বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
তখন পড়ন্ত বিকেল। আমি নদীর পাড়ে বসে আছি। একা নয়। সাথে আমার প্রিয় বন্ধু আনারও আছে। আমার জীবনে কাটানো সময়গুলোতে বন্ধুদের মধ্যে আনারই একমাত্র। যাকে আমি মন থেকে ভালোবাসি এবং তার পাশে থাকি। আর তাকেই সবচেয়ে বেশি সময় দিয়েছি। আমরা সময় পেলেই গ্রাম-গুলোকে, নদী-গুলোকে আপন করে নিই।
সন্ধ্যার পর যার যার বাড়িতে ফিরে গেলাম। আমার বাড়ি বলতে খালার বাসা। বাড়িতে আসতেই খালা বলল, ভালো একটা খবর আছে, সু-খবর তোমার জন্য।
আমিঃ- আমার আবার সু-খবর?(মনে মনে বললাম)
সুজাতা খালাঃ- এদিকে এসো (খালা ফিসফিসিয়ে বলল)
তোমার শামসুন্নাহার খালা এসেছিলো।
আমিঃ- কেন?
সুজাতা খালাঃ- বেড়াতে এসেছিলো..
আমিঃ- ওহ্। (মনে মনে বললাম এটা আর সু-খবর হল?)
সুজাতা খালাঃ- তোমার খালা বলল, তোমার সাথে নাঈমার বিয়ে দিতে পারলে ভালো হতো! কয়েকবার বলল।
আমিঃ- সত্যি?????? (আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম)
সুজাতা খালাঃ-হুম। ভালোই হবে। তাদের তো কোনো ছেলে নেই। ছেলের মতোই তোমাকে দেখে। তাছাড়া মেয়েও অনেক ভালো। পর্দানশীন, শিক্ষিত, নম্র-ভদ্র এবং শান্ত স্বভাবের।
আমিঃ-(যদিও মনে মনে অনেক খুশি, তবুও পার্ট নিলাম একটু) হুম মেয়ে অনেক ভালো জানি৷ কিন্তু নিজেদের মধ্যে এসব করা কি ঠিক হবে? লোকজনে তো এসব পছন্দ করে না!
সুজাতা খালাঃ- শুনো লোকজনে কি সংসার করবে নাকি তুমি করবা?
আমিঃ- দেখেন, খালার সাথে কথা বলুন চিন্তা ভাবনা করুক। ওনার মেয়েরা আছে, মেয়ের জামাইরা আছে। সিদ্ধান্ত নিক তারা,আমি রাজি আছি। (বলেই ফেললাম)
এরপর আমার তো রাতে ঘুমই হচ্ছে না৷ এ-কি শুনলাম? বিয়ে করবো আহা! কি আনন্দ? নিজেকে লাজুক লাজুক লাগছে। তবুও মনে মনে অনেক খুশি খুশিও লাগছে। নাঈমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু হল আমার। প্রতিটা রাত,প্রতিটা মুহুর্তে আমার ভাবনায় এসে দাঁড়িয়ে থাকে শুধু নাঈমা।
একদিন সুজাতা খালা আমাকে ফোন দিতে বলল শামসুন্নাহার খালার কাছে। আমার কাছে খালার নাম্বার ছিল। ফোন দিলাম। কিন্তু ফোন ধরলো,নাঈমা।
আমিঃ- আসসালামু আলাইকুম।
নাঈমাঃ- ওয়ালাইকুম সালাম,কে?
আমিঃ- আমি রূপচাঁন, খালা কোথায়?
নাঈমাঃ- মা তো বাইরে গেছে, তুমি কেমন আছো?
আমিঃ- আমি ভালো আছি, তুমি?(আমার হার্টবিট বাড়ছে)
নাঈমাঃ- হুম ভালো আছি। কি করো?
আমিঃ- এইতো বসে আছি। খালা এলে মিসকল দিও?
