বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
ঘড়ি
"অদ্ভুতুড়ে" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান হৃদয় (০ পয়েন্ট)
X
লেখক:ভৌতিক হৃদয় [MH2]
[১]
"ঘড়িটার দাম কত ভাই???"
"ঘড়িটার দাম কত দিবেন???"
" আরে বিক্রেতা আপনি, দাম তো আপনিই বলবেন।"
" এক হাজার টাকা দিন।"
" না,দাম কমান।আমি পাঁচশ দিব।এই দামে নতুন ঘড়িই কিনতে পারি।মানছি এটা এনটিকস,তবুও বাস্তবতা মেনে এই এনটিকস টার দাম কমান।"
" এটা ১০০ বছরের পুরনো ঘড়ি।এনটিকস, সবার নজর আছে।হয় আপনি নিবেন নয়তো অনেক খদ্দের পেয়ে যাব।এক হাজার না দিন,অন্তত ৮০০ দিন। কেনা দামেই বেঁচে দিচ্ছি।"
" আচ্ছা ৮০০ টাকাই দিচ্ছি,দিন ঘড়িটা।"
ঘড়িটা কিনে নিল ফাহিম।পুরনো জিনিস সংগ্রহ করা তার নেশা।ব্যাবসা থেকে প্রচুর টাকা আসে,তাই এনটিকস সংগ্রহ করতে তার কোনো সমস্যা নেই।তার ঘরে আসলে প্রচুর পুরনো জিনিস দেখা যাবে।খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে ও এসব।আজ এই দোকানটায় এসেছিল,অনেক সময়ের পুরনো জিনিস পাওয়া যায় এ দোকানটায়।বিভিন্ন পুরনো জিনিস দেখতে দেখতে তার চোখে পড়ল ঘড়িটা।দেখতে তেমন অসাধারণ না হলেও কারুকার্যগুলো মামুলি নয়, আর পুরনো একটা ইতিহাসও আছে এটার পিছনে।তাই কিনতে দেরী করল না ও।কম দামেই পেয়ে গেল এটা।সোনালী রং এবং ঘড়ির চারপাশে বিভিন্ন ফুল এবং তারার কাজ, আর নিচে আছে বড় একটা ঘন্টা। নাহ্, পুরনো জিনিস হলেও দেখতে কিন্তু খারাপ না।এখন কাজ হলো ঘরে নিয়ে যাওয়া।
[২]
ঘড়িটা বসার ঘরে দেয়ালে লাগাল ফাহিম। সোফায় বসে ঘড়িটা দেখছে,ঘড়িটা ভালো রকমের সুন্দর, আর আরেকটা ভালো বিষয় হলো এনটিকসটার সঙ্গে ঘড়ি পরিচয় পত্র এবং ইতিহাসটাও দেওয়া আছে।সব দোকানে এমন কার্ডে করে ডিটেলস দেয় না।ওই দোকানের একটা সুবিধা হলো এরকম করে প্রত্যেকটা এনটিকসের ইতিহাস যোগ করে দেয়। ওই পরিচয় খাতাটা খুলল ফাহিম। অতো বড় পরিচিতি নয়। পড়া শুরু করল ইতিহাস অংশটা।মোটামোটি পরিচিতি বলতে এরকম:
এই সোনালী রংয়ের ঘড়িটা জমিদার বল্লাল সেনের ছিল।তার বিভিন্ন রকমের বিলেতি জিনিসের শখ ছিল। আর শখ ছিল বিভিন্ন রকমের অদ্ভূত বস্তুর। এই ঘড়িটা উনবিংশ শতাব্দির শুরু দিকে এক ইংরেজ নিয়ে এসেছিল জমিদারের কাছে।সোনালী রংয়ের এবং বিভিন্ন কারুকার্য দেখে জমিদার সাহেব অভিভূত হলেন।কিনেও নিলেন ঘড়িটা। তারপর নিজের রুমে স্থান দেন ঘড়িটাকে। সব কিছু স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়ির চাকরবাকররা জমিদারকে জানাল ঘড়ির কাটায় ১২ টার ঘন্টা বাজলেই নাকি সারাটা বাড়ি স্তব্ধ হয়ে যায়। আর অশরীরীর আগমন ঘটে,তারা নাকি বারবার একটা ছায়া মূর্তিকে দেখে,অনেক লম্বা এবং ইংরেজদের মতো পোষাক পড়া মূর্তিটা।সেটা শুধু ছায়া ছাড়া কিছুই নয়।কারণ আলো ফেলার পর আর কিছুই পাওয়া যায় না। জমিদার সাহেব এটাকে একটা গুজব এবং কর্মচারীদের অলীক কল্পনা ভাবলেন।যার জন্য তিনি কিছুই করেন নি।কিন্তু একদিন পূর্ণিমা রাতে জমিদার সাহেবের চিৎকার শুনা গেল আর ঠিক তখনই ঘড়িতে ১২ টা বাজার ঘন্টা বাজল। আর জমিদারও না ফেরার দেশে চলে গেলেন।সেইদিন নাকি ওই ছায়া মূর্তিটাকে ওই রুম হতে বের হতে দেখা যায়।কিন্তু অন্যদিনের চেয়ে অন্যরকম দেখাচ্ছিল ওইটাকে। পরে একে একে পরবর্তিতে যারা ওই ঘড়িটাকে কিনে নেয় তারা পূর্ণিমা রাতে মারা যায়।তাই ক্রেতাকে সাবধানতার জন্য বলা হচ্ছে ঘড়িটাকে যেন নিজ থাকার ঘরে না নেওয়া হয় এবং পূর্ণিমা রাতে একা যেন কখনও ঘরে না থাকেন,কারণ আবার ফিরে আসতে পারে সেই রহস্যময় ছায়া। আপনি এই এনটিকস কিনেছেন, তাই আপনার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।
