বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বিকেলে বাসায় বসে টিভিতে মটু-পাটলু দেখছি।
আর মুরি খাচ্ছি। মুরি মাখাটা বেশ হয়েছে। বউয়ের
হাতে মাখা বলে কথা। কিন্তু আমার বউ কোথায়
গেল। রুমে ঢুকল তো ঢুকলই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর
দেখলাম মায়িশা আর আর আমার মেয়ে মিতু হাতে
লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে আসল। আরে এরা আবার
কোথায় বের হল?
- এই মিতু কোথায় যাবি রে? আ
- বাবা, " আমি আর মা চলে যাচ্ছি, আমরা আর তোমার
সংসারে থাকব না। তাই আমারা নানুর বারি যাচ্ছি। মিতু
- ও তাই নাকি, তাহলে চল,আমিও যাই অনেক দিন হল
শ্বশুর বাড়ি যাই না।
- মিতু, " ওই লোকটাকে বল আমাদের সাথে
কাউকে যেতে হবে না। আর শ্বশুর বাড়ি বলে
উনার কিছু নেই। বল যে যার সংগে উনি জড়াজড়ি
করেন তার কাছে যাইতে । মায়িশা
- আরে, কি বল? আমি কিছু বুঝতেছি না! কার সাথে
আবার হাগ করলাম। তুমি ছাড়া আর তো কারো সাথে
আমি হাগ করি না। আ
- না, আমি বুঝি কচি খুকি। দেখ মেঘ কথা ঘুরাবা না।
ভার্সিটি থাকতে আমি কি চোখে কাপর বেধে
ঘুরছিলাম। আমি কি দেখি নাই তুমি হাগ করো কি না কর।
আর কোন কথা না আমি থাকব না তো থাকব না। মায়িশা
- বাবা, আমিও থাকব না। যেখানে, মা থাকবে না আমিও
থাকব না। আর তুমি ভাল হয়ে যাও। হাগ করা বাদ দাও। আমি
সব বলছি মামুনিকে। মিতু
আমি তো দিনে তারা দেখছি। সব বলে দিছে এই
মেয়ে আল্লাহ্ আমার এখন কি হবে। ফাজিলের
ফাজিল মেয়ে। মা যেমনে মেয়ে তেমনি। এত
গুলা টাকা খরচ করে আইসক্রিম আর চকোলেট
খাওয়ালাম সব বৃথা গেল দেখছি।
- আরে, মায়িশা মিম তো আমার বান্ধবী ছিল। তাছারা
আমরা একসাথে কলেজ পর্যন্ত পরছি। তাই সেদিন
আর কি ও ইমোশনাল হয়ে হাগ করছিল। আমার
কোন দোষ নেই। আত্মপক্ষ সমর্থন করলাম
আমি।
- দেখ, আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না। তুমি কি
করবে কর আমি আর এখানে থাকব না।
- আচ্ছা কি আর করা, যাবে যখন । আচ্ছা আমার রান্না
করে দিয়েছ তো। না হলে তো আবার আমাকে
রান্না করতে হবে।
- মেঘ, "আমার সাথে মজা নিবা না বলছি। আমি গেলাম।
চল মিতু। মায়িশা
আরে মায়িশা আমার কথা তো শুনবা নাকি। আমাদের
এত দিনের সংসার আর আজকে এই পুচকে
মেয়ের কারনে তুমি চলে যাচ্ছ। কত্ত বড় হারামি।
কার না, রাগ লাগে। এই মেয়েটা আমার একুল ও
ডুবাচ্ছে ওকুলো ডুবাল। কেন, কাল মিতুকে বাইরে
নিয়ে গেলাম। আর আজি বা আজ আমার বউ আমাকে
ছেরে চলে গেল।
মিতুকে নিয়ে আসছি মার্কেটিং এ বায়না ধরছে পান্ডা
নিবে, মানে ওই যে বিলাই পুতুল গুলা। নিয়ে গেলাম।
ঘুরতেছি, হঠাৎ মিম এর সাথে দেখা। আমার স্কুল -
কলেজ বান্ধবী। অনেক দিন পর দেখা।
কলেজে থেকে বের হয়ে আমি ভার্সিটি আর ও
বিদেশে পরতে গেল। আর আজকে দেখা
এখানে, তাই বিদেশিনীদের মত আমাকে দেখেই
হাগ করল। আমার কোন উপায় ছিল না। সাথে আবার ওর
ছেলে। সেও তার মায়ের দেখাদেখি আমার
মেয়েকে হাগ করতে গেল। কিন্তু মিতু যে
ছেলে হাগ করার বদলে, তাকে চিপে ধরবে
আমার মাথায় ঢুকে নি। অবস্থা বেগতিক, ছেলে
তো কেদে টেদে অস্থির। মিম আমার দিকে
তাকিয়ে হাসছে, কি রে মেঘ, তোর মেয়ে
দেখি তোর মতই হয়েছে!
