বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ভিন্ন ঈদের গল্প

"সত্য ঘটনা" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান নাফিজ আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X ভিন্ন ঈদের গল্প নাফিজ আহমেদ আলহামদুলিল্লাহ,, প্রতি বছর সমস্ত দুঃখ কষ্টকে উপেক্ষা করে আসে এই দিন টি। এবছরের ঈদে একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতার শিকার হলাম। জিলহজ্জের জোসনা মুখরিত রাতকে অতিবাহিত করে ঘুম থেকে উঠলাম কাক ডাকা ভোরে। নামাজ শেষ করে চলে গেলাম আপন নগরে। দর্জির কাছে কিছু কাপড় তৈরী করতে দেওয়া ছিল সেগুলো নিয়ে আসলাম নিজের বাইকে করে। দোকান থেকে এসে দ্রুত গোসল শেষ করলাম। নতুন পাঞ্জাবি পাজামা পরিধান করে মুখে তাকবির ধ্বনি জপতে জপতে রওনা হলাম নিজ গ্রামের ঈদগাহে। আমাদের এই ছোট্ট গ্রামে একটাই ঈদগাহ। সকলে যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে নিজ গ্রামে ঈদের নামাজ টা আদায় করবে। সত্যি বলছি তখন একই সাথে এই ছোট্ট ঈদগাহ একই জামায়াতে নামাজ আদায় করার অনুভূতিই ভিন্ন। সাধারণত আমি ঈদের মাঠে একটু সকাল সকাল গিয়ে উপস্থিত হই। আগত মুসল্লীদের উদ্দেশ্য কুরআন ও হাদিস থেকে কিছু বক্তব্য পেশ করি। তবে এবার ঈদগাহে যাইতে একটু দেরী হয়ে গেল। আমি যতক্ষনে ঈদগাহে আসলাম ততক্ষণে আরেকজন আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। যেহেতু দুই মসজিদের ইমাম আবার ইনি আলোচনা করছে তাই মনে মনে ভাবছিলাম হয়তো এবার আর আলোচনা করা হবে না। কি আর করা তারপরও আশায় ছিলাম যাইহোক আমিতো গ্রামের ছেলে। কিছুক্ষণ পর মসজিদের সেক্রেটারি দেখি আলোচককে ব্যক্ত করছেন হুজুর একটু সংক্ষিপ্ত করেন আমাদের এখনো তিনজন আলোচক আলোচনা করবে। যেহেতু উপস্থিত দুই মসজিদের ইমাম তাহলে দুইজন আলোচক হওয়ার কথা কিন্তু তিনজন কেন? পরে দেখি সেক্রেটারি সাহেব আমাকেও কিছুক্ষণ কথা বলার সুযোগ করে দিল। তাই আর কি করা প্রতিবারের ন্যায় এবারও কুরবানি সম্পর্কে কিছু বক্তব্য দিয়ে নামাজ শেষ করে সকলের সাথে মোলাকাত করে ফিরলাম আপন নীড়ে। আসল কাজ তো শুরু এবার অর্থাৎ কুরবানির পশু জবাহ করা। এবার ছাগল কুরবানী দিয়েছিলাম বিধায় বেলা ১২:০০ টার ভিতর সব কাজ শেষ হয়েগিয়েছিল। নানি দের বাড়ি দাওয়াত করেছিল তাই দেরি না করে দাওয়াত খাইতে চলে গেলাম। পেটফুরণ খেয়ে একটু স্মিত ঘুম দিয়ে বেরিয়ে গেলাম ঘুরতে। ভিন্ন অভিজ্ঞতা এখান থেকে শুরু সাধারণত আমি কোন ঈদে তেমন ঘুরি না আব্বু বলে ঈদের দিন গাড়ি নিয়ে ঘুরতে হবে না কেননা এইদিন তুলনামূলক একটু বেশি দুর্ঘটনা ঘটে তাই এইদিন খুব একটা ঘুরাঘুরি করা হয়না। তবে এবার বন্ধু বলল তাই বেরিয়ে গেলাম ঘুরতে। আশেপাশে প্রায় ১০০ কিঃমিঃ মোটরসাইকেলে করে ঘুরাঘুরি করলান নিজের জেলার বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর জায়গায়। সবথেকে ভালো লাগছিল পড়ন্ত বিকালে ভাসমান সেতুর উপর দাঁড়িয়ে ডুবন্ত সূর্যকে অবলোকন করতে সে এক অন্য রকম উপলব্ধি। আমাদের এখানে একটা ভাসমান সেতু আছে যার কোন খুঁটি বা পিলার নাই। শুধু তেলের ড্রামের উপর ভাসিয়ে সেতু নির্মান করা হয়েছে। আরো সুন্দর লাগছিল যখন মোটরসাইকেলের উপর বসে সন্ধ্যের ঝিরিঝিরি বাতাস আপন শরীরে আলতো করে ছোঁয়া দিচ্ছিল। বুনো ফুলের গন্ধে আজকের বাতাস টা যেন আশ্চর্যরকম ভারী ছিল। নিজেদের কেনা গোলাপ যখন কোন পথশিশুকে উপহার দিচ্ছিলাম আর বলছিলাম "This is only for you" বিশ্বাস করেন তাদের হাসি মাখা মুখখানা দেখতে খুবই ভালো লাগছিল। এটা আমার জীবনে এক নতুন অভিজ্ঞতা একটা শিশুকে গোলাপ দিলে এত খুশি হয় আগে জানতাম না। সবশেষে নিশুতি রাতে মোটরসাইকেলের আওয়াজ শুনতে শুনতে চারপাশের নিশ্চুপ পরিবেশ দেখতে দেখতে যখন নিজ গৃহে ফিরছিলাম তখন আপন মনেই বলে উঠলাম আজকের ঈদটা সত্যিই ভিন্ন হলো। কেননা এমন ঘুরাঘুরি এর আগে আর কোন ঈদেই হয়নি। এটা আমার জীবনে ভিন্ন ঈদের গল্প।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২৪ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now