বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
রক্তিম খেলাঘর
লেখা - সাদ আহমেদ
রাশিদা বেগম কে মারার পারে সাতটি দিন কেটে গেছে. নাহ রাশিদা বেগম মারা যাননি.. এ যাত্রা বেচে গেছেন! তবে সারাজীবন এর জন্য পঙ্গু হয়ে থাকতে হবে তাকে! বাশবাড়িয়া গ্রাম টা হঠ্যাত করেই এমন অশান্ত হয়ে যাবে কে কল্পনা করেছিলো!!
গ্রাম জুড়ে এমনই আলোচনা!
আর বলিস না কি যে শুরু হইলো গ্রামে!! শালাগো পাইলে ধরে পুতে ফেলতাম মাটিতে! বলল জাকির,
সে এই গ্রামের নামকরা যুবক নেতা!
হ ভাই গ্রামের অবস্থা খারাপ! সবাই তারাতারি বাড়ি চলে যায়!
আরে যাহ!! ভয় পাই নাকি!! যাহ বাড়ি যাহ!!
হ ভাই সাবধানে যাইয়েন!! একটা জিনিশ খেয়াল করছেন জাকির ভাই?? যারা এই সব মারামারি করতেছে তারা কিন্তু বাছাই করে এটা করছে!! ৬ মাষ আগের কথা কি মনে আছে ভাই?? আমার কিন্তু ভয়ই লাগছে!!
চিল্লাইস না! চুপ থাক!! যাহ!!
বলে একটা সিগারেট ধরালো জাকির!! মুখে যাহ বললেও কপালে চিন্তার রেখা দেখা গেলো জাকিরের!!
শুয়ারের বাচ্চা!! খিস্তি দিয়ে রাস্তায় বের হল জাকির!! উদ্দেশ্য থানার দিকে যাবে!!
গ্রামের থানাটা আবার গ্রামের একদম পূর্ব প্রান্তে!!
দ্রুত হাটা দিলো জাকির.. ভ্যান পাওয়া গেলো না!
আর পাওয়া যাবেও না মনে হচ্ছে! যে দিন পরেছে!! মেজাজ টাই সপ্তমে চড়ে গেলো জাকিরের!
প্রায় দেড় কিমি হাটতে হবে! তাই এক প্যাকেট ব্যানসন নিয়ে হাটা দিলো জাকির..
কিন্তু খেয়ালই করতে পারলো না যে শুধু সে নয়, তার পিছনে আরো একজনও তার পিছনে পিছনে আসছে!!
ঠিক এক কিমি হাটার পরে কলুর ভিটা নামক এলাকা, সেখানে প্রচুর তাল গাছ আছে.. হঠ্যাৎ পিছনে একটা ডাক শুনতে পেল জাকির..
জাকির ভাইইই!!
দেখল হ্যাংলা পাতলা একজন যুবক!! অপরিচিত!
জাকির ভাই কেমন আছেন আপনি??
হুম ভালো কে আপনি??
ভাই আমি আপনার শোভাকাঙখি!!
আপনার সাথে জরুরি কথা আছে!!
কি কথা???
এখানে বলব?? নাকি একটু সাইডে আসবেন??
সাইডে কেন আসব? অই কে রে তুই?? রেগে গিয়ে বলল জাকির!!
ভাই রহিমা মার্ডার এর কথা মনে আছে আপনার? সেই ব্যাপারে কথা বলতাম!!
ধক করে উঠলো জাকিরের বুকটা!!
বলে কি ছেলেটা!! এই রহস্যার ব্যাপারে কি এই ছেলেটা কিছু জানে?? ভেবেই পেলোনা জাকির!!
মাথাই কাজ করছেনা জাকিরের!!ভুলেই গেলো এই কদিনের গ্রামের ঘটনা গুলো! মনের অজান্তেই ছেলেটার সাথে কিভাবে জেনো অই তাল গাছের বাগানে চলে আসলো জাকির!!
ঘোর কাটতেই দেখতে পেলো আরো কয়জন যুবক সেখানে উপস্থিত!
জাকির কে দেখে তাদের অভিব্যাক্তি এমনটাই মনে হল যে তারা অধীর আগ্রহে তার অপেক্ষায়ই ছিলো...
আসেন জাকির সাহেব! আসেন জাকির সাহেব! বললো তাদের একজন সিধু!!
আপনার জন্যই আমাদের অপেক্ষা হাসি মুখে বললো সিধু!
এবার ভয় পেতে শুরু করলো জাকির!! সে যতই তাগড়া জোয়ান হোক না কেনো এত কজনের সাথে পারা সম্ভব না আর তাকে ঘিরে ফেলা হয়েছে অলরেডি!!
কি চান আপনারা?? গলাটা পরিস্কার করে বললো জাকির!
চাই তো অনেক কিছুই!! প্রথমেই রহিমা দিয়ে শুরু করি!! কিছু জানিস অই ব্যাপারে??
নাহ!! জানিনা!! ভয়ার্ত গলায় বলল জাকির!
আচ্ছা বুঝছি!! নে ভাই !! মেহমান রে আপ্যায়ন শুরু কর!! বললো সিধু!! মুখের হাসি মুছে গিয়ে সেখানে এখন ক্রোধ ভর করেছে!!
তুই কিছু জানিস না তাইনা??
বলেই জাকিরের স্পর্শকাতর গোপন যায়গায় সজোরে লাথি হাকালো সিধু!!
জানিসনা?? আবার লাথি!! আবার! আবার!! আবার!!
৫ টা লাথি দিয়ে থামল সিধু!! খা**পো** রে উঠায় বাইন্ধা ফালা! জাকিরের অবস্থা তখন ডাঙায় তোলা মাছের মত!! দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে!!
দ্রুত হাত পিছ মোড়া করে বেধে ফেলা হল জাকির কে!!
একজন এসে জাকির গলায় একটা ফাস পরিয়ে দিলো আরেকজন দুইটা কাছাকাছি তাল গাছের মাঝে দড়ি টাঙাতে লাগলো..
চোখ বড় বড় করে আতংকিত ভাবে এসব দেখতে লাগলো জাকির!! বুঝতে পারলো ফাসির মঞ্চ বানানো হচ্ছে!! এবং সেটা তারজন্যই!!
দার করানো হল তাকে ফাসির মঞ্চটাতে নিয়ে আসা হল জাকির কে, দড়ি টা ধরে আছে জলিল.. জলিলের ওজন সব থেকে বেশি..
দড়ি ধরে টান দিলো জলিল.. আস্তে আস্তে মাটি থেকে উঠে গেলো জাকিরের পা.. ছটফট করতে লাগলো জাকির.. আবার দড়ি ছেড়ে দিলো জলিল! মাটি স্পর্শ করলো জাকিরের পা...
বাহ!! ভালো কপি কল বানিয়েছিস তো আজাদ!!
প্রশংসা করলো জলিল!
হাতের বাধন খুলে দেওয়া হল জাকিরের, দড়িটা ঢিল করে দিলো জলিল..
কিছু বলবেন জাকির সাহেব?? বললো সিধু!
ফিসফিস করে কি যেনো বললো জাকির!!
আবার কিছু প্রশ্ন করল সিধু, জবাব দিলো জাকির!!
আস্তে আস্তে সিধুর চোখে মুখে রক্ত জমতে লাগলো প্রচন্ড ক্রধে!...
শালা তোর মত কুত্তার বাচ্চা আগে দেহি নাই!! বললো জলিল.. দড়ি ছেড়ে এসে দমাদম লাথি মারতে লাগলো জলিল.. আজাদ এসেও শরিক হলো.. জাকিরের স্পর্শকাতর যায়গায় লাথি মারতে লাগলো.. পাশ থেকে চুপচাপ দেখছিলো এতক্ষন রকি নামক এক যুবক, তার হাতে চাপাতি! এসেই বুক বরাবর এক কোপ দিলো রকি.. কিন্তু কোপটা লাগলো হাতে!! হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো এক কোপেই!!..
অই কি করলি এটা!! বললো সিধু!!
অই এক হাতে কবজি নাই! ভালো দেখাচ্ছেনা!!
অই হাতে কোপ দে বললো জলিল!! হা হা হা.. ম্যাচ করবে তখন..
থ্যাচ করে আরেকটা কোপ.. অই হাতের কবজিও গায়েব করে দিলো রকি...
বিস্ফারিত চোখে নিজের অবস্থা দেখছিলো জাকির!!
আবার ফাসির দড়ি টান দিলো জলিল.. হাত খোলা থাকলেও বাধা দিতে পারলোনা জাকির...
৫০ সেকেন্ড পরেই আবার ঢিল দিলো জলিল..
দুই মিনিট রেস্ট দিলো জাকির কে, আবার উঠালো.
এমন চলতে থাকলো..
কিন্তু ৪র্থ বার আর টিকতে পারলোনা জাকির, একটু বেশি সময়ই ঝুলে ছিলো..
প্রচন্ড আক্ষেপে চোখ মুখ যেনো ঠিকরে বের হচ্ছিলো জাকিরের.. সারাজীবনের জন্য অফ হয়ে গেছে তার চোখ..
দ্রুত এলাকা ত্যাগ করল সিধুর দল.. জাকিরের জামা কাপড় সব খুলে রাস্তার পাশে রেখে দেওয়া হল...
যাতে জামা দেখে তাকে খুজে পাওয়া যায়...
আর লাশের পাশে ছোট একটা কাগজে একটা চিরকুট লেখে দিয়ে গেলো সিধু. তাতে লেখা..
"রহিমা এক বিন্দু রক্তের নাম"
চলবে( আগামি পর্বে সমাপ্য)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now