বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) [এক]

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান তাতিয়ানা (০ পয়েন্ট)

X loveবিসমিল্লাহির রহমানির রহিমlove বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) [এক] ড.হিশাম আল আওয়াদী অনুবাদঃ মাসুদ শরীফ মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর শিশুকাল সাধারণত বাচ্চাদের ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে প্রথম ছয় মাসে।এ সময়টাতে তাদের যথেষ্ট ভালোবাসা আর মনোযোগ প্রয়োজন।'কোয়ালিটি টাইম' বা মানসম্পন্ন সময় বলে আমরা একটা বিষয় জানি। আমাদের ব্যস্ত জীবন আর ক্রমাগত সব মনোযোগ বিঘ্ন করা বিষয়ের মাঝে শিশুদের আরো বেশি সময় দিতে হবে।যত্ন নিতে হবে।বিধবা মা আমিনার আলিঙ্গন,চুমু আর মায়াভরা হাসির মধ্যে দিয়ে শিশু মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আবেগি প্রয়োজন গুলো পূরণ হয়েছে। শিশুদের জন্য এমন আনন্দময় পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।যাতে তারা জীবনের জরুরি দক্ষতা অর্জন করতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর ক্ষেত্রে সেটা ছিলো মরুপ্রান্তর। আমাদের জন্য তা হতে পারে স্কুল , মাদ্রাসা দিবা সেবা কেন্দ্র,রিডিং ক্লাব,আত্নীয়স্বজনের বাসা বা শিশুকেন্দ্রিক ফিটনেস সেন্টার। মানসিক বিকাশঃ ছয় বছর বয়স পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) তার মায়ের কাছে ছিলেন।মা মারা যাওয়ার পর প্রথমে দাদা আব্দুল মুত্তালিব এবং পরে চাচা আবু তালিবের সাথে থাকেন।একটি শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য যে ধরনের আদর , ভালোবাসা ও যত্ন দরকার ছিলো তার সবই তিনি তাদের কাছে পেয়েছিলেন।অন্যদিকে , মরুভূমির কঠিন পরিবেশ তাকে দিয়েছে জীবনমুখী নানা দক্ষতা অর্জনের উৎসাহ। শিশুর ব্যক্তিত্বগড়ে ওঠে প্রথম ছয় বছরে।প্রথম বছরে শিশুর মধ্যে অনুভূতি জন্ম লাভ করে।দ্বিতীয় বছর থেকে তার শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হতে থাকে।তৃতীয় বছরে বাচ্চারা অন্যের সাথে ভাববিনিময় করতে শেখে। চতুর্থ বছর থেকে ধীরে ধীরে তারা হয়ে ওঠে আত্ননির্ভরশীল । পঞ্চম আর ষষ্ঠ বছরে তারা নিজেদের চাওয়া পাওয়া গুলো তুলে ধরতে শেখে এসময় নিজেদের আবেগ অনুভূতি গুলো আরও ভালোভাবে প্রকাশ করতে শেখে। শিশুদের এই ছয় বছরের ব্যাপারগুলো একটি চার্টে আমরা দেখবো। ____________________________ ■প্রথম বছর---অনুভূতি জন্মলাভ করে। ■দ্বিতীয় বছর---শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হতে থাকে। ■তৃতীয় বছর---অন্যের সাথে ভাববিনিময় করতে শেখে। ■চতুর্থ বছর ---আত্ননির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করে। ■পঞ্চম বছর---চাওয়া পাওয়া তুলে ধরতে শেখে। ■ষষ্ঠ বছর---চাওয়া পাওয়া তুলে ধরতে শেখে। ____________________________ এই অধ্যায়ে আমরা ছয় বছর বয়স পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) বাল্যকালকে দেখবো।তাকে বড় করতে গিয়ে তার মা এবং দুধ-মা কি বিশাল ভূমিকা রেখেছিলেন তা দেখবো।এরপর দেখবো,তার শিশুকালের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা কিভাবে শিশুদের বড় করতে পারি__ ছয় বছরের নিচে বাচ্চারাঃ পরিবেশ আর ব্যক্তিত্ব ভেদে শিশুদের বেড়ে ওঠার গতি কমবেশি হয়ে থাকে।