বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বন্ধু ২
মোঃ নাদিম মোস্তফা
জীবন
-----------------------------
কয়েকজন বন্ধুর সাথে স্কুলের
মাঠে বসে আড্ডা
দিচ্ছিলাম।বিভিন্ন বিষয়
নিয়ে কথা বলছিলাম আর
হাসাহাসি করছিলাম।ঠিক
ঐ সময় সেখানে উপস্থিত হলো
আমার হৃদয়ের বাম পাশে
অবস্থানকৃত বন্ধু আবির।আবির
অনেকে বড় ঘরের ছেলে।
বলতে গেলে অনেক টাকার
মালিক তার বাবা।আমি
তার তুলনায় দিন আর রাতের
মধ্যে যেরকম পার্থ্যক্য দেখা
যায় সেইরকম।তবুও আমাদের
মধ্যে এরকম কোনো ব্যপার
নেই।ও আমার সাথে এমন
ব্যবহার করে যাতে কেউ ওকে
দেখে মনেই করবে না যে, ও
অনেক বড় ঘরের ছেলে।আমি
ওকে নিয়ে এরকম চিন্তা
ভাবনা করি না।কারণ
বন্ধুত্বের মাঝে বড় ছোট এসব
কিছুই নেই।শুধু আছে
ভালোবাসা আর বিশ্বাস।
সেই জন্যই আমরা খুব ভালো
বন্ধু।শুধু ভালো বন্ধু নয়, বেস্ট
ফ্রেন্ড।
- আয় দোস্ত।এখানে বস।[আমি]
- হ্যাঁ।চল সবাই মিলে আড্ডা
দিই।[রাজু]
- না রে।আমি জীবনের
সাথে একটা কথা বলব।তাই
এখানে আসলাম।[আবির]
- কি কথা বল।[আমি]
- না মানে....।একটু এদিকে আয়।
সবার সামনে বলব না।[আবির]
- আচ্ছা ঠিক আছে।চল।আর
তোরা থাক আমি কথাটা
শুনেই আসতেছি।তারপর আবার
আড্ডা দিব।[আমি]
- আচ্ছা যা।[বন্ধুরা]
একটু ঐদিকে গিয়ে...
- হ্যাঁ বল।কি বলবি।[আমি]
- তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো কথা
নয়।[আবির]
- আচ্ছা ঠিক আছে বল।[আমি]
-এই নে।[আবির]
- কি এটা? [আমি]
-এখানে একটা ঘড়ি আছে।
তোর জন্য।[আবির]
- তোকে না বলছি যে, এসব
আমায় দিবি না।তবুও কেন
দিলি? [আমি]
- তুই আমায় যেন, আরো
ভালোবাসিস, সবার থেকে
বেশি ভালোবাসিস সেই
জন্য তোকে এটা দিয়েছি।
[আবির]
- এটা নে।আমি নিব না।
[আমি]
- কেন, কি হলো? [আবির]
- কোনো কিছু পাওয়ার
আশায় কাউকে কিছু দেওয়া
উচিৎ নয়।বরং বিনা
স্বার্থে কিছু দেওয়ার পর
যদি তার বদলে কিছু পাস
সেটাই ভালো।তাই আমি
এটা নিতে পারব না।
দুঃখিত।[আমি]
- বুঝতে পেরেছি।তুই আমায় খুব
ভালো বন্ধু ভাবতে পারবি
না বলেই এটা নিলি না।
[আবির]
- আরে নাহ।এরকম কিছুই না।
[আমি]
- থাক, আর কি কিছু বলতে হবে
না।আমি সব কিছু বুঝি।[আবির]
- দেখ, তুই কিন্তু আমায় ভুল
বুঝছিস।[আমি]
- যা বুঝার আমি বুঝে গেছি।
আমি চললাম।[আবির]
- আরে আমার কথা শোন।[আমি]
- আমি কিছু শুনতে চাই না।
[আবির]
কি এমন বললাম যে, ও এই ভাবে
আমার উপর রাগ করে চলে
গেল।আমি তো কোনো
খারাপ কথা বলিনি।যা
বলেছি একদম ঠিক কথাই
বলেছি।নাহ! উল্টা পাল্টা
কিছু বুঝেছে ও।ওকে ভালো
করে সব বুঝিয়ে বলতে হবে।
তাছাড়া আরো অনেক কিছু
ঘটে যেতে পারে।ওকে আমি
চিনি।ও কেমন এক যেদি
সেটা ভালো করেই জানি
আমি।
কিছুক্ষণ পর ওকে পেলাম ক্লাস
রুমে।এটা এটা বসে আছে।
চোখটা কেমন যেন লাল হয়ে
আছে।চোখে পানি এসে
যাওয়ার মতো।আমি ওর
কাছে গেলাম।আমাকে
দেখেই ও ওখান থেকে উঠে
চলে যেতে লাগল।
- এই আমার কথা শোন।[আমি]
- শোনার মতো আর কিছুই
নেই।যা শোনার বা
বোঝার ছিল তা বুঝে
গেছি।আর আমার কথা বলার
মতো মেজাজ নেই।তুই আমার
সামনে আর আসবি না।[আবির]
- আমি জানি তুই এসব মন থেকে
বলছিস না।রাগের মাথায়
উল্টা পাল্টা বলছিস।
মাথাটা ঠান্ডা কর।তারপর
ভাব আমি খারাপ বলেছি
নাকি ভালো।[আমি]
- আমার মাথা একদম ঠিকই আছে
আর ঠান্ডাও আছে।অযথা
মেজাজটা নষ্ট করিস না।আর
আমাকে এসব বলার তুই কে?
