বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অদ্ভুত একটা মেয়ে। কেউ যে এভাবে কথা
বলতে পারে; তাও আবার আমার মত
আগাগোড়া অকম্মা মানুষকে, বিশ্বাসই
করতে পারছিনা। কিন্তু যা ঘটে গেছে
তা সত্য আর সত্যটা না জানালে স্বস্তি
পাচ্ছিনা।
আর দশটা দিনের মত গতকাল
বিকেলবেলা গাছের নিচে ফাঁকা
বেঞ্চটায় বসে আছি। হুট করে মেয়েটা
চলে এলো। এমন না যে আগে দেখিনি।
দেখেছি তবে লক্ষ্য করিনি। দূর থেকে
তাকাত।
সরাসরি এসে আমাকে কথা বলার সুযোগ
না দিয়েই বলল, "দেখো, তুমি কি ভাববে
ভাব, আমি তোমাকে ভালবাসি!"
একটু পর নি:শ্বাস নিয়ে বলল, "তোমাকেই
বিয়ে করব।"
,
ব্যাপারস্যাপার সিনেমাটিক হয়ে
যাচ্ছে দেখে বললাম, "বিয়ের বয়স
আমারও চলে এসেছে, আপত্তি নেই,
তবে,,,,,,,,"
"তবে কি?"
তোমার মত এত ফাস্ট এন্ড এক্সপার্ট
মেয়ে তো আমার চলবেনা।
"মানে?"
"মানে আমি চাই বোকাসোকা একটা
মেয়ে, যে সামান্যতেই হেসে উঠবে,
আমার মত সাধারণ একজন মানুষও যার
কাছে অসাধারণ মনে হবে। যে আমার
কঠিন কথাগুলো না বুঝলেও মুগ্ধ হয়ে
থাকবে।"
আড়চোখে মেয়েটার দিকে তাকালাম।
সম্ভবত ভ্যাবাচ্যাকায় পড়েছে। আমাকে
চমকে দিতে চেয়েছিল, এখন নিজেই
চমকে উঠছে।
বড়লোকের বড় দুনিয়ায় কিছু বড়বড় ব্যপার
আছে যা আমাদের মত সাধারণ মানুষজন
বুঝিনা। মেয়েটি অতি আধুনিক।
পোশাকআশাক ও চলাফেরায়। সুতরাং
আমার সাথে ঠাট্টা করাও তাদের
অধিকারের মাঝেই পরে।
"দেখ, তুমি যেভাবে চাও সেভাবেই চলব
আমি। আমি কাল থেকেই বোরকা পরবো।"
মুচকি মুচকি হাসি চেহারায়।
"আচ্ছা, আমার মাঝে এমন কি পেলে যে
সাততলা থেকে একবারে গাছতলায়
নেমে এলে?"
"ভাল লাগার জন্য কারণ থাকতেই হবে?
তোমাকে আমার এমনিতেই ভাল লাগে।"
বুঝতে পারছি, মেয়ে উপন্যাস টুপন্যাসও
পড়ে। আর আমার ফেবু লেখাও দেখে
বোধহয়। কারণ আমারই কোন এক লেখায়
লিখেছিলাম, "যে ভালবাসার মাঝে
উদ্দেশ্য বা স্বার্থ থাকে তা ভালবাসা
নয়, অন্য কিছু!"
বললাম, দেখুন ম্যাডাম, এসব রোমান্টিক
ডায়লগ বাদ দিন। যে ভালবাসায় কারণ
নেই তা কারণ ছাড়াই ভেস্তে যাবে।
"আমি তোমাকে ভালবাসি!" বললেই
ভালবাসা হয়না। কেন ভালবাসি এটা
জানাও জরুরি।
মেয়েটি সম্ভবত হতভম্ব হয়েছে। তার
চোখমুখ তাই বলছে। কিছুক্ষণের জন্য মনে
হলো, হয়ত ঠাট্টা করছেনা।
"দেখো, আমি সত্যিসত্যি বলছি,
তোমাকে আমার ভাল লাগে। তোমার
সবকিছু আমার ভাল লাগে। তুমি যে
আমাকে উপেক্ষা করো সেটাও আমার
ভাল লাগে। তোমার চোখের গভীরতা,
হাসির স্বচ্ছতা সব আমার প্রিয়তম। "-
অনেকক্ষণ পর কথা বলল মেয়েটি।
এতক্ষণ পর আমার বুঝে এলো, এসব
অভিনয়ের কারণ কি!! উপেক্ষার
প্রতিশোধগ্রহণ। বড়লোকদের ইগোও
অনেক বড় হয়। কিন্তু ফাঁদে পড়ছিনা
আমি।
বললাম, "দেখ, অনেক অভিনয় হয়েছে,
এবার ক্ষান্ত হও। আমার সুরত দেখেছ?
সারাজীবন পস্তাতে হবে।" ওকে ওখানে
রেখেই হাসতে হাসতে চললাম আমি।
একটু পরেই পিছন থেকে ভেসে এলো,
"আমি কিন্তু ফান করিনি। সত্যিই
তোমাকে,,,,,,,"
আর বলতে পারলনা। কন্ঠ ধরে এসেছে। ওর
চোখেরজল সত্যিসত্যি আমাকে
বিভ্রান্ত করে ফেলল। একবার মনে হলো
ফিরে যাই। যদি সত্যিই মেয়েটি
ইমোশনাল হয়? অন্তত দুটো শান্তনার
বাণী শোনানো আমার দায়িত্বের মধ্যে
পরে?
শুনেছি চোখের জল নাকি মিথ্যা
বলেনা।
,
নাহ, ফেরা হলোনা। সবাই ফিরতে
পারেনা। সত্যমিথ্যা যাই হোক, চোখের
জলে পিছলে যাওয়া আমার জন্য নয়।
মুচকি হেসে চলে এলাম। সে হাসিতে কি
ছিল? আশা? না উপেক্ষা?
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now