সে হিসেবে বলতে গেলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বয়সের তুলনায় একটু বেশিই বড় ছিলেন।তার বয়স যখন দুবছরের নিচে ,তখন তার এনার্জি দেখে অনেকেই অবাক হতেন।তারপর ও শিশুদের মাঝে কিছু ব্যাপার থাকে যা মোটামুটি সবার জন্য এক।ছয় বছর পর্যন্ত একজন শিশুর  বেড়ে ওঠার ব্যাপারগুলো আমরা আরেকটি চার্টে দেখবো__ ____________________________ ■ছয় মাস___ শিশু তার মায়ের কন্ঠ চিনতে পারে। পরিচিত চেহারা দেখে হেসে ওঠে। ■নয় মাস___ তাদের মাঝে প্রথম কৌতুহলের ছাপ পাওয়া যায়।মাঝে মাঝে উদ্বেগ ও দেখা যায়। ■এক বছর___চারপাশ ঘুরে দেখার ইচ্ছে জাগে। সাধারণ নির্দেশনা গুলো বুঝতে শেখে। ■দুই বছর___প্রায় দু'শ শব্দের মতো শব্দভান্ডার জমা হয়। ■তিন বছর___এটা কেন? ওটা কেন? এমন প্রশ্ন করতেই থাকে।অন্যদের সাথে খেলাধুলা ও সাহায্যের মনোভাব গড়ে ওঠে।অন্যকে খুশি করতে চায়। ■চার বছর___কিছুটা আত্ননির্ভরশীল হয়ে ওঠে। মজা করে।এক থেকে বিশ গুণতে শেখে। ■পাঁচ বছর___শব্দভান্ডার আরো সমৃদ্ধ হয়। সময়ের ব্যাপারে সজাগ হয়। ■ষষ্ঠ বছর___কথাবার্তা বলায় আস্থাশীল হয় এবং কৌতুহল আরো বৃদ্ধি পায়। ____________________________ শিশুরা সাধারণত প্রথম পর্যায়গুলো মায়ের সাথে বেশি কাটায়। অনুভূতি সংক্রান্ত চাহিদা গুলো তিনিই পূর্ণ করেন।আর পরবর্তি পর্যায়গুলো সামাজিক আর ভাষাগত দক্ষতা অর্জনে কেটে যায়। আমরা দেখি যে, আল্লাহর রাসূল সা এর জীবনেও এমনটা হয়েছে। অন্য আর দশটা শিশুর মতো তার ঐ সময়টা ও কেটেছে মায়ের সাথে। ভালোবাসার চাহিদা পূরণঃ বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের আর্থিক দায় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন দাদা আব্দুল মুত্তালিব।সংসার খরচের চিন্তা না থাকায়  মা আমিনা তার পুরো সময়টা ছেলের পেছনে দিতে পেরেছিলেন ‌।চাচা আবু তালিব বাবা না থাকার কষ্ট কিছুটা হলেও পুষিয়ে দিতে পেরেছিলেন। কখনো আদরঘন আলিঙ্গন, কখনো মমতা মাখা চুমু, কখনো বা শিশু মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) দিকে তাকিয়ে ভালোবাসার হাসি। এভাবেই তাকে আগলে রেখেছিলেন মা আমিনা। শিশুকালে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মায়ের সাথে খুব বেশি একটা সময় কাটাতে পারেন নি। অনেক শিশুরা এ বয়সে মায়ের সাথে অনেক সময় কাটায় । কিন্তু তারপরেও শিশু মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছিলেন ,সেটা আজকাল অনেক শিশুর ভাগ্যেই জোটে না। আজকালকার মা'রা অনেক বেশি ব্যস্ত। অনেক দায়িত্ব; ঘর সামলানো; চাকরি; স্বামীসেবা;  অন্যান্য বাচ্চাদের দেখভাল ইত্যাদি।মা আমিনার কাঁধে এতো বোঝা ছিলো না।সংসার খরচের দায়ভার নিয়েছিলেন দাদা।কুড়ি বছরেই বিধবা আমিনাকে এসব নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয় নি। মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার একমাত্র সন্তান ছিলো এটাও বেশ কাজে এসেছে। তখনকার সমাজে সন্তানের বেড়ে ওঠায় বাবারাই মূল ভূমিকা পালন করতেন। কিন্তু পরিস্থিতির দাবী মেনে মা আমিনা তার মাতৃসুলভ ভালোবাসা ও আদরের পুরোটাই মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) ওপর ঢেলে দিয়েছিলেন। সন্তানের ওপর ভালোবাসার প্রভাবঃ শিশুর মানসিক বিকাশে ভালোবাসা আর আদরের প্রভাব অনেক।