বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
চিরন্তন ভালোবাসা
প্রথম অধ্যায়: শুরু
সায়েমের জীবনে ভালোবাসা ছিল এক রহস্যময় অধ্যায়। জীবনের ব্যস্ততায় ডুবে থাকা এই তরুণ কখনো ভাবেনি, একদিন তার হৃদয় জুড়ে কোনো এক মেয়ের জন্য অদ্ভুত এক অনুভূতি কাজ করবে। কিন্তু তা-ই ঘটল, যখন তার জীবনে এলো নীলা।
নীলা ছিল স্বপ্নময়ী, যেন বসন্তের বাতাসে উড়ে আসা সুগন্ধি ফুলের পাপড়ির মতো। সায়েম প্রথমবার তাকে দেখেই মুগ্ধ হয়েছিল। নীলার হাসির মধ্যে এক ধরনের সারল্য ছিল, যা কোনো এক অলৌকিক শক্তির মতো সায়েমকে তার দিকে টেনে নিয়েছিল। কিন্তু তখনো সে বুঝতে পারেনি, এটাই হবে তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
দ্বিতীয় অধ্যায়: ভালোবাসার শুরু
সায়েম ও নীলার পরিচয়টা ছিল কাকতালীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বই নিতে গিয়ে তাদের প্রথম দেখা। নীলা যখন একটি বই নিতে গিয়ে হাত বাড়ালো, তখন সে দেখলো সায়েমও একই বই ধরতে চাচ্ছে। দু’জনের চোখাচোখি হলো, আর সেই মুহূর্ত থেকেই তাদের মাঝে এক অদ্ভুত সম্পর্ক গড়ে উঠল।
প্রথম দিকে ছিল বন্ধুত্ব, তারপর ধীরে ধীরে তা পরিণত হলো গভীর ভালোবাসায়। তারা একসঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতো, একে অপরের স্বপ্ন, আশা, এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে গল্প করত। কিন্তু ভালোবাসার পথ সবসময় মসৃণ হয় না।
তৃতীয় অধ্যায়: কঠিন সময়
নীলার পরিবার চেয়েছিল সে অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করুক। সায়েমের অর্থনৈতিক অবস্থা সেদিন খুব একটা ভালো ছিল না। সে তখন ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই ছিল, আর নীলার বাবা-মা চেয়েছিল তার জীবনসঙ্গী হোক প্রতিষ্ঠিত কেউ।
নীলা অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পরিবার অনড় ছিল। তাদের বিশ্বাস ছিল, ভালোবাসা একদিন ফুরিয়ে যায়, কিন্তু স্থিতিশীল জীবন একমাত্র নিরাপত্তা দিতে পারে। বাধ্য হয়ে নীলা পরিবারকে সম্মান দেখিয়ে সায়েমের থেকে দূরে সরে যায়।
এই বাধার মুখে পড়ে সায়েম ভেঙে পড়লেও, নীলা ছিল অবিচল। সে জানতো, ভালোবাসা কোনো সামাজিক অবস্থান দেখে না, এটি অন্তরের অনুভূতি। তবুও পারিবারিক চাপে তারা আলাদা হয়ে যায়। দিনগুলো কেটে যায় স্মৃতির গহ্বরে, কিন্তু ভালোবাসার অনুভূতি কখনোই ফিকে হয় না।
চতুর্থ অধ্যায়: বিচ্ছেদ ও পুনর্মিলন
সায়েম অনেক চেষ্টা করেও নীলাকে ভুলতে পারেনি। সে প্রতিটি মুহূর্তে নীলার স্মৃতিতে বেঁচে ছিল। তার প্রতিটি লেখায়, প্রতিটি কবিতায় ছিল নীলার উপস্থিতি। একদিকে সাফল্যের শিখরে উঠলেও, তার ব্যক্তিগত জীবন ছিল একাকীত্বে মোড়া।
বছরের পর বছর কেটে গেল। সায়েম তখন একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক, তার বইগুলো পাঠকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। একদিন এক সাহিত্য অনুষ্ঠানে সে নীলাকে দেখে। নীলা তখনো অবিবাহিত, তার চোখে ছিল পুরনো সেই চিরচেনা মায়াবী দৃষ্টি। দুজনের চোখ আবার মিলিত হলো, যেন ভাগ্য তাদের জন্য নতুন এক অধ্যায় লিখতে চায়।
সায়েম আর নীলা আবার একে অপরের কাছে আসে। তারা বুঝতে পারে, সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় না, সময়ের সাথে সাথে তা আরও গভীর হয়।
পঞ্চম অধ্যায়: শেষ পরিণতি
নীলা ও সায়েম অবশেষে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা একসঙ্গে নতুন জীবন শুরু করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তাদের ভালোবাসা ছিল সময়ের চেয়ে শক্তিশালী, পারিবারিক বাধার চেয়ে দৃঢ়। তারা প্রমাণ করলো, প্রকৃত ভালোবাসা চিরন্তন—যা কোনো বাধাই মুছে দিতে পারে না।
বিয়ের দিন, নীলা যখন লাল শাড়িতে সায়েমের সামনে এসে দাঁড়ায়, তখন সায়েম মনে মনে বলে ওঠে, "ভালোবাসা সত্যিই চিরন্তন।" তাদের জীবন নতুন এক গল্পের শুরু করে, যা যুগ যুগ ধরে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now