বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

জীবনটা অতিথি পাখির মতো -০২

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান নাফিজ আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X জীবনটা অতিথি পাখির মতো — ০২ লেখকঃ নাফিজ আহমেদ নতুন শহর, অচেনা মানুষ, অপরিচিত রাস্তাঘাট—সবকিছুই যেন এক অজানা জগত। ভিতরে ভিতরে এক ধরনের অজানা শঙ্কা কাজ করছে। শুনেছি, ঢাকা শহরে নাকি দিবালোকে ও রাতের আঁধারে চুরি-ছিনতাই লেগেই থাকে। যদিও আমার কাছে তেমন দামী কিছু নেই, তবুও অস্থিরতা যেন মন থেকে পিছু ছাড়ছে না। টঙ্গী থেকে যাত্রাবাড়ীর উদ্দেশে বাস ছাড়ে প্রায় দুই ঘণ্টা হতে চলল, এখনো গন্তব্যে পৌঁছানো গেল না। বর্তমানে বাসটা কমলাপুর এসে ভয়াবহ জ্যামে দাঁড়িয়ে আছে। অতিরিক্ত যানজটের জন্যই হয়তো ঢাকাকে ‘জ্যামের শহর’ বলা হয়। গাড়িটা একবার চলে আবার থেমে যায়—এইভাবে ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। অবশেষে কোনো মতে সায়েদাবাদ পৌঁছলাম। হঠাৎ বাসের কন্ডাক্টর চিৎকার করে উঠল, — “নেমে যান! নেমে যান! শেষ স্টপেজ। গাড়ি আর সামনে যাবে না!” বিস্ময়ে কন্ডাক্টরের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, — “ভাই, আপনি তো বলেছিলেন যাত্রাবাড়ী যাবেন। তাহলে এখানে নামিয়ে দিচ্ছেন কেন?” কর্কশ কণ্ঠে কন্ডাক্টরের উত্তর, — “এই মিয়া, আপনি কি ঢাকায় নতুন নাকি? বলাকা তো সায়েদাবাদ পর্যন্তই আসে!” আমিও বিনয়ের সাথে বললাম, — “জি ভাই, আমি এই শহরে নতুন। কিছুই চিনি না। তাহলে এখন যাত্রাবাড়ী যাব কিভাবে?” কন্ডাক্টর দেখিয়ে বলল, — “বাস থেকে নেমে সোজা রাস্তায় হাঁটতে থাকেন। সামনেই যাত্রাবাড়ী। বেশি দূর না, দশ-পনেরো মিনিট লাগবে।” কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করলাম। চারপাশের সবকিছুই নতুন লাগছে। সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী এলাকার রাস্তাগুলো ওভারব্রিজের কারণে কিছুটা অন্ধকার আর সংকীর্ণ মনে হচ্ছে। ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে পৌঁছে গেলাম যাত্রাবাড়ী। এবার টিকিটের খোঁজে নেমেছি। যশোরগামী বাস কোন কাউন্টার থেকে ছাড়ে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। পাশের এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলাম, — “ভাই, যশোরের গাড়ি কোথা থেকে পাওয়া যাবে?” তিনি বললেন, — “এই যে, সামনেই যশোর কাউন্টার। ওখান থেকেই পাবেন।” আমি সামনের দিকে এগিয়ে প্রতিটি কাউন্টারের সাইনবোর্ড দেখছি—‘যশোর’ কোথাও লেখা আছে কি না। একটু পরেই চোখে পড়ল “নড়াইল এক্সপ্রেস” নামক একটি কাউন্টার। নিচে লেখা— ঢাকা টু যশোর। মনে মনে ভাবলাম, এখান থেকেই হয়তো যশোরগামী বাস ছেড়ে যায়। কাউন্টারে গিয়ে জানতে চাইলাম, — “ভাই, এই গাড়ি কি যশোর যাবে?” লোকটি বলল, — “জি হ্যাঁ।” — “ভাড়া কত?” — “ছয়শত টাকা।” হঠাৎ মনে পড়ল, মুশফিক ভাই তো বলেছিলেন, যশোরের ভাড়া পাঁচশত টাকা। তাহলে এই লোক ছয়শত টাকা চাইছে কেন? সন্দেহ হলো। বললাম, — “ভাড়া তো পাঁচশত টাকা, আপনি বেশি চাচ্ছেন কেন?” সে কিছুটা বিরক্ত হয়েই বলল, — “আরে মিয়া, আজকে ছয়শত টাকা দিয়েই যেতে হবে। না গেলে অন্য গাড়ি ধরেন।” আমি কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলাম। নতুন শহরে এসেই কার সাথে যুক্তি করব? ভাবলাম, একটু সামনে গিয়ে দেখি অন্য গাড়ি মেলে কিনা। কিছুটা এগোতেই পিছন থেকে কাউন্টারের লোকটি ডাক দিল, — “ভাই, আচ্ছা, আপনি পঞ্চাশ টাকা কম দেন।” আমি হেসে বললাম, — “ভাই, আমি ছাত্র মানুষ। যতটুকু নির্ধারিত ভাড়া, সেটাই দিতে পারলে আমার জন্য ভালো হয়।” সে খানিক ভেবে বলল, — “আচ্ছা, ঠিক আছে। পাঁচশত টাকাই দেন।” আলহামদুলিল্লাহ! মনে হলো একটু কৌশল করেই বাজিমাত করলাম। ঢাকার পরিবহণ ব্যবস্থায় ভাড়া নিয়ে এই দরকষাকষি যেন এক সাধারণ চিত্র। আপনি যতটা স্মার্ট, ততটাই সাশ্রয়ী হতে পারবেন। টিকিট হাতে নিয়ে নির্ধারিত সিটে গিয়ে বসে পড়লাম। (চলবে...)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১১ জন


এ জাতীয় গল্প

→ জীবনটা অতিথি পাখির মতো -০২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now