নাঈমাঃ- আচ্ছা।
লাইন কেটে দিলাম। মনটা যদিও কথা বলার জন্য আকুবাকু করছিল, তবুও কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছিলাম না তখন। তাছাড়া সুজাতা খালা পাশেই ছিল আমার। একটু পরেই মিসকল...
কলব্যাক করলাম। কলটা নাঈমা ধরলো না৷ শামসুন্নাহার খালা ধরলো।
শামসুন্নাহার খালাঃ- হ্যালো।
আমিঃ- আসসালামু আলাইকুম। খালা কেমন আছেন?
শামসুন্নাহার খালাঃ- কে রূপচাঁন?
আমিঃ- হুম।
শামসুন্নাহার খালাঃ- ভালো আছি,তুমি কেমন আছো?
আমিঃ- জ্বি। ভালোই আছি..নেন খালার সাথে কথা বলেন।
ফোনটা সুজাতা খালার হাতে দিয়ে দিলাম। দুই খালার আলাপন চলছে।
বিয়ের আলাপ চলছে। আমি রাজি কিনা সেটাই জানতে ফোন দিয়েছে শামসুন্নাহার খালা। সুজাতা খালা বলল, রূপচাঁন
তো রাজিই আছে। কিন্তু ওর বাবা রাজি হবে কি-না সেটাই চিন্তার বিষয়।
এসব আলাপ করলো তারা। তারপর ফোন আমার হাতে দিল খালা। তারপর শামসুন্নাহার খালা বলল,রূপচাঁন আমাদের এখানে তো আসো না,বেড়াতে আইসো সময় করে!
আমি বললাম,আচ্ছা আসবো।
এরপর শামসুন্নাহার খালা ঘনঘন সুজাতা খালার বাসায় আসতো। আমার খবর নেওয়ার জন্য। আমি খালাকে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি যে, আমি যা বলবো বাবা তা-ই মেনে নিবে। বাবাকে রাজি করানোর দ্বায়িত্ব আমার।
সেদিন সন্ধ্যায় ২টা মিসকল। আমি নামাজে ছিলাম। তাই দেখিনি। কলব্যাক করলাম। ফোন ধরলো নাঈমা। আমাকে বলল,কেমন আছো? খোঁজ খবর তো নাও না আমার।
আমিঃ- সময় পাইনা, কাজে ব্যস্ত থাকি তো তাই আরকি। তুমি কেমন আছো?
নাঈমাঃ- হুম ভালোই আছি।
আমিঃ- কি করো?
নাঈমাঃ- শুয়ে আছি, তুমি?
আমিঃ- এইতো বসে আছি।
নাঈমাঃ- আমাকে মাঝে মাঝে মেসেজে ছন্দ লিখে দিও।
আমিঃ- আচ্ছা।
এরপর থেকেই শুরু হল রূপচাঁন আর নাঈমার ভালোবাসার আলাপন। একটু একটু করে মেসেজে খবর নেওয়া,একটু একটু কেয়ার করা। কে কি করছে,কখন কি খাচ্ছে?
নাঈমাঃ- তুমি আমাকে ভালোবাসো আর বলতে পারো না?
আমিঃ- শোনো,আমি তোমাকে কোনোদিন ঐ চোখে দেখিনি। কখনো ভাবিনি, তুমি আমার জীবনসঙ্গী হবে। আমাকে সুজাতা খালা যখন এই কথা বলল,তখন আমি যেন জীবনের রঙ খুঁজে পেলাম। তখনই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
আমি চেয়েছিলাম, আমার জীবনে যেন,একটা পর্দানশীল, নম্র-ভদ্র শান্ত স্বভাবের মেয়ে আসে। যাকে নিয়ে আমি জীবনের সব পথ একসাথে পাড়ি দিতে পারব। সেই তুমি আজকে আমার ভালোবাসা হয়ে জীবনে এলে। আমি কল্পনাও করিনি তোমার আমার বিয়ে হবে।
নাঈমাঃ- আমি কিন্তু তোমার আগে থেকেই জানি।
আমিঃ- ওহ্! তাই? আমাকে তাহলে বলো নাই কেন?
