বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

হঠাৎ বৃষ্টি

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রায়হান আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X আজকে আমার বিয়ের প্রথম রাত বলা হয় যা বাসর রাত। আসলে জীবনটা নাটকের চেয়ে বেশি নাটকীয় । আসলেই তাই নাহয় বিয়ে নিয়ে আমার কতো স্বপ্ন সেখানে আমি বিয়ের কিছু ঘন্টা আগেও জানিনা আমার বিয়ে। মনে আছে শুধু মা বলেছিলো সারপ্রাইজ দিবে আমার জন্মদিনে। কিন্তু জন্মদিনে বিয়ে এটা কিরকম সারপ্রাইজ? মা'ই ভালো জানেন। হাহাহা এর থেকেও আজব বিষয় হলো। যাকে বিয়ে করেছি তার নামটা পর্যন্ত জানিনা। বাহিরে দাঁড়িয়ে হাতে একটা সিগেরেট নিয়ে ভাবছি খাবো না খাবোনা। কোনোদিন খাইনি বললে ভুল হবে। বন্ধুবান্ধবদের সাথে ফাইযলামু করে কয়েকবার খেয়েছিলাম। কিন্তু তা পুরোনো দিনের কথা। অনেক বছর হয়ে গিয়েছে খাইনা। কিন্তু এ বিয়ের ঘূর্ণিঝড়ে মাথা পুরো বিখড়ে। কাল চট্টগ্রাম থেকে ফিরেছি বাবার ব্যাবসার কাছে। ফিরতে রাত হয়েছিলো আর এক বন্ধুর বাসায় রয়ে গিয়েছিলাম। সকাকে উঠে নাস্তা করে তারপর বাসার উদ্দ্যেশ্য রওনা হই। আসতে আসতে দূপুর একটা বেজে যায়। আর এসে দেখি বিয়ের আয়োজন। সবাই আমাকে দেখে কিভাবে যেন তাকাচ্ছিলো। ব্যাপারটা মা'র কাছে গিয়ে পরিষ্কার হলাম। আজ আমার বিয়ে। মেয়ে বিয়ের তারিখ সব ঠিক আজ বিয়ে। আমি চাইলে বিয়েটা না করতে পারতাম। কোন ব্যাপার ছিলোনা। কিন্তু মা যদি বিষ'ও দেয়। তাও চোখ বুঝে খেয়ে ফেলতে পারি সেখানে একটা বিয়ে। আর সব কিছু নাকি মা'ই করেছে তাই অনায়াসেই মেনে নিলাম এবং বিয়ে করি। কিন্তু মেয়ে কে কি করে না করে ভালো না খারাপ কিছুই জানিনা। মায়ের পছন্দ এটাই জানি। তারপর ভাবলাম এতো কিছু চিন্তা করে লাভ নেই। রাত অনেক হয়েছে ঘরে যাই। বাসর ঘরে গেলাম। যা হয় আরকি। সাজোগুজো মানে বউ সেজে বসে আসে একটা মেয়ে যে কিছুক্ষন আগে আমার স্ত্রী হলো। জিজ্ঞেস করলামঃ- . আচ্ছা আপনার নাম কি? উত্তর দিলো .বৃষ্টি। . হুম সুন্দর নাম। আচ্ছা আপনি আমাকে কিভাবে বিয়ে করলেন? না চিনেন না জানেন। বিয়ের আগে জানতে ইচ্ছে হয়নি কে আপনার স্বামী হতে চলেছে? . এক'ই প্রশ্ন যদি আপনাকে করি? . আমার প্রশ্নের জবাব আপনার শ্বাশুরি আম্মার কাছ থেকে জেনে নিবেন। . আপনার প্রশ্নের জবাব'ও আপনার শ্বাশুরি আম্মার কাছ থেকে জেনে নিবেন। . বিয়ে যখন হয়েই গেছে এসব চিন্তা করে আর কি লাভ? রাত অনেক হয়েছে। ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ুন। . হুম, আমার একটা কথা ছিলো। . হ্যা বলেন। . আমিও আপনাকে চিনিনা আপনিও আমার ব্যাপারে এক'ই। তো আসলে আমি চাচ্ছি আগে দুজন দুজনকে ভালো করে চিনতে জানতে। বিয়ে হয়েছে তো কি হয়েছে। . হুম আমারো এক'ই কথা দুজনেই ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকাল হলো। আমি জেগে গেছি। কিন্তু বৃষ্টি এখনো ঘুমুচ্ছে। অনেক রাত করে ঘুমিয়েছে তাই হয়তো। এমনিতে আমি একটু পরেই ঘুম থেকে উঠি কিন্তু আজ কিভাবে যেন জেগে গেলাম আর ঘুমুতে ইচ্ছে করছেনা। ভাবলাম বৃষ্টিকে ডেকেই দেই। কি নামে ডাকবো বুঝতে পারছিনা তাই ভাবলাম ঝড়ঝড় বা গুনগুন নামে ডাকা যায় যেহেতু বৃষ্টি নাম। . এইযে মেডাম শুনছেন মিস ঝড়ঝড়। এক ডাকেই সারা মিললো। একেবারেই উঠে বসলো। . ওহ সরি, রাতে অনেক সময় পর ঘুমিয়েছি তো এজন্য। আর ঝড়ঝড়? . বৃষ্টি ঝড়ঝড় করেও নামে। তাছারা ঘুমোন সমস্যা নেই। . নাহ আর ঘুমাবোনা। বৃষ্টি তারপর বাহিরে গেলো। হয়তো মায়ের কাছে গিয়েছে। রান্না করবে নাকি বললো। প্রথম দিনেই বলে মা প্রথমে সম্মতি দেয়নি। পরে অবশ্য বৃষ্টি'ই রান্না করেছে। হুম মেয়েটার রান্নার হাত খুব ভালো বলতেই হয়। কিছুদিন এভাবেই পার হয়। আমাদের সম্পর্কটাও গভীর হতে থাকে। আমাদের সামনা সামনি'র চেয়ে ফোনে বার্তাতেই বেশি কথা হয়েছে মানে টেক্সটে। ফেসবুক এর পাসওয়ার্ডটাও দিয়ে দিয়েছিলো। আমর টা অবশ্য দেইনি। বাহিরে থাকলে কই আছি কি করছি এসব কথা টেক্সট'ই হয়। একটু বাবার অফিসে যেতে হবে। বাবা সকালে বলে গিয়েছিলো আর আমিও কিসের জন্য জানি নাস্তা না করেই বাসা থেকে বের হই। কিন্তু এখন বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। হটাৎ ফোন আসলো। একটু দূরে গিয়ে তুললাম। . হুম বলো। . কোথায় তুমি? নাস্তা করে যাওনি কেন? . একটু বাবার অফিসে যেতে হবে। এখন না আরো কিছুক্ষন পর যাবো। . তাহলে তো নাস্তা'টা করে যাওয়া যেতো নাকি? . আচ্ছা ঠিক আছে বাবার অফিসে গিয়ে করে নিবো। . হ্যা বাহিরের জিনিষ একদম ধরবেন না। পেট খারাপ করবে। সাবধানে যাবেন কিন্তু। . আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি করোনি? . নাহ সবার খাওয়া শেষ। এবার করবো। . হুম খেয়ে নিও। এখন রাখছি বাই। . আচ্ছা বাই। অফিসে গেলাম। কিছু কাগজপত্র বুঝিয়ে দিলো আমাকে। নাস্তা'টা বাবার অফিসেই সারলাম। এর ভিতরে তিনবার টেক্সট। খেয়েছি কি না। আসবো কখন এ জাতীয় কথা। এখনো বৃষ্টিকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া হয়নি। ভেবেছিলাম কাল যাবো কিন্তু হলোনা। সকাল সকাল চলে গেলো বাপের বাড়ি। কে জানি অসুস্থ। তাই পরেরদিন সকালে ঘুমে থেকে ওপাশ করতেই মনে হলো বউটা নেই। তখন টেক্সট করলাম। . Missing You So Much, দুমিনিট পর আনসার আসলো। . Amio Onk, তারপর ভাবলাম এখন জেগে গেছে হয়তো তাই ফোন দেয়া যায়। ভাবতে না ভাবতে বউটার ফোন। . শুভ সকাল। .হ্যা শুভ সকাল। একটা কথা বলার ছিলো এজন্য ফোন করলাম। . হুম বলো। . আমি আরো পনেরো দিন থাকবো এখানে। কিছু করার নেই। . কিহহ? পনেরো দিন? আর আমি? সম্ভব না কাল বা এর পরেরদিন তোমাকে বাসায় দেখতে চাই। . সরি, প্লিজ রাগ করোনা। মাত্র পনেরো দিন কেটে যাবে সমস্যা নেই। . ধুর.. ফোন কেটে দিলাম। কোনোভাবে এক সাপ্তাহ পার হলো আমি আর থাকতে পারছিনা। যেই যখন মনে হলো পাশে বউটা লাগবে তখন'ই নাই। একয়দিনে ওর প্রেমে পুরো মাতোয়ারা করে ফেলেছে আমাকে। প্রথম প্রথম প্রেমে পড়লে যা হয়। কিছুক্ষন না দেখে থাকা যায়না। বউটার চুলগুলো অনেক লম্বা লম্বা। শাড়ি, টিপ, হালকা লিপষ্টিক। চোখে কাজল। একবার দেখেছিলাম এভাবে। মনে হয় আ আর ঘরেই চাঁদ আছে। মনে হয়না আসলেই আছে। আর থাকতে পারছিনা। আ আমাদের বাসা থেকে বউটার বাপের বাড়ি পুরো তিন ঘন্টা লাগে যেতে। রাত বাজে নয়টা। রওনা দিলাম বউটাকে না জানিয়ে। যেতে যেতে পুরো তিন ঘন্টা'ই লাগলো। এর মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। কিচ্ছু করাত নেই গাড়ি নিয়ে বের হয়নি। তাই বৃষ্টিতে ভিজতে হলো শার্টটা পুরো ভিজে গেছে। বউটার বাসার সামনে এক গাছের নিছে দাঁড়িয়ে ফোন দিলাম। . হ্যালো বউটা । . হুম জামাইটা বলো। . এখন যদি আমাকে দেখতে পারতে তাহলে কেমন হতো? . অনেক ভালো হতো। কিন্তু কিভাবে? . জানালাটা খুলো একটা লাইটার নিয়ে বড় আমগাছের নিচে দেখো তোমার জামাই বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। . মানে কি? এতো রাতে? পাগল হইছো তুমি? আমি ফোন কেটে দিলাম। দেখি ত্রিশ সেকেন্ড এর মধ্যে লাইটার নিয়ে ঠিকিই তাঁক করালো। আমার চোখে এসে পড়লো। অনেকদূরে অবশ্য আমি। তাই টেক্সট করলো। . Pagol Tumi? Ascho To Aschoi Abar Baire Dariye Acho Keno? Taratari Vitore Aso, গেলাভ ভিতরে বউটার জন্য কানের দুল এনেছিলাম। দর্জায় কাছে যেতেই দেখি দর্জা খুললো। গেলাম ভিতরে কিভাবে রাগি চোখে তাঁকিয়ে আছে। আমি ভাবলাম কই খুশি হবে বউটাকে দেখতে কতো কষ্ট করে আসলাম। সবাই ঘুমে তাই কাউকে ডাক দেয়নি। একটা তোয়ালে আর টি শার্ট আনলো। নিজেই মাথাটা পানি মুছে দিচ্ছে। আহ কি যে ভালো লাগছে। কিন্তু কিভাবে তাঁকিয়ে আছে। . এভাবে তাঁকিয়ে আছো কেন? কতো করে তোমায় দেখতে আসলাম কই তুমি খুশি হবে আর.. . কে বললো এভাবে বৃষ্টিতে ভিজে আসতে এখন যদি জ্বর আসে? . আসোক না তাতে কি? . তাতে কি মানে? কাল সকালে'ও তো আসতে পারতে না কি? . আচ্ছা একটা কথা বলো। আমি এখন চলে গেলে খুশি হবে তো? . এই না। তা কখন বললাম? . তোমাকে না দেখে আমি আর থাকতে পারছিলাম না এজন্য। . ওরে বাবালে কত্তো পিরিত না দেখে উনি থাকতে পারতেছিলেন না। . হুম তোমার প্রেমে পড়ে গেছি। এখন কি করবো বুঝতে পারছিনা। . কি করবেন মানে? বিয়ে করেও অন্য কোন মেয়ের সাথে প্রেম করবেন নাকি? . হ্যা তাইতো করা উচিৎ। কমপক্ষে সে এভাবে কষ্ট করে দেখতে আসলে একটু আদোর করতো। . সে কে? সত্যি করে বলুন তো। . ঐযে যাকে ভালবাসি। . কাকে? . বলবোনা। চোখ লাল হয়ে গেছে বুঝতে পারছি একটু পর হয়তো কেঁদেই দিবে। তাই আগেই জড়িয়ে ধরলাম। থাক আর কাঁদতে হবেনা। আমি তো তোমাকেই ভালবাসি। নাহলে কি এতো রাতে আসতাম দেখতে? বিশ্বাস হয়না। মাথা নাড়ালো হয়। ও বললো ঃ- . এতো ভালবাসা আমি রাখবো কই? . জানিনা, এখনো এই সোফাতেই বসিয়ে রাখবে? . ও হ্যা মনেই নেই আসো রুমে। আসলে তোমাকে পেয়ে সব কিছু ভুলেই গিয়েছি। রুমে গেলাম শার্টটা চেঞ্জ করে শুতে যাওয়ার আগে। বউটা কি জানি খাওয়ার জন্য রেডি করছে ধরে এনে সামনে বসালাম। চোখটা বন্ধ করতে বললাম। কানের দুলগুলোর একটা এক কানে পড়িয়ে দিলাম। বুঝতে পারলো কিন্তু চোখ খুলতে দিলাম না। আরেক কানে পড়িয়ে দেবার পর। চোখ খুলতে বললাম ও নিজের কানে হাত দিয়ে বললো? দুল? এটা আনার কি দরকার ছিলো? এমনিই আমার ইচ্ছে হয়েছে আমার বউটাকে দিয়েছি। এখন গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখো পছন্দ হয়েছে কি না? দেখে আসলো। এসেই জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো। . এমা আবার কান্না করার কি হলো? পছন্দ হয়নি? . হয়েছে অনেক। . তো কান্না করছো কেন? . সুখে। . আচ্ছা আর কাঁদতে হবেনা। . না আমি কান্না করবো এভাবেই সারারাত আপনি চুপ করে শুয়ে থাকেন। . আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। বললাম কাঁদো সমস্যা নেই। তাহলে তুমি কি আমার কাঁদুনি বউ? অতঃপর কান্না থামিয়ে আদোরের কিছু কিল-ঘুষি আমার বুকে। ভালবাসি তো। আমিও অনেক।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৬২৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ "হঠাৎ বৃষ্টি"
→ হঠাৎ বৃষ্টি
→ হঠাৎ বৃষ্টি
→ হঠাৎ বৃষ্টি
→ হঠাৎ বৃষ্টি

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now