বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
প্লটঃ ৭১
-------- গোধূলি বিশ্বাস সীজন
“হ্যালো, হুম, আব্বা, আমি একমাস পরেই
আসবো। একটা ভেকেশন আছে তখন। ওকে।
খোদা হাফেজ”
ফোনটা কেটেই পাশে তাকিয়ে দেখে ক্লার্ক
বসে আছে। ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। আগে
কখনো কথা হয় নি ক্লার্কের সাথে। খুবই অমিশুক
ছেলে। তবে জিনিয়াস হিসেবে পরিচিত। মোটা
কাচের চশমার পেছনে নীল চোখদুটো
জলজল করছে। গায়ের রঙটা ফর্সা হলেও
চেহারায় অস্ট্রেলিয়ান ভাবটা নেই। ঠোঁট পাতলা,
কোঁকড়া চুল।
ক্লার্ক বলল, “আমি ভেবেছিলাম, তুমি আপসেট
থাকবে”
শরিফা পুরো আকাশ থেকে পড়ল। বাংলায় কিভাবে
কথা বলছে ক্লার্ক? টোনে বিদেশী টান
থাকলেও এতো নিখুঁত বাংলা জানাটাও অস্বাভাবিক।
ক্লার্ক আবার বলল, “Hey! Are you listening to
me?”
“Yes, I am. তুমি বাংলা জানো?”
ক্লার্ক হাসলো। বলল, “শুধু বাংলা না, ফ্রেঞ্চ,
স্প্যানিশ, রুশ, মান্দারিন, কোরিয়ান, হিন্দী, উর্দু...”
“ বাস, বাস, হয়েছে। এতো ভাষা কিভাবে
জানো?”
“শিখেছি”
“কেন?”
“আমার রিসার্চের জন্য”
“হুম”
“সিরিয়াসলি?”
“হুম”
“রিসার্চের জন্য ভাষা শেখার কী দরকার? অনুবাদ
তো পাওয়াই যায়”
“হুম, তা যায়। কিন্তু অনুবাদগুলোতে অনেকসময়
পুরোপুরি ভাবটা প্রকাশ হয় না অরিজিনাল বইয়ের”
“হুম। কী যেন বলছিলে?”
“আমি ভেবেছিলাম, তুমি আপসেট থাকবে”
“কেন?”
“বাংলাদেশ হেরে গেছে, তাই...”
“তা তো একটু আপসেট অবশ্যই। কিন্তু এখনো
তো পাকিস্তান আছে। অস্ট্রেলিয়ার সামনে
ঘোর অন্ধকার”
“পাকিস্তান! আমি ভেবেছিলাম, ইউ গাইজ হেট
পাকিস্তান”
“কেন?”
“এক বাংলাদেশী ফ্রেন্ডের কাছে শুনেছিলাম
অ্যাবাউট 71”
“সেটা অতীত। অতীতকে আঁকড়ে ধরে
কতদিন? আর 71এর গন্ডগোলে বাংলাদেশ কী
পেয়েছে?”
“গন্ডগোল?”
“হুম। আর ইন্ডিয়াকে বন্ধু ভেবে কী হল? অল
দোজ বর্ডার কিলিংস, টিপাইমুখ বাঁধ, etc. আমরা 71এর
আগেই বরং ভালো ছিলাম”
“ওর কাছে বর্ডার কিলিঙের কথাও শুনেছিলাম।
কিন্তু ও বলেছিল, ও পাকিস্তানকে ঘৃণা করে,
কখনো পাকিস্তানকে সাপোর্ট করবেনা”
“আমি বুঝি না কেন খেলার সাথে রাজনীতিকে
মেশানো হয়!”
“সে বলেছিল, সে নাকি ফ্রীডম-ফাইটারের
সন্তান”
“আমার আব্বাও একজন মুক্তিযোদ্ধা। উনিও খেলায়
পাকিস্তান সাপোর্ট করেন। পুরোনো ভুল
বোঝাবুঝির জন্য ২টি মুসলিম দেশের মধ্যেকার
সম্পর্ক খারাপ থাকতে পারে না, তাই না?”