এতে তার নিজের ব্যাপারে আস্থা জাগে আত্নবিশ্বাস জাগে।আবেগ অনুভূতি জেগে ওঠে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়,এতে করে শিশুরা নিজেদের নিরাপদ মনে করে। পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে।আপনিও  আপনার বাচ্চাকে জরিয়ে ধরুন। ঘুম থেকে উঠার পর কিংবা বাইরে থেকে বাসায় এসে তাকে সালাম দিন।চুমু দিন।তার সাথে খেলুন।এতে ওর মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখবে।আত্নমর্যাদা বাড়বে। আপনার অবস্থা হয়তো এমন না যে, পারফেক্ট বাবা মা হবেন। কিন্তু যতোটুকু পারুন ওকে সময় দিন,আদর করুন।মনোযোগ দিন।মাঝে মধ্যে বা বিশেষ কোনো ঘটনায় ওর প্রতি আদর না দেখিয়ে নিয়মিত দেখান। কিভাবে শিশুর মানসিক চাহিদা পূরণ করবেনঃ ■ প্রতিদিন চুমু দিন, জরিয়ে ধরুন। ■ ওর কথা মন দিয়ে শুনুন,বাধা দেবেন না। ■ বাসার বাহিরে থাকলে ফোন দিয়ে কথা বলুন।  ■ওর সাথে খেলুন, নিজের পোশাক ময়লা হওয়া নিয়ে চিন্তার দরকার নাই। ■ ভালোবাসা দিয়ে দিন শুরু করুন। আর অখুশি হয়ে কখনো দিন শেষ করবেন না।¹ সন্তানের জন্য বাঁচাঃ মা আমিনার স্বামী মারা যান ৫৭১ সালে। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র বিশ।তারপর ও কিন্তু তিনি আর বিয়ে করেননি।তখনকার সমাজে অবশ্য বিধবাদের খাটো চোখে দেখতো না।যাদের বংশ ভালো ছিলো তাদের উঁচু নজরে দেখতো।আমিনার রূপ আর কবিতা আবৃত্তির গুণে চাইলেই তিনি আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে পারতেন।সমাজ যে তাকে এ ব্যাপারে পীড়াপীড়ি করেনি তা কি করে বলি?  কিন্তু তিনি বিধবাই থেকে গেলেন।সেই সমাজে বড় পরিবারের আলাদা মর্যাদা ছিলো।আমিনার মনেও হয়তো অমন বড় পরিবারের স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু তিনি তার ছেলে মুহাম্মাদের জন্য নিজেকে কোরবান করেছিলেন।তার এই সিদ্ধান্ত মোটেও স্বাভাবিক ছিলো না ‌ । ছিলো প্রথাবিরোধী।বিশ বছর বয়সী এক তরুণীর জন্য এই সিদ্ধান্ত যে অনেক কষ্টের ছিল,তা বলাই বাহুল্য। কিভাবে নিজের সন্তানকে অগ্রাধিকার দিবেনঃ শিক্ষাবিদরা শিশুদের জন্য আলাদা সময় রাখার গুরুত্বের কথা বলেন।যেন মনে হয়, শিশুদের সাথে সময় কাটানো একটা বোঝা।আনন্দের কিছু না। চাকুরীজীবি মায়েরা তাদের সন্তানদের যথেষ্ট সময় দিতে পারেন না।এতে অনেক মা'ই  মনে মনে এক ধরনের অপরাধবোধে ভোগেন। তাদের অপরাধবোধে প্রলেপ দেওয়ার জন্য "আলাদা সময়" ধারণার জন্ম হয়।অথচ আলাদা সময়ের বদলে আমাদের তো শিশুদের সাথে এমনিতেই সময় কাটানোর কথা।আর সেটাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে।ঘড়ি ধরে কেন? কত সুন্দর ভাবে সময় কাটাচ্ছি ,সাথে সাথে কতোক্ষণ সময় কাটাচ্ছি সেটাও কম গুরুত্বপূর্ণ না।বাবা মা ' রা সন্তানের সাথে যতো বেশি সময় কাটাবে (এখানে বেশি বলতে সময়ের কথা বলছি) তাদের মানসিক, সামাজিক একাডেমিক সমস্যা তত কম হবে। মাদকে জরানোর আশঙ্কা কমবে।