বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ঢাকার পুরান শহরের এক পুরোনো গলিতে ছোট্ট একটা বাসা। সেখানে থাকে রায়হান, ২৭ বছরের চুপচাপ, গম্ভীর অথচ অনেক আবেগী একজন তরুণ। শিল্পকলা ভালোবাসে, গান লিখে, মাঝেমধ্যে গিটারে বাজায় কিছু সুর—কিন্তু মঞ্চের আলো থেকে নিজেকে দূরে রাখে। তার জীবনে আলো এসে পড়েছিল তিন বছর আগে, হুট করেই।
রাত ছিল বৃষ্টি ভেজা। রায়হান ছাদের কোণায় বসে গিটার বাজাচ্ছিল। হঠাৎ ছাদে উঠে এল এক অপরিচিত মেয়ে—চোখে কাজল, মুখে বৃষ্টির পানি, আর ঠোঁটে হাসির রেখা।
— “সরি ভাইয়া, ছাদে উঠার অনুমতি নিই নাই। কিন্তু নিচে বিদ্যুৎ নেই, আর বৃষ্টি দেখতে খুব ইচ্ছা করছিল।”
রায়হান হেসে বললো,
— “বৃষ্টি দেখার জন্য অনুমতি লাগে না।”
মেয়েটার নাম ছিল অরুণা। সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত। যেন রায়হানের নিরব জীবন একদিনেই রঙিন হয়ে উঠলো। ছাদের সেই প্রথম দেখা এক দিনে থামেনি। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর, ছাদে দেখা, গল্প, সুর, হাসি—সব মিলিয়ে এক অনুচ্চারিত প্রেম।
কিন্তু অরুণা একটা কথা কখনো বলেনি।
একদিন হঠাৎ সে বলল,
— “রায়হান, ধরো যদি আমি হুট করে একদিন চলে যাই, তুমি কী করবে?”
— “তুমি গেলে আমি ছাদে গান গাওয়া ছেড়ে দেবো,” রায়হান মুচকি হেসে বললো।
অরুণা চোখ নামিয়ে বললো,
— “তোমার গানটা আমার খুব দরকার... এমনকি যদি আমি আর না থাকি, তবুও গাইবে তো?”
রায়হান কিছু বুঝতে পারলো না, কিন্তু কাঁধে হাত রেখে বললো,
— “তুমি থাকো, আমি তো গান ছাড়বো না।”
দিন গড়াতে লাগল।
কিন্তু একদিন অরুণা আর আসলো না। না ফোন, না মেসেজ—শুধু হাওয়া।
দুই দিন, তিন দিন... এক সপ্তাহ...
শেষে রায়হান গিয়ে হাজির হলো অরুণার বাসায়।
সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সাদা কাফনের মতো নিস্তব্ধতা।
অরুণার মা কাঁদতে কাঁদতে জানালেন—
অরুণা ক্যানসারে আক্রান্ত ছিল। শেষ সময়টা যেন কিছুটা স্বাভাবিক কাটাতে পারে, সে জন্য কাউকে কিছু না জানিয়ে ছাদের ওপরে, গানের পাশে, জীবনের শেষ রঙগুলো আঁকতে চেয়েছিল।
সেদিনের পর রায়হান আর ছাদে ওঠেনি।
কিন্তু প্রতি বছর, অরুণার মৃত্যুদিবসে, বৃষ্টি হলেই ছাদে যায়, একটা গিটার হাতে নিয়ে সেই পুরোনো সুরটা বাজায়—
“তুমি ছিলে বলে আকাশটা এত নীল ছিল...
তুমি গেলে তাই নীলও কাঁদে... আমি তো পারি না।”
তার পাশে একটা খালি চেয়ার থাকে—
যেটা অরুণার জন্য।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now