নাঈমাঃ- আরে মেয়েরা আগে থেকে কি কিছু বলতে চায় নাকি?আমার লজ্জা করে না কি?
আমিঃ- হা!হা!হা! এতো লজ্জা কার জন্য গো?
নাঈমাঃ- তোমার জন্য। তুমি তো বলতে পারলেনা!
আমিঃ- আরে আমারও লজ্জা করেছে তোমাকে ভালোবাসার কথা বলতে। এখন বলছি... আই লাভ ইউ।
নাঈমাঃ- আই লাভ ইউ টু।
এভাবেই প্রেমের সুচনা হয়। বেড়ে যায় ভালোবাসা। নাঈমার পরিবারের সবাই রাজি এই বিয়েতে। একদিন হল কি?
নাঈমাকে দেখতে এলো পাত্রপক্ষ। কথাটা জানিয়ে দিল রূপচাঁনকে। রূপচাঁন তো মন ভার করে রইলো। এটা কি হচ্ছে?
বিয়ে ঠিক তবুও পাত্রপক্ষ কেন আসে? কিছুক্ষণ পর নাঈমা মেসেজ দিল রূপচাঁনকে যে, ওদেরকে না করে দিয়েছে। তাদের বলা হয়েছে বিয়ে ঠিক করা আছে।
এরপর রূপচাঁন যেন প্রাণ ফিরে পেল,প্রাণ ফিরে পেল নাঈমাও।
নাঈমাঃ- এই তোমার কি মন খারাপ?
আমিঃ- হুম।
নাঈমাঃ- কেন?
আমিঃ- তুমি জানোনা?
নাঈমাঃ- হুম। শোন তুমি আমাকে তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলো তো। তাহলে আর চিন্তা থাকবেনা।
আমিঃ- হুম৷ আমি তো অনেক চেষ্টা করছি জমি কেনার জন্য। কিন্তু এই অল্প টাকায় ভালো জমি পাচ্ছি না।
নাঈমাঃ- জমির খোঁজ করতে থাকো তাড়াতাড়ি। নয়তো অন্য কেউ আমাকে বিয়ে করে নিয়ে চলে যাবে।
আমিঃ- তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না?
নাঈমাঃ- হুম। অনেক ভালোবাসি।
আমিঃ- আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে?
নাঈমাঃ- সেটা ভাবিনি।
আমিঃ- মানে?
নাঈমাঃ- তোমাকে ছাড়া কিছু ভাবিনি এখনো।
আমিঃ- তোমার বাবা মা যদি অন্য কোথাও তোমার বিয়ে ঠিক করে? তাহলে কি করবে?
নাঈমাঃ- করবেনা। ওরা তোমার সাথেই বিয়ে দিবে।
আমিঃ- মানুষ তো পরিবর্তনশীল। যদি ভালো চাকরিজীবি ছেলে পেয়ে তোমার বিয়ে ঠিক করে ফেলে? তুমি কি আমার সাথে পালাতে পারবে?
নাঈমাঃ- শোন আমি তোমাকে ভালোবাসি, মন থেকে ভালোবাসি। কিন্তু তারা যদি আমার বিয়ে অন্য কোথাও ঠিক করে তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে যেতে পারবোনা। তাদেরকে কষ্ট দিতে পারবোনা।
আমিঃ- আর আমার কষ্ট যে হবে, সেটা?
নাঈমাঃ- আমারও তো কষ্ট হবে। তবুও মেনে নিতে হবে।
আমিঃ- আমি মেনে নিতে পারবোনা।
নাঈমাঃ- তাহলে কি করবে?
আমিঃ- তোমাকে নিয়ে পালাবো।
নাঈমাঃ- আমি যাবোই না। মরে গেলেও যাবোনা।
আমিঃ- তুৃমি আমাকে তাহলে ভালোই বাসোনা।
নাঈমাঃ- তুমি আমাকে এই চিনলে? ভালোবাসার প্রমাণ দিতে হলে পালাতে হবে কে বলেছে?
