বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
-এই ছেলে, দাড়াও ।
.
আমি এই মহল্লায় এসেছি ৪-৫দিন হল। ঠিকমত
তেমন
কিছু চিনি না।একা ছেলেকে এই শহরের
মানুষগুলো
বাসা বাড়া দিতে চায় না। তারপরও বাড়ি
ওয়ালার কিছুটা
মহানুভবতার আমি একটা সাব -প্লেট রুম ভাড়া
নিয়েছি।
বাবা ব্যাংকে কিছুটা টাকা রেখে
গিয়েছিল তা থেকে
যা আসে তাতেই চলে যায় আমার। সেই বাসা
থেকে বের হতেই। উপরের কথাটা শুনলাম।
.
আমি এদিক-ওদিক তাঁকালাম। কিন্তু কে যে
বলছে তা
ঠিক বুঝতে পারলাম না কিন্তু কন্ঠটা একটা
মেয়ের
ছিল। আমাকে আবার কে ডাক দিবে? । এইসব
ভাবতে ভাবতে সামনের দিকে হাঁটা শুরু
করলাম।
.
হঠাৎ করে একটা মেয়ে আমার সামনে এসে
বলল-
এই ছেলে তোমাকে আমি ডেকেছি শুনতে
পাওনি? চলে যাচ্ছ যে।
.
আমি একটু খেয়াল করে দেখলাম -মেয়েটা
আমার
থেকে ছোটই হবে। মনে হয় স্কুল বা
কলেজে যাচ্ছে। মাথার চুল দুইদিকে বেনি
করা।
কাঁধে ব্যাগ। আবার ভালই মিষ্টি দেখতে
মেয়েটা।
আমি যখন এইসব ভাবনায় মগ্ন-------
.
তখন মেয়েটি আবার বলল -এই যে হ্যালো??
আমি বললাম -জি।
মেয়েটি - নতুন এসেছ এই বাসায় তাইনা?
আমি- নিঁচের দিকে মাথা নাড়ালাম।
মেয়েটি- তুমি আমাকে চিন? আমি কে? দেখা
হলে
সালাম দিবা। আর কেমন আছি তা জিগাবা ।
বুঝছো ?
-(আমার বলতে খুব ইচ্ছা করছিল যেই না
পিচ্চি একটা
মেয়ে। সে আবার বলে কিনা,দেখা হলে
সালাম
দিতে হবে!। এই শুন মেয়ে, আমাকে যেখানে
দেখবে, সেখানে গিয়েই আমাকে সালাম
দিবে।
বুঝতে পারছ? কিন্তু, আমার অনুভূতি গুলো অবশ
করেই কিছু না বলে হাটা শুরু করলাম।)
.
মেয়েরা জানি কেমন??? স্বাভাবিক
জিনিসটা কেমন
জানি টানে না তাদের।সবার মাঝ থেকে
কিছুটা
অন্যরকম মানুষগুলোই যেন তাদের পছন্দ।
.
হ্যাঁ, আমিও ছিলাম কিছুটা অন্যরকম। হিমু
হওয়ার চেষ্টায়
ছিলাম না আমি কখনো। ছিলাম নতুন একটা
পরিচয়
সৃষ্টিতে ব্যস্ত। আমার সাথে উচ্ছুক সৃষ্টি
নিয়ে কথা
বলা দেখেই বুঝে নিয়েছিলাম। ইরার মনের
ছোট্ট কুটিরটাতে অনেক আগেই আমি জায়গা
করে নিয়েছি।
.
হিমুর নাম শুনলে সব সময় একটা কথাই ঘুরপাক
খেত
আমার মাথায়.....
সবাই তো হিমু হতে চায়। কিন্তু রুপার মত
স্বচ্ছ
অবলিলায়, মুগ্ধ, আর সব বাস্তব কে তুচ্ছ করে
এমন
করে কোন মেয়ে কি পারবে রুপার মত
ভালোবাসতে?? কথাটার উত্তর আপনাদের
কাছেই না
হয় থাক।
.
আমরা সবাইতো , মানুষের কোন গুণ,সম্ভাব
দেখে মুগ্ধ হই। কিন্তু, একটা মানুষের কোন গুণ
বা
সম্ভাব না দেখে বা না শুনেই মুগ্ধ হওয়াটা
অস্বাভাবিক
নয় কি?
.
হ্যাঁ, আমি পরে জেনে নিয়ে ছিলাম
মেয়েটির
সম্পর্কে। কারন তার সম্পর্কে আমার জানাটা
যেন
বাধ্য হয়ে গিয়েছিল তার কর্মকান্ড দেখে।
.
মেয়েটির নাম - ইরা। বাড়ি ওয়ালার দুটি
সন্তান।তার মাঝে
বড় ভাইয়ের আর বাবার সবচেয়ে আদরের
মেয়েটা হচ্ছে ইরা। মাঝে মাঝে অনেক কিছু
বলি
ওই সৃষ্টিকর্তাকে। বড়লোকদের বেশির ভাগ
ক্ষেত্রেই একটা মেয়ে থাকে কেন? এখন
বলি
এই কথাটা ইরার সাথে দেখা হওয়ার পর
থেকেই।
.
ইরা মাঝে মাঝে আমাকে কেমন যেন উদ্ভট
প্রশ্ন করে বসত। বলত - মানুষের মন বলে একটা
জিনিস আছে। তোমার কি ওই জিনিসটা
নেই??
- ইরার জোড়া লাগানো ওই চোখের
পাঁপড়িগুলোর
দিকে কিছুটা শান্ত হয়েই তাকিয়ে থাকতাম।
কিছুই
বলতাম না। মাঝে মাঝে ইরা জড়িয়ে ধরেই
কেঁদে
দিত হু হু করে।
.
কত মানুষের কান্না শুনেছি। আমাকে
কান্নাটাই যেন
বারণ করে দিয়েছে তার কাছে না যেতে ।
আমাকে দিয়ে যাওয়া বাবা -মায়ের শেষ
সম্বল
আদরের ছোট্ট বোনটিকেও যে আমি মাটির
ওই
অন্ধকার ঘরটাতে এই দুই হাত দিয়েই রেখে
এসেছি। আমার মত অভাগা মানুষের
বেশিদিন থাকতে
নেই কোণ স্থানে। তাও প্রায় ৬মাস থেকেছি
এই
মায়াময় শহরটাতে।
.
একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে
কতটা ভালোবাসলে কথায় কথায় তার চোঁখে
জল
আসে। গল্পের মত নয়, বাস্তবে কতজন মানুষ
তাদের ভালোবাসার মানুষের গায়ের
কাপড়টির কিছু
অংশ কান্নার দ্বারা ভিঁজিয়ে দিতে পারে?
.
-ইরার চোঁখে বিশ্বাস ঘাতক হয়ে চলে এসে
ছিলাম।
যখন শুনে ছিলাম তার বিয়ে ঠিক করে রাখা
হয়েছে
অনেক আগে থেকেই।
.
আজ পথিকহীন পথটা ধরে হাটঁছি আমি। এইটা
এমন
একটা পথ যেন আমিই সৃষ্টি করেছি। আবার
আমিই এই
পথের প্রথম ও শেষ পথিক।
.
ইরাকে বললে হয়তবা, সব সম্পর্ক তুচ্ছ করে, সব
স্বার্থের বলিদান দিয়ে এক কাপড়ে, খালি
পায়েই
যেন সঙ্গী হত এই পথিকহীন পথটাতে।
.
মিরজাফর
নামের অর্থটা কিন্তু অনেক সুন্দর। কিন্তু আজ
তা
ব্যবহৃত হয় মন্দ হওয়া বুঝাতে। হয়ত-বা
ইরার কাছে বাবা-মায়ের আর আদুরে
বোনটার ডাকা
নামটার মানুষটাকে সারাজীবন বিশ্বাস
ঘাতকই ভাববে
আর বলবে কেন চলে যাওয়ার আগে তার
সাথে
দেখা করে যায়নি। কি অপরাধ ছিল তার।
হ্নদয়ের
সবটুকু দিয়ে ভালোবেসে ছিলাম এটাই কি
আমার
দোষ। কেনই বা তাকে না নিয়ে চলে গিয়ে
ছিল।
কেন সে যাবার আগে "ভালোবাসি ইরা
তোমাকে
"কথাটি বলে গেল না।
.
কান্নাই তো আমাকে বলে দিয়েছে তার
কাছে না
যেতে। আমার যে শেষ আশ্রয় স্থল আর মনকে
রুদ্ধ করার জিনিস ওই লোনা জল গুলো। প্রবল
নিষেধ উপেক্ষা করে আবার আমার চোঁখে
লোনাজল ছলছল করছে। যেমনটি হয়েছিল পরম
আদরের ছোট্ট বোনটাকে কবরে নামিয়ে
দেওয়ার সময়। এই লোনাজল গুলো মনে হয়
জানান দিচ্ছে আমিও ইরাকে ভালোবেসে
ছিলাম
আমার হ্নদয়ের সবটুকু দিয়ে । তা-নাহলে তো
আমার মনের মরুভূমি তে কোথাও জল পাওয়ার
কথা
নয়।
.
পাঠকরা হয়ত ভাবছেন, পালিয়ে গেলে
খারাপ হতো
না । দুজন মিলে ছোট্ট একটা ঘরে টাকার
অভাব
থাকলেও, অভাব থাকতনা ভালোবাসার।
.
হ্যাঁ, পারতাম ইরাকে নিয়ে অন্য শহরে এসে
নতুন
ভাবে বাচঁতে। কিন্তু আমি তা করিনি, কেন
করব
বলেন ?
.
জানি ইরার কষ্ট হলেও সবকিছু করত। যে
মেয়েটি
একটু গরম সহ্য করতে পারতনা, সে ঠিকই ভাত
রান্না
করে আমাকে খাওয়াত। যে মেয়েটির নরম
বিছানা
ছাড়া ঘুম আসত না, সে ঠিকই মাটিতে
বিছানা পেড়ে
দিব্বি ঘুমাত।যে মেয়েটি ভালো খাবার
হয়নি বলে না
খেয়ে থাকত, সে ঠিকই আলু ভর্তা দিয়ে
বেশি
করে পানি খেয়ে ঠিকই খেয়ে ওঠত।
.
সবাই বলবেন- মনে সুখই আসল সুখ। কিন্তু,
আমার
ছোট্ট বোনটি মৃত্যুর কয়েক দিন আগে বেডে
শুয়ে বলেছিল -সেটাই তো সব থেকে বড়
সুখ-----
ভালোবাসার মানুষকে দূর থেকে
ভালোবেসে,
তাকে ভালো থাকতে দেওয়া।
.
ইরা কি সত্যিই ভালো থাকতে পারবে? হয়ত
বা
রাতের অন্ধঘরে একা বসে কাদঁবে কিছুক্ষণ।
হয়ত
অল্প অল্প করে আমার প্রতি ইরার
অনুভূতিগুলো
অস্পষ্ট হয়ে যাবে। কোন এক সময় ব্যস্ত হয়ে
পড়বে তার সংসার গোছাতে।
.
না আর চোঁখে লোনা জল গুলো ওই রক্ত
মতো লাল চোঁখে থাকতে ব্যর্থ হল। গাল
বেয়ে নামতেই মুছে নিলাম। কারন, এই লোনা
জল
যে, বহু কষ্টের প্রতিদানে পাওয়া ফসল।
মাটিতে
পড়তে দেওয়া যাবে নাকি। ওই পথিকহীন
পথটার
মাটিগুলো তৃষ্ণার্ত মানুষগুলোর মত শুষে
নিবে।
.
তবুও লোনা জল গুলো গাল বেয়ে গড়িয়ে
পড়ছে ওই রুক্ষ মাটির উপর। আর আমি
পথিকবিহীন পথটা ধরে চলেছি একা।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Bad Boy
Golpobuzz ৭ বছর, ২ মাস পুর্বেMahfuzur Rahman
Guest ৭ বছর, ২ মাস পুর্বে