তোর কোনো কথা শোনার
ইচ্ছা আমার নেই।[আবির]
"তুই কে?"কথাটা শোনার পর
মুখটা যেন আর কিছু বলতেই
চাইছে না।বলতে চাইছে
চোখ।বলতে চাইছে চোখের
অশ্রুগুলো।আমার নরম মনে ঐ
একটি কথা এমন ভাবে আঘাত
করল, মনে হলো কোনো পাথর
এসে বুকের উপর পড়ল।যাইহোক
ও যদি এতেই খুশি হয় তো আমি
আর কি করব।ও ভালো থাকলেই
ভালো।
এদিকে আবিরও বাড়ি চলে
গেল।জীবনে কখনও ভাবিনি
আবির আর আমার মধ্যে এরকম
একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি
হবে।মনটা কেমন যেন করছে
তাই আমিও বাড়ি চলে
আসলাম।বাড়ি এসে শুয়ে
পড়লাম।মাথাটাও ঠিক নেই।
একটা আঘাতে সব কিছু উল্টা
পাল্টা হয়ে গেছে।
কি ছিলাম আমরা।আর আজ কি
হয়ে গেলাম।ভাবতেই
পারছি না।চোখের সামনে
যেসব ঘটে গেল, সেই সব
এখনো মেনে নিতে পারছি
না।সব স্বপ্নের মতো
লাগছে।
পরেরদিন গেলাম স্কুলে।রাজু
বলল, কিরে তুই একা? আবির
কোথায় ?
আমি অবাক হয়ে তার দিকে
চেয়ে থাকলাম।রাজু কি
ব্যপারটা জানে না? নাও
জানতে পারে।আমি বললাম,
তুই কিছু শুনিস নি? সে বলল,
আরে কি শুনব? আমি রাজুকে সব
খুলে বললাম।সব শুনে রাজু বলল,
- কি বলছিস এসব? [রাজু]
- হ্যাঁ রে।ঠিকই বলছি।[আমি]
- এটা অসম্ভব।তোর আর
আবিরের ঝগড়া মানে তো......
নাহ এটা মানতে পারছি
না।[রাজু]
- আমিও মানতে পারিনি
রে।তবুও মেনে নিতে হচ্ছে।
সে চায় আমি তার থেকে
যেন দূরে থাকি।তাই আমি
সিদ্ধান্ত নিয়েছি ওর
সাথে আর যোগাযোগ করব
না।কোনো কথা বলব না।
ভাববো আমি একা ছিলাম
একাই আছি।[আমি]
- তুইও কি পাগল হলি নাকি?
আবির এর মাথা গরম ছিল, তাই
উল্টা পাল্টা বলেছে।আর তুই
তো নিজেও জানিস যে,
আবির তোকে এসব কথা বলতেই
পারে না।রাগের মাথায়
এসব বলেছে।ভুলে যা।দেখবি
সব ঠিক হয়ে যাবে।ও তোকে
ছাড়া এক মুহুর্ত্যও থাকতে
পারবে না।[রাজু]
- হ্যাঁ রে জানি।তবুও.....[আমি]
- থাক আর কিছু বলতে হবে না।
আমি দেখছি কি করা যায়।
[রাজু]
এদিকে আবিরেরও মনটা
খারাপ।মনে মনে সে বলছে,
"আমি এটা কি করলাম ???
রাগের মাথায় না জানি
কি কি বলে ফেলেছি আমার
বন্ধুকে।হয়তো অনেক কষ্ট
পেয়েছে।ওর মনে অনেক
আঘাত দিয়ে ফেলেছি।ওর
সাথে এমনা করা আমার
হয়তো উচিৎ হয়নি।আজ ওর
কাছে ক্ষমা চাইব।আমিও কি
পাগল।সামান্য একটা কথার
জন্য প্রিয় বন্ধুকে এই ভাবে
রাগ দেখালাম।ধুর !!! না
জানি ও কি ভাবছে।অনেক
কষ্টে দিয়ে ফেলেছি।যাই
ওর সাথে এখনি দেখা করতে
হবে।"
আবির স্কুলের দিকে রওনা
দিল।আর আমি স্কুলে বসে বসে
ভাবছি, আমাদের বন্ধুত্বের
কি হবে।ওর রাগ ভেঙেছে
কি না।ও তো খুব জেদি।নাহ,
আমার উপর রাগ করে থাকতেই
পারবে না।
- এই আবির শোন !! [রাফি]
- হ্যাঁ বল।কি বলবি।[আবির]
- শুনলাম তোর আর জীবনের
নাকি ঝগড়া হয়েছে??
