বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

লুল্লুর কাউয়া বিরিয়ানী

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Rakib Rubel (০ পয়েন্ট)

X একদা এক ছোট্ট গ্রাম ছিল, যেখানে হালকা সুরে বাতাস বয়ে চলত আর গাঁয়ের মানুষ তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যস্ত থাকত। তবে এই গ্রামের এক কোণায় দাঁড়িয়ে ছিল এক রহস্যময় রেস্টুরেন্ট, নাম তার "লুল্লুর বিরিয়ানী হাউস"। এই রেস্টুরেন্টের মালিক ছিল এক অদ্ভুত ব্যক্তি, নাম তার লুল্লু। লুল্লু ছিল একজন সহজ-সরল রন্ধনশিল্পী, কিন্তু তার বিরিয়ানী ছিল একেবারে আলাদা। কেউ যেভাবে বিরিয়ানী বানায়, লুল্লু সেভাবে কখনো বানাতো না। তার বিরিয়ানী ছিল এক ধরনের জাদু, যা খাওয়ার পর মানুষ যেন কিছু অদ্ভুত অনুভব করতো। একদিন, গ্রামের এক যুবক—রহিম, ঠিক করল সে লুল্লুর বিরিয়ানী খাবে। রহিমের মধ্যে ছিল এক অদ্ভুত কৌতূহল, কেন জানি না, তার মনে হচ্ছিল কিছু একটা বিশেষ ঘটবে। সকালে সে পৌঁছে গেল লুল্লুর দোকানে, লুল্লু তখন কাউয়া মাংস দিয়ে বিরিয়ানী রান্না করছিল। "ভাই, আজকে একটা প্লেট বিরিয়ানী দিতে পারবেন?"—রহিম অবলীলায় বলল। লুল্লু এক চমৎকার হাসি দিয়ে বলল, "অবশ্যই, তবে আজকের বিরিয়ানী একটু আলাদা। এই বিরিয়ানী খেলে তুমি বুঝবে, কেন আমি আর আমার বিরিয়ানী একে অপরের সাথে এত নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।" রহিম একটু অবাক হলো, কিন্তু কিছু না বলে বিরিয়ানী নিয়ে খেতে শুরু করল। প্রথমে বিরিয়ানীটা তার মুখে পুরে দিলো, তার পরপরই সে লক্ষ্য করল, কিছু যেন বদলে গেছে। তার চারপাশে যেন এক অদ্ভুত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যেটা সে আগে কখনও অনুভব করেনি। হালকা শীতল বাতাসের সাথে গাঢ় একটা গন্ধ, এবং কান্নার মতো কিছু শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সেই মুহূর্তে রহিম গায়ের চামড়া কুঁকড়ে উঠলো, তার মনে হলো যেন কেউ তাকে অনুসরণ করছে। সে দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে পাশের একটা টেবিলের দিকে তাকাল। সেই টেবিলে বসে ছিল এক পুরনো লোক, যার চোখ ছিল গারো কালো এবং মুখটি বিবর্ণ। লোকটি রহিমকে দেখেই সোজা হাসল, কিন্তু তার হাসি ছিল একেবারে ভুতুরে, যেন কেউ মৃত্যুর পর হাসে। "তুমি কী বুঝতে পারছো?"—লোকটি বলল। রহিম কিছু না বলেই, শিরদাঁড়া দিয়ে ঘাম বের হতে লাগলো। সে বুঝতে পারলো, এটি কোন সাধারণ বিরিয়ানী ছিল না, এটা এক অদ্ভুত শক্তি ধারণ করা বিরিয়ানী। এক সময়, সে লোকটির দিকে আরও একবার তাকালে, লোকটির চেহারাটি আরেকটু ভয়ানক হয়ে উঠেছিল। তার শরীর ছিল ভেঙে যাওয়া এবং অসম্ভবভাবে পচা। তখন সে শুনতে পেল, সেই লোকটি বলল, "এই বিরিয়ানী আমি দিয়েছি। কাউয়ার আত্মা এতে ঢুকেছে।" রহিম পেছনে তাকিয়ে দেখল, লুল্লু আর তার কাউয়ার মাংসের বিরিয়ানী তখন বিরাট রহস্যে ঘেরা ছিল। তার পেছনে কিছু অদ্ভুত অন্ধকার শক্তি ভেসে যাচ্ছিল, যেন এর সঙ্গে একটা অতিপ্রাকৃত উপস্থিতি জড়িত। লোকটি আবার বলল, "তুমি যদি চান, তবে আজকের রাতেই তোমাকেও এক সাথে আমার সঙ্গে থাকতে হবে।" রহিম ভয় পেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে দৌড়ে বেরিয়ে আসল। কিন্তু তার মাথায় কিছু একটা ঘুরছিল। সে বুঝতে পারছিল না, কি ছিল সেই বিরিয়ানীর মধ্যে, কেন সেই লোকটি তাকে এভাবে ভয় দেখাচ্ছিল। সে রাতে ঘুমোতে গিয়ে অনুভব করল, যেন কোনো কিছু তার ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর, সে তার জানালার পাশে এসে দাঁড়াল। বাইরে, দূরে, অনেক দূরে, একটা কালো পাখি—কাউয়া—আকাশে চক্কর দিচ্ছিল। সে যে দিকে তাকাচ্ছিল, পাখিটি ঠিক সেই দিকে তাকিয়ে ছিল। যেন এটি তাকে অনুসরণ করছে। রহিম বুঝতে পারলো, আজ সে যে বিরিয়ানী খেয়েছে, সেটা ছিল এক ভয়ানক জাদু। আর লুল্লু, যে কাউয়া মাংস দিয়ে বিরিয়ানী তৈরি করত, সে ছিল শুধু এক সরল পাত্র—যিনি এই ভয়ঙ্কর শক্তিকে তার বিরিয়ানীর মধ্যে সন্নিবেশিত করেছিল। কিন্তু রহিম কি কখনো সেই শক্তি থেকে মুক্তি পাবে? কেমন হবে তার ভবিষ্যৎ? সে কি আর কোনোদিন সেই ভয়াবহ বিরিয়ানী খাবে? অথবা এই রহস্যের পিছনে কোন অজানা সত্য রয়েছে? ________________________________________ এভাবেই, লুল্লুর কাউয়া বিরিয়ানী ও ভূতের গল্প চলতে থাকে, যেখানে এক রহস্যের আবহাওয়া, ভুতুরে উপস্থিতি এবং অদ্ভুত শকুনের চোখের ভয় একত্রিত হয়ে উঠে। ইতিহাসের গহীনে হারিয়ে গেছে এই রহস্য, কিন্তু সেদিন থেকে, যে কেউ সেই বিরিয়ানী খায়, সে যেন এক অদৃশ্য শক্তির সাথে যুক্ত হয়ে যায়।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৬০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now