বখাটেগিরি বা এ ধরনের কোনো অপরাধমূলক কাজ অথবা বিয়ের আগে বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে হারাম সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা কমবে। লরা রামিরেজের কথায় এমনটাই পাওয়া যায়_ "বাচ্চাদের পার্কে নিয়ে যান। এটা ভালো। কিন্তু এটা কোনো ভাবেই ভালো প্যারেন্টিয়ের বিকল্প নয়।বাবা-মাকে তাদের বাচ্চাদের ছায়া হয়ে থাকতে হবে।এর মানে তাদের সাথে ভালো সময় কাটাতে হবে। ওদের সময়টা যখন ভালো যাবে না, তখন ওদের পাশে থাকতে হবে। ওদের প্রতিটা সমস্যায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। বাচ্চার সাথে সময় কাটানোর মানে কিঃ ◉ সময় কাটানোর মানে এই না যে, সব সময় কিছু না কিছু করতেই হবে। ওদের সাথে থেকে ওরা কি করছে না করছে তার ওপর নজর রাখাই যথেষ্ট। ◉ ওকে সময় দেওয়া সংসারের টুকিটাকি কাজের অংশ নয়। কাজেই ওকে এমনভাবে সময় দেবেন না, যাতে ওর মনে এই ধারণা  উঁকি দেয়। ◉ যেকোনো সময় আপনার কাছে ঘেঁষতে ওর মনে যেন কোনো ধরনের সংকোচ কাজ না করে। মরু শিক্ষাঃ রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছোট বেলায় শুধু মা'র কাছে থেকেই শিখেন নি। তার দুধ মা হালিমা এবং তার পরিবার থেকেও মানসিক বিকাশের শিক্ষা নিয়েছেন।হালিমার আরো তিন সন্তান ছিল_আব্দুল্লাহ,আনিসা,শায়মা। সাথে ছিল তার স্বামী আল হারীস। মক্কা থেকে তাদের বাড়ির দূরত্ব ছিলো ১৫০ কিলোমিটার।মাঝে মাঝেই এখান থেকে মক্কায় যাওয়া হতো তার।প্রায় চার বছর তিনি এখানে কাটিয়েছেন। অনেক কিছু শিখেছেন এখান থেকে। সে সময়কার আরব উপদ্বীপের মরুভূমি অঞ্চল সম্পর্কে জানলে সহজে বুঝতে পারব রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাল্যকালে মরুভূমির ভূমিকা কেমন ছিলো।কী কী মূল্যবোধ তিনি এখান থেকে শিখেছেন‌________ তখন স্কুল কলেজ বলতে তেমন কিছুই ছিলো না। মরুভূমির এক একটা পরিবারই ছিলো এক ধরনের স্কুল। শহরের বাবা মা'রা বাচ্চাদের চারিত্রিক বিকাশের জন্য ,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যেই মরুর এসব পরিবার শিশুদের গ্রামে পাঠাতেন। মূলত, গ্রামাঞ্চল ও মরুভূমির চেয়ে শহর অঞ্চলে অসুখ বিসুখের মাত্রা ছিলো তুলনামূলক বেশি। শহরের জনসংখ্যা ছিলো প্রায় বিশ হাজার। ইসলামের বার্তা পুনরায় চালু হবার আগে থেকেই সেখানে হজ্বের রীতি বহাল ছিল। হজ্বের সময় স্বাভাবিক কারণে  লোকজনের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেত।যার কারণে নানারকম রোগ বালাই এর আশঙ্কা ও বৃদ্ধি পেত।এসব কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সেসময় অধিকাংশ শহুরে পরিবারের বাচ্চাদের মরু অঞ্চলে পাঠানো হতো। তাছাড়া ও মরু অঞ্চলের কথ্য আরবি যেকোনো ধরনের বিকৃতি থেকে মুক্ত ছিলো। মরুভূমির বেশিরভাগ নারীই পেশা হিসেবে বা পারিবারিক বন্ধন গড়ার খাতিরে শহরের বাচ্চাদের লালন পালনের জন্য নিয়ে যেত। নতুন আর অজানাকে জানার, আবিষ্কারের পসরায় সজ্জিত ছিল মরুভূমির উন্মুক্ত বালুচর। শহরের দালানঘরে সেই সুযোগ কোথায়? মরুভূমিতে থেকে শিশু মুহাম্মদের সামাজিক আর যোগাযোগ দক্ষতা বেড়েছে। শারীরিক সামর্থ্য বেড়েছে। ভাষা শানিত হয়েছে।