[রাফি]
- আমি এই ব্যপার নিয়ে আর
কথা বলতে চাই না।যা
হয়েছে সেটা ভুলে যেতে
চাই।[আবির]
- হ্যাঁ।সেটা ভুলে যা।আর
জীবনকেও।ও তো বন্ধু নামের
কলঙ্গ।বন্ধুত্বের মানে কি
জীবন জানে বা বুঝে ?? ওর
সাথে বন্ধুত্ব না রাখাই
ভালো।তুই যখন ওকে কিছু দিস,
সে কি নিতে চায় ?? আবার
নিলেও একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত
দেয় না।এখন ভাব, ওর সাথে
বন্ধুত্ব না রাখাই ভালো।তুই
ঠিক করেছিস।[রাফি]
- হ্যাঁ তুই ঠিক বলেছিস
রাফি।তোর কথায় অনেক
খুশি হলাম।তোর জন্য একটা
গিফ্ট আছে।[আবির]
- আমি জানতাম, আমার কথা
তোর ভালো লাগবে।তা
কি গিফ্ট দিবি বল।[রাফি]
এই নে, বলে আবির রাফির
গালে ঠাস করে একটা থাপ্পর
মারল।
- কাল ঝগড়া হয়েছে তাই
এমনিই মনটা ভালো নেই।
তাই ওর কাছে ক্ষমা চাইতে
যাচ্ছি।আর তুই এখানে
মেজাজটা খারাপ করছিস।
বন্ধু মানে বুঝিস?? বন্ধুত্ব এর
মর্যাদা দিতে জানিস??
আমার দুজনের বন্ধুত্ব ভেঙে
দিতে চাস ?? মনে রাখিস,
আমাদের মধ্যে মাঝে মাঝে
এরকম হতেই পারে।কিন্তু
বন্ধুত্ব কখনোই ভাঙবে না।
বুঝলি ?? মেজাজটাই খারাপ
করে দিলি।[আবির]
- তোর ব্যবস্থা করব।[রাফি]
- আরে যাহ।যা করার করিস।
থাপ্পর কি আর একটা দিতে
হবে ??[আবির]
একটু পর আবির স্কুলে আসল।আর
আমি ওকে দেখে ওর কাছে
গেলাম।
- আসলে কি বলব তোকে !!
[আমি]
- কি বলবি? যা বলার আমি
তোকে বলব।তার আগে একটা
কথা শোন।[আবির]
- কি কথা ?? [আমি]
- রাস্তায় রাফির সাথে
দেখা।সে বলছে তোর
সাথে নাকি বন্ধুত্ব রাখা
উচিৎ না।তুই নাকি বন্ধুত্ব
বুঝিস না।তোর সাথে বন্ধুত্ব
করা নাকি ভালো না।তুই
নাকি এসব বুঝিস না।[আবির]
- তোর কি মনে হয় ??? [আমি]
- কি মনে হয় মানে ?? তোর
সম্পর্কে এসব কথা কখনো
ভেবেছি।তুই আমার বেস্ট
বন্ধু।তোর ব্যপারে এরকম কথা
স্বপ্নেও ভাবি না।কাল একটু
মাথা গরম ছিল তাই একটু
উল্টা পাল্টা কথা বলে
ফেলেছি।দুঃখিত।তবে
রাফির ব্যবস্থাও করছি।
[আবির]
- কি করেছিস ?? [আমি]
- নাহ। তেমন কিছু না।
কানের নিচে একটু
বাজাইছি এই আর কি।[আবির]
- হা হা হা।তোকে আমি
চিনি।এটাই তো বন্ধুত্ব।
আমায় নিয়ে কথা বলছে, তোর
খারাপ লাগছে।যাইহোক,
কাল আমারও ঐ ভাবে বলা
উচিৎ হয়নি রে।[আমি]
- নাহ।দোষ তো আমারই।না
বুঝেই উল্টা পাল্টা বলে
ফেলেছি তোকে।[আবির]
- তুই আমায় ঐরকম বলতেই পারিস
না।আমি জানতাম।[আমি]
- তো ?? [আবির]
- তো কি ?? [আমি]
- বুকে জড়িয়ে নে।[আবির]
আর কি।আবির কে জোরে বুকে
জড়িয়ে নিলাম।
সমাপ্ত।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Md. Nadim Mostofa Jibon
Golpobuzz ৪ বছর, ৯ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বেMd. Nadim Mostofa Jibon
Golpobuzz ৫ বছর, ১ মাস পুর্বে☠Sajib Babu⚠
Golpobuzz ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে