বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
রক্তিম খেলাঘর
~~~~~~~~~~~~
লেখাঃ- সাদ আহমেদ
জাকির নিসংশ ভাবে খুন হওয়ার পরে এলাকাবাসিরর টনক নড়লো বলে মনে হয়.. আগের আলোচনা অনেক প্রবল হল.. ঘুরেফিরে এখন সবার মুখে একই আলোচনা!
কারা হত্যা করছে এভাবে!!
পুরো গ্রাম জুড়ে এক প্রকার স্থবিরতা বিরাজমান.. অনেক লোকই এখন বাসা থেকে বের হয় আতঙ্ক নিয়ে!! পুরো গ্রাম জুরে আতংকিত পরিস্থিতি.. গ্রামের কাছেই আনসার ক্যাম্প, সেখানে অনেক প্রকার পুলিশি ট্রেনিং হয়.. বড় বড় আর্মি অফিসার এখানে আসে.. এসব হত্যা কান্ডের খবর দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত চলে যায়.. সংবাদিকরাও পুলিশের উপর খেপে যায় যে তারা কেনো কিছু করতে পারছেনা.. এরই পরিপেক্ষিতে বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বিভাগের একজন সিনয়র কর্মকর্তা আফজাল সাহেব বাশবাড়িয়া গ্রামে চার্জে আসেন..
তদন্ত এর জন্য.. গ্রামে এসে তিনি প্রতিদিন জীপ নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন এবং ক্রাইম সিন্স গুলোতে সুত্র খুজে খুনিদের খোজার ট্রাই করছিলেন.. সেই প্রেক্ষিতেই তার কাছে পৌছালো সেই চিরকুট!! যেটা জাকিরের লাশের পাশে ছিলো! তাতে গোটাগোটা অক্ষরে লেখা "রহিমা এক বিন্দু রক্তের নাম" এই রহিমার সাথে এই হত্যাগুলোর কি সম্পর্ক?? এবং রহস্য টা কি তা কেউ বুঝে উঠতে পারছিলোনা... রহিমা নামের কোন কেস ফাইল কি আছে রেকর্ডে?? বললেন আফজাল সাহেব..
জ্বী সার রহিমা নামে তিনটা কেস ফাইল রয়েছে.. বললেন বাশবাড়িয়া থানার ইনচার্জ.. একটা কেস ১২ বছরের পুরাতন মার্ডার কেস আরেকটা ৭ বছর আগে এক বৃদ্ধা মার্ডার কেস এবং আরেকটা মাত্র ছয়-সাত মাস আগে এক অল্প বয়েসি মেয়ে হত্যাকান্ড অকে রিপোর্ট গুলো আমাকে দাও.. দেখতে হবে আসলে এর সাথে কোন সম্পর্ক আছে কিনা.. স্যার আমাদের ভুল পথে চালিত করা হচ্ছেনা তো?? হয়ত এখনকার মার্ডার এর সাথে এটার সম্পর্ক নেই!! হুম হতে পারে.. আমার দশ জন কনেস্টেবল চাই..
পাহারা বসাতে হবে বলে চিন্তিত মনে থানা থেকে বের হলেন আফজাল সাহেব.. দশ জন পুলিশ সদস্য কে আফজাল সাহেবের সহযোগীতায় দেওয়া হল.. তিনি এই দশজন সদস্য কে সাধারন ড্রেসে এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে নিযুক্ত করলেন নজর রাখার জন্য.. আর বললেন খেয়াল করে দেখবে যে এই গ্রামের অপরিচিত নতুন কাউকে দেখতে পাওয়া যায় কিনা!!
হলে সাথে সাথে ইনফর্ম করবে আর অস্বাভাবিক কিছু দেখলেও জানাবে.. দশজন পুলিশ সদস্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলেন গ্রামের আনাচে কানাচে! গোপনে নজর রাখতে লাগলেন বিভিন্ন পয়েন্টে.. চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাট বাজারে তারা নজর রাখতে শুরু করলো.. কিন্তু কোন সাফল্য পাওয়া গেলোনা..
ঠিক চতুর্থ দিন সেই পুলিশ দের একজন নাম সিরাজ একটা তথ্য দিলো!! স্যার সিরাজ স্পিকিং!!
রিপোর্ট করো সিরাজ! হোয়াট হ্যাপেন? পুলিশ ওয়াকিটকি তে বললেন আফজাল সাহেব...
স্যার আমি বাশবাড়িয়ার পশ্চিম সাইডের বাজারের দোকানে নজর রাখছিলাম.. কিছুক্ষন আগে একটা সিগারেটের দোকানে এক লোক আসছে, যে লোকটাকে আগে এই এলাকায় দেখা যায়নি..
হুম.. বর্ননা দাও তার.. এন্ড কিপ ওয়াচিং.. নো একশন এট দিস মোমেন্ট.. তোমার উপস্থিতি টের না পায়!! স্যার লোকটার মোটামুটি ভালই স্বাস্থ্য অনেক হেলদি এবং স্ট্রোং!.. মুখে চাপ দাড়ি.. অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে তিনি পাচ প্যাকেট সিগারেট কিনলেন!
যেটা গ্রামে সাধারণত কেউ কেনেনা.. আর স্যার আমার মনে হচ্ছে তার দাড়িটা নকল!! বললেন পুলিশের চৌকস সদস্য সিরাজ!
ওকে!! ওয়েট আমি আসছি.. অন দা ওয়ে... স্যার লোকটা দোকান থেকে বের হয়ে পিছন সাইডে গিয়েছে এবং তার একটা লাল রঙের সুজুকি বাইক আছে দেখতে পাচ্ছি.. সার বাইকে চড়ে তিনি পুর্ব দিকে রওনা দিয়েছে.. ওকে.. আমি পুর্ব দিক দিয়েই আসছি... জীপ নিয়ে রওনা হয়েছেন তখন আফজাল সাহেব...
ঠিক এক মাইল এগিয়েই রাস্তার একটি এল আকৃতির মোড়ে ছোট খাট একটা বেরিকেড তৈরি করলেন যাতে সহজে দেখা না যায়... সিনিয়র অফিসার আফজাল সাহেব সাথে পুলিশের প্রায় ছয়জন অফিসার.. এমবুশ পেতে অপেক্ষায় থাকলেন আফজাল সাহেব... ঠিক ১০ মিনিট বাদেই বাইকের আওয়াজ পাওয়া গেলো.. দ্রুত সবাই এলার্ট হয়ে গেলো..
শান্ত মনে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে বাইক চালাচ্ছিলো জলিল মোড় ঘুড়তেই ভুত দেখার মত চমকে উঠলো পুলিশ দেখে!! দ্রুত দক্ষ হাতে বাইক ঘুরিয়ে নিয়ে টান দিলো জলিল..
আফজাল সাহেব ও দ্রুত গাড়িতে লাফিয়ে উঠে তার পিছু নিলেন একা একাই...
বাইকের স্পিড বেশিই ছিলো কিন্তু তারপরেও কাছা কাছিই ছিলেন আফজাল সাহেব.. ১ কিমি যাওয়ার পরে বাইক ডান দিকের একটি কাচা রাস্তায় মোড় নিলো. রাস্তাটা নদীর দিকে গিয়েছে.. দুই মিনিট চলেই পিছিয়ে পরলেন আফজাল সাহেব.. রাস্তা এবড়োখেবড়ো... গতি বাড়াতে চাইলেন..
আর এটাই কাল হল তার জন্য.. জীপের নিয়ন্ত্রণ হারালেন তিনি !! সবেগে রাস্তার পাশের একটি কড়াই গাছে লাগিয়ে দিলেন তিনি..
এবং সম্ভবত জ্ঞান হারালেন.. চোখ মেলে দেখলেন জীপ টাকে ঠেলে নদীর খাদের দিকে নেওয়া হচ্ছে !! তাকে সমেত মধুমতী নদীর গভীর খাদে ফেলে দেওয়া হলো জীপ টাকে.. নদীর এইদিকটা ভয়ানক গভীর এবং ভাঙন ধরেছে, পানি পাক খাচ্ছিলো..
নিমিষেই আস্ত জীপ টাকে গিলে ফেললো মধুমতী... আর জলীল তার বাইক টা অইখানেই ফেলে রেখে আসলো.. দ্রুত এলাকা ত্যাগ করলো জলীল...
(চলবে আগামী পর্বে সমাপ্য)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now