সবটা লেখা পড়ল ফাহিম। তার মনে হচ্ছে অতিরঞ্জিত কথা বা গুজব হয়তো।হয়তো কোনো কর্মচারী ঘুষ খেয়েছিল,তার জন্য খুনির নাম না বলে বলেছিল একটা ছায়া দেখেছে। কিন্তু যতোই ব্যাখ্যা দাড় করুক না কেন, সোফায় বসে চিন্তার একটা দীর্ঘশ্বাস ঠিকই ফেলল ও।
[৩]
খাবার খেয়ে বেডরুমে গেল ফাহিম। তার এই এতো বড় বাড়িতে ও একাই থাকে।নিজের কাজ নিজেই করে নেয় ও,তাই চাকরেরও দরকার হয় না। রাতের খাবার খেয়ে যেকোনো একটা বই নিয়ে পড়তে থাকে ও,তারপর ঘুম ধরলে ঘুমিয়ে পরে। আজও তার ব্যাতিক্রম হলো না।হুমায়ুন আহমেদের একটা উপন্যাস নিয়ে পড়তে লাগল ও।কিন্তু আজ কেন যেন ঘুম পাচ্চে না তার।নতুন কেনা ঘড়িটায় বারোটার ঘন্টা বাজল,খুব জোরে। ফাহিমের মনে পরল ঘড়িটার ইতিহাসের কথা। সিড়ি বেয়ে নিচে নামল, যদি ছায়া মূর্তিটাকে দেখতে পায়। কিন্তু না কোনো ছায়া মূর্তি নাই।মনে হয় গুজব ওটা। ঘরে ফিরে আসল,জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা করতে লাগল। ঘুমিয়ে গেল।পরের কয়েক রাতেও সে পরীক্ষা করল কোনো ছায়া দেখা যায় কিনা।নাহ্, সে কোনো ছায়া দেখে নি।মন থেকে সব চিন্তা দূর হয়ে গেল ওর।
[৪]
আজ পূর্ণিমা রাত।কিন্তু চাঁদের সৌন্দর্য দেখা বাদ দিয়ে আজকে ফাহিম প্রচুর কাজ নিয়ে ব্যাস্ত।ল্যাপটপটা নিয়ে বসে আছে ও।কাজ শেষই হচ্চে না।বাইরে পূর্ণিমা রাত,কিন্তু সেটা দেখবার সময় নেই তার।
রাত ১২ টার ঘন্টা বাজল। ঘন্টার শব্দে আজ খানিকটা বিরক্ত হতে দেখা গেল ফাহিমকে।কিন্তু আবার কাজে মনোযোগ দিল। কিন্তু কাজের মনোযোগ আবার নষ্ট হয়ে গেল, এবার কারনটা কী??? এবারের কারণটা হলো ওয়াশরুমে কেউ পানি ছেড়ে রেখেছে।ফাহিমের রুমের পাশের রুমেই হলো ওয়াশরুম,তাই শব্দটা জোরেই শোনা যাচ্ছে।ফাহিম মারাত্মক বিরক্ত হয়ে গেল,পানির শব্দ সহ্য হচ্ছে না,তাই গেল বন্ধ করতে।
ল্যাপটপটাকে রেখে দিয়ে সে অগ্রসর হলো ওয়াশরুমের দিকে।গিয়ে দেখল ওয়াশরুমের পানির ট্যাপ কেউ চালু করে রেখেছে, সে বন্ধ করল।কিন্তু তখনই তার মনো পরল ট্যাপ চালু করল কে??? কারণ ও ছাড়া এই বাড়িতে তো আর কেউ নেই, আর সে নিজেও তো ট্যাপ চালু করে নি, তাহলে চালুটা করল কে??? এইটা চিন্তা করতে করতে দরজা দিয়ে বের হচ্ছে ও,ঘড়িটা এ জায়গা দিয়ে দেখা যায়,ঘড়ির দিকে চোখ পরতেই ওর সব মনে পরল,বাইরে তাকাল, দেখল চাঁদের আলোয় বিশ্ব স্নান করছে। আজ তো পূর্ণিমা,তারমানে আজ কি ঘড়ির কথা সত্য হবে??? একটা ভয়ের ঠান্ডা শিহরণ খেলে গেল তার শিরদাড়া বেয়ে। না, এটা হতে পারে না,এসব শুধু মানুষের মুখে ছড়ানো গুজব ছাড়া কিছু নয়, নিজেকে আবার বুঝাল সে।
ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে আছে সে, কিন্তু ঘড়িটা নড়ছে কেন, একটা সূক্ষ্ম নড়াচড়া চোখে পড়ছে তার, স্বাভাবিক ভাবে দেখলে এসব চোখে পড়বে না তার,কিন্তু সে ভালো করে এক নজরে দেখছে তাই তার নজরে পরেছে।ঘড়ির নড়ার কারণ কী হতে পারে??? আগে তো এভাবে নড়ত না। ঘড়ির এমন নড়াচড়া তার বোধগম্য হলো না। সে কারণ খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে তার রুমে ঢুকল,দরজা আটকিয়ে রাখল, দরজা আটকানোর সাথে সাথেই কেউ একজন দরজায় টোকা দিল, আর ফাহিমও সাথে সাথে জোরে ডাক দিল "কে??? এই কে টোকা দিল???"
