বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ দেখা

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান নাফিজ আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ দেখা –লেখকঃ নাফিজ আহমেদ দেখতে দেখতে কোরবানির ঈদের ছুটিগুলো কেটে গেল। আবারও ফিরতে হবে নিজের ঠিকানায়। কী আর করা! ২১ জুন, বিকেল ৪:১৫ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসে করে ঢাকা ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভাবতেও পারিনি মুহূর্তগুলো এত দ্রুত ফুরিয়ে যাবে। আজ শনিবার, ২১ জুন। সকাল থেকেই সব গুছিয়ে প্রস্তুত হয়েছি। নিরালা দুপুরে বাড়ি থেকে রওনা হলাম। নিজের নীড় ছেড়ে বের হতে গেলে হৃদয়ের গভীরে যেন একরাশ দুঃখ বইতে থাকে। তবুও যেতে তো হবেই। যথাসময়ে বাসা থেকে বের হয়ে ভ্যানে করে যশোর স্ট্যান্ডে পৌঁছালাম দুপুর ২:৪০-এর দিকে। সেখান থেকে বাসে যশোর শহরে এসে একটি রিকশায় চড়ে রেলস্টেশনে পৌঁছালাম ৩:৪৫ মিনিটে। স্টেশনে হঠাৎ আমার রুমমেটের বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। ভালোই লাগল—পুরো রাস্তা অন্তত একজন পরিচিত তো থাকবে। তিনি টিকিট পেলেও আমি পাইনি, তাই বাধ্য হয়ে আসনবিহীন একটা টিকিট কেটে নিলাম। ট্রেন যথাসময়ে এসে থামল, আমরা মালপত্র নিয়ে উঠে পড়লাম। আমার সঙ্গে একটা চেয়ার ছিল, তাই বসা নিয়ে বেশি চিন্তা করিনি। কিন্তু ট্রেনে উঠেই এক মধ্যবয়সী ভদ্রলোক আমার চেয়ারে বসে পড়লেন। তিনি বললেন, এই চেয়ারে বসেই তিনি ঢাকা যাবেন। আমি আর কিছু বললাম না—বয়সে বড়, বসতেই দিন। পড়ন্ত বিকেলে ট্রেন ছুটে চলছে তার গন্তব্যের দিকে। আমি ট্রেনের দরজার পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম। বাইরের বাতাস যেন আমাকে আলতো ছুঁয়ে যাচ্ছে, মিলিয়ে যাচ্ছে নিজের অভিমুখে। আমি তাকিয়ে রইলাম বাইরের দৃশ্যের দিকে। মাঠের মাঝ দিয়ে নির্মিত এই রেলপথে প্রকৃতির সৌন্দর্য যেন আরেক রূপে ধরা দিয়েছে। স্নিগ্ধ বিকেলের আলোয় পাতাঝরা তেপান্তরের মাঠ আমাকে মুগ্ধ করল। ভাবতে থাকলাম—এত সুন্দর হয় কীভাবে! যদি পারতাম, সারাজীবন কাটিয়ে দিতাম এই নিস্তব্ধ মাঠে, কোনো এক বড় গাছের নিচে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর মনে পড়ল আছরের আজান হয়ে গেছে। নামাজটা পড়ে নেওয়া দরকার। মনস্থির করে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধুকে বললাম, "তুই নামাজে যাবি না?" সে বলল, "তুই যা, আমি একটু পরে আসছি।" আমি বললাম, "আচ্ছা, আমি আসলে তুই নামাজ পড়ে নিস।" আমি দেরি না করে নামাজের স্থানের দিকে রওনা হলাম। বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ভালো দিক হলো—ট্রেনে নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয়। যেহেতু আমি সামনের বগিতে ছিলাম, তাই ধীরে ধীরে মাঝের দিকে যেতে লাগলাম, কারণ নামাজের জায়গা সাধারণত মাঝের বগিতে থাকে। কিছু দূর যেতেই দেখলাম, এসি বগির আগের দরজাটা লক করা। অর্থাৎ এখন আর ভেতর দিয়ে নামাজের জায়গায় যাওয়া যাবে না। একমাত্র উপায়, ট্রেন যখন কোনো স্টেশনে থামবে, তখন নিচে নেমে বাইরে দিয়ে যেতে হবে। আমাদের ট্রেন বেনাপোল থেকে আসছে এবং প্রতি জেলাতে একবার করে থামে। শেষবার নড়াইলে থেমেছে, এরপর থামবে কাশিয়ানি রেলস্টেশনে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কাশিয়ানি পৌঁছে গেলাম। আমি আর দেরি না করে ট্রেন থেকে নিচে নেমে নামাজের জায়গার দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। কিছুদূর হেঁটেই পেয়ে গেলাম নামাজের স্থান। অজু করে নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমাদের আগে সেখানে কয়েকজন নারী বসে ছিলেন। আমরা নামাজ পড়তে আসতেই তাঁরা উঠে গেলেন। নামাজ শেষ করার পর তাঁরা আবার ফিরে এলেন। মনে হলো তাঁরাও টিকিট পাননি, তাই এখানে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁদের মধ্যেই ছিল আমার থেকে বড়জোর তিন বছরের একটি ছোট্ট মেয়ে। তাকে দেখে আমি বিমোহিত হয়ে গেলাম! কী অপূর্ব সৃষ্টি আল্লাহর! চলবে...


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ দেখা -০৫
→ চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ দেখা -০৪
→ চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ দেখা -০৩
→ চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ দেখা -০২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now