- ধুর, আমার মত হয়েছে নাকি, হয়েছে মেয়ের
মত! আ
- মেঘ, তা ভাবিকে দেখাবি না। তোর যে পছন্দ
ছিল। দেখি সেইমত পাইলি কি না? মিম
- আচ্ছা, আসিস একদিন আমার বাসায়। দেখাব বউ
কাকে বলে।
মিমরা চলে গেলে আমি আমার মেয়েকে বলল, '
আম্মু তুমি কিছু দেখেছ কি? '
- হ্যা, "দেখলাম তো। " মিতু
- আম্মু, তুমি কিছু দেখ নি আর আজকে তোমাকে
আমি অনেক চকলেট নিয়ে দিব, ওকে। আ
- ওকে, আব্বু আমি এখন কিছু দেখিনি? মিতু
কিন্তু মিতু যে এভাবে আমাকে ফাদে ফেলবে
আমি ভাবতেও পারিনি! মেয়েটা মায়ের মত হয়েছে।
গোয়েন্দাগিরি স্বভাব।
.
মায়িশা আর মিতু চলে যাওয়ারর সাথে সাথে আমি তো
পুরা ড্যান্স শুরু করে দিলাম। আহা কি আনন্দ আকাশে
বাতাশে। পুরা শান্তি, যা হোক বউয়ের প্যারা থেকে
তো বাচলাম। তাই রাতে আমি পুরা পার্টি দিলাম তবে
একাই আমি মেম্বার। খাওয়া দাওয়া হইহুল্লর একেবারে
ঘরের অবস্থা কেরোসিন করে দিলাম। আরামে ঘুম
দিলাম। সকালে উঠে দেখি, প্রায় দশটা বেজে
গেছে। হায়, হায় এখন কি হবে। আজকে অফিস
গেলে ফ্রিতে কিছু অপমান হজম করার লাগবে। তাই
তাড়াতাড়ি না খেয়ে অফিসে গেলাম। সারাদিন কাজ
শেষ এ বাসায় আসলাম। দরজা খুলে মায়িশাকে বললাম,
পানি দিতে। কিন্তু হায় বউ তো নাই। কাজেই নিজে
নিয়ে খেলাম। প্রচণ্ড খিধা পেয়েছে। বাইরে
থেকে খেয়ে আসব তার উপায়ো নেই। আমার
আবার বাইরের খাবার সহ্য হয় না। তাই, আমার প্রিয় রান্না
খিচুরি রান্না করতে বসলাম। আর কিছু পার আর না পারি
এই একটা কাজ ভালই পারি। রাতে খেয়ে দেয়ে
ঘুমাতে গেলাম। বিছানায় শুয়ে আছি। বউয়ের কথা
মনে পরছে। বিয়ের আগে যা হোক কোলবালিশ
নিয়ে ঘুমাইতাম। এখন তো বউ না হলে চলে না
আমার। ভালাই কাজ হল দেখছি। তবুও ঘুমাইলাম। গত
কালকের মত আজকেও একই অবস্থা। বউয়ের
যে কি মুল্য এখন বুঝতেছি। এই জন্যে বলে, "দাত
থাকতে, দাতের মুল্য দিতে হয়।" অফিসে আজকে
অনেক কথা শুনাইল। বসের রুমে বসে আছি।
দেখে তো মনে হচ্ছে আজকে আমার কাজ
শেষ। বউ তো হারালাম, আবার না চাকরি টা হারায়।
- মেঘ সাহেব, " আপনার সাহেবি তো দিন দিন
বাড়ছে। তা, বউকে নিয়ে আসেন। আর ঝগড়া
বারিয়ে কি লাভ? " বস
- না, মানে স্যার। আপনি বুঝলেন, কিভাবে। আ
- আরে, বাবা আমি তোমার থেকে বড় । আর
বিয়ে করছি তোমার আগেই। তাহলে অভিজ্ঞতা
বলে তো একটা কথা আছে নাকি। বস
- ও, তা আবার থাকবে না। আপনি হলেন বস। (শালা,
তোর মাথা মনেমনে বললাম)। তাহলে স্যার, আমি
আসি এখন মুখে মধুর হাসি ফুটিয়ে বললাম।
- হ্যা, আসুন। আর হ্যা, আগামীকাল থেকে যেন,
অফিসে ঠিকমতো আসা চাই। বস
ধুর মেজাজ টাই খারাপ হয়ে গেল। ইচ্ছে করছে,
না থাক। কিন্তু কাজে আর মন বসাতে পারলাম না।
বউয়ের মায়াবী মুখখানা সামনে ভাসছে। খাওয়াও হল
না। বিকেলে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলাম। দরজা
খুলতে যাব , ওমা! দেখি দরজা খুলা। আজব বাসায় কি