“হয়ত। আমি তো জানি না ওসব। কিছু বলতে পারছি
না”
“বাই দ্যা ওয়ে, তুমি কি আমাকে চেনো? তুমি
আগে কখনো আমার সাথে কথা বলো নি”
“হুম, তুমি সরিফা”
“সরিফা না শরিফা”
“আমি ক্লার্ক”
“আমি জানি”
“তোমার রিসার্চের কি অবস্থা?”
“এই তো”
“এখনো অনেক বাকি”
“এক্সপেরিমেন্ট করছি”
“এক্সপেরিমেন্ট?”
“হুম”
“কী এক্সপেরিমেন্ট?”
“পরে কোন একদিন বলবো। স্যার চলে
এসেছেন”
ক্লার্ক আবার প্রতিদিনকার মত একদম সামনের
সারিতে গিয়ে বসলো। আগের মতই হাতঘড়ির
পাশে প্রেস করল। আর লেকচার টুকতে
লাগলো। সবার ধারণা হাতঘড়িতে রেকর্ডার আছে।
লেকচার রেকর্ড করে ও। ক্লাস শেষে ক্লার্ক
শরিফার কাছে এসে বলল, “তুমি কি আজকে ফ্রী
আছো?”
শরিফা কিছুক্ষণ ভেবে বলল, “হুম, আছি”
“বিকালে কি আমরা দেখা করতে পারি? কফি খাবো
একসাথে”
শরিফা মৃদু হেসে বলল, “ওকে”
“তাহলে দেখা হচ্ছে বিকালে। বাই”
“হুম। বাই”
ক্লার্ক চলে যেতেই জেসিকা এসে বলল,
“What happened to him?”
“I don’t know.”
“I think, he has fallen for you.”
“You think, ‘genius Clark’ has fallen for
me?”
“Ya”
“He never asked any girl for coffee.”
“How could you be so sure?”
“Because I once asked him out. He replied,
‘I don’t like going out.’ I thought, he was
gay. Now I think, he isn’t gay.”
“Good news for you”
বলেই মুচকি হাসি দিল শরিফা।
শরিফা গাঢ় লাল রঙের টাইটফিটিং লংড্রেস পড়ল। সাথে
লাল রঙের স্কার্ফ মাথায় হাল্কা করে পেচালো।
গাঢ় লাল রঙের লিপস্টিক লাগালো ঠোঁটে। ইচ্ছে
করেই আধাঘন্টা দেরীতে গেল কফিশপটায়।
গিয়ে দেখলো, ক্লার্ক একটা বই নিয়ে পড়ছে।
Meir H. Krygerএর “Principles & Practice of
Sleep Medicine”।
শরিফা ক্লার্কের টেবিলের সামনে গিয়ে
দাঁড়ালো। ক্লার্ক মাথা তুলে বলল, “ইউ আর
লেট”
“স্যরি”
“আমি আরো কিছু বলতে চাই”
“কী?”
“ইউ লুক অ্যামেজিং” শরিফা হাসল।
ক্লার্ক বলল, “এই কফিশপটায় আগে কখনো
এসেছো?”
“না”
“এখানে মত ভ্যারাইটি আর কোথাও আছে কিনা
আমার জানা নেই”
“তাই?”
“হুম। ম্যেনুটা দ্যাখো। কী অর্ডার দেবো
তোমার জন্য?”
“তুমি নিজের জন্য কোনটা দিচ্ছো?”
“তোমাকে দেখে রেড ওয়াইন খেতে
ইচ্ছে করছে। কিন্তু এটা কফিশপ। আই উইল হ্যাভ
হোয়াইট কফি”
“হোয়াইট কফি? এটা কি ফ্ল্যাট হোয়াইট কফি?”
“উহু। এটা মালয়েশিয়ার ফেমাস কফি। আমার খুব
ফেভারিট”
“আমার জন্য লাট্টে”
“ওকে”
ক্লার্ক অর্ডার করল।
শরিফা বলল, “তোমার রিসার্চ কতদূর?”
“থেমে আছে”
“কেন?”
“ইন্সপিরেশন পাচ্ছি না”
“ইন্সপিরেশন?”
“হুম”
“কী রকম ইন্সপিরেশন?”
“তোমার মত”
“স্যরি”
“তোমার কি ধারণা, ইন্সপিরেশন শুধু কবিদের
লাগে?”
“না”
“Every person needs a muse in his life.”
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now