বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
মিস বললেন, দাঁড়াও। আমি একটা সম্পাদকীয় লিখি। তোমরা একেকজন একেক টুকরা কাগজে কাজ সারো। গুড্ডু, তুমি এই ছড়াটা কপি করে ফেলো। জামিল, তুমি এখানে একটা বিড়ালের ছবি আঁকো। রাশেদ, তুমি এই ড্রয়িংটায় রং করো।
এসব করতে করতে সন্ধ্যা পেরিয়ে গেল। যখন তাঁদের কাজ শেষ হলো, তারা দেখল, তাদের ক্লাসরুমের দরজায় বাইরে থেকে তালা দেওয়া। পুরো স্কুলেই বোধ হয় আর কেউ নেই।
মিস তাঁর মোবাইল ফোনে হাত দিয়ে বললেন, সর্বনাশ। আমার ফোনে তো চার্জ নেই।
এখন তারা বের হবে কী করে।
তারা চিৎকার করতে লাগল। কিন্তু সেই বিশাল স্কুল ভবনের পাষাণ দেয়ালে সেই চিৎকার প্রতিধ্বনিত হয়ে তাদের কাছেই ফিরে ফিরে আসতে লাগল।
জামিল বলল, মিস, আমি বাথরুমে যাব।
মিস বললেন, চুপ করে থাকো। সহ্য করো। সাহস হারাবে না। একটা বুদ্ধি হবেই। তিনি নিজে কেঁদে ফেললেন।
স্কুলের বাইরে হইচই পড়ে যেতে সময় লাগল। রাত আটটার দিকে টেলিভিশনগুলোয় খবর প্রচারিত হতে লাগল, স্কুলের একজন শিক্ষিকা আর তিনজন ছাত্র হারিয়ে গেছে। যারা হারিয়ে গেছে, তাদের নাম হলো...
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হাসিবুল হক বলেছেন, যেভাবেই হোক, তাদের উদ্ধার করা হবে। এদিকে অনলাইন নিউজ পোর্টালে খবর বেরোল, মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে তিনটা গোয়েন্দা সংস্থা।
বিজ্ঞাপন
গুড্ডুবুড়া বলল, মিস, সমস্যায় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। যা করার করতে হবে বুদ্ধি দিয়ে।
জামিল বলল, পেছনের জানালার কাচ ভেঙে, গ্রিল ভেঙে আমরা লাফ দিতে পারি।
গুড্ডুবুড়া বলল, তাতে মরার চান্স বেশি। বরং শুক্র–শনিবার পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারলে রোববার সকালে তো দরজা এমনিতেই খুলে যাবে।
চশমা মিস বললেন, আমার ছেলেটা আমাকে না দেখলে ঘুমাতে পারবে না। তিনি ‘আয়মান আয়মান’ বলে কাঁদতে লাগলেন।
গুড্ডুবুড়া বলল, পেয়েছি। সমস্যার সমাধান পেয়েছি। হয়ে যাবে।
সে কাগজ একখানে করল।
নিজের স্কুল ব্যাগ থেকে দুটি খাতাও বের করল। খাতার এক কোণে পানিও ঢালল ফ্লাস্ক থেকে।
তারপর দেশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিল কাগজে।
কাগজ জ্বলছে। পানি লাগা কোণে আগুন গেল। ধোঁয়া হলো।
ক্লাসরুমে স্মোক ডিটেকটর তো ছিলই। জ্বলে উঠল ফায়ার অ্যালার্ম। একটু পরে ছুটে এল গার্ডরা। এসে দেখল, ক্লাসরুমের ভেতরে আটকে আছে চারজন।
তাড়াতাড়ি দরজা খোলা হলো। গুড্ডুবুড়ার সামনে গার্ড হাবিব মামা। তাঁর হাতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। গুড্ডু বলল, হাবিব মামা। ওই আগুন নেভাতে যন্ত্র লাগবে না। আমার ফ্লাস্কের পানিতেই হবে।
হাবিব মামা বললেন, না না, দেখি, যন্ত্রটা কাজ করে কি না। ট্রায়াল দিই। আগুন নিভে গেল মুহূর্তেই।
টেলিভিশনগুলোয় খবর দেখানো হচ্ছে, পুলিশের বিশেষ তৎপরতায় জিনিয়াস স্টুডেন্টস স্কুলের নিখোঁজ চারজন ছাত্র-শিক্ষক উদ্ধার।
প্রিন্সিপাল মিস ছুটে এলেন। তিনি বললেন, মিস, কীভাবে উদ্ধার পেলেন আপনারা?
চশমা মিস বললেন, আমি তখন ভাবছি কী করা যায়। ভাবলাম, চিঠি লিখে লিখে রকেট বানিয়ে উড়িয়ে দেব। ঠিক সেই সময়ে আমার আয়মানের কথা মনে পড়ল। তো আয়মান খুব দুষ্টু। ওর বাবার আবার ভীষণ সমস্যা। ডাল না হলে রাতে ভাত খেতে পারে না। যখন আমি ভাবছি...
জামিল বলল, গুড্ডুবুড়ার বুদ্ধিতে আমরা বের হতে পেরেছি ম্যাডাম। গুড্ডুবুড়া আমাকে বলল, স্মোক ডিটেকটর আছে। ধোঁয়া বানাতে হবে। ভাগ্যিস মশা ছিল ক্লাসে। মশার কয়েলের জন্য দেশলাই রাখা ছিল।
গুড্ডুবুড়ার মাথায় যে অনেক বুদ্ধি, তা স্কুলের সবাই জানে। এ আর নতুন কী কথা!
গুড্ডুবুড়া গেল সেই ডাক্তার আংকেলের কাছে। ডাক্তার আংকেলকে বলল, আচ্ছা আংকেল, বলুন তো, একটা বাচ্চা ছেলে যদি পিঁপড়া পোষে, তাতে আপত্তির কী হলো? একটা বাচ্চা পিঁপড়াদের সঙ্গে কথা বলে, গান গায়, সেটা কি এমন বোকার মতো কিছু? ইমাজিনেশন কি খারাপ কিছু?
ডাক্তার আংকেল গুড্ডুবুড়াকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন, না, ইমাজিনেশন বা কল্পনাই আসল। আইনস্টাইন বলেছেন, ‘ইমাজিনেশন ইজ মোর ইম্পরট্যান্ট দ্যান নলেজ।’ তুমি যদি পিঁপড়া পোষো, তাদের সঙ্গে গল্প করো, কথা বলো, গান করো, তা খারাপ কিছু নয়।
-----------সংগৃহীত -------------
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now