সে সময়ের মরু অঞ্চল , বাচ্চাদের এসব দিকগুলো বিকাশের জন্য দারুন সহায়ক ছিলো। ✧তবে, আজকের জামানায় এসে আমি আপনার শিশুকে মরুভূমিতে পাঠাতে বলবো না। কিন্তু যেসব পরিবেশ শিশুদের কে উদ্দীপ্ত করবে , সেগুলোকে কখনোই উপেক্ষা করবেন না। এগুলো হতে পারে আপনার স্কুল, মাদ্রাসা,দিবা সেবা,আত্নীয়দের বাসা বা এ ধরনের অন্য কিছু। ✯খেয়াল রাখতে হবে,এই জায়গাগুলো যেন, নিরাপদ হয় এবং শিশুর প্রতিভা বিকাশ ও আবিষ্কারে সহায়ক হয়। মরু জীবনঃ মরু জীবনের বাস্তবতা বুঝার দুটো উদ্দেশ্যে রয়েছে।যথা_ ■মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর        জীবনে মরু জীবন কি ধরনের প্রভাব ফেলেছিলো। ■তার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী শিখতে পারি।    মরু বাসীদের জীবন ছিল যেনতেন উপায়ে বেঁচে থাকা।টিকে থাকাটাই মুখ্য।বিলাসিতার কোনো জায়গা নাই সেখানে। শুষ্ক এই আবহাওয়ার তীব্র দাবদাহে সূর্যের নীচে ডিম ভাজি হয়ে যেতো।পানি আর ছায়া দুটোরই অভাব ছিলো। আজকাল আমরা পিপাসা মেটানোর জন্য যে পরিমাণ পানি খাই।তখন তারা এতো পানি পানের সুযোগ পেতো না। সামান্য পানি পান করে বেঁচে থাকার জন্য শুধু গলা ভেজাতেন‌।যেহেতু পানি কম ছিলো, খাবারের উৎস কম ছিলো।মরুদ্যান,কুয়ো বা ঝরণার আশেপাশে ছাড়া ফসলের ক্ষেত খুব একটা হতো না। খাওয়ার কষ্ট ,পানির কষ্ট নিয়েই বেদুইনরা বাঁচতে শিখেছে। 'আরো খাবো,আরো খাবো' এরকমটা অভিযোগ করতেন না। খাওয়া দাওয়া বা ভোগ করা তখন আনন্দের জন্য ছিলো না। ছিলো টিকে থাকার জন্য। জীবনের এই কঠিনতা তাদের কে জীবনের দুঃখকষ্ট গুলো কে বিনা অভিযোগে বরণ করতে শিখিয়েছিলো। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরনের পরিবেশে বেড়ে উঠেছিলেন।তার ওপর এই পরিবেশের যথেষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও তিনি কখনো পেটপুরে খান নি। ক্ষুধার যন্ত্রণা দমন করার জন্য পেটে চ্যাপ্টা পাথর বাঁধতেন । এমন কতো দিন গেছে তার ঘরে চুলা জ্বলেনি। খুব কম সময়েই তিনি গোশত খেয়েছেন,বেশির ভাগ সময়ই খসখসে রুটি খেতে হয়েছে।খাবার না থাকলে সিয়াম পালন করতেন।তালগাছের পাতা দিয়ে বানানো মাদুরে ঘুমোতেন। বর্তমান দুনিয়ার চোখে দেখলে তার জীবন পদ্ধতি অদ্ভুত মনে হতে পারে।আসলে তিনি বাচ্চা বয়সেই এমনটা শিখেছেন।সেটা ইচ্ছাকৃত ভাবে ধরে রেখেছেন।এমনকি মক্কায় আসার পরেও। মরুভূমিতে যেসব দামি মূল্যবোধ অর্জন করেছিলেন ,তার নিজ পরিবেশে সেগুলোকে আরো জোরদার করেছেন। চলবে ইনশাআল্লাহ


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩২৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Mahin
    User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    ☕☕☕

  • RONI[EAGLES OF THE DESERT]
    Golpobuzz ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    স্মার্টন্যাসের এই যুগে কতজনে কতজনকে ফলো করে।কিন্তুু প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা.কে খুব কম মানুষই ফলো করে।অথচ সবথেকে স্মার্ট,সবথেকে ভালো আদর্শ, সবথেকে ভালো অনুপ্রেরনা একমাএ মুহাম্মদ সা. থেকেই নেওয়া যায়।।তার তুলনা তিনি ছাড়া পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ অবদি আর কেউ হতে পারবেনা।রিভিউটা ভালো ছিল।

  • Sp Lucky
    User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    খুব ভালো লাগল gj

  • হৃদয়
    GJ Writer ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    ভালে লাগলgjgjgj