আমিঃ- তাহলে তো দুজনকেই কষ্ট পেতে হবে।
নাঈমাঃ- শোন, আমাদের ভালোবাসা যদি আমাদেরকে কষ্ট দেয়। তাহলে আমরা তাকেই মেনে নিবো। কারণ সব ভালোবাসার তো আর সুখ হয়না।
আমিঃ- হুম৷ তুমি ঠিকি বলেছো।
নাঈমাঃ- তুমি একটা পাগল।
আমিঃ- কেন?
নাঈমাঃ- এই যে, অযথা উল্টাপাল্টা ভাবনার দুয়ারে বসে মন কে ভার করে যাচ্ছো?
আমিঃ- শোন তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। তাই হারানোর ভয় থেকে এসব ভেবে তোমার উত্তরের আশায় প্রশ্ন করেছি। কিন্তু তুমিই তো আমাকে আশ্বাস দিলে না।
নাঈমাঃ- শোন আশ্বাস দিতে পারবোনা। তবে বিশ্বাস দিতে চাই।
আমিঃ- যেমন?
নাঈমাঃ- যদি বিশ্বাস করো আমাদের ভালোবাসা খাঁটি। তবে আমাদের মিলন হবেই হবে। আল্লাহ্ যদি আমাদের মিলন রেখে থাকেন। তবে আর কার সাধ্য থাকে তোমার থেকে আলাদা করার?
আমিঃ- হুম।
নাঈমাঃ- এবার হাসো সোনা। আর একটা কিস দাও আমাকে।
আমিঃ- হা!হা!হা! উম্মাহহহহহহহহহ।
নাঈমাঃ- উম্মাহ্। আই লাভ ইউ জানু।
আমিঃ- আই লাভ ইউ টু গুলগুলি ময়না পাখি।
নাঈমাঃ- ঐ আমি গুলগুলি?
আমিঃ- হা!হা!হা! হুম তুমি একটা গুলগুলি বউ।
নাঈমাঃ- যাও তোমার সাথে কথা বলবোনা।
আমিঃ- তাহলে আমি তোমার কাছে চলে যাবো। গিয়ে তোমার রাগ ভাঙাবো।
নাঈমাঃ- রাগ ভাঙবেনা।
আমিঃ- আমি যদি তোমার কাছে গিয়ে তোমার কোমর জড়িয়ে ধরে বলি সরি সরি সরি। তাহলে?
নাঈমাঃ- হা!হা!হা! তাহলে রাগ পালাবে। আর কি করবা যদি তাতেও রাগ না ভাঙে?
আমিঃ- তাহলে তোমাকে পেছনে ঘুরিয়ে সোজা কুলে তুলে নিবো।
নাঈমাঃ- এহ্ শখ কত? ওজন আছে তুলতে পারবানা।
আমিঃ- কাছে থাকলে এখনি দেখিয়ে দিতাম।
নাঈমাঃ- তারপর আর কি করতা জানু?
আমিঃ- তারপর তোমাকে কোলে করে বিছানায় ফেলে দিবো।
নাঈমাঃ- তারপর?
আমিঃ- তারপর তোমাকে জড়িয়ে ধরে...
নাঈমাঃ- জড়িয়ে ধরে কি? কি করবা হুম?
আমিঃ- আদর দিতাম অনেক।
নাঈমাঃ- তাহলে এখনি চলে আসো।
আমিঃ- সত্যিই চলে আসবো কিন্তু।
নাঈমাঃ- আরে না না। চাইলেই কি আর আসা যায়?
আমিঃ- হুম।
নাঈমাঃ- বাট, আই মিস ইউ।
আমিঃ- মিস ইউ টু ময়না পাখি।
এভাবেই চলছে ভালোবাসার শহরে দুজনার আনাগোনা। হাজারো আশায় মন দুজনার স্বপ্নে বিভোর।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
★ রোদেলা রিদা ★
User ২ বছর, ৮ মাস পুর্বেরিয়াদুল ইসলাম রূপচাঁন
Golpobuzz ২ বছর, ৮ মাস পুর্বে★ রোদেলা রিদা ★
User ২ বছর, ৮ মাস পুর্বে