কারও সাড়া পাওয়া গেল না,দরজা খুলল ও,কেউ নেই।হঠাৎ একটা ছায়া মূর্তি তার সামনে দিয়ে দৌড় দিল, এরকম হঠাৎ আগমনের আকস্মিকতায় তাকে অবাক হয়ে যেতে দেখা গেল।তবে বেশিক্ষন অবাক হয়ে সে থাকল না, ছায়া মূর্তির পিছন পিছন দৌড় দিল, সিড়ি বেয়ে ছায়া মূর্তি নিচে নেমে গেছে, সে ও ছায়াটার পিছন পিছন দৌড় দিল, কিন্তু নিচে নেমে ছায়াটাকে আর সে দেখল না।কোথায় চলে গেল??? সে দরজা খুলে বাইরে গিয়ে দেখতে চাইল, তাই যখন দরজা খুলতে গেল দেখল ছিটকানি বাইরে থেকে কেউ লাগিয়ে আছে। সে রাগে দরজায় একটা ধাক্কা দিল, আর কীঈ বা ও করতে পারে???
তার পিছনে কেউ একজন দাড়িয়ে আছে বলে মনে হলো ওর।সে পিছন ফিরল, আর দেখল একটা ছায়া মূর্তি দাড়িয়ে আছে তার পিছনে, স্থির হয়ে দাড়িয়ে আছে, সে তাকাতেই দৌড় শুরু করল, ফাহিমও দৌড়াতে লাগল।ভুলে গেল এই ছায়া মূর্তির পিছনে যাওয়া মানেই মৃত্য, আগের সব মৃত্যুর সময় এই ছায়ামূর্তিকেই দেখা গেছে। সে বেমালুম ভুলে গেছে, তাই তো ছায়ামূর্তির পিছনে দৌড়ে ছাদে গেল।কিন্তু ছাদে কাওকে দেখতে পেল না ও। আশ্চর্য!!! ছায়ামূর্তিকে তো ছাদে আসতেই দেখল ও,কিন্তু কোথায় সে??? নিচে পরে যায় নি তো??? দেখার জন্য ছাদের রেলিং এর কাছে গেল ও।নাহ্ নিচেও কেউ নেই।তবে কি এটাই সেই অশরীরী???আর এটা তারমানে কোনো গুজব না এটা??? আর কিছু ভাবার সময় সে পেল না,কেউ একজন তাকে ঠেলে ফেলে দিল ছাদ থেকে।।এই নিয়ে ঘড়িটার পঞ্চাশতম শিকার সে।
[কেমন লাগল??? কোনো ভুল নজরে এলে বলবেন।]
বি.দ্র.: যথেস্ট সময় এবং মেধা ব্যায় করে গল্প লিখি,তাই আমার নাম ব্যাতীত কপি করবেন না।
আল বিদা,,,
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
হৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেFarhan
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSushMitA
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেঅন্য কেউ
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেঅন্য কেউ
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেজাহিদ হোসাইন (জয়)
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেDL Mahmud Hasan
Golpobuzz ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSushMitA
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেAjidur Rahman Taju
Golpobuzz ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSushMitA
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSushMitA
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSushMitA
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSp Lucky
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেShikha
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSushMitA
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেShikha
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেMehedi Hasan Prova
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSp Lucky
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSHUVO SUTRADHAR
Golpobuzz ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বে