তাহলে চোর ঢুকছিল নাকি। তাড়াতাড়ি ঢুকে গেলাম।
ভিতরে গিয়ে দেখি, সব কেমন ছিমছাম।
গোছানো পরিপাটি করে রাখা। রুমে গিয়ে হাতের
ব্যাগ রেখে আসলাম। দেখি আমার মেয়ে কোথা
থেকে এসে, আমাকে জরিয়ে ধরল।
- বাবা, আমরা এসেছি। তুমি কেমন আছ বাবা? মিতু
- মা রে, আমাকে ঝামেলায় ফেলে তোরা চলে
গেলি। আজকে দু দিন হল আমি ঠিকমতো খাইনি। আ
- সরি বাবা,
- তোর, মা কোথায় রে? তাকে দেখছি না যে?
আ
- মা রান্না ঘরে বাবা। মিতু
আমি রান্না ঘরে গিয়ে মায়িশাকে পিছন থেকে
জরিয়ে ধরলাম। ও এক ঝটকায় আমাকে সরিয়ে দিল।
বুঝলাম রাগ কমেনি। এই মেয়ের তো আবার বিরাট
অভিমান। যেন অভিমানের দোকান খুলে বসেছে।
- কি হল, তুমি না আর আসবে না? আ
-" আসি নি তো, মিতু বায়না ধরল আসার জন্যে সে
তার গুনধর বাবাকে দেখবে। আমি তো এখনি চলে
যাবে। " মায়িশা
- "মামুনি, তুমি আমার দোষ দিচ্ছ কেন? তুমি না
বললে,চল মিতু বাসায় যাই, তোর বাবা মনে হয়
অনেক কস্টে আছে। খাওয়া মনে হয় করেনি।
আর এখন আমার কথা বলছ কেন?" মিতু
- ওহ! তাই নাকি? ভাল তো। আ
- " এই মেয়ে, আমি কখন বললাম। আর বলছি তাতে
কি? আমি আবার এখনি চলে যাব। মায়িশা
আমি মিতুর দিকে চেয়ে বললাম, " মিতু তাহলে
তোর মাকে বল, আমার জন্যে বেশি করে রান্না
করতে। খিছুরি খেয়ে খেয়ে মুখে অরুচি এসে
গেছে। আ
- হ্যা, করবই তো। আমি তো তোমার
হেসেলের দাসি বাদি আসছি। মায়িশা
- আরে, কি যে বল না। অতো ছোট পদ দেওয়া
যায় নাকি। হাজার হলেও তুমি আমার বউ। তাই তোমাকে
তাদের প্রধান করে দিলাম। এত করে যখন বলছ। আ
- মিতু, তোর বাবাকে বলবি এখান থেকে যেতে,
না হলে গরম তেল গায়ে ঢেলে দিব। মায়িশা
- না, থাক এত তাড়াতাড়ি আর বিধবা নাই বা হলে। আ
- তুমি যাবে কি না, বল? মায়িশা
আমিও প্রানে বাচতে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে
আসলাম। এই মেয়ের ঠিক নাই দিতেও পারে। রাতে
খেয়ে ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু বউ ছাড়া কি আর ঘুম
আসে। বাইরে দেখলাম নাই। আরে গেল কই,
আবার কি চলে গেল নাকি? আমি ভাল করে খুজতে
ছাদে চলে গেলাম। দেখি মায়িশা আকাশের দিকে
তাকিয়ে আছে। আমি ওর কাছে যেতে যেতে
বলছি," যাক বাবা তুমি এখানে, আমি আবার ভাবলাম তুমি
আবার চলে গেলে।" মায়িশা চুপ করে আছে। আমি
ওর কাছে গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে ওর
ঘারে মুখ গুঁজলাম। আমার শরির দিয়ে শিহরণ বয়ে
গেল। মায়িশা তবুও চুপ করে আছে। ভালই রাগ
আছে দেখছি।
- কি হল, সোনা বউ চুপ করে আছ যে, আমি সরি
সোনা এত্ত গুলা সরি। আ
- "লাগবে না তোমার সরি, আমি কার কে, কেউ
তো আর এখন আমাকে ভালবাসে না।" ফোপাতে
ফোপাতে বলল,
- তুমি তো আমার বউ, আমার কিউটি, আমার শিরা উপশিরায়
বহমান রক্তের কনিকা তুমি। আ
- যদি তাই হতাম, তাহলে একটা বার ফোন দিতে।
খোজ নিছ একবার কি? মায়িশা
- সরি তো, জানু। আ
- আমার কথা কি একবারো তোমার মনে পরে নাই?
