বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
জাদুর থালা ও অভিশপ্ত গুপ্তধন
অধ্যায় ১: এক রহস্যময় সন্ধ্যা
হাসান ছিল এক দরিদ্র যুবক, যে জীবিকার জন্য গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মজুরি খাটতো। তার মা ছিলেন বৃদ্ধ এবং অসুস্থ, তাদের সংসার চালানো ছিল দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছিল। একদিন কাজ শেষে হাসান গ্রামের এক বৃদ্ধার পাশে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। বৃদ্ধা ছিল রহস্যময়, তার চোখ দুটো ছিল গভীর এবং চতুর।
"বাছা, তুমি কি সত্যিই দরিদ্র জীবন কাটাতে চাও?" বৃদ্ধা জিজ্ঞেস করলেন।
হাসান হতবাক হয়ে গেল, "এ কথা বলছেন কেন?"
বৃদ্ধা এক গোপন রহস্য ফাঁস করলেন, "পাহাড়ের ওপারে এক পুরনো গুহা আছে, যেখানে রয়েছে সোনা-রত্নে ভরা এক গুপ্তধন। কিন্তু তার রক্ষক এক ভয়ংকর আত্মা। যদি তুমি সাহসী হও, তবে ধন-সম্পদ তোমার হতে পারে।"
হাসানের মনে ধনসম্পদের লোভ জাগল। তার মায়ের অসুস্থতা, অভাবের যন্ত্রণা—এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ সে হাতছাড়া করতে চাইল না। সে বৃদ্ধার কথা অনুসারে সেই গুহার উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
অধ্যায় ২: গুহার অভ্যন্তরে
রাতের অন্ধকারে পাহাড়ের পাথুরে পথ বেয়ে সে গুহার সামনে এসে দাঁড়াল। গুহার মুখে বড় একটি পাথর ছিল, যা ঠেলে সরাতে হলো। গুহার ভেতরটা ছিল ধুলোয় ভরা, আর দেয়ালের গায়ে পুরনো শিলালিপির মতো কিছু লেখা ছিল।
গুহার আরও ভেতরে ঢুকে সে দেখল বিশাল এক হলঘর, যেখানে সোনা-রুপার স্তূপ গড়ে উঠেছে! হাসানের চোখ চকচক করে উঠল। হঠাৎ তার চোখ পড়ল এক বিশাল সোনার থালার দিকে। থালাটির ওপর অদ্ভুত চিহ্ন খোদাই করা ছিল, যার কিছুই তার বোঝার মতো নয়।
"এই থালাটিই হয়তো সবচেয়ে মূল্যবান!" সে ভাবল এবং থালাটিকে হাতে তুলে নিল।
ঠিক তখনই গুহার ভেতর এক ভয়ংকর আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হলো। বাতাস ভারী হয়ে উঠল, যেন কোনো কিছু তার দিকে ধেয়ে আসছে।
"কে সাহস করেছে আমার ধন চুরি করতে?"
হাসান আতঙ্কে থালা হাতে নিয়েই পেছনে হটতে লাগল। কিন্তু তার চারপাশে যেন ছায়া ঘনিয়ে আসছে!
অধ্যায় ৩: অভিশাপের শুরু
এক আকস্মিক ঝটকায় গুহার মেঝে কাঁপতে লাগল, আর অন্ধকার থেকে এক বিশাল ছায়ামূর্তি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠল। তার লালচে চোখে ভয়ংকর রাগ, মুখে এক রহস্যময় হাসি।
"তুমি কি জানো, এই ধন কীসের?" ছায়ামূর্তিটি বলল।
হাসান কোনো কথা বলতে পারল না, শুধু কাঁপতে লাগল।
"এই ধন অভিশপ্ত! যারা একে নিতে চেয়েছে, তারা আর জীবিত ফিরে যেতে পারেনি।"
হাসান বুঝতে পারল যে সে বড় ভুল করে ফেলেছে। সে থালাটি ফেলে পালাতে চাইল, কিন্তু তার পা যেন মাটিতে আটকে গেল। তার দেহের চারপাশে কালো ধোঁয়া ঘুরতে লাগল, আর ধীরে ধীরে সে অনুভব করল, তার শরীর যেন শক্ত হয়ে যাচ্ছে—যেন সে পাথরের মূর্তিতে পরিণত হচ্ছে!
হাসানের চিৎকার গুহার দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হলো, কিন্তু বাইরে থেকে কেউ শুনতে পেল না। ধীরে ধীরে সে সম্পূর্ণ পাথরের মূর্তি হয়ে গেল, গুহার ধন-রত্নের স্তূপের মাঝে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেল।
অধ্যায় ৪: অভিশপ্ত গুহা
গ্রামের লোকেরা হাসানকে খুঁজতে বের হলো, কিন্তু কেউ তার সন্ধান পেল না। তারা পাহাড়ের দিকে যেতে ভয় পেত, কারণ বলা হতো, যে কেউ গুহায় ঢোকে, সে আর ফিরে আসে না।
এরপর থেকে যখন রাত গভীর হয়, তখন গুহার দিক থেকে এক করুণ কণ্ঠস্বর শোনা যায়—
"আমাকে মুক্ত করো... আমি ফিরে যেতে চাই!"
গ্রামের বয়স্করা বলেন, "অভিশপ্ত ধনকে হাত দিলে যে কোনো মানুষের একই পরিণতি হবে।"
কিন্তু লোভী মানুষ বারবার চেষ্টা করেছে, আর কেউই ফিরে আসেনি...
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now