বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আমেরিকান এক লেখক কয়েকজন সঙ্গীসহ হন্ডুরাসের গহিন অরণ্যে খুঁজে বের করেছেন হারানো এক নগরী। বলা হয়, সেখানে কোনো শ্বেতাঙ্গ প্রবেশ করলে তার ওপর নেমে আসবে বানর দেবতার অভিশাপ। রোমাঞ্চকর সেই অভিযান নিয়ে ওই লেখকের একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন তাহমিনা সানি
চারদিকে ঘন জঙ্গল। পা বাড়ালেই ভয়ানক সব প্রাণীর মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা।
রহস্য আর রোমাঞ্চ খেলে বেড়ায় কিম্ভূত দৈত্যাকৃতির গাছের পাতায় পাতায়—এমনই এক জায়গা মধ্য আমেরিকার হন্ডুরাস। গুয়াতেমালার পশ্চিমে আর এল সালভাদরের দক্ষিণে অবস্থিত এই দেশটিতে একসময় ছিল রহস্যঘেরা জাতি মায়ানদের আধিপত্য। ঘন জঙ্গল আচ্ছাদিত হন্ডুরাসের অনেকটাই ছিল অনাবিষ্কৃত আর স্প্যানিশ শব্দ হন্ডুরাসের অর্থও ‘গহিন’। পরে স্প্যানিশদের আগমনে একটু একটু করে প্রকাশ পেতে থাকে দেশটির নানা জায়গা। আবার এমন এলাকাও আছে, বহুদিন মানুষের পা না পড়তে পড়তে ওটার সঠিক অবস্থান কোথায় তা-ই কেউ জানে না এখন। হন্ডুরাসের এমনই এক হারানো শহর—লা সিউদাদ ব্লাংকা বা দ্য হোয়াইট সিটি। স্থানীয়রা বলে, ওই শহর অভিশপ্ত! ওখানে যে যায় আর ফিরে আসে না। যদিও বা ফিরে আসে, তাও বেশি দিন বাঁচে না। বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গরা ওই শহরে গেলে আর রক্ষা নেই।
কী এমন আছে ওই অভিশপ্ত শহরে—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গত ৪০০ বছরে অনেক অভিযাত্রীদলই অভিযানে বেরিয়েছিল। কিন্তু কেউই শহরটির সন্ধান পায়নি। উপরন্তু কিছু দুর্ঘটনা ঘটলে শেষে হন্ডুরাস সরকার ওই এলাকা খোঁজার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
কিন্তু বিখ্যাত রহস্য ও রোমাঞ্চ লেখক ডগলাস প্রেস্টন নাছোড়বান্দা। পণ করলেন, খুঁজে বের করবেন অভিশপ্ত ওই হারানো শহর। অনুমতি আদায় করলেন হন্ডুরাস সরকারের। একটি অভিযাত্রীদল গঠন করতেও বেগ পেতে হলো না। দলে অন্যদের সঙ্গে ছিলেন বিখ্যাত অভিযাত্রী স্টিভ এলকিন ও নামি তথ্যচিত্র নির্মাতা বিল বেনিনসন। তাঁদের যাত্রা শুরু হয়েছিল মসকুইটিয়া রেইনফরেস্ট থেকে। মধ্য আমেরিকার প্রায় ২০ হাজার বর্গমাইলজুড়ে বিস্তৃত এই গভীর বনানী।
স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে ওই শহর সম্পর্কে নানান ধরনের গল্প আর কিচ্ছা-কাহিনি শুনলেন অভিযাত্রীরা। এক সময় নাকি বেশ জমজমাট শহর ছিল ওটা। যেতে হয় দুর্গম পাহাড় ডিঙিয়ে। আর শহর শাসন করত মহাশক্তিশালী বানর দেবতা। কিন্তু একসময় বহিরাগতদের আগমন ঘটে। বানর দেবতা রেগে যায়। আর অভিশাপ দেয়। একের পর এক মানুষ মরতে থাকে। ভয়ে অনেকেই শহর ছেড়ে পালায়। ষোলো শতকের দিকে লোকালয়হীন হয়ে শেষ পর্যন্ত হারিয়েই যায় শহরটি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেবতার অভিশাপ নয়, শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গে করে আনা রোগ-ব্যাধিতে নাকাল হয়েই জনমানুষহীন হয়ে পড়ে শহরটি।
দুর্গম পথে চলতে গিয়ে পদে পদে বিপদের মুখোমুখি হতে হয় ডগলাসের অভিযাত্রীদলকে। বিষ ছুড়ে দেওয়া সাপ, নানা বিষাক্ত পোকামাকড়, ভয়ানক জাগুয়ার—সব বাধা পেরিয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আবিষ্কার করে ফেলল রহস্যময় শহরটি। মাটির ওপরে আর নিচে পিরামিডের মতো রহস্যময় স্থাপনার খোঁজ মিলল। বিশাল সব পাথরের গায়ে খোদাই করা চিত্র দেখে তারা বুঝতে পারল, এখানে একসময় মানুষের জমজমাট অবস্থান ছিল। এক লোকের শস্যক্ষেতে বীজ বপন করার চিত্র আঁকা আছে একটি পাথরে। আরেকটি পাথরে খোদাই করা জাগুয়ারের মুখও আবিষ্কার করল।
কিন্তু রহস্য আরো জোরালো হলো তখনই, যখন ডগলাস আর তাঁর সঙ্গীরা অভিযান শেষে দেশে ফিরে গেলেন। আর আক্রান্ত হলেন ভয়ানক এক অসুখে! মিহি ছত্রাকের মতো এক মাংসখেকো কীট বাসা বাঁধে তাঁদের শরীরে। মানুষের দেহে এরা প্রবেশ করে নাক আর মুখ দিয়ে। তারপর মাংস খেতে খেতে ঢুকে পড়ে শরীরের আরো ভেতরে! দ্রুত চিকিৎসা না নিলে মৃত্যুও হতে পারে। লোকে বলাবলি করতে লাগল—আসলে অভিযাত্রীদের ওপর বানর দেবতার অভিশাপ পড়েছে!
তবে চিকিৎসার পর ডগলাস আর স্টিভ অল্পতেই সেরে উঠলেন। বাকিদের ভুগতে হলো বেশ।
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ সত্যি অভিযাত্রীরা লা সিউদাদ ব্লাংকা আবিষ্কার করেছেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান। কিন্তু ডগলাস, এলকিনরা প্রায় নিশ্চিত, তাঁরা বানর দেবতার শহরই খুঁজে পেয়েছেন। রোমাঞ্চ লেখক ডগলাস ভালো হয়ে উঠেই তাই দেরি না করে লিখে ফেললেন—‘দ্য লস্ট সিটি অব দ্য মাংকি গড’ নামের বইটি। রোমাঞ্চকর এক অভিযান কাহিনীর বিস্তারিত বিবরণ পাবেন এতে।
সূত্র:- কালের কন্ঠ
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now