মায়িশা
- পরছে তো জানু, রাতের বেলা। খুব মনে
পরছিল। আ
- আর দিনে কি হল?
- দিনে পরে না গো, খালি রাত দশটা পার হলেই
তোমাকে মনে পরে আমার। আ
- ও, ভাল। আমার সাথে মজা ভালই নিচ্ছ দেখছি। মায়িশা
- না , কি যে বল না। আ
- আমি জানি তো সব। আম এখন তো ভাল না।
দেখতে খারাপ, ভালবাসা যাবে না তো আমায়। আমায়
তো আর এখন কেউ হাগ করে না। আমি হাগ করার
মত মেয়ে নাকি। মায়িশা
আমি মায়িশাকে আমার দিকে ঘুরালাম। মেয়েটা নাকের
পাটা ফুলিয়ে কাদছে। আমি বললাম, মায়িশা, আমার ভুল
তো হয়েছে। আর তাছাড়া ওকে যদি বাধা দিতাম
তাহলে কেমন মনে করত না। তুই যেমন আমার
কাছে ইম্পরট্যান্ট মিমও তেমনি। তবে পার্থক্য হল
সে আমার ভাল বন্ধু আর তুমি ভাল বউ। আমি জানি, তুমি
আমার ভাগ কাউকে দিতে চাও না। আমি কি আমার
বউকে ছেরে অন্য কারও দিকে তাকাতে পারি বল?
" মায়িশা তবুও অভিমান করে আছে। আচ্ছা না মানলে
বল, আমি এই ছাদ থেকে লাফ দেই। "এই নাহ, প্লিজ
মেঘ তোমার কিছু হলে আমি বাচব না। আমিও মরে
যাব। " আমার মুখ চেপে ধরে বলল। মায়িশা এটা
মানতে হবে, যে মিম আমার ফ্রেন্ড। আর ও
আমাকে সেই ভাবে দেখে না। " আচ্ছা বাবা হইছে
তো আমি কি তাই বলছি নাকি, তবে এখন থেকে তুমি
আর কাউকে হাগ করতে দিবে না।" মায়িশা। এবার
মেয়ে লাইনে আসছে দেখছি। হুম, এবার তো
তোমার নাক ফুলিয়ে কান্না থামাও। তোমার তো
লজ্জা থাকা উচিত মায়িশা। নিজের একটা তিন বছর বয়সি
বাচ্চা আছে আর সে নিজে নাক ফুলিয়ে কাদছে।
মায়িশা উলটো রেগে বলল, " আমি রাগি তো কার
কি? আর কাদা মানা নাকি ইসসস বললে হল নাকি।" আমি
ওকে আমার কাছে টেনে নিয়ে বললাম, কান্না
করলে কিন্তু আমার বউটাকে কিউটি লাগে। যেন
একটা বাচ্চা পরি কাদছে। " হয়েছে এখন আর পাম
দিয়ে ফুলাতে হবে না, মায়িশা।" বুঝলা বউয়ের রাগ
ভাঙল। আমি ওকে আরও কাছে টেনে নিয়ে
বললাম, মহারানি যদি সহায় হন,তাহলে চলুন এবার ঘরে
যাই।
- " কেন ঘরে যাব কেন? এখানেই তো বেশ
আছি।" মায়িশা
- আরে, সব কাছ কি এখানে হয় নাকি? আ
- এই কিসের কথা বলছ তুমি? খালি দুষ্টামি না। হবে না
যাও ইসস খুব আশা তাই না। মায়িশা
এই রে এতখন রাগ ভাঙা লাম। এখন আবার তেলাতে
হবে দেখছি। ধুর বুঝেও না বউ। আমার হয়েছে
মরণ দশা।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now