বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ইতিকাফের দিনগুলি

"সত্য ঘটনা" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান নাফিজ আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X ইতিকাফের দিনগুলি লেখকঃ নাফিজ আহমেদ ২০২৫ সালের রমাদান। দেখতে দেখতে অতিবাহিত হয়ে গেল এই রমাদানের তিনভাগের দুইভাগ অর্থাৎ রহমত, মাগফিরাত বিদায় নিলো মুসলিম মিল্লাতের থেকে আর বাকি আছে নাযাতের নয় অথবা দশদিন। হাদিসে আছে নবী করিম সঃ ‎ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ‏.‏ 'আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের শেষ দশকে ই’তিকাফ করতেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০২৫) সে-ই অনুযায়ি পৃথিবীর প্রতিটা দেশে এই ইতিকাফের সুন্নাহ টা বিদ্যমান আছে। কোথাও কোথাও মসজিদ প্রতি একজন অথবা একের অধিকও থাকে। ইতিকাফ একটি ফজিলতপূর্ণ আমল রাসুল সাঃ নিজে সর্বদা এই আমল করে গেছেন। কেননা ইতিকাফের মাধ্যমে তিনি লাইলাতুলকদর কে তালাশ করতেন। রাসুল সাঃ এর এই আমালের প্রতি আমার ব্যাপক ভালোবাসা নিমজ্জিত। সেই সুবাদে আলহামদুলিল্লাহ গত দুইবার আমি পরপর ইতিকাফ পালন করেছি। এইবারও ইতিকাফ করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করলাম। বাড়িতে এই নিয়ে পরামর্শ করলাম কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাসা থেকে এবার ইতিকাফ করতে খুব একটা রাজি হলো না। বিভিন্ন ওজর তুলে ধরছে আমার সম্মুখে। তাদের কথাগুলো শ্রবণ করা মাত্র হৃদয়ের অতল গহব্বরে কেন যেন দুঃখের বারিধারা প্রবাহিত হতে থাকল। আব্বু আম্মুর মুখের উপর তখন কোন কথা বলিনি। কিছুক্ষণের জন্য সবর করলাম আর বারংবার ভাবতে থাকলাম গত দুইবার পরপর ইতিকাফ পালন করলাম এবার যদি না করি তাহলে কি আর করা সম্ভব হবে!আগামী রমাদানে যদি এই ধরা আমাকে পর করে দেয়। আমি যদি আমার মালিকের সান্নিধ্যে চলে যায়। আর যদি কখনো ইতিকাফ করার সুযোগ না হয়। এবার সুযোগ পেলাম তারপরও ইতিকাফে বসতে পারব না! নানান জল্পনা কল্পনা চলতে থাকল বুকের পরম তলে। দেখতে দেখতে জুমার বার চলে আসল। আজ সন্ধ্যায় ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। আমি কি সত্যিই এবার ইতিকাফ করতে পারব? পবিত্র রমাদান একটি বছর পর আমাদের মাঝে এসেছিল মানুষের গোনাসমূহকে মোছন করে দেওয়ার জন্য। সত্যিই কি আমি আমার গোনা মাফ করিয়ে নিতে পেরেছি! মনে করেছিলাম এই রোজা গুলো যেমন তেমন করে অতিবাহিত করেছি কিন্তু এই দশদিন মসজিদের পরিবেশে থেকে আমলের সাথে বন্দেগীর সাথে থেকে আমার মালিকের কাছে আমার পাপ রাশির জন্য বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করব। কেননা আল্লাহতো নিজেই ব্যক্ত করেছেনঃ قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤى اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ (হে নবী,) বলে দাও, হে আমার বান্দারা যারা নিজের আত্মার ওপর জুলুম করেছো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ‌ সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (৩৯ আয-যুমার, আয়াত: ৫৩) সুতরাং মসজিদের পরিবেশে থেকে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে মাফ চাইলে হয়তো আল্লাহ আমাকে অবশ্যই ক্ষমা করবেন,আরও ইচ্ছা ছিল ইতিকাফে বসে রাসুল সাঃ এর জীবনী, ইসলামি সাহিত্য, কুরআনুল কারিম বেশি বেশি অধ্যয়ন করার। বাড়িতে থাকলে সম্মুখে বিভিন্ন কাজ এসে হাজির হয় আর এইগুলো তেমন একটা অধ্যয়ন হয়না। ইচ্ছা কি সত্যিই বাস্তবে রুপায়িত হবে? যাইহোক মসজিদে জুমার আজান হয়ে গেল। পাক পবিত্রতা অর্জন করে রওনা হলাম মসজিদের দিকে জুমার সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে। মসজিদে আসতে একটু দেরি হয়ে গেল হুজুর ততক্ষণে খুৎবা শুরু করে দিয়েছে। আজকের খুৎবার বিষয় হলোযাকাত,লাইলাতুলকদর আর ইতিকাফ। ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করে হুজুর মসজিদের মুসল্লীদের লক্ষ্য করে প্রশ্ন নিক্ষেপ করলেন কে কে এবার ইতিকাফ পালন করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছেন? আমি বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে অবলোকন করলাম দেড়শত এর অধিক মুসল্লী তখন মসজিদে উপস্থিত কোন আল্লাহর বান্দা হাত তুললো না অথবা সাড়া দিল না। আমার ইচ্ছা থাকা সত্বেও আমি বলতে পারলাম না। কি আর করা জুমার নামাজ শেষ করে কিছুক্ষণের জন্য মসজিদে বসে আছি মসজিদের দায়িত্বশীলরা একে অপরের সাথে বলাবলি করছে কি করবনে? কেউ যদি না থাকে তাহলে? হুজুরের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছে শেষের তিন দিন ইতিকাফ পালন করলেও হয় কিনা? হুজুর বলল কেউ যদি না থাকে তাহলে আর কি করা! শেষের তিন দিনই থাকতে হবে। আমি পাশেই বসে ছিলাম হুজুর আমাকে জিজ্ঞাসা করল তুমি এবার থাকবা না? আমি উদাস কন্ঠে ব্যক্ত করলাম ইচ্ছা ছিল কিন্তু বাসা থেকে রাজি হচ্ছে না। কি যে করব বুঝতে পারছি না। মসজিদের দায়িত্বশীল জিজ্ঞাসা করল সমস্যা কি? আমি বললাম বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসার সমস্যা হয়ে যাচ্ছে এছাড়াও কেউ না থাকলে একা একা থাকতে দিতে চাচ্ছে না। তারা বলল সমস্যা নেই আমরা দায়িত্ব নিয়ে খাবার এনে দিবানে আর রাতে তোমার সাথে মসজিদে আরও একজন থাকবে নে। বাসায় বলে দেখ কি বলে। আমি একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে আপন নীড়ে ফিরলাম। পরিবারের সকলের সাথে আমার ইতিকাফে থাকার প্রবল ইচ্ছা ব্যক্ত করলাম আর এই দশদিনে কি কি করব তার একটা পরিকল্পনা বললাম। তাছাড়া মসজিদ কমিটি যে সব দায়িত্ব নিয়েছে তাও বললাম। সবমিলিয়ে তাদের আর নিষেধ করার সুযোগ দিলাম না। কি আর করবে জোর করে হলেও তাদের কাছ থেকে সম্মতি আদায় করে নিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ,, তার মানে আমার এবারও ইতিকাফ পালন করা হবে। ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। চলবে......


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৫২ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now