহমাদ
Golpobuzz ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেনাকিদ আদাবি
Guest ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেমানসূর আহমাদ
Golpobuzz ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেErfanul Haque Atik
Golpobuzz ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেZahra
User ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেJannatul eira
User ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বেZakia Arif Sharna
Golpobuzz ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বে